আজ সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার।
০৩ সেপ্টেম্বর- ২০২২
হ্যালো স্নেহের ছোট বড়, এপার ওপার,বাংলাদেশীয়,ভারতীয়,নেপালীয় ভাই ও বোনেরা। কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছে। আরেকটি নতুন সপ্তাহের প্রথম দিনের সকাল বেলায় আপনাদেরকে জানাই অন্তরের অন্তস্থল থেকে সালাম।
মানব জীবন গতিশীল ও পরিবর্তনশীল। জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। কে কখন কোথায় যাবে,কোথায় খাবে কেউ বলতে পারে না। ভাগ্য বা নিয়তি যখন যাকে যেখানে নিয়ে যাবে সেখানেই যেতে হবে। আজ এখানে তো কাল ওখানে। কারো জীবনের এক সেকেন্টেরও গ্যারান্টি নেই। তার পরও আমরা ভবিষৎ নিয়ে কত আশা করি,কত প্লান করি। কারণ আশায় মানুষকে বাচিয়ে রাখে। যায়হোক চলোন মূল কথায় ফিরে যায় নতুন একটি পোষ্ট করি।
উপরের যে লোকটি দেখতে পাচ্ছেন, তার নাম রুবেল। সে আমার মামা হয়। শুধু মামা বললে ভুল হবে, আমার বন্ধু, আমার ক্লাসমেট। আমরা এক সাথে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছি। সব থেকে বেশি মজার হলো পরিক্ষার সময় সে নিজের থেকে একটি অক্ষরও লেখতো না। আমি যা লিখতাম হুবহু সে আমাকে কপি করতো।
আমাকে একবার আমার এক বন্ধু বললো, তুই আজে বাজে কিছু লেখা লেখ পরে আবার কেটে দিস। দেখ রুবেল কি লিখে। আমি তার কথা মতো চার পাচঁ লাইন আজে বাজে লেখা লিখলাম। তারপর তার খাতার দিকে তাকালাম, দেখলাম সে হুবহু আমাকে কপি করছে, একটু পড়েও না, যে কি লিখলাম। এত গাদার গাদা ছিল। তবে আমাকে নিয়ে অনেক বার স্কুল পালাইছে। স্কুল পালানো নিয়ে মার কাছে অনেক মার খেয়েছি।
রুবেল এখন মধ্য প্রাচ্যের দেশ লেবাননে থাকে। প্রায় ১০ বছর ধরে সে লেবাননে আছে। মামা দেশে আসার পর তাকে দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। একেবারে শুকিয়ে গেছে। শরীর শুকিয়ে এমন হয়ে গেছে যে তাকে বিয়েই করানো যাচ্ছে না। মামাকে বললাম মামা এভাবে কি করে শুকাইলা।
মামা বললো তোমরা হয়তো শুনেছো যে গত বেশ কয়েক বছর আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছিল। সে বিস্ফোরণে অনেক মানুষ আহত ও নিহত হয়েছিল। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সেই বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে আমিও ছিলাম। রাজধানীর কোন হস্পিটালে জায়গা না হওয়ায় আমাকে গ্রামের হস্পিটালে নেওয়া হয়েছিল। আমি প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন অজ্ঞান অবস্থায় ছিলাম। সেই দশ বারো দিনে আমাকে সেলাইন ছাড়া আর কিছু দেওয়া হয়নি। আমি পুরপুরি সুস্থ হতে প্রায় দেড় মাস সময় লেগেছিল। দেড় মাসে আমি খাবার নিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। অসুস্থতা আর ঠিকভাবে খাবার খেতে না পেরে আমার শরীর শুকিয়ে গেছে। বাড়িতে কোন কিছু জানাইনি।
সে বললো আমার কোম্পানির লোক ভেবে ছিল আমি মারা গেছি। তবে তখনো নির্দিষ্ট কোন তথ্য না পাওয়ায় দেশে জানায়নি। দেড় মাস আমি নিখোঁজ থেকে অনেক কষ্ট করেছি। আমি যে বেচে আছি, এটাই আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া।
তিনি আমার সাথে আরো অনেক কথা সেয়ার করেন। তিনি বলেন গত ৭/৮ বছর আগে লেবানন ছিল মধ্য প্রাচ্যের সুইজারলেন্ড। বিশ্বের উন্নত দেশ থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীরা লেবাননে ইনবেষ্ট করেছিল। কিন্তুু বর্তমানে লেবানন প্রায় দেউলিয়া হওয়ার পথে। লেবাননের মন্ত্রী এমপিরা যে হারে দুর্নতি করতেছে। আর কয়েক বছর পর লেবানের মানুষ দেশে ছেড়ে পালাবে। একটি দেশ যতই উন্নত হোক না কেন, দুর্নীতি করলে দেশ ধংস হতে বেশি দিন সময় লাগে না। তার জ্বলন্ত প্রমান হলো লেবানন।
লেবাননের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উপর একটি জরিপ করা হয়েছিল। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শোনা করছে তাদের ৯৫% ছাত্রছাত্রী দেশ ছেড়ে পালাতে চাই। তারা বলে লেবাননে তাদের কোন ভবিষ্যৎ নাই। তাদের এমপি,মন্ত্রী আমলারা দুর্নীতি করে দেশকে ধংস করে ফেলতেছে। লেবাননের প্রত্যেক এমপি মন্ত্রীরা না কি ইউরোপে আমেরিকাতে বাড়ি করতেছে।
অবশেষে মামা বিয়ে করে বউ নিয়ে আবার চলে গেছে। তবে এবার নাকি একেবারে চলে আসবে। তার সাথে মাঝে মাঝে কথা হয়, সে বলে দেশের অবস্থা ভাল না। যে টাকা পায় সেটা টাকা দিয়ে ফেমিলি নিয়ে বেচে থাকতেই কষ্ট হয়ে যায়। বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারি না। দেশের দ্রব্যমূল্য নাকি অনেক বেড়ে গেছে।
আমি একটি বিষয় চিন্তা করে দেখলাম,যে দেশে বেশি বেশি দুর্নীতি হয় সে দেশেই দ্রব্য মূল্যের দাম বেড়ে যায়। বাংলাদেশেও দ্রব্য মুল্যে উর্ধগতির একমাত্র কারন দুর্নীতি। বাংলাদেশের এমপি মন্ত্রীরা ইউরোপ,আমেরিকায়,কানাডার বেগম পাড়ায় বাড়ি করে আর আমাদের ৭০ টাকা কেজি চাউল,২০০ টাকা কেজি তেল খেতে হয়,বিদ্যুৎহীন দিন রাত পার করতে হয়। যাক মনের কষ্ট মনেই থাক। আমিও সুযোগ পেলে দেশ ছেড়ে পালাবো।
বিঃদ্র:- ছবি গুলো মামার অনুমতিক্রমে মামার ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করেছি। ধন্যবাদ।
বন্ধুরা মনের কষ্ট মনে নিয়ে আজকে এখান থেকেই বিদায় নিচ্ছি। আজকের পোষ্টটি কেমন হলো কমেন্ট করে জানাবেন। দেখা নতুন পোষ্টে। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
কি বলেন আপনি আজেবাজে লিখেছেন আর আপনার মামা সেটাই হুবহু কপি করে নিল। আসলেই মজার ব্যাপার। কিন্তু লেবাননের অবস্থা এতটাই খারাপ শুনে ভীষণ খারাপ লাগলো। উনিও সে অবস্থায় পড়েছেন এমনকি প্রায় দেড় মাস লেগেছিল ওনার সুস্থ হতে। একটা কথা ঠিকই বলেছেন এই সবকিছুর জন্য দায়ী দুর্নীতি। দুর্নীতির কারণে কোথাও শান্তি নাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু আমার মামা অনেক অসুস্থ ছিল। আর লেবাননের অবস্থা না কি বাংলাদেশের মত হয় যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit