আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের পোষ্টের বিষয় হলো হযরত সুফি,সাধক শাহ জালাল (রঃ) এর মাজার জিয়ারতের প্রথম পর্ব। আমরা সাত জন মিলে গিয়েছিলাম,অনেক মজা হয়েছিল। চলুন বিস্তারিত বর্ণনা করছি।
বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত একজন ওলীর নাম হলো হযরত শাহ জালাল (রহঃ)। অধিকাংশ ঐতিহাসিক গনের মতে হযরত শাহ জালাল (রহঃ) ইয়ামেনে জন্মগ্রহন করেন। ইয়ামেন থেকে সৌদিআরবে গিয়ে পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনির মামা ও গুরু সৈয়দ আহমদ কবিরের আস্তানায় থাকতেন। শাহজালাল (রহঃ) ভারতবর্ষে ধর্ম প্রচারের স্বপ্ন দেখার পরে সৈয়দ আহমদ কবির-এর নিকট তা ব্যক্ত করেন। মামা ও মুর্শিদ সৈয়দ আহমদ কবির এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে হযরত শাহ জালাল (রহঃ) কে ভারতবর্ষে যাবার পরামর্শ দেন। যাত্রাকালে আহমদ কবির শাহ জালাল (রহঃ) এর হাতে এক মুঠো মাটি তুলে দিয়ে বললেন, যে স্থানে এই মাটির "স্বাদ" "গন্ধ" ও "বর্ণের" মিল এক হবে, সেখানেই ধর্ম প্রচারের জন্য আস্তানা গড়বে। মুর্শিদ সৈয়দ আহমদ কবির (রহঃ) এর দোয়া নিয়ে হযরত শাহ জালাল (রহঃ) ধর্মপ্রচার অভিযানে আরবের মক্কা শরিফ হতে ভারতবর্ষের উদ্যেশ্যে একা-একাই যাত্রা শুরু করেন। সিলেটের জমিনে আসার পূর্বে রাস্তায় ৩৬০ জন আওলিয়া তিনির সঙ্গি-সাথী হোন।
৩৬০ জন্য আওলিয়া নিয়ে হযরত শাহ জালাল (রঃ) সিলেটে প্রবেশ করেন। সিলেটে প্রবেশ নিয়ে বিশাল বড় ঘটনা আছে। সে গুলো আমি এখানে উল্লেখ করছি না। আপনারা ইচ্ছা করলে গুগল অথবা বিভিন্ন বই পুস্তক থেকে সে ঘটনা জেনে নিবেন। হযরত শাহজালার (রহঃ) সিলেটে আস্তানা গড়ে সেখানে ইসলাম প্রচার করেন। তিনি সিলেটে অবস্থান কালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। যার জন্য সিলেটেই তিনিকে সমাহিত করা হয়। তিনির ভক্তবৃন্দরা তিনির সমাধিস্থলের পাশে বিরাট বড় একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা স্বাপন করেছেন। বর্তমানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তিনির মাজার জিয়ারত করতে সিলেট যায়। আমারও ইচ্ছা ছিল একবার হযরত শাহ জালার (রহঃ) এর মাজার জিয়ারত করবো। আল্লাহ তায়ালা আমার সেই আশা পুরন করেছেন। গত মাসের নয় তারিখ হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর মাজার জিয়ারত করার সৌভাগ্য হয়েছিল।
আমরা কুলাউড়া স্টেশন থেকে বাসে চড়ে সিলেটের উদ্যেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলাম। কুলাউড়া থেকে সিলেট সদরে যেতে ১০০ টাকা করে ভাড়া নিয়ে ছিল। আমরা মোট সাত জন এক সাথে গিয়েছিলাম। উপরে যে বাসটি দেখতে পাচ্ছেন সেই বাসটি দিয়েই গিয়েছিলাম।
এটি হলো সিলেট মহানগরের বাস স্টেশন। এখান থেকে বাংলাদেশের সব স্থানে বাস ছেড়ে যায়। তাছাড়া বাংলাদেশের যে কোন জেলা উপজেলা ও বিভাগ থেকে ট্রেন, বিমান বা হেলিকপ্টার দিয়েও সিলেট যাওয়া যায়। বিমান বা হেলিকপ্টার দিয়ে যাওয়ার মত টাকা এখনো হয়নি। তাই বাসে চড়েই গিয়েছিলাম।
এটি হলো সিলেটের বিখ্যাত সেই ক্বীন ব্রিজের প্রবেশদার। এই ব্রীজটি সিলেট শহরে শাহজালাল সড়কের কাছে অবস্থিত। ১৯৩২ সাল থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত আসামের ইংরেজ গভর্নর স্যার মাইকেল ক্বীনের নামে এই সেতুটির নামকরন করা হয়। সুরমা নদীর ওপর অবস্থিত এই সেতুটি সিলেট শহরের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। ১৯৩৬ সালে নির্মিত এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৪ ফুট।
ক্বীন ব্রীজটি বাংলাদেশের সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর উপর স্থাপিত একটি লৌহ নির্মিত সেতু। এটি সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় এবং ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। সুরমা নদীর ওপর নির্মিত এই স্থাপনাটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসাবেও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সিলেট বিভাগের দুটি প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার মধ্যে এটি হলো সেই বিখ্যাত সুরমা নদী যেটি ক্বীন সেতুর নিচ দিয়ে বয়ে গেছে । এটির জন্ম হয়েছে বরাক নদী থেকে। আর বরাক নদীর উৎপত্তি হয়েছে মণিপুর পাহাড়ে মাও সংসাং হতে ।
এটি হলো সিলেট শহরের মাঝখানের একটি চিত্র। এই ফটোগ্রাফিটা করার পেছনে একটি কারন আছে। সেটি হলো বাস ষ্টেশন থেকে অটোরিকসা বা সিএনজি করে হযরত শাহ জালাল (রহঃ) এর দরগাহ শরীফে যেতে হয়। আমরা যখন সিলেট মহানগর বাস স্টেশনে নামলাম তখন সেখানে অটো রিকশা ওলা মামাকে জিঙ্গেস করলাম মাজার গেইট যাবে কি না। সে বললো সরাসরি মাজার গেইট যাওয়ার পারমিশন আমাদের নেই। আমরা সর্বউচ্চ ক্বীন ব্রিজ পর্যন্ত যেতে পারি। সেখানে থেকে হেটে ব্রিজ পার হয়ে অন্য অটোরিকশা দিয়ে মাজার গেইট যেতে হবে। আমরা বললাম না তাহলে আমরা সিএনজি দিয়ে যাবো।
সিএনজি মামাকে জিঙ্গেস করলাম মামা মাজার গেইট যাবেন...? তিনি বলো যাবে। আমি বললাম কত টাকা করে যাবেন। সে বললো একজন ত্রিশ টাকা করে,তবে তিন জনের বেশি যেতে পারবেন না আর তিন জন গেলে সর্বমোট ১৫০ টাকা দিতে হবে। আমি বললাম কেন..? তিন জনের ভাড়া কত 3X30 = 90 টাকা আসে। সে বললো পুলিশের বাধাঁর কারনে আমরা সামনে বসিয়ে লোক নিতে পারি না। যার জন্য যারা পিছনে বসে তাদের থেকে সামনের দুই জনের ভাড়া আদায় করে নেয়। কি সাংঘাতিক, চিন্তা করা যায় বিষয়টা কি...?
পুলিশের বাধাঁর কারনে সামনে লোক নিতে পারবে না তবে ভাড়া তারা ঠিকই আদায় করে নিচ্ছে। যেদিকে যাও সে দিকেই জনগন বাঁশ খাও। সব সিএনজির ড্রাইভার এক মত,এভাবেই তারা মানুষকে ঠকাচ্ছে। আমরা ছিলাম সাত জন তাই দুইটি সিএনজিতে যাওয়ার সময় একজনকে বাধ্য হয়ে সামনে বসতে হয়েছে। আর সামনে বসে ছিলাম আমি। সিটির মাঝখানে গিয়ে পুলিশের বাধাঁর সম্মখিন হওয়ার ভয়ে পুলিশ দেখেই সিএনজি থেকে নেমে গিয়েছিলাম। তখন সিএনজি থেকে নেমে এই ফটোটা নিয়েছিলাম।
বন্ধুরা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে, আজ এ পর্যন্তই,আবার দেখা হবে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। বেশি করে পানি খাবেন,চার পাশ পরিষ্কার রাখবেন। সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
বিষয় | হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর মাজার জিয়ারতের প্রথম পর্ব। |
স্থান | সিলেট |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
তারিখ | ০৯-০৫-২০২৩ |
সময় | বিকাল ৪টা |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
This is a manual curation from the @tipu Curation Project.
Also your post was promoted on Twitter by the account josluds
@tipu curate
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted 👌 (Mana: 5/9) Get profit votes with @tipU :)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর মাজার জিয়ারতের পর্বটি পড়ে অনেক ভালো লাগল। সত্যি মানুষ ইচ্ছে করলে সেটা পূর্ণ হলে অনেক ভালো লাগে।আর সিএনজি ওলা এদিকে পুলিশের ভয় করছে কিন্তু জনগণ থেকে ভাড়া ঠিকি নিচ্ছে। যাইহোক ভাইয়া আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু যে দিকে যাও সে দিকেই জনগন ঠকছে। ধন্যবাদ আপুু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit