নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে সামাজিক বন্ধন

in hive-129948 •  29 days ago 


আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম


Picsart_24-12-10_23-59-25-676.jpg

Photography device: Infinix

Photography device: photo editing by PicsArt app



জেনারেল রাইটিং পোস্ট


মানুষ নিজের প্রয়োজনের তাগিদে সামাজিক ভাবে জীবন গড়তে শিখেছে। একটা সময় মানুষ একাকী বসবাস করত। যখন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে বুঝতে পেরেছে একাকী বসবাস করা যাবে না, দলবদ্ধ হতে হবে। ঠিক তখন থেকে সমাজ গঠন করতে শিখেছে প্রয়োজনের তাগিদে। সমাজবদ্ধ হয়ে মানুষ উপকৃত হয়েছে আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতির চেয়ে উপকারের মাত্রাটা বেশি ছিল। অতীতের ইতিহাস আলোচনা করলে এছাড়াও নানা দাদা দের মুখে অতীত সম্পর্কে জানলে এতটাই বোঝা যায় যে, মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে ৯৫% উপকৃত হয়েছে। আর বর্তমান সময়ে সেই সমাজের দলবদ্ধতা যেন দিন দিন কমে চলেছে। একটা সময় মানুষ সমাজের দলপতিকে মান্য করত। সমাজে মন্ডল মাতব্বর ছিল। যাদের কথায় যাদের ভয়ে মানুষ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতো। এখন যেন দিন দিন সমাজের সেই মন্ডল মাতব্বরগিরি কমে গেছে। এখন প্রত্যেকটা মানুষ যে যার মত নিজ স্বাধীনতা বেছে নিয়েছে। আমি মনে করে মানুষের স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন রয়েছে,তাই বলে এতটা স্বাধীনতা প্রয়োজন নেই যেটা লিমিট ক্রস করে খারাপের দিকে ঝুঁকে যায়। ইতিহাস সাক্ষী একটি সমাজে যেমন দলপতি রয়েছে ঠিক একটি পরিবারের প্রধান ভূমিকা পালন করার সদস্য রয়েছে। তাই একজন মানুষ খারাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার পূর্বে বেশ অনেক ভীতু থাকতো; পরিবারের প্রধান সদস্য সমাজের সদস্য এছাড়াও চক্ষু লজ্জার ভয়; ধর্মের ভয়; অভিভাবকদের ভয় ইত্যাদি। আর এখন যখন সমাজবদ্ধ মানুষের পরিবর্তন হয়েছে তার পাশাপাশি মানুষের স্বাধীনতা বেশি বেড়ে গেছে; চাহিদা বেশি বেড়ে গেছে এবং এই সমস্ত কারণে ক্ষতির প্রভাব বেড়ে গেছে।

আমি জানি, এতক্ষন আমি কি বোঝাতে চেয়েছি; আর আপনারা কি বুঝেছেন। ক্লিয়ার করে বলি, নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে সামাজিক বন্ধন। এতক্ষণ যা বলেছি তার মূল কথা এটা। একটা সময় সমাজের মানুষ সমাজের আরেকজনের বিপদে দৌড়িয়ে আসতো এবং অন্যের ক্ষতি যেন নিজের ক্ষতি মনে করে সহায়তা প্রদান করত। আর এখন সমাজে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়ে এমন পর্যায় সৃষ্টি হয়েছে যে, একজন বিপদে পড়লে আর একজনের আনন্দ লাগে। সহায়তা প্রদান করার কথা দূরে থাক, মনে মনে বেশি ভাবতে থাকে আরো ক্ষতি হোক। একজন বিপদে পড়লে আরো ১০ জন এর মধ্য দিয়ে বিপদের মাঝে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে অনেকে। এই যে সামাজিক বন্ধন টা দিন দিন রাস পাচ্ছে এর মূলে রয়েছে মানুষের বেপরোয়া চলাচল কথাবাত্রা কার্যকলাপ। আসলে একটা সময় ছিল ছোটরা বড়দের সম্মান করতো,মান্য করতো, মূল্যায়ন করত। এখন কিন্তু ছোটরা সেভাবে আর বড়দের দেখে না। কারণ সবার মধ্যে ব্যাপক স্বাধীনতা এসে গেছে। আর এই ব্যাপক স্বাধীনতা মানুষকে পশুর মত আচরণ করতে শিখিয়াছে। তাই বলি ভালো দিক লক্ষ্য করা যায় না, যদিও অল্প কিছু ভালো দিক রয়েছে তার তুলনায় খারাপের দিকটা ডাবল ডাবল।

এখনো সমাজ মানুষের মধ্যে ভালো গুণাবলী খুঁজে। আপনি ভালো কিছু করলে সমাজ খুশি হয়। আপনি খারাপ কিছু বললে সমাজের এমন মানুষ রয়েছে যারা আপনার সেই খারাপ কাজকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে। যদিও সমাজের মধ্যে মানুষের মনোভাব পরিবর্তন হয়েছে তবুও একটা কথা রয়েছে যতদিন ভালো মানুষ রয়েছে ততদিন সমাজ টিকে রয়েছে, দুনিয়া টিকে রয়েছে। ঠিক তেমনি মানুষের মধ্যে মনুষত্ববোধ কমে গেছে, তবে সব মানুষের তো নয়। আর এই মনুষত্ববোধ কমে যাওয়ার কারণে সমাজে সামাজিক বন্ধন টা কমে যেতে শুরু হয়েছে। তবে অনুভব করলে বুঝতে পারি এমন একটা সময় এসেছিল, যখন মানুষ সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ ছিল তখন কিন্তু মানুষের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা কম ছিল। সমস্ত মানুষ একটা লিমিটের মধ্যে থাকতো যার জন্য ক্ষতির পরিমাণটা কম ছিল, পাপের পরিমাণটা কম ছিল। হয়তো এখনকার সময় মানুষ পাপকে সেভাবে দেখে না, তাই অহরহর পাপের কাজে খারাপের কাজে অংশ নিয়ে ফেলছে। এর জন্য একদিন পাপের শাস্তি গ্রহণ করতে হবে এটা সত্য কিন্তু সেটা জানার পরেও যেন অনেকে বুঝার চেষ্টা করে না। আর এই জন্যই সামাজিক বন্ধনটা আরো কমে যাচ্ছে।

সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে পাপ বাপকে মাফ করে না। আর আপনি যত স্বাধীন ভাবে নিজেকে চালাবেন তত আপনি ক্ষতির পথে চলবেন ভালো পথে নয়। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে লাগামহীন ঘোড়া যে কোন মুহূর্তে এক্সিডেন্ট করবে এটা সত্য। ঠিক আমাদের বেপরোয়া স্বাধীনতা আমাদের ক্ষতির দিকে নিয়ে যাবে এটাও সত্য। কারণ বর্তমান সমাজটা এমন একটা পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেখানে শুধু খারাপের প্রভাব বেশি। ডাইনে তাকালেও খারাপ প্রভাব, বাইয়ে তাকালেও খারাপের প্রবণতা বেশি। আমরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সঠিক পথে চলতে গিয়ে হোঁচট খাই বারবার কারণ সমাজে খারাপের প্রবণতা চলে এসেছে বেশি। তবুও আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে সামাজিক বন্ধন টা যেন বিকৃতি না হয় সবার মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক বজায় থাকে। কারণ আমরা যখন সমাজে বাস করবো বিপদে-আপদে আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে সমাজের মানুষ আগে এগিয়ে আসবে। তাই সামাজিক বন্ধন যদি আমরা বজায় রেখে চলতে পারি তাহলে আমাদের জন্যই ভালো। আর এ সামাজিক বন্ধন বজায় রেখে চলতে হলে অবশ্যই আমাদের মানুষকে মান্য করতে হবে; বড়কে শ্রদ্ধা করতে হবে; ছোটদের স্নেহ করতে হবে;নিজেদের একটা লিমিটের মধ্যে রাখতে হবে; নিজের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে চলতে হবে; সাম্প্রদায়িক মনোভাব পরিবর্তন করে অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাগিয়া তুলতে হবে যেটা সর্বপরি গ্রহণযোগ্য। আর এভাবেই আমরা সুন্দর একটি সমাজ প্রত্যাশা করতে পারি। যেখানে সামাজিক বন্ধন অটুট থাকবে।


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ



received_434859771523295.gif


পোস্ট এর বিবরণ


বিষয়জেনারেল রাইটিং
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Mobile
ক্রেডিট@jannatul01
দেশবাংলাদেশ
ব্লগারআমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি


আমার পরিচয়


আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।


2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo1NfxyQcRUrHnbvGAuDxuMioMRjoG74XpZyTRDsUp566Bu2ZZHRsryAWmeAqnTe9T6zT4X1bZ8DTXHHYrr.png



6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা লিখেছেন। আসলেই যত দিন যাচ্ছে মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে একটা সময় একজন মানুষ বিপদগ্রস্ত হলে তার বিপদে অন্য মানুষগুলো এগিয়ে আসতো তবে যত দিন যাচ্ছে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে এগিয়ে আসার প্রবণতা ততই কমে আসছে।

হ্যাঁ ভাইয়া আগের মত মানুষের মধ্যে মিল নেয় আর, মহব্বত কমে গেছে

আজকের কাজ সম্পন্ন

Uploading image #1...

Uploading image #2...

Uploading image #3...