আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম
Photography device: Infinix Hot 11s-50mp
ছোটবেলায় গ্রামে বেড়ে উঠেছে কিন্তু কুকুর বা কুত্তার দৌড়ানি খায় নাই এমন মহান বীরপুরুষ খুব কম রয়েছে। কারণ কুত্তার তাড়া খাওয়ার অভিজ্ঞতা কমবেশি থেকেই থাকে গ্রামের মানুষের। ঠিক তেমনি একটা অভিজ্ঞতা আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি। আমরা সবাই জানি শীতের সময় কুত্তার বাচ্চা ওঠে। আর এই মুহূর্তে ধাড়ী কুত্তা গুলা খুব ক্ষেপে ওঠে গ্রামে গ্রামে। আর এমন মুহূর্তে পথ চলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আরো সমস্যা সৃষ্টি হয় এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে বা এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ার স্কুলে যেতে। ঠিক এমনই একটা ঘটনা আমার জীবনে।
আমি এবং আমাদের কয়েকজন বান্ধবী একদিন আমাদের স্কুলে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে লক্ষ্য করে দেখেছিলাম রাস্তায় একটা মাত্র কুত্তা দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমরা তেমন কিছু মনে না করে আমাদের মতো গল্প করতে করতে চলেছি। এবার যেতে যেতে কুত্তাটার নিকটে হলাম আমরা। কোন কথা নেই বাত্রা নেই হঠাৎ কুত্তা ডেকে ওঠা শুরু করল। প্রথমত চমকে উঠলাম এরপর কিছু মনে করলাম না। পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক ছিল। আমরা পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছি। ঠিক এই মুহূর্তে ওই কুত্তার ডাক শুনে আরো বেশ কিছু কুত্তা পাড়া গায়ের মধ্যে থেকে বের হয়ে আসলো। তখন আমরা বেশ ভয় পেয়ে গেলাম। এরপর আমরা দ্রুত হাঁটতে থাকলাম। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম তার মধ্য থেকে একটা কুকুর আমাদের পান ঘেউ ঘেউ করতে করতে দৌড়ে আসছে। প্রত্যেকদিন একই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি কোনদিনই এমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ এ সমস্ত কুত্তা কোথা থেকে আসলো বুঝতে পারলাম না। কুত্তা যত দৌড়ে আসছে আমাদের বান্ধবীরা তো ততই ভয় পেয়ে দৌড়ানো শুরু করলো। একসাথে আমরা সবাই ভয়ে দৌড়াতে থাকলাম। খেয়াল করে দেখলাম ওই সমস্ত কুত্তা গুলা যারা জায়গামতো দাঁড়িয়েছিল, তারাও পিছু পিছু দৌড়ানো শুরু করলো আর ঘেউ করতে থাকলে।
পাড়াগায়ে এমন কুকুর থাকা খুবই রিক্স। দৌড়াতে গিয়ে আমার একটা বান্ধবী পড়ে গেল রাস্তার সানের উপর। আর অমনি পিছনে ছুটে আসা কুকুরটা হঠাৎ তার পায়ে কামড় বসিয়ে দিল। আমরা তো ভয়ে আতঙ্কে দিশেহারা। না পারছি দৌড়ে পালিয়ে যেতে, না পারছি তাকে ফেলে যেতে। আর ওই মুহূর্তে পড়ে যাওয়া বান্ধবী হাউমাউ করে কেঁদে উঠছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে সে জায়গাটায় কোন ঘরবাড়ি ছিল না লম্বা একটি রাস্তার পাশ দিয়ে বাঁশের বাগান। এমন দৃশ্য দূরে একজন দেখেছিল। সেই মহান ব্যক্তিটা সেইখান থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে আসছিলেন একটা নড়ি হাতে। উনি জোরে চিৎকার করে সেই সেই করছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে আমার বান্ধবীর পায়ে কুত্তায় কামড় বসিয়ে একটু সাইডে হেঁটে দাঁড়িয়েছেন।
এরপর সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেল। আমার বান্ধবী তো ভয়ে আতঙ্কে কানতে কানতে একদম অজ্ঞান হয়ে যাবে এমন অবস্থা। আমাদের সবার কিন্তু খুব ভয় লাগছিল এবং হাত-পা কাঁপছিল। আমরা খুব হাসিখুশি ভাবে রাস্তায় চলছিলাম। খুব আনন্দের সাথে স্কুলের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পথে মধ্যে হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটবে কখনোই ভাবি নি। আর তারপর থেকে আমাদের বেশ ভয় লেগে গেল। এরপর গ্রামের বেশ কিছু মানুষ উদ্যোগ নিল পাড়াগাঁয়ে কুকুর রাখবে না। মানুষ কামড়ানো কুকুর যার বাড়িতে আছে বা পাড়ায় থাকুক মেরে ফেলা হবে। তবে জানতে পারা গেছিল ওই পুকুরটা একজন মানুষের বাড়ির পোষ মানা কুকুর। উনি কিছুতেই কুকুরটা মারতে দিচ্ছিলেন না। কিন্তু পাড়ার মানুষটা প্রতিবাদ করেছিল কুকুরের উপর এত যদি অধিকার ফলাও তাহলে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দেওয়া লাগবে। তখন সে বাড়িওয়ালারা তেমন কিছু আর বলছিল না। কারণ সবাই তাকে বুঝিয়েছিল এত মানুষ কামড়ানো বেয়াদব কুকুর। ভালো পুকুর হলে তো কেউ মারতে চাইবে না। তখন উনি বলেছিলেন ১০ জনে যা বলে তাতেই আমি রাজি। এরপর আস্তে আস্তে পাড়াগা থেকে কুকুরগুলো খুব দ্রুত দূর করা হলো।
এদিকে একদিন এই বিষয়ে পাড়ায় যেমন মিটিং হল, স্কুলেও মিটিং হল। সবাই মিটিং করেছিল কোন স্টুডেন্ট যেন একলা একলা রাস্তা দিয়ে পথ না চলে। বাড়িতে সবাই এই বিষয়ে যেন সজাগ থাকে। সবাই সবার ছোট ভাই বোনের প্রতি যেন খেয়াল রাখে। যারা ছোট স্টুডেন্ট রয়েছে তাদের অভিভাবকরা যেন সাথে করে নিয়ে আসে। আসার সময় যেন সবাই একসাথে যাওয়া আসা করে, ছুটি হওয়ার সময় অথবা স্কুলে আসার সময় চারিদিকে খেয়াল রেখে চলতে হবে। কারণ এমন কুকুর গুলা যে কোন মুহূর্তে মানুষের ক্ষতি করতে পারে। আর শীতের সময় নতুন স্কুল খুলে, তাই স্কুল ক্লাস করার জন্য প্রাইভেট পড়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রী একা একাই চলাচল করে থাকে। তবে শিক্ষকেরা পরামর্শ দিয়েছিল তোমরা খুব সাবধানে চলাচল করবে শীতের সকালে কুয়াশার সময়ও সাবধানে চলবে। অর্থাৎ একজনার কুকুরে কামড়ানো থেকে বড় আকারে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেছিলেন শিক্ষকেরা। আর সেই থেকে বেশ সাবধানতা অবলম্বন করেছিলাম।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | অতীত ঘটনা |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
খুব ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন দেখছি।কুকুরকে আমি ভীষণ ভয় পাই কুকুরের ধারের কাছে দিয়ে হাটতাম না তবে আমাদের বারিতে অনেক পোষ্য কুকুর ছিলো আমাদেরকে কিছু করতো না বাইরের মানুষ কে কামড়ে দিতো পরে মেরে ফেলেছে কুকুর গুলোকে মানুষ জন।আপনার বান্ধবীকে কামড়ে দিয়েছে কুকুর জেনে খুব খারাপ লাগলো।ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু এমন সমস্যা হয় অনেক সময়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit