আজ - ২৯ অগ্রহায়ণ | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | হেমন্তকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- ইনস্টিটিউট লাইফে শেষ দিন
- আজ ২৯শ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
- মঙ্গলবার
চলুন শুরু করা যাক
শুভ সন্ধ্যা সবাইকে....!!
সেই দিনটা ছিল ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের ১ তারিখ। আমি মূলত ২০১৭ সালের জুলাই মাসের ২৭ তারিখে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হই। ইঞ্জিনিয়ারিং লাইফের প্রথম দিনটা ছিল আমার কাছে এক রকমের অনুভূতি। নতুন পরিবেশ, নতুন শিক্ষক, নতুন বন্ধুবান্ধব সবমিলিয়ে নিজের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছিল। তবে এই ভীতু বেশিক্ষণ আমার মধ্যে থাকে নি, আমি যেখানেই যাই সেখানেই খুব সহজেই এবং খুব তাড়াতাড়ি মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারি। ঠিক তেমনি ভাবে আমি আমার নতুন বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি মিশে গিয়েছিলাম। খুব সহজেই তারা আমার আপন হয়ে ওঠে, এভাবেই চলে গেল প্রায় সাড়ে চার বছর, সাড়ে চার বছর যাওয়ার কারণ হলো কোভিট-১৯ এর কারণে আমাদের এক সেমিস্টার পিছিয়ে গিয়েছে। যাইহোক অনেক অনেক স্মৃতি গল্প এদের সঙ্গে মিশে আছে। হয়তো সবার সঙ্গে এক রকম ভাবে মিশতে পারে নি, তবে সবসময়ই চেষ্টা করেছি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মাস্তি ঝগড়া এই সব মিলিয়ে সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটানোর জন্য। এরকমভাবে তাদের সঙ্গে থাকতে থাকতেই আজ আমরা চলে এসেছি একদম শেষ প্রান্তে। এই শেষ প্রান্তে এসে সত্যিই নিজেকে খুব একা একা মনে হচ্ছে।চাইলেও হয়তো আর ফেরা হবেনা সেই পরিচিত ক্যাম্পাসে, চাইলেও আর কখনো বন্ধুদের সঙ্গে একসাথে ফিল্ডে বসে আড্ডা দিতে পারবো না, চাইলেও সবাই একসঙ্গে একই একটা কক্ষে ক্লাস করতে পারবো না, চাইলেও আর কখনো স্যারদের কাছ থেকে সবাই একসঙ্গে জ্ঞান অর্জন করতে পারব না, চাইলেও হয়তো আর কখনো ৩০ টাকার ঝালমুড়ি কিনি চারজন মিলে খেতে পারব না,চাইলেই হয়তো আর কখনো ছাত্র কমন রুমে গিয়ে একসঙ্গে গান বলতে পারব না, চাইলেও হয়তো আর কখনো সন্ধ্যার পরে একটা চায়ের দোকানে বসে অনেকগুলো বন্ধু আড্ডা দিতে পারবো না, চাইলেও হয়তো আরো অনেক কিছু আমরা করতে পারো না। এই সবকিছু ভেবে ভেবে সত্যিই নিজের মধ্যে অনেক খারাপ লাগে। তবে খারাপ লাগলেও এখন কিছুই করার নেই। সবকিছুই মেনে নিতে হবে, জানি মেনে নিতে অনেক কষ্ট হবে,তবুও মেনে নিতেই হবে। সব সময় চাই আমার বন্ধু গুলো যেন অনেক ভালো থাকে। তারা যেন তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।
দিন টা ছিলো ১০-১২-২০২১। এই দিনে আমাদের প্রাকটিক্যাল এবং ভাইবা পরীক্ষা ছিল। এর আগেও আমরা তিন দিন প্যাকটিকেল এবং ভাইবা পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তবে ১০-১২-২০২১ এই দিনে আমাদের প্র্যাকটিকাল এবং ভাইবা পরীক্ষা শেষ হয়। যেহেতু এদিন আমাদের সপ্তম পর্বের শেষ ভাইবা এবং প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা ছিল, তাই সারেরা আমাদের এক ঘণ্টা আগেই ক্যাম্পাসে আসার জন্য নির্দেশ দেন। আমরা তাদের কথামতো এক ঘন্টা আগে ক্যাম্পাসে সবাই উপস্থিত হই।ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসে প্রথম দিন যেই ক্লাসরুমে সবাই উপস্থিত হয়েছিলাম, আজ শেষের দিনেও আমরা সবাই সেই ক্লাসেই একসঙ্গে উপস্থিত হয়েছি। সবাই উপস্থিত হওয়ার পর আমাদের সকল স্যারেরা ওই ক্লাসে উপস্থিত হল। স্যারেরা নানারকম বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিল আমরা মনোযোগ সহকারে স্যারদের সকল কথা শুনছিলাম।ক্লাস রুমটা একদম পিনপতন নীরবতা পালন করছিল।
স্যার এরা আমাদের সাথে দীর্ঘক্ষণ অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলা শেষ করে চলে গেলেন। তারপর আমাদের শুরু হলো প্যাকটিক্যাল এবং ভাইবা পরিক্ষা, আমরা প্রায় চার ঘন্টা যাবত প্যাকটিক্যাল এবং ভাইবা পরিক্ষা দিয়ে শেষ করলাম। এর মাধ্যমেই আমাদের শেষ প্যাক্টিক্যাল এবং ভাইবা পরিক্ষা।তারপরে আমরা সবাই যে যার মত রুম থেকে বের হয়ে চিরচেনা সেই বকুল তলার নিচে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। সবার চেহারার মধ্যে কেমন যেন একটা বিষাদের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে সবাই ভেতর থেকে ডুকরে ডুকরে কান্না করছে। কিন্তু এই কান্নাটি কেউ প্রকাশ করতে পারছে না। মুখে যদিও সবসময়ই হাঁসি ছিল, কিন্তু এই হাসিটা একদম মন থেকে আসা সেই সত্তিকারের হাসির মতো নয়। যাই হোক সবাই মিলে একটা জায়গায় বসে অনেক আড্ডা দিয়েছিলাম এবং অনেক বিষয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মজা করছিলাম। সবাই যে যার মতো স্মৃতিচারণ করছিল।
সবার সঙ্গে আড্ডা দেওয়া শেষ করে, যে যার মতো বাসায় চলে গেল। কিন্তু আমরা কয়েকজন ক্যাম্পাসের ফিল্ডে বসেই থাকলাম। অনেকক্ষণ যাবৎ তাদের সঙ্গে গল্প করছিলাম। গল্প শেষ করে আমার এক বন্ধু বলল চল একটু ছাদের উপর থেকে ঘুরে আসি। তো তার কথা মত আমরা চলে যাই সেই চিরচেনা ক্যাম্পাসের ছাদে। যে ছাদে জড়িয়ে আছে আমাদের অনেক অনেক স্মৃতি। সুযোগ পেলেই ছুটে যেতাম সেই ক্যাম্পাসের চিরচেনা ছাদের উপরে। সেখানে গিয়ে মনে মনে ভাবছিলাম এটাই হয়ত আমাদের শেষ ছাদের উপরে ওঠা, আর কখনো এই ছাদের ওপরে চাইলেও উঠতে পারবো না। এটা ভেবে ভেবে সত্যিই অনেক খারাপ লাগছিলো। কিন্তু কিই'বা করার আছে সবকিছুই পরিস্থিতির শিকার এবং সেইসাথে সবকিছু আমাদের মেনে নিতেই হবে।
মনে মনে ভাবছিলাম এই দিনটা যদি শেষ না হতো তাহলে হয়তো অনেক ভাল লাগত। তবে সত্যি বলতে আমরা যখন লেখা পরা অবস্থায় ছিলাম তখন ভাবতাম যে কবে এই দিনটা শেষ হবে আর এই শেষ দিনে এসে ভাবছি লেখাপড়া এই জীবনটা শেষ না হলে হয়তো অনেক ভালো লাগতো। আমরা আসলে এমন একটা মুহূর্ত চাই বা কেমন একটা মুহূর্তে আমরা আমাদের জীবন কাটাতে চাই সেটা ভেবে পাইনা।যাইহোক,সবাই বসে যাই সেই ছাড়ের পাশ দিয়ে বেঁড়ে ওয়া কাঁঠাল গাছের ছায়া তলে।
এরপরে আমরা ক্যাম্পাসের ছাদে অনেকক্ষণ যাবৎ চারজন গল্প করছিলাম। অনেক গল্প গুজব শেষ করার পরে আমরা যে যার মত বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিই।
ক্যাম্পাস থেকে বাসায় গিয়ে আমি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট করছিলাম। তখন আমার একজন বন্ধু আমাকে ফোন করলো, ফোন দিয়ে বলল যে আমরা কয়েকজন বিকেলবেলা বাসায় চলে যাব, তো তুই স্টেশনে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে পারবে কিনা..!! যদিও অনেক ক্লান্ত ছিলাম, কিন্তু কেন জানি বন্ধুদের সঙ্গে আরেকটি বার দেখা করতে মন চাচ্ছিল। আমি সকল ক্লান্তি দূর করে বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই আমি তোদের সঙ্গে বিকেল বেলায় স্টেশনে দেখা করতে যাব। যেমন কথা ঠিক তেমনই কাজ, আমি বিকেলবেলা রেডি হয়ে চলে যাই স্টেশনে বন্ধুদের সঙ্গে শেষ একটি বার দেখা করব এই ভেবে।
রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে স্টেশনে যাওয়ার পথে আমার আরেক জন বন্ধু আমাকে সেই একই দিনে ফোন দিয়ে বলল আমরা সন্ধ্যার সময় বাসায় চলে যাব তুই স্টেশনে আসবে কিনা। এটা জেনে আমার সত্যিই অনেক ভাল লাগছিল। আমি তাদের বললাম আমি স্টেশনেই থাকবো আর তোরা স্টেশনে চলে আসিস। সন্ধ্যের সময় তারা যথারীতি স্টেশনে এসেছিল তাদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত ছিল আমার সবথেকে সুন্দর একটি মুহূর্ত। এরকম মুহূর্ত কাটাতে পেরে সত্যি নিজের কাছে অনেক ভাল লাগছিল।
ছবিঃ-বিকেলের বিদায় মুহূর্ত
ছবিঃ-সন্ধ্যায় বিদায় মুহূর্ত
একই দিনে তাদের সবাইকে বিদায় দিয়ে, আমি মনে অনেক দুঃখ এবং কষ্ট নিয়ে রাস্তার একপাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মেসে চলে আসলাম।
একটা কথা তখন খুবই মনে পরছিল সেটা হলো,যেতে নাকি দিবো হায়..!তবু যেতে দিতে হয়... তবু চলে যায়।
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | বিদায় মুহূর্ত |
---|---|
ডিভাইজ | Realme 6i |
বিষয় | ইনস্টিটিউট লাইফে শেষ দিন। |
ছবির কারিগর | @jibon47 |
ছবির অবস্থান | [সংযুক্তি] |
https://w3w.co/combust.ecologists.articles
এবং
https://w3w.co/posh.kilos.explainer
আমার পরিচয়
আমি জীবন মাহমুদ। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সপ্তম পর্বের অধ্যায়ন রত আছি। আমি ছবি আঁকতে এবং ফটোগ্রাফি করতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমাইট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
সম্পূর্ণ টা পড়ে আমার মন কিছুটা খারাপ। আমাকেউ একদিন আপনার মতোই এই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে হবে। বিষয়টি ভাবতেই কেমন লাগছে😞।
সেই ১ আগষ্ট ২০১৭ থেকেই এখন পর্যন্ত ৪ বছরের একটু বেশি সময় ছিলেন এই বন্ধুবান্ধব স্যারদের সাথে। হিসেবে পরিবারের সদস্যদের থেকে তাদের সাথে বেশি সময় অতিবাহিত করেছেন। তাদের ছেড়ে যেতে তো কষ্ট হবেই। কিন্তু কী আর করার। আপনার জন্য শুভকামনা ভাই।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বী ভাইয়া দোয়া করবেন আমার জন্য।ধন্যবাদ আপনাকে🎊🎊
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বন্ধুরা জীবনের এক একটি অংশ। বন্ধুদের ছেড়ে থাকা অসম্ভব একটি ব্যাপার। কিন্তু জীবনের তাগিদে বিচ্ছিন্ন হতেই হয় 😟।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুম ঠিক বলেছেন আপনি 💞ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
🐙🐙🐙খুব ভাল ছবির ছবি আমি সত্যিই এত আশা সেক্স তৈরি পছন্দ করি খুব ভাল ছবির ছবি আমি সত্যিই আপনার জন্য ভাল সেক্স পছন্দ করি 🐙🐙🐙
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি আপনার লক্ষ্যকে স্বাগত জানাইয়া, উত্তরোত্তর মঙ্গল কামনা করছি। আমিন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দোয়া করবেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে 😍😍
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
🥀
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে প্রতিষ্ঠানে থেকে শিক্ষা অর্জন করা হয় সে প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা শেষ করে যাওয়ার দিন মনটা বেশ সবারই খারাপ হয়। ভাই আপনার জন্য দোয়া রইল আপনি যেন আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন। সর্বোপরি আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্যে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit