হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। দেশের অবস্থা,চারপাশের অবস্থা বেশি ভাল না। দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য বিত্ত পরিবারের মানুষ গুলো একটু কষ্টে আছে। তারা কারো কাছে বলতেও পারেন না, সইতেও পারেন না। এই আশায় বেচেঁ আছে যে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরাও চাই সময়ের সাথে সাথে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হোক। বেশি বললে আবার প্রসঙ্গ অন্য দিকে চলে যাবে। চলুন মূল কথায় ফিরে গিয়ে একটি পোষ্ট সেয়ার করি।
আমি গত মাসে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় রাস্তায় একটু পুলিশ ভাইদের প্রবলেমে পড়েছিলাম। আমি সাধারনত ট্রেনে আসা যাওয়া করি। বাসে গেলে জ্যামের কারনে অনেক লেইট হয়,একসিডেন্টের ভয় আবার আমার মাথাও ব্যাথা করে। তাই ট্রেনে যাওয়াকেই নিরাপদ মনে করি। আমি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৫.৪৫ মিনিটের তিতাস ট্রেনে যাওয়ার উদ্দেশ্য ৪.২০ মিনিটে অফিস থেকে বের হয়। সাইনবোর্ড যাওয়ার পরে লাব্বাইক বাসে উঠবো এমন সময় একজন পুলিশ সদস্য আমাকে লক্ষ করে ডাক দিলো। আমি কোন কিছু না ভেবে উনার ডাকে সারা দিয়ে তার সামনে হাজির হয়ে গেলাম। সে বললো আপনি কোথায় থেকে এসেছেন..? কোথায় যাবেন..? এত তাড়াহুড়া করছেন কেন..? আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বললাম যে আমার ট্রেনের সময় হয়ে যাচ্ছে তাই তাড়াহুড়া করছি। সে আমার ব্যাগটা চেক করে কিছু পেল না। আবার আমার ব্যাগটা দিচ্ছেও না। এভাবে ব্যাগটা কয়েক বার চেক করলো কিছু পাচ্ছে না। আমি বললাম স্যার এখানে দেরি করলে আমার ট্রেনটা মিস হয়ে যাবে। সে বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই ব্যাগ বারবার চেক করছে। সেখানে পুলিশ ভাই আমার দশ থেকে পনের মিনিট সময় নষ্ট করে দিলো। আমার ব্যাগে কিছু না থাকা সত্বেও অনেক রিকুয়েষ্ট করে,পুলিশ ভাই থেকে আমার ব্যাগটা নিতে হলো।
টাকা এমন একটি জিনিষ যার লোভে মানুষ কত নিচে নামতে পারে কখনো কল্পনা করা যাবে না। কত সরকারি লোক আছে যারা চাকরীতে জয়েন করার তিন চার বছর পরেই দুই কোটি তিন কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি করে। অথচ বেতন কত পায় সে কথা জিঙ্গেস করলো চেহেরা কালো হয়ে যায়। অনেক ছেলের বাবা আছে, অনেক শশুর বাবারা আছে,যারা তাদের ছেলে, তাদের মেয়ের জামাইকে নিয়ে কত গর্ব করে বলে, আমার ছেলে আমার মেয়ের জামাই সরকারি চাকরি করে মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম। তারা একটু চিন্তা করে না যে তাদের সেলারি কত। তারা এত টাকা কোথায় পায়।
কত হাজী সাহেব আছে তাদের ছেলে ও মেয়ের জামাইয়ের ঘুষের টাকা দিয়ে হজ্ব করে এসে গর্ব করে বলে আমি তাদের টাকায় হজ্ব করে এসেছি। সে হজ্বের টাকা কোথায় থেকে কিভাবে আসলো সেটা যদি একবার জানার চেষ্টা করতো তাহলে দেশে এত অশান্তি থাকতো না। রাস্তা ঘাটে,অফিসে আদালতে, গাড়িতে বাড়িতে যেখানেই যাবেন শুধু ঘুষ আর ঘুষ।
গত কয়েক বছর আগে একটি ঘটনা শুনেছিলাম। সেটা আপনাদের সাথে সেয়ার করি। গ্রাম থেকে উঠে আসা এক পুলিশ ভাইয়ের গল্প। ছেলেটা অনেক মেধাবী রিটেনে পাশ করেছে ভাইবা বোর্ডেও ভাল করেছে। তারপরও ছেলেটার কাছে চাকরীর জন্য মাত্র দশ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে।
ছেলেটা এ কথা শুনে মন খারাপ করে বাড়ি যায়। তার বাবা মা ভাইবোন সবাই অনেক আগ্রহ নিয়ে বসে আছে ছেলের চাকরির সংবাদ শুনার জন্য। ছেলেটা বাবার কাছে বললো দশ লাখ টাকা ঘুষ দিলে তার চাকরি হবে। বাবা এ কথা শুনে দাড়ানো থেকে বসে গেল। কোথায় থেকে এত টাকা জোগার করবে। দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অবশেষে পরের দিন সকালে নিজের বাড়িটা বিক্রয় করে ছেলের হাতে দশ লাখ টাকা দিলো চাকরির জন্য। ছেলে খুশি হয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললো বাবা তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ট বাবা।
ছেলেটা দশ লাখ টাকা দিয়ে চাকরিটা পেয়ে গেল। ঐদিন রাতে ভাইবা বোর্ডের অফিসারের ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। বাবা ঘুষের টাকা দিয়ে ছেলের জন্ম দিনের অনুষ্ঠানে সুজুকি বাইক কিনে উপহার দিলো। ছেলে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললো বাবা তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ট বাবা। সব বাবারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ট বাবা। কোন বাবা নিজের শেষ সম্বল বাড়িটা বিক্রয় করে ছেলের চাকরির জন্য ঘুষের টাকা দিয়ে শ্রেষ্ট বাবা হয়। আর কেউ ঘুষের টাকা দিয়ে ছেলেকে বাইক কিনে দিয়ে শ্রেষ্ট বাবা হয়।
আমি যে কথা গুলো লিখলাম সে গুলো আমার নিজের মনগড়া কথা না। বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা। একদিন রমজান মাসে বিকাল বেলায় দোকানে বসে আছি। দোকানের নিচে একজন ইলিশ মাছ বিক্রয় করতেছিলো। একটি ভদ্র লোককে দেখলাম বারবার ঘুরে ফিরে মাছ দেখতেছে। ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট ঘুরেও দামের কারনে মাছ কিনতে পারতেছে না। হঠাৎ করে একজন সরকারি অফিসার গাড়ি দিয়ে যাচ্ছিলো। সে ইলিশ মাছ দেখে গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে মাছ ওলাকে বললো মাছ গুলো কত। মাছ ওলার কাছে চারটি মাছই ছিল। সে সাত হাজার টাকা বলতেছে। ক্রেতারা তিনহাজার চারহাজার টাকা করে দাম বলতেছে। অফিসার সাহেব কোন কথা বললেন না। চারটি মাছ সাত হাজার টাকা দিয়ে নিয়ে চলে গেলন।
মাছ গুলো নিয়ে যাওয়ার পর ঐ ভদ্র লোকের চেহেরাটা কালো হয়ে গেল। টাকা আছে বলে এত গুলোর মানুষের আশা ভঙ্গ করা ঠিক হয়নি। এক বড় ভাইয়ের কাছে জানতে পারলাম সরকারি স্যার সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করেন। তখনই যা বুঝার বুঝে গেলাম। আপনারাও বুঝে গেছেন নিশ্চয়।
যায়হোক অনেক কথা বলে ফেলেছি। বেশি কথা বললে আবার অনধিকার চর্চা হয়ে যাবে। ছোট মুখে বড় কথা হয়ে যাবে। আজ এখান থেকেই বিদায় নিতে চাই। পোষ্টটি ভাল লাগলে কমেন্ট করে উৎসাহ দিবেন। ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকেবন। আল্লাহ হাফেজ।।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের দেশে এখন ঘুষ ছাড়া কিছুই হয় না। যে যত বড় চাকরি করুক না কেন সে ঘুষ দিয়ে তারপর চাকরিটি এখন পেয়ে থাকে। আমার চাকরি পাওয়ার পর সবাই ঘুষ নিয়ে থাকে। গরিব অসহায় লোকদের কাছ থেকে এতগুলো ঘুষ নিয়ে তারা সুখে থাকে। প্রত্যেক বাবারাই তাদের মেয়ের জামাইদের টাকা দেখলে বলে অনেক টাকা আছে ছেলেটি অনেক বড়লোক। ঘুষ কোনদিন বন্ধ হবে বলে আমার মনে হয় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এ আর নতুন কি বলেন,প্রতিটি ক্ষেএে ই তো এমন,দেশের অবস্থা খারাপ আমার ও আপনার মত মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত মানুষরাই টের পাচ্ছে।যারা ঘুষের টাকা দিয়ে চলছে তারা কিন্তু টের পাচ্ছে না,আর পুলিশের কথা কি বা বলবো।আগে মানুষ ছিনতাই কারী কিংবা ডাকাত দেখলে ভয় পেতে এখন মানুষ দূর থেকে পুলিশ দেখলে রাস্তা পরিবর্তন করে হাটে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit