হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমার মনটা অনেক খারাপ তাই অত্যান্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আজকের পোষ্টি আপনাদের সাথে সেয়ার করতেছি। যদি সৃষ্টিকর্তার কাছে জিঙ্গেস করার সুযোগ থাকতো তাহলে আমি জিঙ্গেস করতাম মানুষের জীবন এত ছোট কেন। এত অল্প হায়াত দিয়ে কেন মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। এরকম প্রশ্ন করার সুযোগ তো আর কখনো পাওয়া যাবে না। যায়হোক মানুষের ভাগ্যে যাহা কিছু ঘটে সেটা ভালর জন্যই ঘটে।
আমি গত পোষ্টে আপনাদের সাথে বলেছিলাম আমাদের অফিসের একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে,সেটা আপনাদের সাথে সেয়ার করবো। আমি ঘটনাটি আরো কয়েকদিন পরে সেয়ার করতাম তবে যেহেতু আজকে যার সাথে ঘটনাটি ঘটেছে তার জীবনের পরিসমাপ্তি হয়ে গেছে তাই আমিও আজকে আমার শেষ পর্বের পরিসমাপ্তি টানবো। চলোন শুরু করা যাক।
গত কয়েক মাস আগে মিজান ভাইকে ট্রান্সফার করে আমাদের কোম্পানির ইউনিট-০১ থেকে ইউনিট-০২ তে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে এতদিন সে সুস্থ ভাবেই ডিউটি করে আসতেছে। অফিসে আসা যাওয়ার পথে প্রায় সময় আমার সাথে দেখা হতো। সুন্দর ভাবে হাসি দিয়ে আমাকে চা খাওয়া দাওয়াত দিতো। অফিসের সময় হয়েগেছে,অনেক কাজ আছে এভাবে বিভিন্ন কারন দেখিয়ে আমি উনার সাথে হাতি মিলিয়েই চলে আসতাম।
মিজান ভাই গত ০৯ তারিখ রবিবারে সকাল নয়টার সময় সুস্থ ভাবেই অফিসে যায়। নয়টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত অফিস করে বাসায় যায় দুপুরের খাবার খাওয়া জন্য। আমাদের অফিসে দুপুরের খাবারের সময় হলো দুপুর একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত। তবে যাহারা নামাজ পড়েন তারা দুপুরের খাবার খায় দেড়টা থেকে আড়াইটার ভিতরে। মিজান ভাইও নামাজ পরেই দেড়টার সময় বাসায় যায়। খাবার শেষ করে আড়াইটার সময়ও সুস্থ ভাবেই অফিসে আসেন।
মিজান ভাইয়ের সাথে দুইজন মানুষ কাজ করে। একজনের নাম মামুন, আরেক জনের নাম জালাল। ঐদিন অফিসে কাজের চাপ না থাকায় মামুন ইউনিট-০১ এ চলে আসে। আর জালাল অফিসে বসে মোবাইল টিপাটিপি আর অবসর সময় কাটিয়ে ছয়টার সময় অফিস থেকে বের হয়ে গেছে। কারন ছয়টার সময় সাধারনত অফিস টাইম শেষ। মামুন ছয়টার সময় ইউনিট-০১ থেকে ইউনিট-০২তে গিয়ে অফিসে কাউকে না পেয়ে ফেইস পাঞ্চ করে সেও বাসায় চলে যায়।
রাত নয়টা দশটা এভাবে রাত বারোটা যখন বেজে গেল তখন মিজান ভাইয়ের সাথের রুমমেটরা মামুনকে ফোন করে মিজান ভাইয়ের কথা জানতে চাই। সে বলে আমি দুপুরের পরে আর মিজান ভাইকে দেখি নাই। কারন আমি তখন ইউনিট-০১ এ ছিলাম। রুমের লোকজন মিজান ভাইয়ের গ্রামের বাড়িতে ফোন করে জানলো যে তিনি বাড়িতেও যায়নি। তাহলে লোকটা গেল কোথায়..সবার মাথায় এই প্রশ্ন। কোথাও গেলে তো কাউকে না কাউকে বলে যাওয়ার কথা। কোথাও কোন খুজ না পেয়ে রুমের কয়েকজন মিলে অফিসে আসে খবর নেওয়ার জন্য। অফিসের সিকিউরিটি সহ সব জাগায় খুজে যখন কোথাও পেল না তখন সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে চাইলো যে মিজান ভাই আজকে অফিস থেকে বের হয়েছে কিনা।
সিসি ক্যামেরায় দেখতে পায় দুইটা পয়তাল্লিশ মিনিটে মিজান ভাই ওয়াশ রুমে প্রবেশ করে। কিন্তুু বের হয়েছে এমন কোন বিডিও দেখা যাচ্ছে না। সবাই তখন দৌড়ে গিয়ে দেখে একটি ওয়াশ রুমের দরজা বন্ধ। ধাক্কা ধাক্কি করে দরজা খুলতে না পেড়ে দরজাটা ভেঙ্গে দেখে মিজান ভাই ওয়াশ রুমের ফ্লোরে পড়ে আছে। শরীরে ময়লা লেগে থাকায় কেউ মিজান ভাইয়ের শরীরে হাত দিলো না। কিছুক্ষন পরে একজন মধ্য বয়স্ক সিকিউরিটি এসে আগে পানি দিয়ে শরীরের ময়লা গুলো পরিষ্কার করে কয়েকজন মিলে বের করে এম্বুলেন্সে দিয়ে সোজা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে নিয়ে গেল।
ইমার্জেন্সিতে নিয়ে সব কিছু চেক করে ডাক্তার জানায় যে রুগি বিকাল তিনটার দিকে ব্রেন স্ট্রোক করেছে। আর আপনার এগারো ঘন্টা পরে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। রুগির সাথে যাওয়া লোকজন জানালো যে তিনি ওয়াশ রুমে ব্রেন স্ট্রোক করেছে। যার জন্য আমারা কেউ দেখতে পায়নি। ডাক্তার বলে তাই বলে এগারো ঘন্টা দেরি। রুগির যে শ্বাস আছে তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করবো তবে সিউর দিয়ে কিছু বলতে পারতেছি না। আল্লাহর উপর ভরসা করেন।
আমরা পরের দিন সোমবারে অফিসে এসে এসব ঘটনা জানতে পারি। আজকে সকাল নয়টার সময় অফিসে এসে জানতে পারলাম যে মিজান ভাই সকাল সাতটার সময় ইহকালের সমাপ্তি ঘটিয়ে পরকালে চলে গেছেন।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ব্রেন স্ট্রোক এমন একটি রোগ যা একটি মানুষের হলে যদি বেঁচেও থাকে তাহলে মৃত্যুর স্বাদ বেঁচে থাকতেই পেয়ে যায়।আর আমি আল্লাহ তালার কাছে একটি দোয়া করি যেন কারো কখনো ব্রেন স্ট্রোক না হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই বলি মিজান ভাইয়ের কথাগুলো পড়ে ভীষণই খারাপ লাগলো। সব থেকে বেশি খারাপ লাগলো লোকটি ওয়াশরুম ে পড়ে গেল অথচ কেউই এটা জানতে পারল না। প্রায় ১১ ঘন্টা হয়ে গেল। আরেকটা বিষয় আরো বেশি খারাপ লাগলো যে যদিও লোকটির গায়ে ময়লা ছিল এজন্য কেউ তার দিকে এগিয়ে গেল না। সিকিউরিটি এসে তারপর সবকিছু পরিষ্কার করল। আসলে ময়লা আবর্জনা তো কারো জীবনের থেকে বেশি নয়। আমি মনে করি যারা সেখানে গিয়েছিল সবার উচিত ছিল তাকে গিয়ে তোলার। শেষ পর্যন্ত লোকটিকে আর বাঁচাতে পারলো না। আসলে এরকম মৃত্যু খুবই দুঃখজন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ব্রেন স্টোক একটি মারাত্মক রোগ।
যেদিন আমার বাবার ব্রেন স্টক হয়েছিল সেদিন আমরা বুঝেছিলাম যে সেই মুহূর্তটি কেমন হয়।
আর মিজান সাহেবের ঘটনাটি পুরানো খারাপ লাগলো। তবে দোয়া করি যেন মিজান সাহেব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে কি বলবো? আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। মানুষের যে কোন মুহূর্তে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির শিকার হয়। আসলে দোয়া করি যেন মিজান সাহেব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit