সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝি

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ - ২৬ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | বর্ষাকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে খুবই শিক্ষণীয় একটি ঘটনা তুলে ধরব। যে ঘটনার মাধ্যমে আমরা ব্যক্তি জীবনে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা সম্পর্কে বুঝবো। ছোট্ট একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণে কতটা ক্ষতি হয়ে যেতে পারে সেটা অনেক আগে থেকেই বুঝতে পারব, আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • ভুল বোঝাবুঝি থেকেই ক্ষতের সৃষ্টি
  • আজ ২৬ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • সোমবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ রাত্রি সবাইকে......!!


আমরা মানুষেরা সবসময়ই একে অপরের ভুল বুঝি। কোন কিছু না জেনে না শুনে না ভেবেই আমরা একে অপরের সঙ্গে অনেক রকম ঝগড়া বিভেদ মারামারি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত হয়। যেটা কখনোই একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের দ্বারা করা সম্ভব নয়। ছোট্ট একটু ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে অনেক বড় ধরনের হত্যাকান্ড মারামারির সৃষ্টি হয়। এই মারামারি এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য এমন অনেক পরিবার আছে যে পরিবারগুলো নিমিষেই পথের ভিখারী হয়ে গিয়েছে। নেই থাকার কোন জায়গা নেই কোন বাসস্থান তিন বেলা খাবার খাবে সেই ব্যবস্থাটাও নেই। তাহলে কেন এই ভুল বোঝাবুঝি ভুল বোঝাবুঝির আগে যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং মাথা ঠান্ডা করে সঠিক বিষয়টা সামনে নিয়ে আসা যায় তাহলেই তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে আমি মনে। যদিও মানুষ হিসেবে আমরা বড্ড বেপরোয়া কেউ কাউকে ছাড় দিতে এক বিন্দু পরিমান রাজি নয়। কেউ কাউকে একটু ছেড়ে কথা বলব এমন মন মানসিকতা অনেক মানুষেরই নেই। বর্তমান সমাজে মানুষ মানুষকে আর তেমন একটা ভালোবাসে না মানুষ মানুষকে স্বার্থহীন ভাবে খুব কমই ভালোবাসে।

যেখানে মানুষের উচিত একে অপরের প্রতি সদয় হওয়া ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সকলকে একত্র করা সেখানে আমরা মানুষ মানুষের ক্ষতি করছি ছোট্ট একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণেই অনেক বড় মারামারি দাঙ্গামা হাঙ্গামা বাধিয়ে ফেলছি যেটা শেষ পর্যন্ত প্রশাসন অব্দি চলে যায়। মানুষ হিসেবে এরকম আচরণ করা আমাদের মোটেও ঠিক নয় বরাবরই আমাদের সকলের প্রতি ভালবাসার দৃষ্টি দিয়ে তাকানো উচিত বলে আমি মনে করি। এতগুলো কথা আমি আপনাদেরকে বললাম কারণ, এই কথাগুলো বলার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এইতো কদিন আগে আমি বাসা থেকে বের হয়েছিলাম কিছু ফুল কিনার উদ্দেশ্যে। কেন ফুল কিনতে গিয়েছিলাম সে ব্যাপারে আমি আপনাদের মাঝে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করব কারণ অনেক বিশদভাবে আলোচনা করতে হবে। ফুল কিনতে আমি যথারীতি চলে যাই কুমারখালী রেলওয়ে স্টেশনের পাশে অনেকগুলো ফুলের দোকান রয়েছে। সেখানে সুন্দর সুন্দর ফুল পাওয়া যায় এটা আমি অনেক আগে থেকেই জানি যথারীতি দুপুরবেলা চলে গেলাম ফুলের দোকানে।

ফুলের দোকানে গিয়ে আমি দেখি অনেক আগে থেকেই দোকানদার এবং এক ক্রেতার মাঝে ঝগড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এত বেশি গরম ছিল যে তাদের ঝগড়া আমার কাছে একদম কাটার মতো শরীরের ফুটছিল। এতটাই অসহ্য এবং অস্বস্তিকর মনে হচ্ছিল তাদের কথা কাটাকাটি নিজেই মাঝে মাঝে তাদের উপর রেগে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমি সেখানে কেনই বা রাগ দেখা তাদের ঝগড়া তারাই মিটিয়ে ফেলুক এমনটাই কামনা করছিলাম সেই সময়টাতে। দোকানে গিয়ে আমি ফুল দেখছিলাম প্লাস পাশাপাশি দোকানের আরেক কর্মচারীর সঙ্গে আমি ফুলের ব্যাপারে কথা বলছিলাম কিন্তু তাদের ঝগড়াটা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকলো। দুটো কথা তিনটি কথা পাঁচটি কথা এরকম কথা বলতে বলতে দুজনই উচ্চস্বরে কথা বলছিল। আমি তখন অব্দি বুঝতে পারিনি যে আসলে তাদের ঝগড়ার মূল বিষয় কি...!!

christmas-1711568_1280.jpg

source

এরপরে আমি ফুল দেখা বাদ দিয়ে অপর দোকান কে বললাম তারা কেন ঝগড়া করছে সমস্যা কি..!! এরপরে অপর দোকানে আমাকে বলল যে এখানে এসে যেই ব্যক্তিটা তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করছে সে গতকাল দুপুরবেলা ফুলের অর্ডার দিয়ে গিয়েছিলাম। সে প্রায় ৪ হাজার টাকার ফুল অর্ডার দিয়ে গিয়েছিল। যথারীতি দোকানদারের কাছে তখন তেমন কোন ফুল ছিল না যার কারণে সে অনেক জায়গাতে ফোন দিয়ে ফুল সংগ্রহ করতে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল অবশেষে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে একটা দোকান থেকে এসে ৪০০০ টাকার ফুল কিনে নিয়ে এসেছে এই ব্যক্তিটিকে দেওয়ার জন্য। এরপরে সে এই ব্যক্তি সন্ধ্যার সময় ফোন দিয়ে বলে ফুল তাদের আগামী কাল সকাল বেলা প্রয়োজন হবে। তারপরে দোকানদার সেই ফুলগুলো ফ্রিজে রেখে দেয় সকালবেলা দোকানদার সেই ব্যক্তিটিকে ফোন দিলে সেই ব্যক্তি কিছুক্ষণের মধ্যেই তার দোকানে চলে আসে। এরপরে সেই ব্যক্তি তাকে বলে কোন একটা কারণে সে ফুল নিতে পারবে না।

একথা শোনার পরে দোকানদার তেমন একটা বেশি রেগে যায় নি এই কারণেই রেগে যায় নিজে তার ব্যবসাটা শুধুমাত্র একদিনের জন্য নয় ব্যবসাটা যেহেতু অনেকদিনের তাই সে চেষ্টা করেছে তার সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলার। যেহেতু দোকানদার অন্য কোন জায়গা থেকে ফুল কিনে নিয়ে এসেছে এবং সে যেহেতু ফুল গুলো এখন নেবে না দুদিন পার হওয়ার পরে ফুলগুলো আর আগের মত অতটা টাকা বা সতেজ নেই। যেহেতু সে ৪ হাজার টাকার ফুল কিনে নিয়ে এসেছিল তাই দোকানদার তাকে বলেছে আপনি হয় টাকা দিয়ে ফুলগুলো নিয়ে যাবেন না হয় আমাকে ৩০০০ টাকা দিবেন। যেহেতু ফুলগুলো কিনে নিয়ে আসতে হয়েছে আমাকে আপনার জন্য আমার ১০০০ টাকা লস যাক তাতেও আমার কোন দুঃখ নেই। কারণ সে শুধু তার কাছ থেকে ফুল নয় আরো অনেক জিনিস নিয়েছে যার কোন সে মানবতা দেখিয়ে ১০০০ টাকা কম নিয়েছে।

pirate-2750361_1280.jpg

source

কিন্তু সেই ব্যক্তি এটা মানতে নারাজ সে বলছে আমি ফুল নেইনি তাহলে আমি কেন টাকা দেবো। এবার দোকানদার বলছে আপনি ফুল নিয়ে যান টাকাগুলো আমাকে দিয়ে যান মূলত এটাই ছিল তাদের ঝগড়ার মূল বিষয়বস্তু। আমি তার মুখ থেকে এই কথা শুনে সেদিকে আর পাত্তা না দিয়ে আমার কাজ করছিলাম আমি যথারীতি তখন পর্যন্ত ফুল দেখছি। এমন পর্যায়ে দুজনের হাতাহাতি শুরু হয়ে গেল যেহেতু আমি পাশেই ছিলাম তাই নিজেকে আর স্থির রাখতে পারিনি তাদের দুজনের মধ্যে আমি একজনকে ধাক্কা দিয়ে দোকান থেকে বের করে দিলাম। যদিও সেই সময় আমি একা ছিলাম না আমার সঙ্গে আরও দুজন ছিল অনেকটাই রাগ হচ্ছিল তাদের প্রতি। এরপরে পাশে পড়ে থাকা ছোট্ট একটা লাঠি নিয়ে ওই ব্যক্তি দোকানদারকে মারতে আসছিল যখনই বিষয়টা লাঠির দিকে চলে গিয়েছে তখন আর আমি সেখানে যায়নি। ভেতর থেকে দোকানদার আরো একটি লাঠি নিয়েছে দুজনেই দুজনের দিকে তেড়ে আসছে এরপরে কিছুটা সময় তাদের মধ্যে একটু মারামারি ভাব চলে এসেছে ততক্ষণ আমি সাইডে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি কারণ দুজনের হাতেই লাঠি আমি সেখানে গিয়ে নিজেকে বিপত্তিকর অবস্থায় ফেলতে চাইনি। প্রথম অবস্থায় তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করেছি এটাই অনেক বড় কিছু ছিল তাদের জন্য।

তারপরে পাশে থাকা কিছু লোকজন তাদেরকে শান্ত করে তাদের এরকম অবস্থা দেখে আমার তাদের দোকান থেকে ফুল কেনার ইচ্ছেটা একদমই মরে গেল। সেখান থেকে আমি ফুল না নিয়ে পাশের আরো দু একটা দোকান দেখে ভালো ফুল গুলো অপর দোকান থেকে নিয়ে আমি বাসায় চলে এসেছিলাম। পরবর্তীতে কি হয়েছে সেটা আর জানা হয়নি। আমরা মানুষেরা হয়তো এমনই ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যাই যার কারণে নিজে সহ পরিবারের লোকজনদের আমরা বিপদে ফেলে দিই। মানুষ হিসেবে এটা আমাদের কখনোই কাম্য নয়। অবশ্যই তাদের দুজনকে একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আসা উচিত ছিল যে সীমা থাকলে হয়তো বা এরকম কোন মারামারির ঘটনা ঘটত না। এক পর্যায়ে বুঝলাম তারা দুজনই অনেক বেশি বেপরোয়া। যাদের নিজের মস্তিষ্কের উপর কোন রকম কন্ট্রোল নেই।

mind-6791906_1280.webp

source

এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের খুবই ভালো লেগেছে। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝি
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

এমন কিছু কিছু মানুষ আছে যা সহজে ছেড়ে দিয়ে কথা বলে না। এবং সামান্য পরিমাণ ছাড় দিতেও। চাই না। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে অনেক টানাটানি অবস্থা করে সেটাকে অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যায়। এমন ভয়ংকর মানুষ থেকে দূরে বা সাবধানে থাকা অনেক ভালো। ভাগ্যিস আপনি যদি মাঝখানে দাঁড়াতেন তাহলে মাইর গুলো আপনার গায়ে পড়তো। সুন্দর একটি বিষয় শেয়ার করলেন সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য সবাই অনেক সচেতন হবে।

মানুষ আসলে সামান্য একটা বিষয় নিয়ে অনেক বড় কিছু করে বসে আর এটাই একটা সময় অনেক বড় একটা বিপদ থেকে নিয়ে আসে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

সত্য বলতে মানুষের যে কি ভয়ংকর রূপ ভিতরে তা বুঝা বড়ই ভার। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ পাবো যারা সামান্য ঘটনাকে অনেক বড় করে দেখে। এক সময়ে সে বিষয়টাকে এমন করে ফেলে তাতে করে অন্যের ক্ষতি করতেও তাদের দিদ্ধাাবাধ করে না। তাই আমি মনে করি এসব মানুষ হতে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সত্যিই এই সব মানুষ থেকে সব সময় ধরে থাকা উচিত, মানুষের কখন পরিবর্তন হয়ে যায় সেটা মানুষ বুঝতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাই, রাস্তা ঘাটে চলাচল করার সময় প্রায় সময় দেখি এরকম ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে অনেক বড় মারামারি হতে। তবে ভাই আপনার পোস্ট পড়ে ফুল ক্রেতা ও বিক্রেতার দ্বন্দ্বটা বেশ ভালোই বুঝতে পারলাম। এক্ষেত্রে তাদের উচিত ছিল দুজনেরই সমান ভাবে সমঝোতা করে নেয়া। তাহলে হয়তো আর দুজনকে লাঠি নিয়ে মারামারি করতে হতো না। যাইহোক ভাই, সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝি কত বড় বিপত্তি ঘটাতে পারে সেই বিষয় নিয়ে আপনার সুন্দর উপস্থাপনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

খুব সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করেছেন ভাইয়া।আমার খুবই ভালো লেগেছে।এটা খুবই সত্যি কথা সামান্য ভুলে অনেকবেশি ক্ষতি হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত যে কোন ভুল বোঝাবুঝিতে সত্যতা যাচাই করা।আর নিজেদেরকে সংযত রাখা।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।