আহসান মঞ্জিল জাদুঘর ভ্রমনের পঞ্চম পর্ব।।

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম

সবার সুস্বাস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে আজকে নতুন একটি পোষ্টি শুরু করতেছি,

কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি। আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের পোষ্টি নতুন হলেও ফটোগ্রাফির ভিতরে যে জিনিষ গুলো দেখবেন সে গুলো অনেক পুরাতন। শত শত বছর আগের পুরাতন জিনিষ। আশা করি দেখলে আপনাদের নিকট অনেক ভাল লাগবে।

01.jpg

বন্ধুরা আমি আজকে আপনাদের সাথে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে সংরক্ষিত এমন কতগুলি জিনিসের ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো যেগুলো হয়তো আপনারা কোন দিন দেখেন নাই। আমি জাদুঘরে যতই ঘুরে ঘুরে পুরাতন জিনিস গুলো দেখছিলাম ততই অবাক হচ্ছিলাম। তৎকালীন যুগে নবাবরা বিভিন্ন দেশ থেকে কত সুন্দর সুন্দর জিনিস কিনে এনেছিলেন। আজকে তারা এ দুনিয়াতে বেঁচে নাই। কিন্তু তাদের ব্যবহৃত জিনিস গুলো স্মৃতি হিসেবে জাদুঘরে রয়ে গেছে।

আজকে আপনাদের সামনে একটি চেয়ারের ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো। যে চেয়ার টি দেখলে আপনাদের কাছে মনে হবে এই চেয়ারটি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার ব্যবহৃত চেয়ার। তাছাড়া আরও রয়েছে তৎকালীন যুগের একটি টাইপিং মেশিন। যে মেশিনটি দিয়ে নবাবরা তাদের অফিসের কাজ কর্মের দলিলপত্র টাইপিং করতো। মেশিনটি দেখে আমার কাছে খুবই অদ্ভুত মনে হয়েছে। তৎকালীন যুগেও টাইপিং মেশিন ছিল সেটা আমার কল্পনার বাহিরে।

আপনারা আরও দেখতে পারবেন কার্ড খেলার একটি টেবিল। তৎকালীন যুগে নবাব এবং তাহার বন্ধুবান্ধবরা মিলে কার্ডও খেলতেন। কার্ড খেলার টেবিলটাও অনেক সুন্দর। আপনাদের কাছে সবগুলো জিনিসই অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে একে একে সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখে নেওয়া যাক।

01.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

এটা হল নবাব খাজা সলিমুল্লাহ এর ব্যবহৃত চেয়ার। আপনারা চেহারের সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আরো কতগুলো জিনিস দেখতে পাচ্ছেন। এগুলো হলো নবাবের ব্যবহৃত হুক্কার অংশ বিশেষ। এই চেয়ারে বসেই নবাব সলিমুল্লাহ হুক্কা খেতেন এবং গল্পগুজব করতেন।

02.jpg

03.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

এটা হল নবাবদের ব্যবহৃত অফিসের টাইপিং মেশিন । আপনারা ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখতে পারবেন যে টাইপিং করার বাটন গুলো দেখতে কেমন অদ্ভুত লাগছে। তৎকালীন যুগে এটার মাধ্যমেই টাইপ করে দলিলপত্র এবং খাজনা পত্র তৈরি করা হতো। তৎকালীন যুগের মধ্যে টাইপিং মেশিন ছিল সেটা আমি কল্পনাও করতে পারি নাই। সেখানে গিয়ে আমি অদ্ভুত অদ্ভুত কতগুলো জিনিস দেখলাম।

04.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

এই ফটোতে যা কিছু দেখতে পাচ্ছেন সবগুলো হাতির দাঁত খোদাই করে বানানো। কত নিখুঁতভাবে কাজ করলে হাতির দাঁত দিয়ে এমন সুন্দর সুন্দর জিনিস বানানো যায়। আমার মনে হয় এই জিনিসগুলো নবাব বহির্বিশ্ব থেকে ক্রয় করে এনেছেন। এখানে রয়েছে ছুরি-কাঁচি, পাখা হাতের বালা, চুলের কাঠি সহ আরো অনেক জিনিসপত্র।

05.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

এই ফটোগ্রাফিতে দেখতে পারবেন নবাবদের ব্যবহৃত কতগুলো সিলমোহর। এই সিলমোহর গুলো দিয়ে নবাবরা তাদের অধীনস্থ প্রজাদের দলিলপত্রে সিল মারতেন। তাছাড়া একজন অপরজনের নিকট চিঠি প্রেরণ করার সময় এই সিলমহরগুলো দিয়ে চিঠিগুলো লাগিয়ে দিতেন।

06.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

এটা হল সেই কাঙ্খিত কার্ড খেলার টেবিল। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন টেবিলটির চার কোনার মধ্যে আলাদা আলাদা কিছু জায়গা রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে কার্ডগুলো রাখা হতো। বর্তমানে কোন জায়গায় এমন টেবিল আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।

07.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

এগুলো সম্ভবত নবাবদের ব্যবহৃত আংটি হবে । এগুলো আমি এগুলো আমি ভালোভাবে চিনতে পারি নাই। তবে জিনিসগুলোর আকার-আকৃতি দেখে আমার কাছে আংটি মনে হচ্ছে। যদি আপনাদের কোন মতামত থাকে এগুলোর ব্যাপারে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাকে জানাবেন।

08.jpg

09.jpg

10.jpg

Location
Device-Redmi Note-8

তারপর আমরা ঘুরতে ঘুরতে চলে গিয়েছিলাম নবাবের হলরুমে। সেখানে আমরা এমন কতগুলো ছবি দেখলাম যেগুলো আমি কখনো দেখতে পারবো বলে কল্পনা করি নাই। সেখানে এমন এমন কিছু ব্যক্তিদের ছবি দেখলাম যা সত্যিই দুর্লভ।

11.jpg

12.jpg

13.jpg

আজকের শেয়ার করা সর্বশেষ ফটোগ্রাফির মধ্যে আপনারা দেখতে পারবেন নবাবদের অফিসে ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিল সহ আরো অনেক জিনিসপত্র। এখানে সর্বশেষ দুটি ফটোগ্রাফির মধ্যে আপনারা উপরের দিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করলে একটি সিলিং ফ্যান দেখতে পারবেন। ফ্যানের ডিজাইন টা বর্তমানে কোথাও পাওয়া যাবে কিনা সেটা আমার জানা নেই। তবে ফ্যানটি দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছিল। তাই ফটোগ্রাফি করেছিলাম।

বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। আহসান মঞ্জিলের ভিতরে যা কিছু দেখলাম আজকে সেগুলোর অল্প কিছু শেয়ার করলাম। কেমন হলো আজকের পোষ্ট অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আবার দেখা নতুন কিছু বিষয়ের আপডেট নিয়ে।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
জাদুঘরের নামআহসান মঞ্জিল জাদুঘর
স্থানআহসানুল্লাহ রোড,নওয়াব বাড়ি, ঢাকা ।
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@joniprins
তারিখ২১-০২-২০২৩

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG_20190907_175336_618.JPG

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFaFYLUUkHV6dSwLV7zz7zNE5rVJ5qtN3Zm6SdmcqGFekXXVnJVmd6y7N12FUdQdbdzipDFEFaWmdmFe1K9CCqMuRmX9o7cDLXe7oZxUwNZXbSxanRUefX7PYzUbi2zovtPsG5QcGuGgiyhkJur9LnLhaBtL31haW2181Ss.png

KNoz79cGRt58XHcjM3shjWsSEtKgRtxoVdChppmw4FvW2CQtZxVJGen4yBCeRMj2Y2h9ttHevCs9rtWncvn3FXAHo5MrkNBCbLay5LtH7wgCA27mBRvWM5GDKNQKzJk62Dz8KRvqdiFsZ66guzvyhyBYqJu6KB21dLiPDmtFGR2yvqBCtUPp3Rscm37PwtDEWYMtuKM5v3qhNod24L.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9VRjuxKSTKuNvqEk1nfiYiKKnHbcTuABq9Fu2qE77V9BjGsoqkb23ngKUAk2mCBmjpG3wz3go7Vd2YW.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

download-03.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

download-044.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

Click Here For Join Heroism Discord Server

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

দেখতে দেখতে আপনি আহসান মঞ্জিলের জাদুঘরের পঞ্চম পর্ব শেয়ার করেছেন ভাইয়া। শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি পর্বে অনেক সুন্দর এবং আকর্ষণীয় জিনিস দেখার ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে আহসান মঞ্জিল এর জাদুঘরের এত সুন্দর কিছু ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

জী আপু হয়তো আরো কয়েকটা পর্ব হবে। ধীরে ধীরেই পর্ব গুলো প্রকাশ করছি। ধন্যবাদ আপু।

আহসান মঞ্জিল জাদুঘর ভ্রমণ করে আপনি অনেক সুন্দর এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর কিছু আলোকচিত্র আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।।
যদিও আমি কিছুদিন আগেই গিয়েছিলাম এই জায়গাটি ভ্রমণ করতে আমার খুবই ভালো লেগেছে।।

জী ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন সেখানে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

বাহ্ দেখতে দেখতে তো আপনি আহসান মঞ্জিল এর পঞ্চম পর্ব আজ আমাদের মাঝে শেয়ার করে নিলেন। আর আপনার আহসান মঞ্চিল ভ্রমনের পর্বগুলোর মাধ্যমে আমরা অনেক পুরানো কিছু ছবি দেখতে পেলাম। আর আজকের পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পেলাম সেসময়ের জমিদার বাড়ির কিছু সুন্দর সুন্দর দৃশ্য।

জী আপু সেই সময়ের নবাব বাড়ি আজকে জাদুঘর হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপু।

আহসান মঞ্জিল জাদুঘর ভ্রমণের পঞ্চম পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।ফটোগ্রাফি গুলোও দুর্দান্ত ছিল।নবাব রা বেঁচে না থাকলেও তাদের ঐতিহ্য জাদুঘরে গেলেই দেখা যায়,কতটা রুচিশীল ছিলেন তারা।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

জী আপু আজ নবাবরা বেচেঁ নেই,কিন্তুু তাদের স্মৃতি আজও অক্ষত অবস্থায় রয়েগেছে। ধন্যবাদ আপু।