জেনারেল রাইটিং || একরোখা ও জেদী মনোভব ক্ষতির অন্যতম কারণ

in hive-129948 •  6 months ago 


আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম

জেনারেল রাইটিং পোস্ট




সমাজে এমন কিছু লোক চোখে পড়ে যারা একরোখা ও জেদী। এই সমস্ত মানুষগুলো নিজেরাও ধ্বংস হয় আবার অন্যদের ধ্বংস করে। তবে এই সমস্ত ব্যক্তিদের চেনার উপায়। তারা প্রথমত নিজে যেটা বোঝে সেটাই, ভালো-মন্দ আর বোঝার চেষ্টা করেনা। আর আপনি সঠিক বিষয়টা যদি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন, সে যদি অন্য কোন কিছু বুঝে থাকে তার নিজেরটাই আপনাকে উল্টা বুঝানোর চেষ্টা করবে কিন্তু সঠিক টা বোঝার চেষ্টা করবে না। আপনি যখন ভাল পথ দেখাবেন সে খারাপ পথ ভালো ভেবে বসে থাকলে আপনার কথা কর্ণপাত করবে না। এমনকি আপনি যতই বোঝান না কেন উলটা আপনার প্রতি আরো রাগ দেখাবে। বিবেক করে বোঝার চেষ্টা করবে না বা একটু জানার চেষ্টা করবে না। ঠিক এমনই জেদী টাইপের মানুষ সমাজে অনেক রয়েছে। আর এই সমস্ত মানুষদের আমি অনেক অকল্যাণ দেখেছি।


IMG_20240401_173118_515.jpg


ঠিক এমনই একজন মানুষের কথা বলি। আমি তাকে দেখেছি ১০ জন মানুষ তাকে যা বুঝাতো খুব সহজে বুঝে যেত। আবার ১০ জন মানুষ তাকে যা বুঝাতো যখন বুঝতে চাইতো না, ভুল করেও আর বুঝার চেষ্টা করতে না। অর্থাৎ তার মধ্যে রয়েছে এক রখা মনোভাব। আর এই মনোভাব গুলো বংশ-পরম্পরায় হয়ে থাকে। যেই মেয়ে মানুষটার কথা বলছিলাম তার বিয়ে হল। স্বামীর সংসারে গেল। প্রথম প্রথম খুব সুন্দর তাদের জীবন যাপন চলতে থাকলো। কিন্তু সুন্দর কতটা বাইরের প্রকাশ পেল না। কারণ তার স্বামী ছিল বেশ ভালো মানুষ, তার খারাপ আচরণ গুলো বাইরে প্রচার করত না কারণ তার ওয়াইফে। উনি ভালো করে জানতেন বউয়ের খারাপ আচরণ বাইরের মানুষকে বলাটা ঠিক হবে না। কিন্তু যখন তিনি অতিষ্ঠ হয়ে পড়লেন, তারপর আস্তে আস্তে বিস্তারিত মানুষদের মাঝে ছড়াতে থাকলে। ভালো-মন্দ বিষয়গুলো কখনোই বুঝতে চাইত না। নিজেই বুঝ নিজে বুঝতো আর তার মা যা বলতো সেটাই তার কাছে শ্রেষ্ঠ কথা মনে হতো।



IMG_20240501_080740_861.jpg

এদিকে জামাই অতিষ্ঠ হয়ে একদিন এই সমস্ত বিষয়ে তার শ্বশুরবাড়ির মানুষের সাথে বলার চেষ্টা করল। কিন্তু দেখা গেল জামাইয়ের কথায় কোন্নপাত করত না তার শাশুড়ি। এরপর বুঝা গেল আস্তে আস্তে শাশুড়ির কথা মত তার বউ ওঠাবসা করে। জামাই বলেছিলেন মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পরে যদি মেয়ে জামাইকে পরিচালনা করতেই হয় তাহলে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার দরকার কি ছিল। মেয়ে বিয়ে দেওয়ার পর তাকে পরিচালনা করবে তার হাজবেন্ড। স্বামী স্ত্রীর উভয়ে মিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের সংসার গোসাবে। এর মাঝখানে যদি শাশুড়িরা বেশি কথা বলে তাহলে তো সমস্যা। ঠিক বিভিন্ন কারণে-অকারণে মেয়েটা তার হাজবেন্ডের সাথে এক রখা পরিচয় দিতে থাকে। জামাইটা একদিন নির্জনে তার শ্বশুরের সাথে এই বিষয়ে অনেক কথা বলল। পরবর্তীতে জামাই জানতে পারলো তার শাশুড়ি এমন। শশুরকে প্রচন্ড জ্বালাতন করে। তাই শশুর তার হাত ধরে অনুরোধ করে বলেছিল আমার মত যদি ধৈর্য ধরো তাহলে আমি খুশি হব। আমি জানি তুমি ভুল করবে না সব সময় আমি তোমাকে সাপোর্ট দিয়ে কথা বলবো। কিন্তু ছেলেটাও তো মানুষ। কারো তো মা বাবার সংসার রয়েছে। এমন একটা মুহূর্তে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হলো। অনেক পরে মেয়েটাই বুঝতে পারলো ভুল তার ছিল, কিন্তু তার মা বুঝতে পারল না। সে তার মেয়েকে সবসময় সান্ত্বনা দিত এবং একরখা মনোভাব বাড়িয়ে তুলত। মেয়ের বিচ্ছেদে মে নিজেদের ক্ষতি হয়েছে, সেটা যেন ক্ষতি নয়।

ঠিক এমনই একরোখা অনেক মানুষ এর ঘটনা আমার জানা। এর কারণে অনেক মানুষের পরিবার ভেঙে যায়। নিজের পরিবার ভেঙে যাওয়া, নিজের ধ্বংস নেমে আসা, কুত্তার মতো বাবার বাড়িতে জীবন যাপন করা সবকিছুই সইতে পারে কিন্তু এটা ছাড়তে পারে না। শুধু মেয়েরা নয় এমন ছেলে মানুষের অনেক জেদী স্বভাব শুনেছি। আমাদের একটা ভাই ছিলেন। তার বাবা মা তার ভালোর জন্য লেখাপড়া শেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উনি ভুল করেও লেখাপড়া ধারে কাছে আসছেন না। উনি লেখাপড়া থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারলে খুশি হত। কিন্তু তার সময় বয়সীরা এখন অনেকের চাকরি বাকরি করে। অনেকে ডিফেন্সের চাকরি করে। দেখা যায় সে সমস্ত চাকরিজীবী মানুষদের চেয়ে ইনি বেশি ফিটনেস ছিলেন। সে এখন গো মূর্খ হয়ে রয়েছে। সে এখন আফসোস করে তার একরকম মনোভাবের ফলের জন্য। তবে তার কর্মকাণ্ডে একরোখা মনোভাব আজও যাইনি। যে কোন মুহূর্তে ঠিক এভাবে এরকম মনোভাব দেখিয়ে পরিবারের ভাই-বোনদের সাথে ঝগড়া ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। তাই আমাদের মধ্যে যদি এমন একরোখা জেদী মনোভাব থাকে, অবশ্যই তা দূর করে চলার চেষ্টা করতে হবে। কারণ আমি যতগুলো এমন মনোভাবের মানুষ দেখেছি, তাদের জীবনে পতন দেখেছি। যে যত একরোখা জেদী মনোভাব দূর করবে। সে তত সুখী হতে পারবে। কারণ এই জাতীয় মানুষগুলো নিজে সুখী নয়, অন্যকেউ সুখে রাখে না।


IMG_20240417_102135_2.jpg


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ



received_434859771523295.gif


পোস্ট এর বিবরণ


বিষয়জেনারেল রাইটিং
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
ক্রেডিট@jannatul01
দেশবাংলাদেশ
ব্লগারআমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি


আমার পরিচয়



আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।



6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo1NfxyQcRUrHnbvGAuDxuMioMRjoG74XpZyTRDsUp566Bu2ZZHRsryAWmeAqnTe9T6zT4X1bZ8DTXHHYrr.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, আমাদের সমাজে এরকম অনেকেই রয়েছে যারা একরোখা ও জেদি। তাদের জেদের কারণে তারা অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবুও তাদের শিক্ষা হয় না। আর আপনি যে মেয়ে মানুষটার কথা বলছিলেন, সেরকম মেয়ে আমাদের আশেপাশে অহরহই দেখা যায়। আমার দেখাও এমন একটি মেয়ে রয়েছে যে কিনা তার চালচলনের কারণে সংসার রেখে চলে এসেছিল। যাইহোক আপু, একরোখা ও জেদি মনোভাব ক্ষতির অন্যতম কারণ নিয়ে খুব সুন্দর পোস্ট উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

হ্যাঁ ভাইয়া এই সমস্ত মানুষগুলো নিজেদেরই ক্ষতি করে বেশি।