জেনারেল রাইটিং :স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি।

in hive-129948 •  5 days ago  (edited)

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আমি @jannat0499
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জে অবস্থান করছি ।

IMG-20240914-WA0025.jpg

আজকে আমি আপনাদের সামনে একটা অন্যরকম পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমাদের সবারই একটা স্কুল জীবন ছিল। স্কুল জীবনের শৈশবের স্মৃতিগুলো খুবই মধুর। আমাদের ছোটবেলাটা যেভাবে কেটেছে স্কুল জীবনে, এখনকার, বাচ্চাদের স্কুল জীবন আর সেরকম নেই। খুব ছোট, আমি যখন প্রথম শ্রেণীতে পড়ি, আমার বাবা হাত ধরে আমাকে স্কুলে নিয়ে যায়। যেহেতু, স্কুল আমার বাড়ির কাছেই তাই পায়ে হেঁটে যেতাম। আমরা তিন বন্ধু ছিলাম। স্কুলে যাওয়ার সময় আমরা ঠিক করে রাখতাম কোন জায়গায় বসবো। আবার একজন স্কুলে না গেলে বাকি দুইজনও স্কুলে যেতাম না। আবার স্কুলে যখন টিফিন দিত সবাই তাড়াতাড়ি টিফিন খেয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম যেমন,গোল্লাছুট,দড়ি লাফ,কুতকুত,কানামাছি, ফুল টোক্কা, এলনটি বেলুনটি, বৌচি,লুকোচুরি ইত্যাদি।স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো সবসময়েই মিশ্র। কখনো মজার, কখনো কষ্টের। স্কুলের প্রথম দিনটাই মনে আছে, যেমনটা মনে থাকার কথা। একটা নতুন জায়গা, অপরিচিত মুখগুলো, যাদের সবার নাম জানাও তখন জরুরি ছিল না। ধীরে ধীরে সেই মুখগুলোই হয়ে গেল চেনা, ক্লাসের বন্ধু, একসঙ্গে টিফিন ভাগ করা সাথী।

একটু বড় হতে হতে স্কুলের প্রতি অনুভূতি বদলাতে শুরু করে। ক্লাসের পরীক্ষার চাপ,বাড়ির কাজের বোঝা, আর শিক্ষকদের নিরীক্ষণ—সবকিছুই যেন আরও কঠিন হয়ে উঠল। একসময় মনে হলো, স্কুল শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এখানে আরও অনেক কিছু শিখতে হয়। বন্ধুত্ব, প্রতিযোগিতা, কখনো কখনো কষ্ট পাওয়া। কেউ কাছের বন্ধু হয়ে গেল, আবার কেউ দূরে চলে গেল।

কিন্তু কিছু অনুভূতি কখনো প্রকাশ করা যায় না। নতুন ক্লাসরুম,নতুন মানুষ,ভেতরে ভয় গুলো আস্তে আস্তে কেটে যাওয়া।
এসব অনুভূতিগুলো হয়তো স্কুল জীবনেরই একটা অংশ,যেগুলো বাইরে প্রকাশ করা যায় না।মনের গভীরে থেকে যায়। আমার স্কুল জীবন এর অনেক
স্মৃতি রয়েছে যেগুলো আজও মনে পড়ে ।


IMG-20240914-WA0031.jpg

মাঝে মাঝে আমাদের টিফিন দিলে আমাদের স্কুলের সামনে একটা বড় পুকুর আছে।ওই পুকুর গ্রীস্মকালে খালি থাকে। কিন্তু বর্ষাকালে পানি ভরা থাকে। ওই পুকুরে আমরা বসে বসে গল্প করতাম।আড্ডা দিতাম।

IMG-20240914-WA0027.jpg

স্কুলের সামনে একটা ফুলের বাগান আছে। বাগানে নানান ফুল ফুটে থাকে।একেক ঋতুতে একেক ফুল থাকে।স্যাররা আমাদের মাঝে মাঝে শাস্তি দিয়ে অই বাগানের সামনে দাড় করে রাখত।আমারা বেশ মজাই থাকতাম।অনেক মজা দুস্টামি করতাম।

IMG-20240914-WA0032.jpg

বাগানের ফুল গুলো দেখলে মন ভরে যেত।বাগানের ফুল ছেড়া নিষেধ ছিল।কেউ যদি ছিড়ত, আমারা ধরে স্যার কাছে নিয়ে যেতাম।


IMG-20240914-WA0028.jpg

স্কুলের পিছন দিকে বাগান ছিল, এবং স্যারদের হোস্টেল। আমরা টিফিন সময় পিছনে গাছের কাছে বসেও গল্প করতাম।কেউ কেউ পালাইয়া জাইতো স্কুল বাগানের পাশ দিয়ে।

IMG-20240914-WA0024.jpg

স্কুলের এক পাশেই মসজিদ ছিল আমরা ওখনেও সময় কাটাতাম।


IMG-20240914-WA0022.jpg

যখন স্কুল ছুটি দিতে দেড়ি করত। আমরা জানালা দিয়ে স্কুলের ছুটির ঘন্টার জন্যে অপেক্ষা করতাম।ছুটি দিলেই দৌড়র। সবাই এক সাথে বাড়ির পথে হাটা দিতাম।রাস্তায় যেতে যেতে আমরা অনেক দুস্টামি করতাম।কারও বাড়ির আম, জাম,পেয়ারা পেরে নিয়ে যেতাম।

IMG-20240914-WA0029.jpg

একদিন আমি স্কুলে গিয়ে দেখি আমার আরেক বান্ধবি আসে নাই।মনটা এত খারাপ হয়ে গেল।সারা ক্লাস এ মন দিতে পারিনি।স্কুলের বিভিন্ন অনুস্ঠান আমরা বাড়ি থেকে বিভিন্ন মাটির জিনিস বানিয়ে নিয়ে যেতাম। কে কত ভালো করে বানিয়ে নিয়ে যেতে পারে।একবার ৩ বান্ধবি মিলে স্কুল ফাঁকি দিয়েছিলাম,দিয়ে রেললাইন পথে হেঁটে আমরা এক মাঠে গিয়ে রান্না করে খেয়ে মজা করেছিলাম।আবার, স্কুলের ভিতরব শশা কিনতে পাওয়া যেত,কিনে খেতাম আর মারামারি করতাম।ঝালমুড়ি আর চপ ভাজা ছিল মাসির হাতের সুস্বাদু। স্কুলের ভিতরে এই মাসিকে অনেক জালাইতাম। লাইন ধরে থাকতাম খাওয়ায়ার জন্য। এই দিন গুলো আর ফিরে আসবে নাহ।বন্ধুগুলো বড় হয়ার সাথে সাথে হারিয়ে গেছে।এখন হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো ফিরে পাওয়া সম্ভব না।স্কুল জীবনের মতো কোনো জীবন হয় না ।

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqreqo2XAMzrcrFMezsQ2JYvnkCG8natanTeTWALXvA2X1jsqXD4Nf1w7BTTxEyx7JRMmmeNnz.png

ধন্যবাদ সকলকে✨💖

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZw7HFjCLMfDJx3zXx3jXPRfJr7otFtoRfKMmN9rJzpemZGKH1sKHrmfJREqyC...9xLrN7kkzEr3nKpRPcTj6NSZrBzYGbr93rAK2CAinZaxUP2fFhka9ZrPQeMBYoU2r2avcVEfb5m3uJAqvfZ4UMDVMeWvTdncVc9TonRvS2kneML5dvyoyUQZKC.png

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরারেডমি নোট ৯
ক্যাপচার@jannat0499
অবস্থানসিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG_20211011_092535.jpg
আমি মোছা: জান্নাতুল ফেরদৌস। বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার সদরে বসবাস করি। আমি একজন সৃজনশীল মানুষ ।ছবি আঁকতে, নতুন কিছু বানাতে আর সময় পেলে ঘোরাফেরা করতে আমি খুবই ভালোবাসি।সুযোগ পেলেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হই।ভ্রমণ করার পাশাপাশি আমি বাগান করতে খুব ভালোবাসি।অবসর সময়ে আমি রঙ তুলি নিয়ে বসে যাই নতুন উদ্ভাবনায়।বই পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে বিশেষ করে উপন্যাস।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাইআমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।🌼💖🌼


👉সবার প্রতি শুভেচ্ছা এবং পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।







Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আহা স্কুল জীবনে কতই না মজা করেছি।আজকে তোমার এই পোস্টটি পড়ে আমারও স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেল।স্কুল জীবন প্রত্যেকটা মানুষের আবেগের জায়গা,স্কুল জীবন প্রত্যেকটা মানুষের শ্রেষ্ঠতম সময়।তোমার স্কুল জীবনের স্মৃতি স্মরণ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

স্কুল জীবনের স্মৃতি মনে গল্প গুলো সত্যিই অসাধারণ। এই স্মৃতিময় দিনের কথা বারবার মনে পড়ে। সেই দিনগুলো ছিল শ্রেষ্ঠ দিন। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

আসলে আপু স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো মনে পড়লে এখনো হৃদয় শিহরিত হয়ে ওঠে। স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো হৃদয়ের খুব গভীরে গেঁথে রয়েছে। আপনার স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি কথা জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো। আপনার স্মৃতি কথা পড়ে স্কুল জীবনে আবার হারিয়ে যেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। এতো অসাধারণ পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আপু আপনার পোস্ট পড়ে আমার নিজের স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেল। আসলেই স্কুল জীবনের সেই মধুর স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে। সেই সুন্দর সময় গুলো যদি আবার ফিরে পেতাম তাহলে সত্যিই অনেক ভালো হতো।