আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম
Photography device: Infinix Hot 11s-50mp
আমরা জানি টমেটো একটি শীতকালীন সবজি। তবে আমাদের দেশের কৃষক ভাইয়েরা এত সুন্দর টমেটো চাষ করতে জানেন এই জন্য শীতের আগেই বাজারে টমেটো দেখতে পাওয়া যায়। আর তাদের টমেটো চাষের উৎসাহিত হয়ে সাধারণ মানুষ চেষ্টা করে থাকে নিজেদের বাড়ির বাগান গুলোতে শীতকালীন শাক সবজির পাশাপাশি টমেটো উৎপাদন করতে। ঠিক তেমনি আমাদের টমেটো লাগানোর একটি সুন্দর গল্প আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। আমাদের পুকুরপাড়ের বাগানের মধ্যে শীতের পূর্বে অর্থাৎ আশ্বিন কার্তিক মাসে টমেটোর চারা এনে লাগানো হয়েছিল তিন লাইন করে। কিন্তু কপাল খারাপ থাকায়, গাছগুলো দিন দিন নষ্ট হয়ে যেতে থাকলো। এরপর আবারও বামুন্দি বাজার থেকে ১০০ টা টমেটোর চারা আনলো ছোট ভাইয়া। আবারো ঠিক সেই জায়গায় টমেটো গাছগুলো লাগানো হলো। এরপর দেখা গেল বেশ কিছু টমেটো গাছ বেঁচে রয়েছে।
টমেটো গাছগুলোতে সার পানি দেওয়ার মতো যত্ন নেয়া শুরু হল। কিন্তু প্রচন্ড রোদ আর পুকুরের উপরের অংশ এ কারণে গাছগুলো দেখা যায় নষ্ট হতে থাকলো কিছু গাছ পোকা লেগে গেল। এভাবে নতুন লাগানো এই গাছের মধ্য থেকে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে বেশ কিছু গাছ বেঁচে থাকলো কিন্তু সেই গাছগুলো দেখতে তেমন ভালো লাগার মত নয়। কে যেন রাজের ছোট আব্বু কে পরামর্শ দিয়েছিল জৈব সার দেওয়ার জন্য। উনি আমাদের সারগাদা থেকে জৈব বা কম্পোস্ট সার নিয়ে গিয়ে সেখানে গাছের গোড়ায় গোড়ায় দিয়েছিলেন। তবে গাছগুলোর যে উন্নতি হবে তেমন কোন উন্নতি দেখা গেল না। হিসেবে অনেক গাছের মধ্যে মাত্র ২০-২৫টা গাছ বেঁচে ছিল। ভাইয়া অনেক যত্ন নিতে থাকলেন গাছগুলোর। বেশ কিছু গাছে টমেটো ধরতে থাকলো। তবে গাছগুলো পানে তাকালে মনে হতো যখন তখন মারা যাবে। তাই বেশ মন খারাপ থাকতো ভাই আর। অন্যান্য শাকসবজি ভালই হয়েছিল কিন্তু বেশ আশা ছিল টমেটো ভালোভাবে হবে সবাই মিলে কাঁচা পাকা রান্না খাওয়া যাবে। আর টমেটোর সালাদ খেতে খুবই পছন্দ করেন ভাইয়া।
হঠাৎ একদিন ভাইয়া লক্ষ্য করে দেখলেন,একটি জায়গায় টমেটো গাছ লাগানো হয়েছিল সেই জায়গায় টমেটো গাছ মারা গেছে। তবে গাছটাকে ভালো করার জন্য কম্পোস্ট সার দেয়া হয়েছিল। ভাগ্যের কি খেলা সেই কম্পোস্ট সারের মধ্যে ছিল টমেটোর বীজ। কারণ আমাদের সারগাদায় রান্নাঘরের শাকসবজি ফলমূলের বীজ সহ বিভিন্ন নোংরা গুলো ফেলা হয়। এক কথায় বুঝতে পারছেন সারগাদায় যা ফেলা হয়ে থাকে। যাইহোক সেই জায়গায় টমেটো গাছ কবে মারা গেছে জায়গাটা পড়েছিল। এখন এই জায়গায় হঠাৎ একটি টমেটোর চারা বের হতে লক্ষ্য করলেন ভাইয়া। কিন্তু মনে মনে ভাবতেন বাজার থেকে দেখার মত টমেটোর চারা কিনে এনেছি দুইবার লাগিয়েছি গাছ নষ্ট হয়ে গেছে যেগুলো আছে ভালো রকমের টমেটো ধরছে ধরছেনা। এমন আগাছা রূপে বের হওয়া টমেটো গাছ থেকে কিবা হতে পারে।
ভাইয়া একদিন পরপর সবজি বাগানে প্রবেশ করতেন এবং বিভিন্ন শাকসবজি গাছগুলো শেষ ও সার দিতেন অর্থাৎ পরিচর্যা করতে থাকতেন। চোখে পড়তে থাকলো তার টমেটো গাছের চারাটা। কিন্তু সেই গাছের প্রতি তেমন কোন যত্ন নিতেন না। গাছের গোড়ায় বিভিন্ন আগাছা জন্মাতে থাকলো বড় হতে থাকলো। পাশাপাশি টমেটো গাছটাও বড় হতে থাকলো। একদিন দেখা গেল টমেটো গাছটা ঘন সবুজ সুস্থ সবল ও মোটাসোটা রুপে বেড়ে উঠছে। ভাই ভাইয়া সিদ্ধান্ত নিলেন আগাছা দমন করে গাছটার সুযোগ দেয়। এরপর গাছটার যত্ন নেয়ার জন্য ভাইয়ার খুবই ভালো লাগার সৃষ্টি হলো। নিজের হাতে লাগানো গাছের মত করে যত্ন নিতে থাকলেন। আর ঠিক এভাবে যত্ন নিতে নিতে একদিন দেখা গেল গাছটা এত বড় হল এত ডাল পালা হতে থাকলো অন্যান্য পাঁচ সাতটা গাছ মিলে যা হবে,এটা একলা গাছের তাই হবে।
এরপর এই টমেটো গাছটায় ডালে ডালে পাতার গোড়ায় গোড়ায় এমন ভাবে টমেটো ধরা শুরু হলো, গাছের প্রত্যেকটা থোকায় তিনটা চারটা এমন এমন থোকায় রয়েছে দশ বারোটা করে টমেটো ধরেছিল। এমন দৃশ্য দেখে ভাইয়া বাড়িতে আসতেন আর প্রতিনিয়ত গাছটার প্রশংসা করতেন হাসাহাসি করতেন। এর আগে টমেটো গাছ লাগানো নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতেন আর এই হঠাৎ জন্মানো গাছের এমন বৃদ্ধি আর ফল ধরতে দেখে খুবই খুশি হয়েছিলেন। এরপর আমি ভাইয়াকে প্রথমে একদিন বলেছিলাম যখন টমেটো গাছটার টমেটো পাকার মত হবে আমাকে বলবেন আমি তুলে আনব। ঠিক এভাবে একদিন উঠাতে গেলাম। শুধুমাত্র এই গাছটা থেকেই ২ কেজির বেশি টমেটো উঠাইছিলাম। আর এভাবেই অন্যান্য টমেটো গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও দীর্ঘদিন এই গাছে টমেটো হয়েছিল। শীতের শেষে অনেকদিন পর এই টমেটো গাছ নষ্ট হল। যতটা ধারণা করা যায় এই টমেটো গাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ কেজি টমেটো খাওয়া হয়েছে। কারণ গাছটা এতটা বিস্তার করেছিল অনেকগুলো খুঁটি দিয়ে তার ডালপালা বেঁধে রাখা হতো। সময় লক্ষ্য করা গেছে অন্যান্য গাছের তুলনায় ভাইয়া সব সময় এই এমনিতে জন্মানো টমেটো গাছটার বেশি যত্ন নিতেন। বামুন্দি বাজার থেকে দুই বার করে উনি টমেটো গাছের চারা এনেছিলেন, অনেক পরিশ্রম করেছিলেন কিন্তু সেই গাছগুলোতে যা ফল দেয়নি; তার চেয়েও বেশি ফল দিয়েছে এই কম্পোস্ট সারের মধ্যে বীজ পড়ে থাকা জন্মানো গাছে। এই জন্য ভাইয়ের হতাশা কেটেছিল এবং উনি খুবই খুশি হয়েছিলেন।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | একটি টমেটো গাছ |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
পুকুর পাড়ে টমেটো গাছ লাগিয়ে তা নষ্ট হয়ে গিয়ে সার প্রয়োগের মাধ্যমে অবশেষে একটি গাছ বড়ে হয়ে উঠৈছে এবং তা থেকে আপনারা অনেক গুলো টমেটো পেয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit