সত্যের বিজয় সবসময়।।

গতকাল যখন দেশে জরুরী অবস্থা জারি করা হলো তখনই বুঝতে পেরেছিলাম দেশে ইন্টারনেট থাকবে না। তখন ভেবেছিলাম হয়তো ব্যাংক খাতের জন্য হলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু থাকবে। সেই জন্য সকালেই পোষ্ট লেখার চিন্তা করলাম। সকাল বেলা দ্রুত ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করেই পোষ্ট লিখতে বসলাম। সব কিছু যখন রেডি তখনই হঠাৎ করে ইন্টারনেট চলে গেলো। তখন আর পোষ্ট লেখা হলো না। দেশেরও কোন খবরও আর পেলাম না। বিশ্ব থেকে আবার বিছিন্ন হয়ে গেলাম। তখন চিন্তা করতে লাগলাম আবার কয়দিন জানি ইন্টারনেট ছাড়া থাকতে হয় আল্লাহই জানে।

ইন্টারনেট না থাকায় কিভাবে দিনটি কাটবে সেই চিন্তা করতে লাগলাম। এমনি মনে হলো ফ্রিজের ভিতরে অনেক আইস জমে গেছে,সে গুলো পরিষ্কার করা দরকার। যে চিন্তা সেই কাজ। ফ্রিজ পরিষ্কার করার পর চিন্তা করলাম রুমের ডেকোরেশনটা একটু চেইন্জ করা দরকার। সেটাও করলাম। এগুলো করতে করতে দেখলাম প্রায় বিকাল চারটা বেজে গেছে। তখন গোসল করে খাওয়া দাওয়া করলাম। তারপর রুমের ডেকোরশন চেইন্জ করার কারনে ওয়াইফাই রাউটার ও অনুর লাইন খুলে রাখলাম। কাজ শেষ করে রাউটারের লাইন লাগালাম। কিন্তুু দুঃখের বিষয় হলো ওয়াইফাই রাউটারের সাথে অনুর কানেকশন দিতে ভুলে গেছি। ইন্টারনেট কানেকশন না পেয়ে ওয়াইফাই অফিসে যোগাযোগ করলাম। তারা বলতেছে লাইন চেক করে জানাচ্ছি। অপেক্ষা করতে করতে রাত আটটার সময় আবার ফোন দিলাম। তারা আমার রাউটার ও অনুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে বললেন রাউটার ও অনুর কানেকশন লাইনটা চেক করতে। তখন লাইন চেক করতে গিয়ে বোকা হয়ে গেলাম। আমি তো রাউটারের সাথে অনুর কানেকশনই দেয়েনি,হা হা হা। নিজের ভুলের জন্য পাঁচ ছয় ঘন্টা ইন্টারনেট বিহীন কাটাতে হলো।

ইন্টারনেট আসার পরে অনলাইনে প্রবেশ করে যা দেখলাম সেটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। দেখলাম সত্যের বিজয় হয়েছে। শত অপেক্ষার অবসান হয়েছে। শত শত নিরঅপরাধ মানুষের রক্ত সফলতা পেয়েছে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাসীন সরকার পদত্যাগ করেছে। সত্যের বিজয় হওয়াতে মানুষ আনন্দ উল্লাস করছে। রাস্তায় নেমে এসেছে লাখ লাখ মানুষ। সবাই বলতে লাগলো দ্বিতীয় বারের মত দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের মুক্ত বাতাসে সবাই স্বাধীন ভাবে নিশ্বাস নিচ্ছে। অর্থাৎ সত্যের বিজয় হয়েছে।

অন্যায় কোনদিন স্থায়ী হয় না। সত্যকে কেউ ধামাচাপা দিয়ে রাখতে পারে না। প্রত্যেক দেশেই যখন জুলুম অত্যচার বেড়ে যায় তখন দেশের মানুষ গণঅভ্যুত্থান করে। তখন শাষক যতই শক্তিশালী হয় না কেন টিকে থাকতে পারে না। মানুষ যখন মৃত্যুকে ভুলে যায়, ভয়কে জয় করে ফেলে, তখন তাদের কেউ মারতে পারে না,তাদেরকে কেউ হারাতে পারে না। যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে দেশে আমার তার প্রমান দেখতে পায়। আজকেও আমরা একটি সত্যের বিজয়ের স্বাক্ষী হয়েছি। বিশ্ব আজকে বাংলাদেশের মানুষকে নতুন ভাবে চিনেছে। ১৯৫২ সালে, ১৯৭১ সালে, ১৯৯০ সালে যেভাবে বাংলাদেশের মানুষ বিজয় এনেছিল, আজকেও ০৫-০৮-২০২৪ এই তারিখটি নতুন ইতিহাস গড়লো।

বন্ধুরা মূল কথা হলো অন্যায় অত্যাচার করে কেউ বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। সব কিছুর একটা শেষ আছে। জীবন আর কয়দিনের। আমাদের জীবনটা এমন ভাবে সাজাতে হবে যেন মরনের পরে মানুষ দুই চোখের পানি ফেলে। অথচ মানুষ ক্ষমতা পেলে নিজেকে অমর ভাবতে শুরু করে। মনে করে ক্ষমতার বলে সব কিছু করে ফেলবে। আর তখনই মানুষের পতন ঘনিয়ে আসে। আজকে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ, সাধারন মানুষ সবাইকে এই ম্যাসেজটি দিয়েছে। আমরা আর কোন সংঘাত চাই না। আমরা সবাই কাধেঁ কাঁধ মিলে বাঁচতে চাই। আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয়। আর কোন ভাই বোনের রক্ত ঝরা দেখতে চাই না। আসুন সবাই এক সাথে হয়ে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখি।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।