ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণ ও ফটো ধারণ

in hive-129948 •  3 months ago 


আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম


কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। আমার ছোট থেকে অভ্যাস ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণ করার। তাই যখনই আমার নিজের গ্রামে অথবা খালাম্মাদের গ্রামে বা নানীদের গ্রামে যখন ওয়াজ মাহফিল হতো আমিও আব্বার সাথে মামার সাথে বড় ভাইদের সাথে উপস্থিত হয়ে যেতাম ওয়াজ মাহফিলের মেলাতে। ঠিক তেমনি ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণের বেশ কিছু ফটো আপনাদের মাঝে শেয়ার করব এখন। আর এরই মাঝে ব্যক্ত করব আমার ভালো লাগার অনুভূতি।

IMG_20230225_194915_571.jpg

photography device: Infinix Hot 11s-50mp



ওয়াজ মাহফিলের মেলা


ছোটবেলায় আমরা যখন ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনের কাছে অংশগ্রহণ করতাম, বাড়িতে বা পাড়া গায়ে কেউ প্রশ্ন করলে বলতাম ওয়াজ শুনতে যাচ্ছি। আসলে কি ওয়াজ শোনার জন্য যেতাম। কখনোই না। মূলত সেখানে গার্জিয়ানদের সাথে যেতাম মিষ্টি খাওয়ার লোভে আর বিভিন্ন প্রকার জিনিস রয়েছে সেগুলো দেখব বায়না ধরবো কয়েকটা কিনে নেওয়ার এ সমস্ত কারণে। তাই নিজের গ্রামে নানির গ্রামে খালার গ্রামে ওয়াজ হলেই আমরা বেশ কয়েকজন যাওয়ার জন্য বিভিন্ন বায়না ধরতাম। তবে সবচেয়ে বড় সুবিধা হতো খালাম্মাদের গ্রামে বড় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয় সেখানে দেওয়ার বিষয়টা। আর সেই থেকে এমন একটা অভ্যাস হয়ে গেছে সুযোগ পেলেই ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনে সন্ধ্যা মুহূর্তটা ঘোরাঘুরি করতে চলে যায় খালাম্মাদের বাসা থেকে। গত বছর ঠিকই ওয়াজ মাহফিলের মেলাগুলোতে অংশগ্রহণ করেছিলাম আমরা কয়েকজন। যেখানে প্রত্যেক বছরের মত বিভিন্ন প্রকার খেয়াল না নিয়ে উপস্থিত হয় অনেক দোকানদাররা। প্রত্যেক বছর বিভিন্ন রকমের খেলনা দেখতে পাওয়া যায়। প্লাস্টিকের পুতুল থেকে শুরু করে মাটির তৈরি বিভিন্ন রকমের খেলনা। তবে ছোটবেলায় মাটির তৈরি খেলনা একটু বেশি দেখতাম এখন সেগুলো কম। কারণ মাটির তৈরি জিনিস বেশি মানুষের কিনতে চায় না। এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের নতুন নতুন খেলনা উঠেছে যেগুলো আমাদের সময় ছিল না।

IMG_20230225_210209_918.jpg

IMG_20230225_210155_231.jpg

IMG_20230225_200729_191.jpg


আর এখানে যে শুধু খেলনা রয়েছে তা কিন্তু নয়। এখানে মেয়েদের বিভিন্ন রকমের কসমেটিক সামগ্রিক রয়েছে। বিভিন্ন প্রকার হাতের চুরি কানের দুল গলার হার মুখের মাক্স থেকে শুরু করে অনেক কিছু এখানে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও আয়না চিরুনি কাঁচি গরু ছাগলের গলার ঘন্টা রান্না ঘরের বিভিন্ন সামগ্রী এখানে দেখতে পাওয়া যায়। যে সমস্ত জিনিসগুলো বাজার থেকে কিনতে গেলে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না ঠিক তেমনি অনেক প্রকার জিনিস এখানে খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। তবে অনেক মানুষের উপস্থিতির জন্য চলাচলটা হয়ে যায় বেশ কঠিন। যত সন্ধ্যার পর সময় পার হতে থাকে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাই মেয়েদের জন্য একটা সুবিধা মাগরিবের সাথে সাথেই দ্রুত মেলাগুলো ভ্রমন করা আর প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কেনাকাটা করা। এছাড়া বিকালে মুহূর্তেও তারা বিভিন্ন স্টল সাজিয়ে ফেলে কিন্তু তত একটা কেনাকাটার ভিড় থাকে না। তবে যাদের সুযোগ সুবিধা রান্নাবান্না শেষ করে বিকেল মুহুর্তে এসে ঘুরে যায়। তবে রাত্রের মুহূর্তে খুব সুন্দর্য বৃদ্ধি পায় মেলা মানুষের আনাগোনা আর বিভিন্ন লাইটিং এর ব্যবস্থা থেকে থাকে তাই।

IMG_20230225_210217_395.jpg

IMG_20230225_204914_743.jpg

IMG_20230225_205727_763.jpg


এবার ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণের যে বেশি কিছু কিনবো এমন কোন আশা ছিল না। শুধু আশা ছিল ছোট ভাই বোন এবং ছেলের জন্য কয়েকটা খেলনা নিব এবং বেশ কিছু ফটো ধারণ করবো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। যাইহোক মেলার এ জায়গায় লক্ষ্য করে দেখলাম বিভিন্ন রকমের দোকানগুলোতে বেশ ভিন্ন ভিন্ন ধরনের খেলনা সহ অনেক কিছু রয়েছে। আমরা সবাই মিলে ঘুরে ঘুরে দেখতেও থাকলাম। এদিকে কখন জানি ওয়াজ মাহফিলের মাইক বাজার শুরু হয়েছে ওদিকে কোন খেয়াল নেই আমাদের। বারবার এনাউন্স করে বলছেন মা-বোনরা তাদের পদ্মার আড়ালে চলে যান এবং দ্বীনদার ভাইয়েরা আপনারা এদিকে সেদিকে ঘোরাঘুরি না করে ওয়াজ মাহফিলের মাঠে এসে বসে যান। এই মুহূর্তে আমাদের চিন্তা ছিল দ্রুত কেনাকাটা করে খালাদের বাসায় চলে যাব।

IMG_20230225_201440_110.jpg

IMG_20230225_204431_068.jpg

IMG_20230225_200336_975.jpg


রাতে কারেন্টের আলোতে কাঁচের গ্লাসের নিচে থাকা আংটি কানের দুল গলার হার যে সমস্ত জিনিসগুলো খুব সুন্দর দেখায়। তবে যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম এ সমস্ত জিনিসগুলোর দাম অনেক কম ছিল কিন্তু এখন কিনতে গেলে ১৫০ টাকা ২০০ টাকা ৩০০ টাকা করে বলে বসে থাকে। এজন্য ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেক কিছু সচক্ষে দেখেও কিনতে পারি না। ছোট বোনদের এটা সেটা কিনে দিতে গিয়ে ব্যর্থ হতে হয়। তবে সবাই আনন্দ পায় যখন মিষ্টি খাওয়ার টাকা দেওয়া হয়, জিলাপি খুরমা বা কদমা যাই খেতে পারুক না কেন এতেই তারা সন্তুষ্ট থাকে। আর এভাবেই একটা মুহূর্তে মানুষের আবির্ভাব বেড়ে দিতে থাকে। এদিকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত বাড়তে থাকে। তাই বেশিক্ষণ আর সেই জায়গায় অবস্থান না করে ফটো ধারণ আর নিজেদের ভালোলাগার কিছু কেনাকাটা করে দ্রুত চলে আসি বাসাতে।

IMG_20230225_201756_580.jpg

IMG_20230225_203701_285.jpg


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png


ডিভাইসInfinix Hot 11s
বিষয়মেলা থেকে ফটোগ্রাফি
লোকেশনগাংনী- মেহেরপুর
ক্রেডিট@jannatul01
দেশবাংলাদেশ ‌


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


আমার পরিচয়

আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।


2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo1NfxyQcRUrHnbvGAuDxuMioMRjoG74XpZyTRDsUp566Bu2ZZHRsryAWmeAqnTe9T6zT4X1bZ8DTXHHYrr.png


6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে ওয়াজ মাহফিলের মেলা গুলোতে ঘোরাঘুরি করতে আমারও খুব ভালো লাগে। আজকে আপনি আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণ। আমিও আপনাদের খালাদের গ্রামের এই ওয়াজ মাহফিলে প্রায় যা আশা করি। আর সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে প্রত্যেক বছরে দুই তিনবার ওয়াজ হয়ে থাকে ওই জায়গায়।

আসলে ওয়াজ মাহফিলের মেলাগুলো অন্যরকম হয়ে থাকে।এই মেলায় দেখবেন বাইরের লোক খুব কম আসে,যেসব লোক আসে তা আমাদের আশেপাশের আত্মীয়স্বজনরাই।এই মেলাতে নারী-পুরুষ সবাই যেতে পারে।এবং সেখানে সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করতে পারে।আপনার শেয়ার করা ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে মেলায় গিয়ে আপনি খুব ভালো ইনজয় করেছেন।অনেক জায়গায় দেখা যায় এইসব মেলায় মেয়েদেরকে যেতে দেওয়া হয় না।কিন্তু আমি মনে করি এর সব মেলা সবার উপভোগ করার অধিকার আছে।

অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আমি ছোট থেকে অনেক পছন্দ করি মেলা ভ্রমণ।

এটা এখন সব জায়গা হচ্ছে। ওয়াজ মাহফিল উদ্দেশ্য থাকলেও সেটা যেন একটা মেলায় পরিণত হয়। ওয়াজ শোনার চেয়ে মেলা ঘুরতে যায় বেশি মানুষ। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে মেলাটা বেশ জমজমাট হয়ে গিয়েছে।

হ্যাঁ ওয়াজ মাহফিলের জায়গায় এখন মেলা খাওয়া-দাওয়া আড্ডাখানা