একটি বাগানের গল্প
আমার আব্বুদের গ্রামের নাম ভরাট। আমাদের বাড়িটা উত্তর ভরাটে। এটা গাংনী থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম। অতীত কাল থেকে আমার দাদারা জমিদার গোষ্ঠী। জমি জায়গার ভাগাভাগিতে আমার আব্বু রা চার ভাই বেশ অনেক জমি পেয়েছেন। হিসাবে ৩০-৩৫ বিঘা জমি করে ভাগ পেয়েছেন। বুঝতে পারছেন জমি জায়গার বিষয়টা। তবে মাঠের মাঝখানে একটি বড় বাগান রয়েছে। যে বাগানে আমার আব্বুদের চার ভাইয়ের ভাগ রয়েছে। এছাড়াও আমার অন্যান্য দাদার ছেলেদের জমি রয়েছে সেখানে। আমার দাদারাও এমন তিনটা ভাই ছিল। তাদের ছেলে মেয়ে অনেক। মূলত আমার দাদারা মিলেই গ্রাম। যাইহোক ঘটনা সেই বাগানকে কেন্দ্র করে। বাগানটা বড় অংশ কাঁঠাল বাগান শিশু বাগান আর বাঁশ বাগান। কিছু অংশ মেহগনি বাগান রয়েছে।
বর্ষার সময় এই বাগান হয়ে ওঠে বেশ ভয়ংকর। দিনের বেলায় বাগানের মধ্যে মানুষ প্রবেশ করতে ভয় পায়। বিভিন্ন গাছ বন জঙ্গলে ভরে উঠে বাগানটা। আর এখানে ভয়ংকর অনুভূতি বৃদ্ধি পায় সাপের জন্য। তাই ভুল করেও কেউ যেন বাগানে প্রবেশ করতে চায় না। যদিও বাগানে প্রবেশ করতে হয় তাহলে বন জঙ্গল জাতীয় ছোট ছোট গাছগুলো একদম বাইরে থেকে কাটতে কাটতে তারপরে যতটুকু ভেতরে যাওয়া যায়। তবে একদম ভেতরে মানুষ প্রবেশ করতে চায় না সাপের জন্য। ভেতরে বেশ কয়েক জায়গায় বড় বড় গর্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ সেই গর্তগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখে নাই। কারণ এর আগে অনেকে গল্প শুনেছে এখানে বেশ বড় সাপ দেখা যেত। সাপগুলো অজগর সাপ। অনেকে পুরনো গল্প বলে থাকেন, সাপগুলো দেখতে বেশ কুড়ি হাত পর্যন্ত লম্বা। যেহেতু বাগানটা মাঠের মাঝখানে। তাই মানুষজন কেউ সাহস করার চেষ্টা করে না।
অনেকদিন ধরে কোন প্রকার ভয়ানক আলামত খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে কেউ সেখানে যায় না ভয়ের জন্য। একদিন বেশ কিছু মানুষ বাগানের মধ্যে প্রবেশ করলেন বাঁশ কাটার উদ্দেশ্যে। সেখানে উপস্থিত হয়ে কিছুটা বন জঙ্গলের এরিয়ার মধ্যে চলে গেলেন। ভিন গ্রামের মানুষ, বন জঙ্গলে চলাচল করার অভ্যাস রয়েছে। তাই তারা সেভাবে গুরুত্ব সহকারে নেননি সাপের বিষয়টা। যে বাগানের মধ্যে তারা গেছেন লক্ষ্য করে দেখলেন বেশ বড় সাপের খোলস ছড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘ পথ জুড়ে। এমন সাপের খোলস দেখে তারা তো ভয়ে নাজেহাল অবস্থা। এরপর তারা বেশ কিছু মানুষ সাহস করে সাপের এই খোলস দেখতে থাকলেন। তারা দেখে যা তথ্য প্রদান করেছেন, তা থেকে জানা যায় বেশ বড় বড় কিছু গর্ত রয়েছে। একদম গর্তের পাশ থেকে শুরু করে দীর্ঘ 15-20 হাত পর্যন্ত সেই সাপের খোলস পড়ে রয়েছে। আর সাপের খোলস এতটাই মোটা যে প্রায় এক হাত পর্যন্ত পরিসর হবে। এতে বোঝা যাচ্ছে অবশ্যই এখানে ভয়ানক সব রয়েছে। এরপর থেকে গ্রামে অনেক জানাজানি হয়ে গেল এই বিষয়ে।
তাই এখন পর্যন্ত আর মানুষজন সেখানে সেভাবে প্রবেশ করতে চায় না। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন জঙ্গল রয়েছে। কিন্তু এভাবে ভয়ানক বন জঙ্গল খুব কম রয়েছে। যদিও আগের চেয়ে বন জঙ্গল কমে গেছে। আলামত পাওয়া কয়েক বছর হয়ে গেল। বিশেষ করে গ্রামীন পর্যায়ে তো এমন ভয়ানক জঙ্গলের কথা শোনা যায় না। আমাদের সেখানে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বাইরে কোন সাপ এসে সমস্যা সৃষ্টি করেনি। তবে দাদাদের মুখে যেটা শোনা যেত সেটা এখন যেন বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে এবং বেশ ভয়ের কারণ বোঝা যাচ্ছে। এখনকার মানুষেরা কিছু মনে করত না। কিন্তু এই সাপের খোলসের কথা শোনার পর থেকে অনেকটা সজাগ হয়ে গেছে। অনেকেই বাগান থেকে চুরি করে বাস কাটতে যেত। বাগানে অনেক বাস চুরি হতো। ফলের সময় বাগানে বিভিন্ন রকমের ফল চুরি হতো। এখন সেগুলো কমে গেছে সেই বাগানে।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | গল্প |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
W3w location | source |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
X--promotion
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকের কাজ সম্পন্ন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভয়ংকর সাপের গল্প শুনলাম। গভীর বাগান তাই সাপ নিরাপদে বাস করে সেখানে আর বাঁশ কাটতে গিয়ে লোক গুলো সাপের খোলস দেখতে পেরেছেন এবং তা জেনে অন্যরাও সজাক হয়েছে। চুরি কমে গেছে এই ঘটনার পর থেকে জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিষয় অনেক ভয়ানক। তাইতো আব্বুকে সাবধানে চলতে বলে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit