একজন ডিভোর্সী মেয়ের আর্তনাদ [benificiary ১০% @shy-fox]

in hive-129948 •  3 years ago 

আজ - ২১ আশ্বিন | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | বুধবার | শরৎকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি।গল্পটা হলো একজন ডিভোর্সী মেয়ে আর্তচিৎকার। একজন ডিভোর্সী মেয়েকে আমাদের সমাজ কোন চোখে দেখে বা তার সাথে কি রূপ আচরণ করা হয়, সেই বিষয় নিয়ে আমি কিছু কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চাই। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।


চলুন শুরু করা যাকঃ-



শুভ বিকেল সবাইকে....!!


গল্পটা একটি ডিভোর্সী মেয়ের জীবন থেকে নেওয়া


tears-4551435_640.jpg

Source

আমার প্রথম প্রেমিক বলেছিল আমায় একদিন না দেখলে সে অন্ধ হয়ে যাবে,আমাদের দেখা হয় না বছর কয়েক। না,সে অন্ধ হয় নি দিব্বি চোখে দেখে। দ্বিতীয় বার যে আমার জীবনে এসেছিল সে বলেছিল,আমাকে ছাড়া সে বাঁচবে না। অথচ কোন রকম লাইফ সাপোর্ট ছাড়াই পাঁচ বচরের বৈবাহিক জীবনে, সে দিব্যি বেঁচে আছে। যার হাত ধরে সংসারে পদার্পণ সে বলেছিল,আমি তার অধ্যাঙ্গীনী। অথচ ডিভোর্স এর দুই বছর পরেও সে বহাল তবিয়তে আছে। সংসারের কাজ-কর্মে আর লেখাপড়ায় ভালো হওয়ার জন্য,বাবা বলেছিল তুই আমার ঘরের লক্ষী। কিন্তু আজ তার কাছেই আমি ঘরের বাড়তি বোঝা। একটা সময় আমার আচরণে, মা' গর্ব করে বলেছিল, আমার মেয়ে অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে শিখে নি। আজ সেই মা-ই কথায় কথায় আমাকে দোষারোপ করে,আমি কেন মানিয়ে নিলাম না। নিজে সাধারন ভাবে চলে যে ভাইকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালাম তখন সে বলেছি,আমার অবদান সে কখনোই অস্বীকার করতে পারবে না। কিন্তু আজ সে আমার জন্য বন্ধুদের সামনে মুখ তুলে দাঁড়াতে পারে না। ছেলের টিউশনির টাকা জোগার করতে না পারা কাকীমা-কে বলেছিলাম,টাকা।দেওয়া লাগবে না আমি এমনি পড়াবো। তখন কাকীমা হাত জোর করে বলেছিল,তোমার মতো ভালো মানুষ হয় না। আজ সেই কাকীমা পড়শীদের কানে কানে বলে বেড়ায় ডিভোর্সী মেয়ে। যে বন্ধুকে পরিক্ষার আগে হ্যান্ডনোট দিতাম,সে বলেছিল চাকরি হলে সবার আগে আমায় জানাবে। একের পর এক পদোন্নতি পেয়ে সে এখন মস্তবড় অফিসার। রাস্তাঘাটে আমায় চিনতেই পারে না। আমার যে বান্ধবী বলেছিল,আমি না উপস্থিত থাকলে সে বিয়ের পিড়িতেই বসবে না,তার দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার খবরটা-ও শুনতে হয়েছে অন্যের মুখ থেকে। আমিও একটা সময় খুব অল্পতেই ভেঙ্গে পরতাম। একের পর এক অবলম্বন আঁকড়ে বাঁচতে চাইতাম। আজ আমায় ভাঙার স্বাদ্ধ কার...?সময় বদলালে প্রতিশ্রুতি ও বদলে যায়। আসলে কারো জন্যে কোন কিছু পড়ে থাকে না। মানুষ কোন না কোন ভাবে বাঁচতে শিখে যায়,শিখে নিতে হয়।



ব্যক্তিগত মতামত


girl-872149__480.jpg

Source

person-1245959__480.jpg

Source

সমাজ গঠনের জন্য একজন পুরুষ যেমন ভূমিকা পালন করে থাকে ঠিক তেমন ভাবে একজন নারীর অবদান অস্বীকার করা যায় না। আমাদের সমাজে এমন অনেক নারী আছে যারা হয়তো সঠিক মানুষ খুজে পায় নি, হয়তো অনেক চেষ্টা করেছিল তার সংসার টা টিকিয়ে রাখার জন্য, কিন্তু ইচ্ছা থাকলেই কি আর সব আশা পূরন হয় বলেন...?হয় না। আমাদের সমাজ এখন ও মনে করে একটি সংসারের ভিত্তি ঠিক রাখার জন্য নারীকেই ছাড় দিয়ে চলতে হবে, কিন্তু অপর পাশের ব্যাক্তি যদি সেই রকম ইচ্ছা প্রকাশ না করে তাহলে কিন্তু সেটা কখনোই সম্ভব না। আমাদের উচিত এমন নারীর প্রতি কুচিন্তা বা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য না করা। খারাপ সময়ে তার পাশে থেকে তাকে মানসিকভাব সাপোর্ট করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাহলে সে পরবর্তীতে নতুন একটি জীবন-যাপন করতে পারবে।



আমার পোস্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোস্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে এই প্লাটফর্মটি থেকে অনুপ্রাণিত করবেন।


আমার পরিচয়


1630010060468-01.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সপ্তম পর্বের অধ্যায়ন রত আছি। আমি ছবি আঁকতে এবং ফটোগ্রাফি করতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমাইট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



logo.gif


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে আমাদের উচিত এসব নারীদের উপর দিয়ে কুচিন্তা মন্তব্য করা ঠিক না। আসলে একজন ডিভোর্সি মেয়ে জানে তার কতটা কষ্ট হয় কেউ চায়না যে সংসার নষ্ট করতে কিন্তু সংসার নষ্ট হয় বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সুখ-শান্তি না থাকলে সেটা কখনোই টেকে না দুজনের মনোমালিন্য না হলে। একটা সময় যে মেয়েটা পরিবারের ভাল মেয়ে ছিল একটা সময় পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে এটাই বাস্তব। দুনিয়ার নিয়ম মেনে নিতে হবে। খুবই ভালো লাগলো খুব সুন্দর ভাবে আপনি তুলে ধরেছেন কথাগুলো।

এতো সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই

ভাই আপনার পোষ্টের টপিকটি আজকে অসাধারণ একটি টপিক। আসলে আমিও বুঝিনা আমাদের সমাজের মানুষগুলো কেন এমন হয় মানুষ যখন বিপদে পড়ে যখন সে তার জীবনকে সুন্দরভাবে ঠিকমতো গোছাতে পারে না তখন মানুষ গুলো কেমন যেন তার পিছে লেগে থাকে। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মানুষের এরকম বিপদের মুহূর্তে মানুষকে ভাল পরামর্শ দিয়ে তাকে সামনের দিকে যাতে সে তার জীবনকে সুন্দরভাবে একটি নিয়মে নিয়ে আসতে পারে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই

ভাইয়া অসাধারণ একটি স্পর্শকাতর গল্প লিখেছেন। আমার কাছে খুব খুব ভালো লেগেছে। প্রত‍্যেকটা লাইন পরছিলাম আর ভাবছিলাম বাস্তবতাকে নিয়ে।কাজে কথায় সব জায়গাতেই মিল আছে আপনার গল্পটা। এ যাবত আমার বেষ্ট গল্প পরা এটি। সামনে এ ধরনের বাস্তবতার গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরবেন সেই আশাই ব‍্যক্ত করি। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ভাইয়া।

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোষ্ট-টা সুন্দর ভাবে পড়ার জন্য,চেষ্টা করবো এ রকম গল্প উপহার দেওয়ার জন্যে

আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মানুষের এরকম বিপদের মুহূর্তে মানুষকে ভাল পরামর্শ দিয়ে তাকে সামনের দিকে যাতে সে তার জীবনকে সুন্দরভাবে একটি নিয়মে নিয়ে আসতে পারে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর মন্তব্য করার জন্য