ভ্রমণ // হঠাৎ কোনো রকম পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই মিরপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণ।(শেষপর্ব)

in hive-129948 •  last year 

সপ্তম পর্বের পর থেকে

আমি শেষ পর্বে এসে পৌঁছেছি। শেষ পর্বে আমি সবগুলো পর্ব মিলে কিছু তুলে ধরতে চাই, সেটা হল আমরা এই চিড়িয়াখানায় গিয়েছি কোন রকম পুর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই সেটা আপনারা আমার হেডিং লাইন দেখে বুঝতে পেরেছেন। আসলে গিয়েছিলাম ছোট চাচার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে, তো সেখানে যাওয়ার আগেও চিড়িয়াখানায় যাওয়ার কোন পরিকল্পনাই ছিল না। মূলত আমরা ঈদ পরবর্তীতে ছোট চাচার শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াতে গিয়েছিলাম যেহেতু ছোট চাচার শ্বশুরবাড়ি ছিল মিরপুরে তাই মিরপুরের কাছাকাছি চিড়িয়াখানা হওয়াতে আমার আব্বু সিদ্ধান্ত নিল যেহেতু এখনো কাউকে নিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানায় যাওয়া হয়নি তাই দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে হঠাৎ করে সবাইকে রেডি হতে বলল এবং তিনি বললো সবাই আমরা চিড়িয়াখানায় যাব ঘুরে আসব। তারপর আমাদের সবার রেডি হয়ে চিড়াখানার উদ্দেশ্যেই আসা। যেহেতু কখনো আসা হয়নি তাই বেশ ভালোই লেগেছিল কিন্তু চিড়িয়াখানাটা আমার ধারণা ছিল তেমন একটা বড় হবে না, কারণ ছোটবেলায় ছোট ছোট চিড়াখানা গিয়েছিলাম সেই ধারণা থেকে মনে করেছিলাম কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিল, গিয়ে দেখি বিশাল এলাকা নিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা দেখতে দেখতে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পড়ি তারপরেও আমরা সবাই এ বিশাল এলাকা এবং সেইসাথে পশুপাখি গুলো দেখে ভালোই লাগছিল। তো আজকে আমি এই চিড়িয়াখানা ভ্রমণের শেষ পর্যায়ে এসেছি তাই কিছুটা বিস্তারিত আবার পূর্ণ আলোচনা করলাম।

20230903_133834_0000.png

এখন আমি শেষ পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করব আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। চিড়িয়াখানা ঘুরতে ঘুরতে যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছি তখন আমাদের চোখের সামনে পড়লো ছোট একটি বাচ্চাদের জন্য বিনোদনের শিশু পার্ক, তো সেখানে আমরা চলে গেলাম। কারণ আমাদের সাথে বেশ কিছু বাচ্চা রয়েছে তাদেরকে কিছুটা বিনোদন দেওয়ার জন্য সেই শিশু পার্কে আমরা পৌঁছালাম। যদিও খুবই সামান্য পরিসরে এই শিশু পার্কটি, মাত্র দুইটা রাইট নিয়ে এই শিশু পার্ক। তারপরও এখানে মানুষের অনেক ভিড় ছিল। আমরা ভিতরে গিয়ে আমার ছোট চাচু আমাদের জন্য সেই দুটো রাইডেরই টিকিট কিনে নিয়ে আসে। তাহলে চলুন বন্ধুরা আপনারা আমার এই চিড়িয়াখানা ভ্রমণ পর্বের শেষ ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আসবেন।

IMG_20230903_105006.jpg

  • ছোট চাচুর টিকেট কিনে নিয়ে আসার পর আমি আর আমার ছোট বোন আমরা দুজনেই ট্রেনের রাইডারে উঠে পড়ি। তবে সেখানে উঠতে গিয়েও আমাদেরকে লাইন ধরতে হয়েছে অনেক লম্বা লাইন আমরা প্রায় দুইটা রাউন্ড শেষ করার পর ট্রেনে ওঠার সুযোগ পাই। ওই মুহূর্তে আমরা অনেক ক্লান্ত ছিলাম তারপরও অনেক ইচ্ছা যে ট্রেনে উঠে কিছুটা ঘুরে আসবে ছোট বোনের আবদার তাকে সাথে নিয়ে আমার যাওয়া। এরপর আমরা সেখানে সুযোগ পাই এবং সেই ট্রেনের রাইডারে উঠে আমরা রাইটারটি সম্পূর্ণ করি।

IMG-20230903-WA0009.jpg

IMG_20230903_114142.jpg

  • অন্যদিকে আব্বু আমার ছোট ভাই ও চাচাতো বোন কে নিয়ে আরেকটা রাইডারে তাদেরকে উঠিয়ে দিয়েছে সাথে আম্মু এবং মেজ চাচ্ছি তাদেরকে নিয়ে সেই রাইডারে উঠেছে আপনারা হয়তো ছবিতে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন যে ছোট ভাই আমার কতটা খুশি ও আনন্দিত সেই রাইডারে উঠে। তবে সে এই রাইডারে উঠার পর সে আবারও বায়না ধরে ছিল ট্রেন রাইডারেও সে উঠবে আর সেটার জন্য সে অনেক কান্নাকাটিও করেছে। তবে নতুন করে টিকেট কেটে রাইডারে ওঠা অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার তাই আমরা আর সেখানে দেরি করলাম না। কোনরকম ছোট ভাইকে বুঝিয়ে তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসলাম এবং অন্য কিছুতে তাকে উঠাবো বলে আশ্বস্ত করলাম।

IMG_20230903_112011.jpg

  • শিশু পার্ক থেকে বের হয়ে আমরা আরো কিছুটা সামনে অগ্রসর হলে আমাদের বাম পাশে আরো একটি পাখি আমরা দেখতে পাই সেই পাখিটির নাম হচ্ছে সারস পাখি দেখতে অনেকটা বকের মতো দেখা যায়। তবে আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে এই পাখিগুলো কোথাও উড়ে চলে যায় না পাশে একটা বিল রয়েছে সেই বিলে পাখিগুলো সাঁতার কাটে আবার তারা সময় হলে তাদের খাচায় ফিরে আসে।

IMG_20230903_112306.jpg

  • এখন আমাদের চিড়াখানা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় হয়েছে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। আমরা আবার হাটা শুরু করলাম মেইন গেটের দিকে। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম খুব সন্নিকটে সেই গেট রয়েছে। কিন্তু হাঁটতে আছি হাঁটতে আছি সেই গেট আর মিলছে না। ছোট বাচ্চারা হাঁটতে পারছে না। ওদের কষ্ট দেখে বড়রা ওদেরকে কোলে নিয়ে নিয়েছে। তারপর বেশ কিছুক্ষণ হাঁটার পর আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত মেইন গেটের দেখা পেয়ে যাই। আমরা হাঁটতে হাঁটতে এতটা ভিতরে চলে গিয়েছিলাম যে বুঝতেই পারিনি ফেরার পথে আমাদেরকে সেই পরিমাণ জায়গা আবার হেঁটে এই গেট দিয়ে বের হতে হবে এ বিষয়টা আমাদেরকে খুব কষ্ট দিয়েছে সবাইকে তারপরও আমরা হাসিমুখে চিড়িয়াখানা থেকে বিদায় নিলাম সত্যি বলতে আমরা অনেক অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম।

IMG_20230903_112319.jpg

লোকেশন

এই ছিল আমার আর্ট পর্বের কোনরকম পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই চিড়িয়াখানা ভ্রমণ পোস্ট। আশা করি আমার এই পোস্টগুলো পড়ে আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। তো বন্ধুরা আজ এই পর্যন্তই। আমার এই পোস্টে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আমার জন্য দোয়া করবেন সকলের জন্য শুভকামনা অবিরাম।

ধন্যবাদান্ত
@isratmim


✅আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়✅


✅আমি ইসরাত জাহান মিম। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত, কারণ বাংলা আমার অহংকার। আমার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে কিন্তু বাবার ব্যবসার কারণে বর্তমানে অবস্থান করছি গাজীপুরে। আমি আমার পড়াশুনা এইচ এস সি পর্যন্ত করেছি এবং এখন পরবর্তী পর্যায়ের ভর্তি প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের "আমার বাংলা ব্লগ" পরিবারের একজন সদস্য এজন্য আমি অনেক উৎসাহিত ও আনন্দিত। আমি বই পড়তে পছন্দ করি, সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে বিভিন্ন নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে ও প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে। আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু করেছি ২০২০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর। স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই এটাই আমার লক্ষ্য। ✅
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া এ কোথাও ঘুরতে অনেক বেশি ভালো লাগে আসলে পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া কোথাও ঘুরতে বেরোলে নিজের কাছে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে সব সময় কারণ সে নিজেই জানে না যে পরবর্তীতে কি হতে চলেছে। অবশেষে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আপনার বাবার সঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো এবং সেখানে গিয়ে অবশ্যই খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলেন যেটা আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অনেক অনেক প্রাণী দেখেছেন এবং অবশ্যই সুন্দর একটি বিকেল কাটিয়েছেন সকলে। মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

আপনার চাচার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা ঘুরতে যাওয়া সবমিলিয়ে বেশ দারুণ ছিল আপনার ভ্রমণটা। মিরপুর চিড়িয়াখানা টা অনেক বড় একদিনে ঘোরে শেষ করা একটু কঠিন। ফটোগ্রাফি গুলো বেশ চমৎকার শেয়ার করেছেন। আর সারস পাখিটা তো বেশ বড় ধরনের দেখছি। সবমিলিয়ে দারুণ একটা পোস্ট ছিল।।

আপনার মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনি তো দেখছি মিরপুর চিড়িয়াখানায় অনেক ঘুরাঘুরি করলেন। প্রস্তুতি না নিয়েও হঠাৎ করে যাওয়ার মধ্যে আপনি অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করলেন। মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানার ভিতরে শিশু পার্ক বাচ্চাদের জন্য অসাধারণ একটি জায়গা। খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটালেন।

আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমিও অনেক আনন্দিত হলাম। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

কোন পরিকল্পনা ছাড়া এই মিরপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণের আগের পর্বগুলো বেশ দারুন ছিল আপু। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি ভ্রমণের সম্পূর্ণ পর্ব গুলো শেষ করলেন আপু। তবে চিড়িয়াখানার প্রতিটি পর্বের অসাধারণ ছিল। সারস পাখি দেখতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে আপু।

সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।