পুকুর থেকে মাছ ধরা ও সবজি সংরক্ষণ করার মুহূর্ত

in hive-129948 •  last month 


আসসালামু আলাইকুম


কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। দৈনন্দিন জীবনে আমরা কোন না কোন ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে পার করে থাকি। সেক্ষেত্রে মেয়েদের গৃহস্থলীর কাজ গুলো একটু বেশি থাকে। পরিবারের কাজ সামলিয়ে যখন বাইরের পরিবেশে একটু প্রয়োজন অথবা অপ্রয়োজনে উপস্থিত হতে পারলে অনেকটা ভালো লাগে। ঠিক তেমনি ভালোলাগার একটি লাইফ স্টাইল পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হলাম আপনাদের মাঝে। আজকের এই পোস্টে আমি পুকুরপাড় থেকে মাছ ধরার মুহূর্ত আর সবজি সংরক্ষণের মুহূর্ত শেয়ার করব।

Collage_20250131_223542.jpg


সময় সুযোগ করে আমরা মাঠের প্রথম পুকুরটাতে উপস্থিত হয়েছিলাম। রাস্তা থেকে নেমেই একটি বাগান। বাগানটা পার হওয়া মাত্রই পুকুরটা। মাছ ধরার জন্য রাজের আব্বু জাল নিয়ে প্রস্তুত। শীতের সময়। বড়শিতে মাছ উঠতে চায় না। আবার পুকুরের মধ্যে নেমে মাছ ধরাও তাদের জন্য কঠিন। তাই উপর থেকে যতটুকু সম্ভব জালে মাছ ধরে। প্রথমে পুকুরে খাবার দিয়ে একটু থেমে থাকলো। এরপর জালটা পরিষ্কার করে নিয়ে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিল। এদিকে আমিও প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম ফটো ধারণ করার জন্য আর মাছ দেখার জন্য। ততক্ষণে বেশ কয়েকজন মাছ ধরা দেখতে উপস্থিত হলো। মূলত তারা পাখি ধরার জন্য এসেছিল। গ্রামের কিছু ছেলেরা থাকে যারা পাখি ধরার জন্য আমাদের পুকুরের এদিকে ঘোরাফেরা করে জানি। তবে যারা রাজের আব্বুর স্টুডেন্ট, তারা রাজের আব্বুকে দেখে দূর থেকে সরে যায়। যাই হোক, তাদেরকে বেশি নিষেধ করে দিল যেন পাখি হত্যা না করে। এরপর তারা কিছুটা সময় আমাদের মাছ ধরা দেখে সরে গেল।

IMG_20250125_141153.jpg

IMG_20250125_141219.jpg

IMG_20250125_141330.jpg


এরপর পুকুরে যখন প্রথম জাল ফেললো, মাছ জোরে জোরে নড়তে থাকে। তখন অনুমান করা গেল জালের মধ্যে অনেক মাছ উঠেছে। এইতো কিছুদিন আগে এই পুকুরে পাঙ্গাস মাছ বিক্রয় করা হলো। আমি আর আমার রাজ বাবুও উপস্থিত ছিলাম সাথে। জেলেরা আফসোস করছিল তাদের বড় জালে তেলাপিয়া মাছ ধরা পড়ছিল না তাই। কিন্তু আমাদের এই দিন প্রথম জাল খেলাতে এত বেশি তেলাপিয়া মাছ উঠেছে, দেখে ভাবতে অবাক লাগছিল। রাজের আব্বু বারবার বলতে থাকলো, পুকুরটাতে অনেক পানি রয়েছে এই জন্য তেলাপিয়া মাছ জেলেদের জালে উঠে নাই। আর এখন খাবার দিয়েছি, তাই তেলাপিয়া মাছ জায়গা মত গুছিয়ে রয়েছে। তবে যাই হোক প্রথম জালেই অনেকগুলো মাছ উঠে পড়েছে। এই দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো। বলতে গেলে যতটুকু মাছ প্রয়োজন প্রথম জাল ফেলাতে হয়ে গেছে। তাই দ্বিতীয়বারের জন্য আর জাল ফেলার প্রয়োজন মনে করল না। খাওয়ার মত বড় সাইজের তেলাপিয়া মাছগুলো রেখে, ছোটগুলো ছেড়ে দেওয়া হলো। কতক্ষণে আমি দূরে একটি সাপ লক্ষ্য করলাম। একটি গাছের ডালের উপর সাপটা উঠে শুয়ে রয়েছে। মনে হল ঠান্ডা পানির জন্য সাপটা গাছের ডালে শুয়ে রয়েছে। আপনাকে আমি ক্যামেরা বন্দি করার চেষ্টা করলাম। ক্যামেরা জুম করেছি ঠিকই কিন্তু সাপটা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকায় ভালোভাবে স্পষ্ট কভার করতে পারলাম না।

IMG_20250125_141414.jpg

IMG_20250125_141546.jpg

IMG_20250125_142213.jpg


এরপর পুকুরের পাশে থাকা আমাদের একটি সবজি বাগানের পাশে উপস্থিত হলাম। এই সবজি বাগানটা ছোট। এটা দুইটা পুকুরে মাঝখানের অংশ। পুকুর পাড়টা, এপাশে ওপাশে তার জাল দিয়ে ঘিরে এমন সুন্দর একটি বান তৈরি করেছে তারা দুই ভাই। আমার জন্মে কোনদিন এমন সবজি বান দেখি নাই। আগে বাসের খুঁটি ব্যবহার করত এখন সিমেন্টের খুঁটি। একবারে খুটি তৈরি করে ফেলেছে, যেন পোকাতে নষ্ট না করতে পারে। বলতে গেলে একটি স্মার্ট শিমের বান। গাছে দেখতে পারলাম অনেক শিম ধরেছে। কিন্তু বাগানটার প্রবেশ পথ খুবই চিকন।

IMG_20250125_150418.jpg

IMG_20250125_150419.jpg

IMG_20250125_150536.jpg

IMG_20250125_150618.jpg


এরপর আমরা দুইজন মিলে বাগান থেকে শিম সংরক্ষণ করলাম। আমাদের শিম গাছে অনেক অনেক শিম ধরেছে। তবে এখানে আপনারা যে শিম গাছ দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে এর পাঁচ গুণ বেশি শিমের গাছে রয়েছে। যতটা অনুমান করা হয় টোটাল এ সব সিম গাছে 10 থেকে 15 মন শিম হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এবার কিন্তু শিমের কোন দাম নেই। এবার বাড়িতে গরু ছাগল নেই। একটা মাত্র ছাগল রয়েছে। জানিনা এত শিম কি করবে তারা। বাজারে বিক্রয় করবে নাকি ছাগলের খাওয়াবে নাকি আত্মীয়-স্বজনকে দিবে। তবে আমি এটা নিশ্চিত এবার অনেক শিমের বিচি খেতে পারব। শিমের বিচি আমার অনেক ভালো লাগে। আমরা বেশিক্ষণ অবস্থান করলাম না। কারণ বাসায় এসে মাছ কুটতে হবে। যাইহোক এভাবে মাছ ধরা আর শিম সংরক্ষণ করে আমরা বাসায় চলে আসলাম। আর এভাবেই একটি দিন দুপুরবেলায় আমরা পুকুরে অবস্থান করেছিলাম মাছ ধরা ও শিম সংরক্ষণ করার জন্য।

IMG_20250125_150719.jpg

IMG_20250125_150746_1.jpg


ধন্যবাদ সকলকে


পোস্ট এর বিবরণ


বিষয়লাইফ স্টাইল
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
মোবাইলHuawei P30 Pro-40mp
ক্রেডিট@jannatul01
ব্লগারআমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
দেশবাংলাদেশ


আমার পরিচয়


আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান শশুর শাশুড়ি দেবর জা সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeJJwaZsefPk1zN6fEAs7MdkdJfudjGmTTgEGoGzxsz4JfVM6eKjD5LC9K3xQyuVYFwkWACxsp.png

2bP4pJr4wVimqCWjYimXJe2cnCgn9g1JDeoTfLth3BC.png



45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZyma4eKWYzoMYQF2sEhLkxRzLu1M9TaUsHgWVGzELhRqEpbAdCMTzTLW62muxDKGf7eH6PdieVCDGGkvBNxUzCZ9HoshiwuuYGCrfVat8Bh5JHQ9et49W37shJsPdjt421y63cEZRdTBd16tvSNhfVsKTSB3TLwohrXnk9B1fKwaYY5hXjmidJBH822xdaZV696yLht8RmhH1i.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আজকের কাজ সম্পন্ন

Screenshot_20250131_184102.jpg

Screenshot_20250131_183902_com.twitter.android.jpg

Screenshot_20250131_182755.jpg

অনেক ভালো লাগলো আপনাদের মাছ ধরার মুহূর্ত দেখে। শীতের সময় জালে মাছ উঠতে চাই কম। আসলে মাছ খাবার খাওয়ার জায়গায় থাকে না এইজন্য একটু খাবার খেলে কিছুটা সময় অপেক্ষা করলে মাছ বেশি ওঠে। অনেক ভালো লাগলো পুকুরপাড়ে মাছ ধরা আর সবজি বাগান ভিজিট করতে দেখে।

ধন্যবাদ ভাইয়া

আরে বাহ পছন্দের এতগুলো মাছ জালের মধ্যে দেখতে পেরে নিজের কাছে কি যে ভালো লাগতেছে আমার!তেলাপিয়া মাছ আমার ভীষণ পছন্দের। তবে ভাইয়া দেখতেছি হেবি জাল মিলতে পারে। আপনাদের সিম গাছেরও তো দেখতেছি অনেক সিম হয়েছে। ১০ থেকে ১৫ মন তার মানে তো অনেকগুলো সিম। যদিও বাজার নেই সিমের এখন। তবে এলাকাবাসীকে দিয়ে দিবেন সকলে মিলে ভাগ করে খাবেন। মাছ ধরা এবং সিম সংগ্রহ করার অনুভূতি আপনার পোস্টে জানতে পেরে ভালোই লাগলো,ধন্যবাদ।

সেটাই করতে হবে।