গত কালকের বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আমাদের মন মানসিকতা ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)
আসসালামুআলাইকুম

হ্যালো বন্ধুরা
আমি @joniprins বাংলাদেশ থেকে সুখে দুঃখে সব সময় রয়েছি আপনাদের পাশে।

কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই ভাল আছেন। যদিও অনেকে বলবেন বিদ্যুৎ নেই কিভাবে ভাল থাকি। আমি বলবো ভাইয়া বিদ্যুতের সমস্যা সবার এলাকাতেই আছে। শুনেছি বিশ্বের কিছু কিছু দেশে নাকি বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করতে পারে সেটা তারা জানেই না। তারা জানে বিদ্যুৎ আছে আর সেটা সবসময় থাকবেই। আমরা তো এমন দেশে জন্ম নেয়নি। আমরা জন্ম নিয়েছে এমন একটি দেশে যেখানে বিদ্যুৎ যাওয়ার সময় ঠিক আছে কিন্তুু আসার সময় কেউ জানে না । এখানে বিদ্যুৎ,পানি,ডাক্তার,শিক্ষা,বাসস্থান সব কিছুরই সমস্যা আছে। এই সমস্যা নিয়েই আমাদের বাচতে হবে। চলোন তাহলে গতকালকে আট নয় ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় কি কি অভিজ্ঞতা হয়েছে সে বিষয়ে একটু আলোচনা করি।

bulb-gd0c6a7b7c_1920.jpg
Source

আপনারা সবাই জানেন যে গত কালকে গ্রীডের কারনে কোন কোন জাগায় দুপুর ১২টার পর থেকে আবার কোন কোন জাগায় দুপুর ২টা পর থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। ঢাকাসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলাতেই বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। আমি আমাদের ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে জানতে পারি যে সারা বাংলাদেশে মাত্র দশ থেকে পনেরটি জেলাতে বিদ্যুৎ ছিল। এছাড়া সব জাগায় বিদ্যুতের সমস্যা হয়েছে। কোন কোন জাগায় সাত ঘন্টা আবার কোন জাগায় আট ঘন্টা,দশ ঘন্টার মত বিদ্যুৎ ছিল না।

এই ধীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকার কারনে আমরা সর্বপ্রথম যে সমস্যার সম্মুখীন হয় সেটা হলো পানির সমস্যা। সবাই জানে যে বাংলাদেশে প্রতিদিন এক ঘন্টা করে লোডশেডিং এর সিডিউল দেওয়া আছে। যদিও বলেছে যে প্রতি চব্বিশ ঘন্টায় এক ঘন্টা করে লোডশেডিং দিবে কিন্তুু আমরা বাস্তুবে দেখতেছি প্রতিদিন তিন ঘন্টা করে লোডশেডিং দিচ্ছে। যায়হোক তা নিয়ে আমার এখন আর কোন মাথা ব্যাথা নেই। বাংলাদেশে যখন জন্ম নিয়েছি কিছু করার নেই। সবার মত আমারও এক কথা সবার যে অবস্থা আমারও একই অবস্থা। আর এটাই আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা। সেটা নিয়ে আর গভীরে যাওয়ার দরকার নেই। যেটা বলতেছিলাম বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর কেউ তেমন গুরুত্ব দেয়নি কারন সবাই জানে যে এক ঘন্টা পরে বিদ্যুৎ চলে আসবে।

ঘন্টা দুয়েক সময় যখন অতিক্রম হয়ে গেল তখন সবাই একটু বিরুক্ত হয়েছে,তখনোও কেউ বুঝতে পারে নাই ,ব্যপারটা আসলে কি। তিন চার ঘন্টা যখন চলে গেল তখন সবাই জানতে পারল যে গ্রীডের কারণে বিদ্যুতের সমস্যা হয়েছে। বিদ্যুৎ কখন আসবে সেটা কেউ বলতে পারে না। কেউ বলে দুইদিন আসবে না অবার কেউ বললে শুক্রবারের আগে আসবে না। তখন সবাই বালতি,জগ,হাড়ি,পাতিল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিল। কার আগে কে পানি রাখবে সেটা নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। কিন্তুু ততক্ষনে সবার বাড়ির পানির টাংকি প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কেউ পানি রাখতে পারলো আবার কেউ রাখতে পারলো না। কি আর করা যাবে বিদ্যুৎ না আসালে পানি কিনে খরচ করতে হবে। একদিকে গরম অন্যদিকে বিদ্যুত নাই,পানি নাই সবাই হা হুতাস করে বিদ্যুৎ বিভাগ আর সরকারের উপর নিজেদের রাগ মিটাতে শুরু করলো। রাগারাগি,গালাগালি করলে কি ‍বিদ্যুৎ আসবে।

light-bulbs-1875384_1920.jpg
Source

এভাবে সন্ধ্যা হয়ে গেল বিদ্যুৎ আর আসতেছে না। যারা পানি সংগ্রহ করতে পেরেছে তারা রান্না করেছে আর যারা পানি সংগ্রহ করতে পারে নাই তারা রান্নাও করতে পারে নাই। এখন তো সন্ধা হয়েগেছে যেহেতো বিদ্যুৎ নেই সেহেতো ঘর অন্ধকার। কেউ কেউ মোমবাতি কিনার জন্য দোকানে গেল। সেখানে আবার আরেক বিপদ। গিয়ে দেখে কিছু কিছু দোকানে মোমবাতি নেই। আর যে দোকানে আছে তারা দশ টাকার মোমবাতি ত্রিশ টাকা চাচ্ছে আর বিশ টাকার মোমবাতি ৫০ টাকা চাচ্ছে। এবার বলেন বাঙ্গালী কত খারাপ। কোথায় বিপদের সময় মানুষকে সাহায্য করবে তা না করে গলা কাটার জন্য বসে আছে। কি আর করার ঘরে আলোর জন্য বাধ্য হয়ে নিতে হয়েছে।

তারপর আসি কেরোসিনের কথা। গত কয়েক মাস আগে জনগনের রক্ত চোষার জন্য রাতের বেলা কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রয় করলেও গত কালকে সেটা বেড়ে ১৫০ টাকা হয়েগেছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। কখন মানুষ বিপদে পরবে আর তারা সেই সুযোগটা কাজে লাগাবে। মানে ব্যবসায়িরা যদি পারতো তাহলে ক্রেতার কিডনি খুলে রেখে দিতো। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কোন ধর্মকর্ম নেই। তাদের কোন নিয়ম নীতি নেই। যখন যেভাবে পারে পন্যের দাম বাড়িয়ে বসে থাকে।

এবার আসি পানির বিষয় নিয়ে। মানুষের বাসা বাড়িতে তেমন পানি নেই। আর যারা পানি রেখেছে সেটাকে স্বর্ণ অলংকার মনে করে লুকিয়ে রেখেছে। তবে তাদের মধ্যে কিছু কিছু খালা আছে তারা আবার আমাদের পানি দিয়ে সাহয্য করেছে। গতকালকে বিদ্যুৎ না থাকায় কিছু কিছু মানুষের আসল চরিত্র দেখা গেছে। যায় হোক অবশেষে রাত নয়টার পরে বিদ্যুৎ আসে। তারপর আমরা নিজেরা রান্না করে খেয়েছি।

light-2565575_1920.jpg
Source

কখন কোন বিপদ আসে সেটা তো বলা যায় না। তবে যে মানুষই বিপদে পড়ে না কেন তাকে যথা সম্ভব সাহায্য কারা উচিত। সাহায্য করতে না পারলে তাকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত। পাশের বাড়িতে পানি আছে শুনে পানি আনতে গিয়েছেলাম। পানি দিলেও তাদের ব্যবহার দেখে মনে হয়েছে পানি তো নয় যেন স্বর্ণ।

ধন্যবাদ বন্ধুরা আজ এপর্যন্তই । সবাই ভাল থাকবেন। অন্যকে সহযোগিতা করবেন। সহযোগিতার না করতে পারলেও ভাল ব্যবহার করবেন। নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন। আল্লাহ হাফেজ।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQCjo8xoKWHSEpzPyRNRsVL6gfxRoM2huMuKokQX4y8WbgZrrXEJ88FyZYkLnmKa7wBX1sioJmC.png

111.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1WagpCyidt3eCtv81zeLX27xCgJJcRrX6JcoixPY1ZYkTzZRvU4cg43nsPEvFsMrCx1qpdtvt7rn7wUCn6Q3hQL3sAJM.png

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPrexwcy6xHQHfFaMXGPra6UPL.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে কিছু বলার নেই । আসলেই যে কি শুরু হয়েছে জীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। যখন কোন জিনিসের চাহিদা বেড়ে যায় তখন দাম এমনিতেই বেড়ে যায়। কারণ এটা বাঙালির স্বভাব। যেহেতু তাৎক্ষণিক চাহিদার সাথে যোগান নেই কিন্তু তাদের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার মত মন মানসিকতা আছে। যাইহোক স্বপ্ন নিয়ে খুব ভালো লাগলো আপনার এই পোস্টটি ভাইয়া।

জী আপু বাংলাদেশের সবাই সুযোগ সন্ধানি। যে যেভাবে পারে জোপ ‍বুঝে কোপ মারতে চাই। ধন্যবাদ আপু।

লোডশেডিং নিয়ে নতুন করে আর কি বলব। এটা সকলেই জানে এবং সকলে এর ভোগান্তি ভোগ করে। ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা এমনই। যেখানে স্বাভাবিক হতে পড়েছে কাউকে হেল্প করবে সেখানে তারা হঠাৎ করে মোমবাতির দাম বাড়িয়ে দিল। সযুগেই অশত ব্যবহার করছে। ঠিক বলেছেন ওরা যদি পারতো সম্ভব হলে ক্রেতাদের কিডনি খুলে রেখে দিত।

জী আপু তারা সুযোগের আশায় থাকে । ধন্যবাদ আপু।

আসলে বিদ্যুৎ বিভ্রান্ত নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে আছি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বিদ্যুতের জন্য করতে পারি না। আসলে ভাই আপনি কিছু বাস্তবসম্মত কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন । পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমাদের ব্যবসায়ীরা শুধু সুযোগের অপেক্ষা থাকে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই

এটি খুবই খারাপ লাগে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে, সুযোগ পেলেই তারা টাকা কামানোর ধান্দা, কালকের ওই মুহূর্তে আমিও বেশ ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম বাসায় ছিলাম না বাহিরে ছিলাম। তাই বাসার পরিস্থিতি জানিনা রাস্তায় গাড়ি ছিল না মানুষ বাসায় ফিরতে পারছিল না। মেইন রোডে ও অনেক ভোগান্তি যুক্ত হয়েছে।

২ দিন ধরে সত্যি অনেক ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। আর দোকানে মোম আনতে গিয়ে পাওয়াও যাচ্ছে না। আর যাও বা পেলাম, দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। কি আর করা প্রয়োজন বলে কথা। 😰😥।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য। 😊