কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। যেখানে বিশেষ একটা বিষয় নিয়ে আমি ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আলোচনা করতে চলেছি। আশা করব আমার এই পোস্ট করলে আপনার অনেকে উপকৃত হবেন এবং বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
উন্নত ফসলের আশা
প্রথমে বলে রাখি আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। বুদ্ধি জ্ঞান হওয়ার পর থেকে লক্ষ্য করে দেখছি আমার আব্বা এবং চাচারা সবাই কৃষি কাজের সাথে নিয়োজিত। প্রত্যেক চাচাদের ২৫ থেকে ৩০ বিঘা কৃষিকাজদের জমে রয়েছে। এখনো তারা তাদের মত করে তাদের সমস্ত জমিগুলোতে ফসল শাকসবজি উৎপাদন করে চলেছে। আর তাদের কৃষি কাজের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিদের পরামর্শ নিতে দেখেছি। মাঝেমধ্যে বাইরে থেকে বিভিন্ন কোম্পানির মানুষ গ্রামে আসেন এবং কৃষকদের উন্নত কৃষি ব্যবস্থার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। আর সে সমস্ত প্রশিক্ষণ আমার আব্বা চাচারাও নিয়েছেন এবং প্রশিক্ষণে কি বিষয়ে আলোচনা করলো এ সমস্ত বিষয়গুলো পরিবারে বলাবলি করত। আর সে থেকে অনেক কিছু আমরাও জানতে পেরেছিলাম এমনকি স্টুডেন্ট লাইফে কৃষি শিক্ষা বইতেও অনেক কিছু জানার সুযোগ মিলে ছিল যেগুলো বাড়িতে আলোচনা করতাম। হঠাৎ করে অনেক দিন পরে ঠিক তেমনি একটা বিষয় চোখের সামনে বাধলো।
আমাদের নিকটের গ্রামটা হয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। বিশেষ কারণে খালাম্মাদের বাসায় গিয়েছিলাম। ফিরতে পথে মাঠের মধ্যে দিয়ে রাস্তায় ফাঁকা স্থানে বসার জায়গা পানি খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ঠিক সেখানে উপস্থিত হয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম শহরাবারিয়া গ্রামের মাঠে অনেক স্যালো মেশিন। চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম অসংখ্য মেশিন রয়েছে। ভেবে অবাক হলাম। এ গ্রামের মানুষ কৃষি কাজে বেশ ভালোই সজাগ। খেয়াল করতে করতে আরেকটা জিনিস আরো বেশি লক্ষ্য করলাম যেহেতু ফটো ধারণ করার মন মানসিকতা সব সময় থাকে। দেখলাম একটা ধানের জমিতে জায়গায় জায়গায় পাঠ খড়ি, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল পোতা রয়েছে। আর সে সমস্ত ডালপালায় শালিক পাখি এসে পড়ছে। অনেক পাখি বসা নিয়ে আনন্দ করছে। খেয়াল করে দেখলাম ফিংগি রাজা পাখি রয়েছে সেখানে। যাই হোক এই পাখিগুলো ধানের জমির মধ্য থেকে পোকা ধরছে এবং এই ডালগুলোতে এসে বসছে। আর এভাবেই আশেপাশের অন্যান্য ধানের জমি বাদ রেখে এই ডাল পুতে রাখা জমিতে পাখিগুলো ভিড় জমিয়েছে। অর্থাৎ বিষয়টা এই যে পাখিগুলো বসার জায়গা পেয়েছে তাই সেই ফসলের জমির ক্ষতিকারক বা ভালো-মন্দ পোকাগুলো খুব সহজেই খেয়ে ধান এর গাছগুলোকে উপকার করছে। আমরা জানি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসলে বিভিন্ন রকমের পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়ে ফসল নষ্ট করে দেয়। আর এই পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করতে অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষ মানুষকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয় আবার অনেক দোকানদারেরা বিষ বিক্রয়ের জন্য বলে ফসলের জমিতে ফরমালিন ব্যবহার করতে।
জুম করে ফটোগুলো ধারণ করছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম সেই ছোটবেলার কথা, আর বলাবলি করছিলাম ফসলের জমিতে এমন ডাল পুতে রাখলে কতটা উপকার হয় তার বাস্তব প্রমাণ। কারণ আমার আব্বা সেই সময় বলেছিলেন তাদের প্রশিক্ষণ দিতে এসে অফিসার বলেছে ফসলের জমিতে দুইটা কাজ করতে। এক হতে কখনো বিষ প্রয়োগ করা যাবে না এভাবে ডাল পুতে রাখতে হবে, আর এক বিষয় বলেছিলেন যতটা সম্ভব হয় ধানগুলো সারিবদ্ধ ভাবে লাগাতে। আর এই সমস্ত বিষয়গুলো তারা বিশ্লেষণ করে বলেছিলেন তার উপকারিতা। আমার আব্বা তাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে সেই আকারে কাজ করেছিলেন এবং সুফল পেয়েছিলেন। এক বিঘা জমিতে ধান হত ১৭,১৮ মন আর এই নতুন বুদ্ধি গ্রহণ করার পরেই এক বিঘা ফসলের জমিতে ধান হয়েছিল ২৬-২৭ মন। আর সেই থেকে এই বিষয়টা আমার এখনো মনে পড়ে। হয়তো দূর থেকে জুম করে ধারণ করা ফটোগুলো আপনাদের দেখতে ভালো লাগবে না, দিনটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল তাই ফটোগুলো দেখার মত নয়। তবে আশা করি আপনারা যারা কৃষি কাজের সাথে নিয়োজিত রয়েছেন এবং আপনাদের আত্মীয়-স্বজন যারা কৃষিকাজের সাথে নিয়োজিত তাদের অবশ্যই বলবেন তাদের ফসলের জমিতে যেন এমনিতেই এভাবে বাঁশের কঞ্চি বা ডাল পুঁতে রাখে। কারণ ফসলের জমিটি তো পাখি বসার জায়গা নেই। তাই পোকামাকড়ের বাসা বাঁধতে সুবিধা হয়। কিন্তু পাখি বসলে সে সমস্ত পোকা মাকর ভাষা বেঁধে বংশবিস্তার করতে পারেনা কারণ পাখিরা ক্ষতিকারক পোকাগুলো ধ্বংস করে ফেলে। আর এতে আপনার ফসল বেশি হয়। তাই আমাদের আত্মীয়-স্বজন যারা রয়েছে কৃষি কাজের সাথে নিয়োজিত তাদেরকে এই বিষয়টা সজাগ করতে হবে, কীটনাশক প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং এমন সুন্দর সুন্দর পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে নিজের ফসল ও শাকসবজির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানোর জন্য।
ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
---|---|
বিষয় | অধিক ফসল ফলানোর টেকনিক |
লোকেশন | গাংনী- মেহেরপুর |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
বাহ আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই চমৎকার একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনি কৃষি পরিবারের সন্তান জানতে পেরে সত্যি আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। আসলে এখন প্রত্যেকটা মানুষ উন্নত জীবন যাপনের সাথে জড়িত। তাই কৃষি কাজেও আগে তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। সেই কারণে মানুষ অধিক ফসল ফালানোর জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন আপনি, এ সমস্ত নিয়মগুলো মেনে চলা দরকার।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit