কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম আমাদের প্রিয় খালাতো ডাক্তার ভাইয়ের বিবাহ উপলক্ষে আমার অনুভূতিমূলক পোস্ট। আমি বেশ কিছু পর্বে নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব,ভাইয়ার বিবাহর বিস্তারিত অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। আজকে আমি হামজা ভাইয়ের বিবাহের তৃতীয় পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। এই পর্বে পাত্রীর মায়ের সাড়ে কেনার অনুভূতি শেয়ার করা হবে। যেখানে থাকবে আনন্দ মুখর পরিবেশ ও হাস্যকর কিছু কথাবার্তা। আর এরই মধ্য দিয়ে ছিল কেনাকাটার অনুভূতি।
ডাক্তার হামজা ভাইয়ার বিবাহ উপলক্ষে বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়েছিলাম বামুন্দি বাজারে। বামুন্দি বাজারে ভাইয়ার পরিচিত একটি দোকান রয়েছে। পাশাপাশি আরো অনেকগুলো দোকান। তাই ভাইয়া বলেছিল সেই দোকান থেকে সুলভ মূল্যে জিনিস নিতে পারব আর তারাই অন্যান্য জিনিস গুলো ম্যানেজ করে দিতে পারবে খুব সহজে। তাই আমরা সবাই মিলে বামুনদি বাজারের সেই দোকানে উপস্থিত হয়। দ্বিতীয় পর্বে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি বিবাহের শাড়ি কেনার অনুভূতি। আজকে হামজা ভাইয়া তার শাশুড়ি জন্য যে সাড়ে চয়েজ করছিল সেই বিষয়টা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে এলাম। অনেক বিয়ের অনুষ্ঠানে পাত্রীপক্ষের জন্য বর পক্ষের কোন কিছুই দিতে হয় না। যা কিছু পত্রীর জন্য দেওয়া হয় বিয়ের পরে বাসা থেকেই। আবার অনেক জায়গায় লক্ষ্য করে দেখেছি বিয়ের আগেই পাত্রীপক্ষর জন্য পাত্রীর জন্য অনেক কিছু কেনাকাটা করে বিয়ের আসরে অথবা বিয়ের দু পাঁচ দিন আগেই দিয়ে দেন। তবে এই সমস্ত বিষয়গুলো নির্ভর করে উভয় পক্ষের আলোচনার উপর। তবে সব ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় বরপক্ষ যায় কেনাকাটা করে থাকে সেটা পাত্রীর জন্য। কিন্তু পাত্রীর ভাই ভাবি মায়ের জন্য কেনাকাটা করতে হয় এটা আমার কাছে একটু বেশি বেশি মনে হচ্ছিল। কিন্তু কি আর করার ভাইয়া তো কিনে দেবে যেহেতু ক্যাশ নিয়ে এসেছে সত্তর হাজার টাকা। আমরা শুধু চয়েজ করতে থাকলাম আর দেখতে থাকলাম। কিন্তু বেশ আনন্দের উল্লাসে কেনাকাটা করছিলেন ডাক্তার ভাই নিজে। তিনি শখ করে তার হবু শাশুড়ি আম্মার জন্য শাড়ি কিনতে চাচ্ছেন মাঝখানে আমরা কেন না করবে। শুরু হল বয়স্ক মহিলাদের শাড়ি বের করা।
একটার পর একটা শাড়ি বের করতে রয়েছেন দোকানের ছেলেটা। আর এদিকে হামজা ভাইয়া শাড়িগুলো হাত দিয়ে দেখতে আছেন এবং কোন কোম্পানির কোন সুতার কেমন টেক্সই এই সমস্ত বিষয় নিয়ে শাড়িগুলো দেখতে আছেন এবং জানতে আছেন অর্থাৎ যাচাই-বাছাই করছেন নিজের মত করে। এদিকে আমরাও আমাদের মত একটু দেখার চেষ্টা করলাম। এখন বয়স্ক মহিলাদের কেমন শাড়ি তিনি দিবেন সেটা নিজেই বুঝছি না তিনি কত দামের দিবেন সেটাও বুঝছি না। শুধু ভাইয়াকে প্রশ্ন করলাম আপনার শাশুড়িকে যে শাড়িটা দিবেন কোন মূল্যের মধ্যে দিবেন যদি একটু বলতেন তাহলে শাড়িগুলোর মূল্য জেনেই যাচাই-বাছাই করতাম। তিনি আনন্দ উল্লাসে বলে বসলেন প্রথম শাশুড়িকে শাড়ি দিতে চলেছি হাজার টাকার নিচে দিলে হবে। দেখলাম বড়লোক মানুষ হাজার টাকার উপরে শাশুড়ির শাড়ি কিনে দিবেন তাই সে পর্যায়ের শাড়ি গুলো দেখতে থাকলাম এবং সেই ছেলেটা বের করে দেখাতে থাকলো। তবে এখানে প্রিন্টের শাড়িগুলো আমার কাছে বেশ ভালো লাগছিল কিন্তু গ্যারান্টি নাই রঙ থাকবে না কি উঠবে। দোকানের সেই ছেলেটা বলতে পারল না এই শাড়িগুলোর আয়ু-কাল কেমন হবে। এদিকে সুমন ভাইয়া তো সেভাবেই প্রস্তুত রয়েছেন। বললেন বিয়ের অনুষ্ঠানে আপনার শাশুড়ি যদি জামাইয়ের দেওয়া নতুন শাড়ি পড়ে তাহলে ৩০ বছর বয়সী মেয়েরা যে সমস্ত শাড়িগুলো পড়ে সেই শাড়ি একটা কিনে দেন। যেন মাওয়কে দেখতে একটু ভালো লাগে। মেয়ের বিয়ে বলে কথা। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে যদি আপনার শাশুড়ি সুন্দর শাড়ি পড়ে তাহলে আপনার শ্বশুর আপনার শাশুড়ির প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি করতে পারে। আসলে বিয়ের অনুষ্ঠানের কেনাকাটা বলে কথা হাসি আনন্দ টিটকারি মশকরা এ সমস্ত কথা তো থাকবেই।
এদিকে হামজা ভাইয়া মনের মত শাড়ি খুঁজে চলছেন কেমন শাড়ি তার শাশুড়ি আম্মার জন্য মানাবে। হামজা ভাইয়া বলল আমি আমার হবু শাশুড়িকে মনে মনে চোখে ভাষাচ্ছিলাম এবং সেই রকমের শাড়ি খুঁজছি যেটা মানাবে। তখন সুমন ভাইয়া বলল আমরা তো আপনার শাশুড়িকে দেখি নাই, তাহলে কেমনটা মানাবে সেটাও তো জানিনা, আপনি চেঞ্জ করতে থাকেন। ভাইয়া বলোনা ভালোলাগার শাড়িতে তোমরা একটু দেখে দিতে পারো। তখন সুমন ভাইয়া বলল আপনি না আপনার শালার বউয়ের জন্য সেলোয়ার কামিজ নিবেন। ডাক্তার ভাইয়া বলল হ্যাঁ তার জন্য নিতে হবে। তখন ভাইয়া বলল আমি তার জন্য সে সমস্ত থ্রি পিস গুলা একটু চার্জ করি, এটাই মনে হয় আমার বেটার হয়। তখন হামজা ভাই আর কি বলবেন, বললেন তোমার ইচ্ছা। হামজা ভাইয়ার এই শাড়ি পছন্দ হলো। এরপর ফোন দিয়ে মেয়ের বড় বোনকে দেখানোর চেষ্টা করল শাশুড়ির গায়ে এই শাড়িটা মান। কিন্তু তারা এমন কালারের শাড়ি পছন্দ করলেন না। উনারা বললেন একটু সবুজ টাইপের প্রিন্টের শাড়ি হলে বেশি ভালো হয়। আমি তো ভেবেই অবাক। সে শাশুড়ির জন্য শাড়ি কিনবে নিজের মতো কিনে নিয়ে যাবে, এই বলে তাদের কাছে ফোন দিয়ে জানা লাগবে দেখানো লাগবে। তারা যদি কেনাকাটার বিষয়গুলো চয়েস করে, তাহলে আমরা সাথে আসার প্রয়োজন কি? তবে মনকে একটু সান্ত্বনা দিলাম, ফটোগ্রাফি তো করতে পারছি আনন্দ তো হচ্ছেই।
একটা সময় হামজা ভাইয়া চয়েজ করে ফেললেন তার শাশুড়ির জন্য একটি শাড়ি। যার মূল্য ১৯০০ টাকা পড়লো। শাড়িটার ফটো ধারণ করতে ভুলে গেলাম। কারণ বুঝতেই পারছেন একদিকে তাড়াহুড়ো আরেকদিকে অনেক কিছু কেনাকাটা। কখন কোনটা ফটো ধারণ করছি তার নাই ঠিক। আমরা শুধু দেখতেই থাকলাম যে ভাই আর ভাললাগা। তবে এর মধ্য থেকে হঠাৎ সুমন ভাইয়া আবার বলে বসলেন শাশুড়িকে দরদ করে 1900 টাকার শাড়ি কিনে দিচ্ছেন, শশুর কেউ তো কিছু দেওয়া লাগবে নাকি। দেখেন এখানে দামী দামী লুঙ্গি রয়েছে। সেন্টু গেঞ্জি রয়েছে। কিন্তু হামজা ভাইয়া বললেন শাশুড়িকে দিলেই ওকে। শশুরের চিন্তা পরে করা যাবে। তখন সুমন ভাইয়া হাস্যকর ভাবে একটা কথা বলল কান টানলে মাথা আসে তাই না। শাশুড়িকে খুশি করালে পরেই সবকিছু ওকে। তখন আমি আর কি বলবো আমি একটা কথাই বললাম ভাইয়া শাশুড়িকে দিচ্ছে যেন বিয়ের পরে শাশুড়ির হাতে ভালো খেতে পারে। ভাইয়ার শশুর তো রান্না করে খাওয়াবে না ভাইয়াকে, তাই শশুরের জন্য কোন কিছু নিচ্ছে না এখন। ভাইয়া বলল যা বলবা বলো মেয়ের জন্য এক্সট্রা শাড়ি নিতে হবে সেটা দেখতে হবে। তখন বললাম এক্সট্রা শাড়ি আর এখন কি হবে। ভাইয়া বলল বিয়ের শাড়ি চেঞ্জ করে এক্সট্রা শাড়ি পরবেনা। তখন বললাম ও তাও তো ঠিক কথা। তাহলে মেয়ের জন্য এক্সট্রা শাড়ি দেখা শুরু হোক। বিয়ের কনের জন্য এক্সট্রা শাড়ি কেনার অনুভূতি পরবর্তী পর্বে নিয়ে উপস্থিত হব।
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
বিষয় | হামজা ভাইয়ের বিয়ে |
---|---|
What3words Location | Gangni-Meherpur |
মোবাইল | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর নার্সিং কোর্স করে বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
আপনি হামজা ভাইয়ের বিয়ের কেনাকাটা নিয়ে তৃতীয় পর্ব শেয়ার করলেন। যদিও প্রথম পর্ব পড়েছিলাম কিন্তু দ্বিতীয় পর্ব পড়িনি। তৃতীয় পর্ব পড়ে বেশ ভালো লাগলো। যেহেতু কনের পক্ষের জন্য কাপড় কিনতেছে একটু ভালো মানের কাপড় কিনতে হবে। হামজা ভাই সেই জন্য যাচাই বাছাই করে কাপড় কিনেছিলেন। খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করলেন পড়ে বেশ ভালো লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুযোগ করে পড়ে নেবেন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit