স্বরচিত|| পাহাড়ে তোমায় খুঁজবো আবার || পর্ব-১

in hive-129948 •  2 years ago 

আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজ আমার একটা লেখা নিয়ে হাজির হলাম। আমি কবিতা বেশি লিখি। গল্পের ধরনে লেখাগুলো বেশি লেখা হয়না। তবুও লেখা এলে লিখে ফেলি। যাইহোক কথা না বাড়িয়ে লেখাটার দিকে চোখ দেওয়া যাক।আজ প্রথম পর্ব শেয়ার করছি।

IMG_20190116_164920.jpg

এখানে আসার পর থেকেই পরপর দু'দিন টানা বৃষ্টি। বৃষ্টির ঠেলায় এই এলাকার চৌকাঠ পার হতে পারিনি। এই এলাকাতেও চৌমাথার একটা মোড় থাকবে, তা আমার ভাবনার বাইরে ছিল । রিসর্টের চারিদিক জুড়ে খালি পাহাড় আর পাহাড় । কালিম্পং থেকে মাত্র ১৫ মিনিট দূরত্বেই কাশোন।

আদিত্যর সাথে অন্য কিছুতে মিল না থাকুক আমার, কিন্তু আমাদের দুজনেরই পাহাড়ের প্রতি একটা আলাদাই নেশা আছে । প্রতিবছরই দুজন চেষ্টা করি সবকিছু থেকে একটু ছুটি বাঁচিয়ে পাহাড় ঘুরতে যাওয়ার।
ছোটবেলা থেকেই আমার পাহাড় পছন্দ। পরিবার বন্ধু-বান্ধব যতই টানাটানি করে সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাক না কেন ,ততবার উল্টোদিকে আমি পাহাড় চয়েস করেছি। তার ওপর যখন প্রথমবার আদিত্যর সাথে আলাপ হলো পাহাড়ে এসে ,তারপর থেকে ব্যাপারটা যেন আরও বেশি জমে গেল।

মান্টি হওয়ার পর দুই তিন বছর ঘরে পুরো। মান্টি এসে আমার আর আদিত্যর পাহাড় ঘোরার রেকর্ড ব্রেক করেছে। এই বলে প্রায় সব বন্ধুরাই ক্ষেপাতো। এবারে আদিত্য , আমি শুধু একা নই ।আমাদের পাহাড় ঘোরার টিমে এখন আরেক বড়ো সরো মানুষ।ওকে ঘুরতে নিয়ে আসা নিয়ে বাবা মা , আদিত্যর বাড়ির লোকজন সকলেরই অমত ছিল। সকলকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে মালতী দিদিকে সাথে নিয়ে তারপর এসছি এখানে। তাই এবারে আমাদের টিমে টোটাল চারজন। কিন্তু মালতী দিদির কোনো চাপই নেই। বাবার মতো মান্টির ঘুমের রগর খুব। আসার পর থেকে বৃষ্টি পেয়ে আরও জমিয়ে ঘুম দিচ্ছে বাবু ।

এই সুযোগে গত দুইদিন সন্ধ্যাবেলায় ওই চৌমাথার মোড়ে গিয়ে চায়ের দোকানটায় চা খেয়ে এসেছি। পাহাড়ি মেয়েদের যে আসলেই অনেক সুন্দর দেখতে হয় ,তা চায়ের দোকানে গিয়ে আরো বেশি করে প্রমাণ পেয়েছি। বারবার চোখ চায়ের থেকে বেশি চায়ের দোকানদারের ওপর চলে যাচ্ছিল। নাম জিজ্ঞেস করতে উত্তর দেয় - সামিরা।
গতকালকে আদিত্যকে এই চায়ের দোকানের খোঁজ আমিই দিয়েছিলাম। আজও বেরিয়েছিলাম দুজন। বিকেল বৃষ্টির অবসরের একটু সুযোগ নিয়ে , পাহাড়ি রাস্তা ধরে বেশ অনেকটা হেঁটে গেলাম। ওঠবার সময় যে কী পরিমাণ হাপিয়ে যাব, তার ভয় ছিল না কারোর।

সরু রাস্তা , ডান দিকে খাঁড়া দেওয়ালের মত পাহাড় শরীর। পাথুরে শরীর থেকেও মাঝে মধ্যে গাছ গুলো উঁকি দিয়েছে। কোথাও কোথাও ছোট্ট ছোট্ট হলুদ বেগুনি ফুল। এবারে বসন্তে পলাশ চোখে না পড়লেও , বসন্ত এসেছে। হাঁটতে হাঁটতে এসে দাঁড়ালাম চায়ের দোকানে। সামিরা আমার থেকে বয়সে ছোট।
গত দুইদিনে ওর সাথে বেশ ভালই পরিচয় হয়েছে। আমার ফোন থেকে মান্টির ছবি দেখে ,ও বহুবার আবদার করেছে, একবার যাতে মান্টিকে ওর দোকানে নিয়ে যাই।

আদিত্য আর আমি পৌঁছতে পৌঁছতেই বৃষ্টি ঝমঝম। সামিরার চা এর দোকানের বাইরের বেঞ্চে দুজন মিলে বসে পড়লাম। প্রথমেই মালতীকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছি। ভদ্রলোক একবারও কান্না করেননি। তার আমাদের কথা মনেই ছিল না। সে মালতীর কোলে ঘরের কাঁচের জানলা দিয়ে পাহাড় দেখছিল।

আশা করছি প্রথম পর্ব ভালো লেগেছে। পরের পর্বের জন্য পরের দিন অব্দি অপেক্ষা করতে হবে কিন্তু😊। ততক্ষণ ভালো থাকুন।

@isha.ish

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বেশ সুন্দর গুছিয়ে লিখেছো। মনে হচ্ছে বেশ কয়েকটি পর্ব ধরেই এই লেখা এগিয়ে যাবে। পাহাড় ও তার আকর্ষণ সব সময় আমাদেরকে তাদের দিকে ধাবিত করে। এড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়না। আশা করি পরবর্তী পর্ব গুলোও এমন সুন্দর ভাবে উপস্থাপিত হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

বেশ ভালো হয়েছে লেখা। তুমি তো ভালো লেখোই। আবার অ্যাক্টিভ হতে দেখে ভালো লাগছে। থেমো না। লিখে যাও। আর আশা করব সব রকম পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে ইউ উইল রক এগেইন।