জেনারেল রাইটিং: চোর

in hive-129948 •  2 months ago 


আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম


IMG_20240912_180826.jpg

Photography device: Huawei P30 Pro-40mp



জেনারেল রাইটিং পোস্ট: চোর


চোর শব্দটা যেমন ঘৃণিত তেমনি নিকৃষ্ট একটা চেতনা শব্দ। এই শব্দটা আমরা ঘৃণার চোখে দেখে থাকি। হয়তো শব্দের কোন দোষ নেই তবে শব্দটার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অনেক তথ্য, অনেক ঘটনা, অনেক অপকর্ম, অনেক মানুষের পরিচয়, অনেক যুগ যুগের ঘটনা। তবে আমাদের বুঝতে হবে কে চোর? কেন চোর? কিভাবে হল চোর।

প্রায় মাঝেমধ্যে আমাদের কানে আসে পাড়ায় চোর ধরা পড়েছে। বাজারের দোকান ভেঙে লুট করে নিয়ে গেছে চরে। জনগণের হাতে বেদম পিটানি খেয়েছে চোর। জনগণ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে একটা চোর। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এমন আমরা চোরের কথা শুনে থাকি। কিন্তু চোরকে নিয়ে কখনো আমরা সেভাবে ভেবেছি? একজন মানুষ কি কখনো হুট করেছে চোর হয়? না একজন মানুষ কখনো হুট করে চোর হয় না। বিভিন্ন কারণে মানুষ চুরি করতে পারে। চোরের পেছনে বিভিন্ন বিষয় লুকিয়ে থাকে। তবে দীর্ঘ এই জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে আমি আমার মতামত পেশ করতে পারি। আমি মূলত চোরকে দুই ভাগে ভাগ করি। এক নম্বরে অভাবের কারণে চোর। দ্বিতীয়ত স্বভাবের কারণে চোর।

IMG_20240822_124258.jpg


অভাবের কারণে চোর: অভাব এটা বাঙ্গালীদের দারিদ্রতার প্রভাব। কারন আমরা জানি আমাদের দেশ অনুন্নত। অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণ দারিদ্রতার লেগে থাকে সেই কারণে মানুষের মধ্যে অভাব বিদ্যমান থাকে। বিশ্বের বুকে অনেক উন্নত রাষ্ট্র রয়েছে যেখানে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের খাবারের অভাব নেই পোশাকের অভাব নেই। কিছুদিন আগে আমেরিকান একটা ভিডিওতে দেখলাম দেশের সর্বনিম্ন দরিদ্র যারা তাদেরও প্রতিমাসে ইনকাম এক থেকে দুই হাজার ডলার। সেখানে আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মানুষের মাসে ইনকাম ১০০০ ডলার সম্ভাব্য হয় কিনা। সে আলোকে বলতে গেলে আমাদের দেশের মানুষ ফিফটি পার্সেন্ট এর বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচেই বসবাস করে থাকে বিভিন্ন সময়। কারণ অর্থনৈতিক দিক থেকে তারা অনেকটা পিছিয়ে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গেলে হিমশিম খায় বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে। আর সেই ক্ষেত্রে যারা নিম্ন পর্যায়ের দরিদ্র জীবন যাপন করে তাদের অবস্থা কোন পর্যায়ের হয়ে থাকে সেটা একটু ভেবে দেখা প্রয়োজন। হয়তো এই সমস্ত শ্রেণীর মধ্য থেকেই অভাবের কারণে অনেক মানুষ চুরি কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। যারা দোকানপাট ভেঙ্গে অথবা অন্যের বাড়ি থেকে গরু ছাগল মুরগি চুরি করে বেড়ায় আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি তারা ধনী পর্যায়ের লোক। আগে সমস্ত মানুষগুলো ধরা পড়েছে এবং তাদের উক্তি পাওয়া গেছে দেখা গেছে তাদের ছিন্ন জিন্ন জীবন ব্যবস্থা। হয়তো তাদের মধ্যে শিক্ষা কম দারিদ্রতা বেশি। ইনকামের উৎস কম, খরচের হার বেশি। আর এভাবেই অভাবী মানুষেরা চুরির কাজে লিপ্ত হয় অনেক সময়।

IMG_20240908_085638.jpg


স্বভাবের কারণে চোর: আমরা দুনিয়ার বুকে এসেছি নির্দিষ্টটা সময়ের জন্য। সে সময় পার হয়ে গেলে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। আর এই জন্য আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ আমাদের সুন্দর পথ নিদর্শন করে গেছেন। নিজে কর্ম করে খাও, হাত পাতিও না এবং চুরি করিও না। যারা দরিদ্র অবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করে দুবেলা দুমুঠো খেতে পারে তাদের মধ্যে অনেক সচেতন মানুষ রয়েছে শুকরিয়া আদায় করে, হালাল পথে আরও বেশি ইনকাম করার চেষ্টা করে। আবার অনেকে রয়েছে শুকরিয়া আদায় না করে একটু সচ্ছলভাবে চলার জন্য বা বড়লোক হওয়ার জন্য বা ভালো পর্যায়ে ওঠার জন্য চুরির কাজে লিপ্ত হয়। কেউ প্রকাশ্যে চুরি করে আবার কেউ কৌশল অবলম্বন করে চুরি করে। কেউ সরকারি অফিসে বসে চুরি করে, কেউ আছে দালালির মাধ্যমে কৌশল খাটিয়া চুরি করছে। আবার কেউ রয়েছে দোকানপাট বা অন্যের জিনিস গোপনে চুরি করে নিয়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছে। মূলত এগুলো তাদের স্বভাব থেকে। এগুলো না করলেও তাদের সংসার কোনমতে চলে যাবে। আবার ভাল রকম সংসার চলছে তার পরেও চুরি করছে। এগুলো মূলত তাদের স্বভাব। কথায় আছে না অল্প পুঁজিতে বেশি রুজি। এটা হচ্ছে স্বভাবজাত চোরের ধর্ম। আর এই সমস্ত চোর গুলো দেশ ও জাতির জন্য বেশ ভয়ংকর।

IMG_20240908_085641.jpg


সরকার পতনের পর প্রায় কানে আসতে দেশের চুরি ডাকাতি ছিনতাই ঘোটছে। আর এই সমস্ত মানুষগুলোর মধ্যে সর্বস্তরের মানুষ ধরা পড়ছে।তবে বর্তমান সময়ে এটা লক্ষ্য করা যায় গ্রাম পর্যায়ে যথেষ্ট কর্মক্ষেত্র রয়েছে। প্রত্যেকদিন মানুষ চাইলে কর্ম করে খেতে পারে। তারপরেও রাত দুপুরে এসে গরু ছাগল চুরি করার উপক্রম চলছে। এইতো কিছুদিন আগেই আমার নানি বাড়িতে বড় একটা গরু খুলেছিল কিন্তু গেট ভাঙতে না পারায় মানুষজন সজাগ হয়ে যায় তারা পাঁচিল টোপকিয়ে পালিয়ে যায়। ১০-১৫ বছর পর নিজ এলাকায় এমন ঘটনা জানতে পারলাম। যারা এভাবে চুরি করতে পারে অবশ্যই তারা খুব সহজেই কর্ম করে খেতে পারবে। তাই এই সমস্ত মানুষগুলোর উপযুক্ত ব্যবস্থা করে সঠিক পথে আনতে হবে হোক সেটা শাস্তি অথবা অবস্থা বুঝে সহায়তা। যাদের মনোভাব খারাপ তারা এই সমস্ত খারাপ কাজে লিপ্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে অভাবের চোর এবং স্বভাবের চোর উভয় রয়েছে। তবে এই সমস্ত নিকৃষ্ট মন-মানসিকতার মানুষগুলোকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে যে কোন মূল্যে। যারা অভাব অনটনের সংসার নিয়ে বেশ কষ্টের মাঝখানে থাকেন তাদের জন্য সুপথ দেখাতে হবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আর যে সমস্ত মানুষগুলো স্বভাবের কারণে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছে, তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় এনে সঠিক বিচার করতে হবে। যেন সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে না রাখে মানুষের ক্ষতি না করতে পারে।

PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ



received_434859771523295.gif


পোস্ট এর বিবরণ


বিষয়জেনারেল রাইটিং
ফটোগ্রাফি ডিভাইসHuawei P30 Pro-40mp
ক্রেডিট@jannatul01
দেশবাংলাদেশ
ব্লগারআমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি


আমার পরিচয়


আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।


2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo1NfxyQcRUrHnbvGAuDxuMioMRjoG74XpZyTRDsUp566Bu2ZZHRsryAWmeAqnTe9T6zT4X1bZ8DTXHHYrr.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন চোরের বিষয়টা। আমাদের দেশের স্বভাবের কারণে চোর অনেক বেশী। তাদের পুকুর চুরির কারনেই অভাবের কারণের চোর বৃদ্ধি পাচ্ছে এখন।

প্রথম ধরণের চোরকে ধরে আইনের আওতায় আনতে পারলেই দ্বিতীয় ধরণের চোরের সংখ্যা কমে আসবে বলে আশা করা যেতে পারে।

ভাল লেখেছেন। ভাল থাকুন।

হ্যাঁ ভাইয়া ঠিক বলেছেন

আপনি ঠিকই বলেছেন আপু আমার কাছেও মনে হয় আমাদের দেশে শিক্ষা কম দারিদ্রতা বেশি। মানুষ অল্প একটুতেই চুরি করে। আপনি খুবই সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ বিষয়টা আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। আপনার কথাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।

যাক পড়তে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম

খুবই ভালো লিখেছেন। তবে আমি এর সাথে আরেকটা পয়েন্ট এড করবো। বর্তমানে কিছু আছে পেশাদার চোর। মানে এদের পেশাই চুরি। বর্তমানের চুরিগুলোর বেশির ভাগই এরা করে থাকে। তবে, আপনার লেখার সাথে আমি একমত। দারিদ্রতা আমাদের নিষ্পেষিত করে দিয়েছে। এজন্য আমেরিকার সাথে আমাদের যায় না।

সেগুলো স্বভাবের আন্ডারে পড়ে

আমরা যখন গ্রামে বড় হয়েছি প্রায় সময় শুনতাম কোন না কোন একটি বাড়িতে চোর ডুকেছে রাতে। তাই মানুষ অনেক বেশি আতঙ্কে থাকতো চোরের কারণে। কিন্তু মানুষের মধ্যে তখন অভাব অন্টন বেশি ছিল। তবে বর্তমান সময়ে মানুষের অনেক পরিবর্তন এসেছে ইনকামের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন যেগুলো চোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বভাবগত চোর। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লেগেছে।

হ্যাঁ আপু এগুলো স্বভাবগত

  ·  last month Reveal Comment

হ্যাঁ একদম ঠিক