আজ - ১৮ শ্রাবণ| ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | সোমবার| বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
তো চলুন শুরু করা যাক
পাট
আমরা সবাই জানি যে,পাট একটি দ্বিবীজপত্রী আশযুক্ত উদ্ভিদ।
একটি বর্ষাকালীন ফসল। বাংলাদেশে পাটকে সোনালী আঁশ বলা হয়ে থাকে এবং পাটই বাংলার (বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের) শত বর্ষের ঐতিহ্য বলে ধারনা করা হয়। পাট অনেক বছর আগে থেকেই বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জাড়িত আছে
ছবিঃ-
Device:realme 6i
বাংলাদেশে দুই ধরনের পাট দেখতে পাওয়া যায়:
১.সাদা পাট ও
২.তোষা পাট।
মনে করা হয় সংস্কৃত শব্দ পট্ট থেকে পাট শব্দের উদ্ভব হয়েছে। পাটের ইংরেজি নাম জুট (Jute )।
পাটের পরিচিতি
পাট একটি বর্ষজীবী ফসল। এর জীবনকাল ১০০ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত। এই ফসলটি চৈত্র-বৈশাখ থেকে আষাঢ়-শ্রবণ এই চার মাসের মধ্যেই কৃষকেরা জন্মায়। পাট বৃষ্টি নির্ভরযোগ্য একটি ফসল।পাটের আঁশ খুবই নরম উজ্জ্বল চকচকে এবং ১-৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে এক একটি পাটের আঁশ ৩-৬ মিলি মিটার লম্বা হয়। পাট গাছ পানিতে জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়ানো হয়।
ছবিঃ
Device:realme 6i
পাট চাষ
চৈত্র -বৈশাখ মাসের পাট বীজ বোনা হয়। চৈত্র মাসে যেমন রোদ হয় আবার বৈশাখ মাসেও মাছে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়। কৃষক যখন মাঠে পাটের বীজ বপন করে তখনই তার জমিতে পানির সেচ দিয়ে পাটের বিজ বপন করে। তারপরে বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্যমাস যখন বৃষ্টি হয় তখন আর সেচের প্রয়োজন হয় না। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের ভরা বর্ষায় যখন,নালা ডোবা, খাল-বিল, পানিতে ভরে ওঠে তখন পাট কাটা হয়। নিকটবর্তী নদী বা জলাশয়ে পাট গাছ জাগ দেয়া হয়। ১৫-২০ দিন এই পাট পানিতে জাগ দেওয়া অবস্থায় থাকে। যখন পাট গাছ নরম হয়ে যায় তখন পাটের আঁশ ছাড়ানো হয়, যাকে আমরা পাট ধোয়া হিসেবে বিবেচনা করি। পাট ধোয়ার কাজ শেষ হলে সেই পাঠ রোদে শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়।
ছবিঃ
Device:realme 6i
পাটের উৎপাদন
পাট প্রক্রিয়াকরন পদ্ধতি
ছবিঃ
Device:realme 6i
পাট কাঁটার পরে ৫-৭ দিন পাট গুলো একত্রে লম্বা অবস্থায় রেখে দেওয়া হয়, এতে পাট গাছের সাথে যে পাতা থাকে তা ঝড়ে যায় এবং পাট জাগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। ছবিতেও আপনারা সেটাই দেখতে পাচ্ছেন পাট গাছ থেকে পাতা নির্গত করা হচ্ছে।
ছবিঃ
Device:realme 6i
পাটের গাছ থেকে পাটের পাতা নির্গত করার পরে সেই পাট গুলো মাথায় অথবা কাঁধে নিয়ে একটি নিদিষ্ট নদী,পুকুর বা জলাশয় অর্থাৎ যেখানে বেশ কিছুদিন পানি থাকে বলে আশা করা যায় সেখানে পাট গুলো নিয়ে পাট জাগের জন্যে প্রস্তুত করা হয়।
ছবিঃ
Device:realme 6i
বেশ কিছুদিন পাট পানিতে ডুবিয়ে রাখলে পাটের আঁশ নরম হয়ে যায়। তখন পাটের গাছ থেকে আঁশ ছাড়ানো হয় এই আঁশকেই আমরা সাধারনত পাট বলে থাকি।
ছবিঃ
Device:realme 6i
পাট ধোয়ার কাজ শেষ হলে রাস্তা বা নদীর ধারে বাঁশ দিয়ে মই বা আড় তৈরী করা হয় এবং সেখানে ভেঁজা পাট রৌদ্রে শুকানো হয়। ছবিতে আপনারা সেটাই দেখতে পাচ্ছেন।
ছবিঃ
Device:realme 6i
সকল প্রক্রিয়া শেষ করে সোনালী আঁশ এখন বাজারে বিক্রি করার জন্যে প্রস্তুত। কৃষকের ৩-৪ মাসের পরিশ্রম এর ফল এই সোনালী আঁশ। এটা তারা বাজারে বিক্রি করে তাদের জৈবিক চাহিদা পুরন করবে। পরিবার পরিচালনা করবে এবং কিছু অর্থ তারা রেখে দেবে ভবিষ্যৎ এর জন্যে সঞ্চয় করে রাখবে। এভাবেই গ্রাম বাংলার কৃষকেরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
সর্বশেষ বলতে পারি পাট বাংলাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থকারী ফসল এটি বাজারে বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায় এবং বৈদেশিক ভাবে পাট এর গুরুত্ব চিরকাল ছিলো এবং থাকবে বলে আশা রাখি।