কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আমার স্মৃতিময় একটি স্কুল মাঠের ফটোগ্রাফি। অনেকদিন পর এখানে উপস্থিত হতে পেরে বেশ অনেক সুন্দর অনুভূতি খুঁজে পেয়েছিলাম। হ্যাঁ বন্ধুরা বলছিলাম চিরচেনা করমদী, গাংনী-মেহেরপুর স্কুল মাঠের কথা।
যতদিন যাই, স্মৃতিগুলো যেন তত রঙিন হয়। ফেলে আসা দিনগুলো যেন বারবার মনে পড়ে। ঠিক তেমনি গতকাল বিকেল মুহূর্তটা আমার জন্য স্মৃতিময়। অনেকদিন পর, অনেক বছর পর উপস্থিত হলাম বাবার বাড়ির পাশের গ্রাম করমদী স্কুল মাঠে। আমার চাচাতো ছোট ভাই ইয়ামিন মালয়েশিয়া প্রবাসী। সে দেখে শুনে মানান একটি মেয়ের সাথে পাশের গ্রামে বিয়ে করেছে। একটি সন্তান হওয়ার পর বিদেশে চলে যায়। কিছুদিন হলো সে বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরেছে। ভাইটাকে দেখতে যাব বলে রেডি হচ্ছি কিন্তু যাওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে সে পাশের গ্রাম শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে ফেলেছে। কালকে সুযোগ হল বাবার বাড়ি যাওয়ার। সেখানে উপস্থিত হয়ে জানতে পারলাম ইয়ামিন শ্বশুর বাড়িতে রয়েছে। হঠাৎ রাজের আব্বু বলল অনেকদিন করমদী স্কুল মাঠে যাওয়া হয়নি। সে এই মাঠ থেকে মোটরসাইকেল চালানো শিখেছিল। এটাও যেন তার জীবনের একটা বড় স্মৃতি। সেই সুবাদে চলে আসলাম করমদী বাজারে। স্কুল প্রবেশের দুইটা গেট রয়েছে। প্রথম গেটটা বাজারের দিকে। দ্বিতীয় গেটটা হাটের দিকে। আমরা হাটের দিকে আসলাম। কালকে হাটের দিন ছিল না। তাই স্থান দেখতে অনেক ফাঁকা। কিন্তু হাটের দিন এখানে পা ফেলার জায়গা থাকে না। হাজার হাজার মানুষ হয় এই হাটবাজারে। ছোটবেলায় আব্বুর সাথে বড় ভাইয়ের সাথে বড় খাওয়ার জন্য চলে আসতাম সাইকেলে চড়ে। দিনগুলো শুধু স্মৃতি হয়ে রয়েছে। তবে ছোট ভাই ছেলে সহ সবাই মিলে বাজারটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম আর ফটো ধারণ করলাম।
করমদী হাই স্কুল এর পিছন সাইডে রয়েছে ঈদগাহ ময়দান। ঈদগাহ ময়দানের কিছুটা ওপারে রয়েছে আমার চাচাতো ভাই ইয়ামিনের শ্বশুর বাড়ি। তারা এই স্কুলে লেখাপড়া করেছে। আমারও এসেছিল এই স্কুলে লেখাপড়া করার কিন্তু সম্ভব হয়নি। আমি যখন আগে আসতাম তখন ঈদগাহ ময়দান টা এভাবে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ছিল না। এখন বেশ উন্নত হয়েছে। করমদী গ্রামটা অনেক বড়। অনেকেই বলে থাকে চার-পাঁচটা গ্রামের এর সমান। এককালে শুনেছিলাম গ্রামটা ভাগ হয়ে যাবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত গ্রামটা সেই বড় রয়ে গেছে। তবে আমাদের গ্রাম এরপর মাঠের রাস্তা পার হয়ে এই গ্রাম। সোজা আসতে গ্রামের একদম মাঝখানে প্রবেশ করা যায়। এরপর ডানে-বাঁয়ে ছামনে গ্রামের বিস্তার। দেখতে থাকলাম নয়ন ভরে আবার কবে আসব তার নেই ঠিক। ছেলে ছোট ভাইয়ের হাত ধরে ঘুরতে থাকলাম এদিক ওদিক। মনে হল যেন অনেকদিন পর প্রাণ ফিরে পেয়েছি সংসার জীবন থেকে কিছুটা সময়ের জন্য মুক্তি হয়ে। আর এখান থেকে তিন চার কিলো পথ গেলেই ভারতের বর্ডার। ইচ্ছে ছিল বর্ডার এলাকা ঘুরতে যাওয়ার কিন্তু দিনকাল ছোট হয়ে যাওয়ায় ওর ছেলে ছোট ভাইয়ের সাথে থাকায় সম্ভব হয়নি।
এরপর হাটের পাশে থাকা স্কুল গেট দিয়ে প্রবেশ করলাম করমদী স্কুল মাঠে। গেটের বাম পাশে অর্থাৎ যেখানে হাট বসে সেই পাশেই রয়েছে সুন্দর একটা মসজিদ ঘর। স্কুলের ছাত্ররা হাট বাজারের মানুষেরা যেন নামাজ পড়তে পারে সেই সুবিধার্থে মসজিদটা নিকটে তৈরি করা হয়েছে শুনেছিলাম। আমরা এগিয়ে যেতে থাকলাম মাঠের দিকে। এই স্কুলে ফুটবল খেলা রানিং রয়েছে। বিভিন্ন গ্রামের মানুষ খেলতে আসে এই মাঠে। তবে আমাদের ভাগ্য ভালো কালকের দিনটাই খেলা ছিল না। কালকের দিন খেলা থাকলে হয়তো এভাবে ফটো ধারণ করতে পারতাম না আসতে পারতাম না। খেলাধুলার দিন এখানে ১০-১৫ হাজার মানুষ হয়ে যায় শুনেছি। আমার ছোট ভাইটা খেলা দেখতে আসে, তার মুখে অনেক কিছু শুনতে পারলাম।
আমি যখন হাই স্কুলে পড়তাম তখন এখানে অনেক বান্ধবীদের সাথে আমার মিল ছিল। আমার গ্রামের লাস্টের পাড়ার বান্ধবীরা এই স্কুলে পড়তে আসতো। আমিও বান্ধবীদের সাথে বেশ কিছুদিন এই স্কুলে এসেছি। তবে এই স্কুলে আমার লেখাপড়া করা হয়নি। তবুও সেসময়ের অনেক স্মৃতি রয়েছে। এখন হয়ত খোঁজ করলে সে সমস্ত বান্ধবীদের সহজে খুঁজে পাবো না কিন্তু আগের মতো সেই স্কুল, স্কুল মাঠ এখনকার ছাত্র-ছাত্রী সেভাবেই প্রতিনিয়ত আসতে যাচ্ছে লেখাপড়া শিখছে। কতটা স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই স্কুল কে কেন্দ্র করে। বাবুর হাত ধরে ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে কিছুটা সময় স্কুলের মাঠ এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম,আর ভাবতে থাকলাম। আজ থেকে ১৫ বছর আগের স্মৃতি। হয়তো আর ১৫ বছর পর বৃদ্ধ হয়ে যেতে পারি। জীবনের ভালোলাগা সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তবে এই দিনটাকে ধরে রাখার জন্যই বেশ কিছু ফটো ধারণ করতে থাকলাম। শশুরের এলাকা থেকে বাবার এলাকায় আসলে যেন অন্যরকম মুক্ত অনুভব মনের মধ্যে জেগে ওঠে। ঠিক তেমনি স্মৃতিময় এই মাঠে প্রান খুলে নিশ্বাস নিয়েছিলাম আর ভাবছিলাম অতীত কথাগুলো।
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
বিষয় | করমদী স্কুল মাঠ |
---|---|
What3words Location | Gangni-Meherpur |
মোবাইল | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
প্রথমেই বলব আপনি যে লিখেছেন তার একটা সুন্দর পাঠ সুখ আছে। গদ্যের চলনটা এত সুন্দর পুরোটাই মন দিয়ে পড়লাম এবং টেনে ও রাখল। সবশেষে এসে যখন বললেন বাবার বাড়িতে এসে অনেকটা মুক্ত বাতাস পান। আসলে তা বাবার বাড়ি বলে নয় আপনার শেকড় তাই ওখানে। যেখান থেকে আপনাকে উপরে অন্য একটা জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ শুধু আপনাকেই নয়, আমাদের সমস্ত মেয়েদেরকেই এই জায়গাটা পেতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই। স্মৃতিবিদুর অনেক কথা লিখেছেন পরে বড় ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে বলেছেন আপনি। ভালো লাগলো মন্তব্য পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
করমদী স্কুলের অনেক নাম শুনেছি কিন্তু কখনো কোনদিন সেখানে যাওয়া হয়নি। তবে আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে করমদী স্কুল দেখতে পেলাম। সেখানে আপনার বাবার অনেক স্মৃতি ধরে রয়েছে কারণ তিনি সেখান থেকেই প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখেছিল বিষয়টা যেন খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখানে আমার অনেক স্মৃতি আছে ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit