হ্যালো প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসি,
আপনারা কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। মনযোগ দিয়ে পড়লে অনেক মজা পাবেন।
গরমের কথা আর নতুন করে কি বলবো। গরম নিয়ে সবাই গরম গরম তথ্য প্রকাশ করছে,হিট এ্যালার্ট জারি করছে । এই গরমে সবার মাথাই নষ্ট হয়ে আছে। কারো সাথে ঠিক ভাবে কথা বলা যাচ্ছে না। কারো সাথে ভালো বিষয় নিয়ে কথা বললেও গরম ভাব দেখায়। এই গরম শুধু বাহিরে নয়। অফিসের বস গরম,বাসার বউয়ের কথায় গরম, বাজারের দোকানিরা গরম, ফ্যান,এসির কোম্পানি গরম। সোশ্যাল মিডিয়া গরম,রাশিয়া ইউক্রেন গরম,মধ্য প্রাচ্য গরম । তীব্র গরমে গতকাল রাতের বেলা আমাদের এলাকায় সৃষ্টি হলো নতুন এক গরম।
যতক্ষন অফিসে থাকি ততক্ষন চেষ্টা করি এসির ভিতরেই থাকার জন্য। নামাজ পড়তে অফিস রুমের বাহিরে বের হলেও ফরজ নামাজ পড়ে আবার অফিস রুমের ভিতরে এসে সুন্নাত নামাজ আদায় করি। সকালে অফিসে আসার সময় রোদের তাপ দেখেই বুঝতে পারি সূর্য মামা আমাদের উপর কি পরিমান গরম। এই গরমের যাতা কলে পিষ্ঠ হয়ে অনেক স্টাফরা সকাল বেলা বাসা থেকে আসার সময় লাঞ্চ নিয়ে আসে। আমারও লাঞ্চের সময় রোদের মধ্যে দিয়ে হেটে বাসায় গিয়ে লাঞ্চ করতে মন চাই না। কিন্তুু বাসায় না গেলে আবার বউয়ের কথায় থাকে গরম, লাঞ্চ করে একটু রেস্ট নিয়ে অফিসে আসতে লেইট হলে অফিসের বসের কথায় থাকে গরম। বসের কথা না শুনলে মাস শেষে সেলারি হয়ে যায় নরম। সেলারি নরম হলে সারামাস সংসারের খরচ যোগার করতে আমার অবস্থা হয়ে যায় গরম। গরম গরমের খেলায় জীবনটা তেঁজপাতা হয়ে যাচ্ছে।
গতকাল অফিসের ভিতর বাহির সব গরম সহ্য করে সন্ধায় বাসায় গেলাম। বাসায় হেটে যেতে যেতে শরীর দিয়ে নায়াগ্রা ঝর্ণার মত ঘাম প্রবাহিত হতে থাকে। শার্ট পেন্ট খুলে ফ্যানের নিচে বসলাম আর অমনি টুস করে বিদ্যুৎ চলে গেলো। উপরের ফ্যান বন্ধ হলেও শরীরের নায়াগ্রা ঝর্ণার ঘাম চালু রইল। কি আর করবো তোয়ালে দিয়ে ঘাম মুছে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। বারান্দায় বসে কি আর শান্তি আছে...? এক দিক দিয়ে মশা কামড়ায়,অন্যদিক দিয়ে বাবু চিল্লায়,তার উপরে আবার আছে গরম। আর প্রাকৃতিক বাতাস তো অনেক আগেই বনবাসে চলে গেছে। সেকেন্ট যায়,মিনিট যায়,ঘন্টা যায় বিদ্যুৎ আর আসে না। দুই ঘন্টা পরে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারলাম এলাকার বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটার পুড়ে গেছে। কথাটা শুনেই বাংলাদেশের সকল বিদ্যুৎ আমার শরীরে চলে আসলো। কিন্তুু এই বিদ্যুৎ দিয়ে ঘাম বের হয় বাতাস বের হয় না। ট্রান্সমিটার পুড়বে না তো কি করবে....? একেক জনের বাসায় এসি ফ্রিজের অভাব নেই। তার উপর আবার একেক রুমে দুইটা তিনটা করে ফ্যান চালায়। রাইস কুকারে ভাত তরকারি রান্না করে,ব্লেন্ডার মেশিন দিয়ে শরবত বানায়,ইলেকট্রনিক চুলা জ্বালায়। এত চাপ ট্রান্সমিটার নিবে কিভাবে...?
যায়হোক বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দেওয়া হলে, তারা বলে রাতে কোন লোক নেই। সবাই বাসায় চলে গেছে। পরের দিন সকাল ১০টার সময় এসে ট্রান্সমিটার ঠিক করে দিয়ে যাবে। এ কথা শুনে সবার মুখ বন্ধ হয়ে গেলো আর মাথায় হাত দিয়ে বসে গেলো। সকাল দশটায় আসলে ট্রান্সমিটার ঠিক করতে এক দুই ঘন্টা সময় লাগতে পারে। তার মানে এই গরমে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছাড়া থাকতে হবে। এই কথা চিন্তা করলেও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা। বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়ে এখন আসতে বললে, তারা তখন পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। তারাও ঝোপ বোঝে কোপ মারলো। হয়তো টাকা দেও না হয় গরম সহ্য করো। কি আর করার ফ্যানের পাঁখা ঘুরাতে হলে,ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খেতে হলে টাকা খরচ করতেই হবে। টাকা ছাড়া ট্রান্সমিটার ঠিক হবে না। আর পঞ্চাশ হাজার টাকা তো একা কেউ দিবেও না। অবশেষে প্রত্যেক বাড়িওলা থেকে এক হাজার করে টাকা উঠানো শুরু হলো।
কিছু কিছু বাড়িওলার কাছে এক হাজার টাকা চাওয়ার পরে দুইশো টাকা,তিনশো টাকা দেয়। চিন্তা করেন বিষয়টা, মিনিমাম পাচঁশো টাকা তো দিতে পারে। টাকা উঠাতে গিয়ে কত জনের কত মন্তব্য শুনতে হলো। বাঙালী তো বিশ্বাস করে না। এত টাকা লাগে না কি,পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে কি করবে,ব্লা ব্লা। মানুষের কথা কানে নিলে ট্রান্সমিটার ঠিক হবে না। বাসায় বাসায় ঘুরে টাকা উঠাতে উঠাতে ১১টা বেজে গেলো। তারপর মটর সাইকেল দিয়ে সেই টাকা বিদ্যুৎ অফিসে নিয়ে যাওয়া হলো। তারপর তারা আবার তাদের কর্মীদেরকে বাসা থেকে ডেকে এনে ট্রান্সমিটার ঠিক করতে করতে রাত দেড়টা বেজে গেলো। প্রায় রাত দুইটার সময় ফ্যানের পাঁখা ঘুরলো। খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে ঘুমাতে তিনটা বেজে গেলো। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বাবু কেউ মেউ করে ঘুম থেকে উঠে গেলো। আর কি ঘুম হয়। বাবুকে শান্ত করতে করতেই এক ঘন্টার মত সময় লাগলো। তারপর গোসল করা, নাস্তা বানিয়ে খেয়ে অফিসে আসতে আসতে ৯.১৫ মিনিট বেজে গেলো। এখন শুরু হলো বসের গরম.......।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আপনার পোস্ট তো দুইবার পড়লাম কিন্তু মজাই লাগছে ,আপনার গরম গরম তাজা তাজা খবর পড়তে পড়তে হাসিতে দাঁত ভেঙ্গে গেলে পাবো আবার আমিও শরম 😂🤣,তাই আর বেশি হাসলাম না।তবে বোঝাই যাচ্ছে আপনার জীবন এখন তেজপাতা হয়ে আছে।যাইহোক দোয়া করি ভাই আপনি যেনো এই তেজপাতার জীবন থেকে খুব শীঘ্রই রেহাই পান।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া এই তেঁজপাতার জীবন থেকে মৃত্যুর আগে রেহাই পাওয়া যাবে না। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমনিতেই এই বছর গরমের পরিমাণটা অনেক বেশি আর আপনাদের তো দেখছি ট্রান্স মিটার পুড়ে যাবার কারণে আরো অনেক বেশি কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়েছে। টানা ৮ ঘণ্টা যদি বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকে তাহলে তো খুবই খারাপ একটা অবস্থা হয়ে গিয়েছিল আপনাদের।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া এমনি গরমের জ্বালায় বাচিঁ না। তার উপর আবার ট্রান্স মিটার পুড়ে গেলো কেমন অবস্থা হবে চিন্তা করেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
X-promotion
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit