কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ১৮ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।

বিউটির নামে যেই কলঙ্ক উঠেছে তা আজ তার বড় ভাই গুলজার এর কানে পৌঁছে গেছে। তাইতো গুলজার রেগে আগুন। কি করে একটি গানের দলের মানুষ তার বোনের ইজ্জত নিয়ে খেলা করতে পারে। সে তো কাউকে ছাড়বেনা। তাই দিনে রাতে যে কোন মুহূর্তে হাতে দাও নিয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে আলতা সুন্দরীকে। এদিকে আলতা সুন্দরী মিথ্যা ষড়যন্ত্রের ভয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আড়ালে আবডালে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কারন সে নিজেও জানেনা কেন তার নামে এরম মিথ্যা দুর্নাম রটানো হয়েছে আর বিউটি কিভাবে নিজের নামে কলঙ্ক সৃষ্টি করল। এদিকে গানের দল রাত্রে কোথাও গান করতে চলেছে এই মুহূর্তে হঠাৎ গুলজার তাদের সামনে দাও হাতে উপস্থিত হয়। তাদের সবাইকে শাসায় এবং আলতা সুন্দরীকে খোঁজে। তার বক্তব্য মোতাবেক এই মুহূর্তে আলতা সুন্দরীকে সামনে পেলে এক কপে দুই আলাদা করে ফেলবে।

এদিকে আলতা সুন্দরী ওরূপে নছেরের প্রেমিকার মা সত্য ঘটনা উদঘাটনের জন্য বিউটির বাড়িতে একাধিকবার গিয়েছে এবং গুলজার এর সম্মুখীন হয়েছে। তখনো গুলজার জানত না তার বোনের নামে কলঙ্ক উঠেছে। কিন্তু পারুলের মা তাদের বাড়িতে যাওয়া আসা করায় বারবার তাকে প্রশ্ন করেছিল গুলজার কেন তাদের বাড়িতে আসে এবং বিউটিকে খোজে। সে বলেছিল সব কথা কি পুরুষ মানুষকে বলা যায় তাদের গোপন বিষয়। কিন্তু আজকে সত্য কথা জানার পর সেও যেন পারুলের মায়ের উপর চোখ গরম করে দেখায়। তবে পারুলের মাকে তার সামনে থেকে দ্রুত সরে যেতে বলে তার মাথায় রাগ চড়ে আছে, না জানি কখন কি করে বসে সে।

এদিকে হাসেম জোয়ারী গানের দলের নায়কের সাথে গল্প করছিল গানের দলকে নিয়ে। গানের দলের নায়ক ভয় পায় তার সাথে বাড়তি কথা বলতে কারণ যাই বলে না কেন সে গুলজার কে বলে দেয়। এদিকে হঠাৎ কথায় কথায় হাসেম জোয়ারী নায়ককে নায়িকা সেজে অভিনয় করতে বলে। কারণ আলতা সুন্দরীর মিথ্যা কলঙ্ক রটার পর থেকে গানের দল যেন বন্ধ হয়ে গেছে কারণ এই দলে নায়িকা সেজে নাচবে কে। এদিকে হাসেম জোয়ারির জুয়া খেলা বন্ধ রয়েছে, গানের দলের অন্যান্য সদস্য অপেক্ষা করতে পারলেও হাশেমের জেনো অপেক্ষার প্রহর সইছেনা। কারণ এখানে এসে জুয়া খেলে ইনকাম করে বেশি। কিন্তু নায়ক কে নায়িকা সাজার প্রস্তাব রাখায় নায়ক অনেক রেগে গেল। সে হাসেমকে হুঁশিয়ার করে বলল দ্বিতীয়বার যেন আর কখনো তাকে নায়িকা সাজার কথা বলা না হয়। তার একটা মান সম্মান রয়েছে। সে কিভাবে নায়ককে নায়িকা সাজতে বলে তার মাথাতেই আসে না।

এদিকে পারুল তার মাকে বারবার বলেছিল সে আর আলতা সুন্দরীকে বিয়ে করবে না। এত কিছু হওয়ার পরে কিভাবে পারুলের মা সত্য উদঘাটন করে বেড়াতে যায়। কোন মেয়ে কি নিজের নামে মিথ্যা কলঙ্ক রটাতে পারে। এমনটাই পারুলের বক্তব্য। কিন্তু নাটকের মাসুমা আর পারুলের মা মটেউ বিউটিকে বিশ্বাস করে না। কারণ বিউটির স্বভাব চরিত্র তাদের কাছে সুবিধার মনে হয় না। সে নিজের নামে মিথ্যা কলঙ্ক রটাতে পারে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পারুলের মায়ের সাথে যে এমন আচরণ করবে বিউটির ভাই সে কখনো ভাবেনি। কারণ সে সম্পর্কে চাষী হয় চাচীর সাথে তো খারাপ আচরণ করবে না এমনটাই ভেবেছিলেন পারুলের মা। তবে গুলজার এর কথাবার্তা শুনে সে খুবই ভয় পেয়েছে এবং বাড়িতে ফিরেই দ্রুত পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন।

এদিকে গোলজার গিয়েছে গানের দলের ওস্তাদ ফেলু গাইনের বাড়িতে। গুলজার বারবার গানের দলের ওস্তাদ কে হুঁশিয়ার করছে এবং জবাই করে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। গুলজার আজ দোষারোপ করছে গানের দলের ওস্তাদ কে। গানের তলের ওস্তাদের জন্যই আজকে এ সমস্ত ছেলেরা খারাপ হয়েছে এমনকি তার বোনের সর্বনাশ করেছে। কিন্তু ওস্তাদ তার স্ত্রী ও মেয়ে মাসুমা গুলজার কে বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। গোলজার কিছুটা থামলো তবে হুশিয়ার করে বলে গেল সে এই গ্রামে আর গানের দল চলাতে দেবে না। যদি গানের দল চলায় তাহলে তখনই গানের দলের ওস্তাদকে জবাই করে ফেলবে। আর এভাবেই গুলজার ওস্তাদের বাড়ি ত্যাগ করলো।

এ পর্বে আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি বিউটির কলঙ্কের কথা তার বড় ভাই জেনে গেছে, তাই গানের দলের প্রতি সে বেশ চড়াউ হয়েছে। সে দাও নিয়ে পথে-ঘাটে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আলতা সুন্দরীকে পেলেই জবাই করে ফেলবে। এদিকে গানের দলের ওস্তাদের বাড়িতে গিয়েও হুশিয়ারি দিয়েছে। আলতা সুন্দরী নাটকের এই পর্বে আমরা শুধু একটা বিষয় বেশি লক্ষ্য করেছি তা হচ্ছে গুলজার এর আর্তনাদ ও হুংকার। সে একটা বড় বংশের ছাওয়াল হওয়া সত্বেও কেন সবাই তাকে দেখে ভয় পায় না। আবার এদিকে তার বোনের জীবনে কলঙ্ক এনে দিয়েছে সামান্য গানের দলের একজন ছেলে। এটা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। আশা করব পরবর্তী পর্বে নতুন কিছু দেখতে পারবো আমরা। তবে এই পর্বে খুব সুন্দর অভিনয় করেছে গুলজার। তার যেমন পাট দেওয়া হয়েছে ঠিক সেভাবেই অভিনয় করে চলেছে। তবে এদিকে ভাববার বিষয়, গ্রামে আবারো রহিম বাদশার আবির্ভাব হয়েছে। রহিম এর সাথে কেমন আচরণ হবে এই গ্রামের মানুষের তা আগামীতে দেখার বিষয়।

আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।