বাংলা ভাষায় ব্লগ লেখো
হ্যালে বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি মুভি রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। মুভিটি ২০২২ সালে মুক্তি পেলেও এতদিন আমার দেখার সুযোগ হয়নি। মুভিটি মুক্তি পাওয়ার পরে সারা বিশ্বের প্রচুর আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। অবশেষে গতকাল হ্যাংআউট শেষ করে মুভিটি দেখলাম। মুভিটি যেমন চেয়েছিলাম তার থেকে বেশি সুন্দর হয়েছে। সম্পূর্ন মুভিটার মধ্যে এ্যাকশান রয়েছে। আমি যত সুন্দর ভাবেই মুভিটি রিভিউ করি দেখার মত মজা পাবেন না। তাই যাদের ইচ্ছা আছে রিভিউ পড়ে মুভিটি দেখতে পারেন। মুভিটি দেখলে মজা পাবেন।
মুভি সম্পর্ক সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্যাবলি
- মুভির নাম- RRR
- পরিচালকের নাম- এস. এস. রাজামৌলি
- প্রযোজকের নাম- ডি. ভি. ভি. দনয্য
- অভিনয় করেছেন- রাম চরণ,আলিয়া ভাট, এনটি রামা রাও জুনিয়র,অলিভিয়া মরিস,অজয় দেবগন এবং আরো অনেকে।
- মুক্তির তারিখ- ২৫ মার্চ ২০২২
- ভাষা-তেলুগু
- দেশ-ভারত
- সময়- ৩ ঘন্টা
- ধরন- ঐতিহাসিক
মুভিটি মূলত কয়েকটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মান করা হয়েছে। এটি ভারতের দুই জন স্বাধীনতা যোদ্ধার বাস্তব জীবনকে কেন্দ্র করে একটি কাল্পনিক মুভি, যারা ব্রিটিশ রাজবংশ এবং হায়দ্রাবাদের নবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। চলচ্চিত্রের গল্পটি তাদের কার্যকলাপকে কেন্দ্র করেই তৈরী করা হয়েছে। পরিচালক ৫৫০ কোটি রুপি বাজেট নিয়ে মুভিটি নির্মান করতে নেমেছিলেন। অবশেষে ৩৫০-৪০০ কোটি রুপির মত খরচ হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাইতে মুভিটি মুক্তির তারিখ নির্ধারন করা হলেও কোভিড-১৯ এর কারনে ২০২২ সালের প্রথম দিকে মুভিটি মুক্তি পায়। মুভিটি মুক্তি পাওয়ার পরে প্রথম দিনই ২৪০ কোটি রুপি ইনকাম করে। যা ভারতীয় ইতিহাসে অপেন ডে-তে সর্বচ্ছ ইনকাম কারী মুভি। সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী মুভিটি বিশ্বব্যাপী ১২০০ কোটি রুপি আয় করেছে।
মুভিতে দেখানো হয় ১৯২০ সালে ব্রিটিশ গভর্নর স্কট এবং তার স্ত্রী ক্যাথরিন আদিলাবাদ বন পরিদর্শনে যান। সেখানে ক্যাথরিনের হাতে গোন্ডি উপজাতির একটি মেয়ে নকশা আর্ট করে দেয়। এখন ক্যাথরিন তার হাসবেন্ড গভর্নর স্কটকে বলে গোন্ডি মেয়েটিকে তার পছন্দ হয়েছে। মেয়েটিকে প্রসাদে নিয়ে গিয়ে তার মাধ্যমে আর্ট করাতে চায়। স্কট অনুমতি দিলে মেয়েটির মায়ের সামনে একজন ইংরেজ সেনাপতি দুটি পয়সা ছুরে মেরে মল্লি নামের মেয়েটিকে নিয়ে চলে আসে। তখন গোন্ডি উপজাতির রক্ষক কোমারম ভীম তার লোকদের নিয়ে মল্লিকে উদ্ধার করতে দিল্লিতে আসেন। হায়দ্রাবাদের নবাব স্কটকে ভীমের মিশন সম্পর্কে অবহিত করে। ঐদিকে পুলিশ অফিসার রাম পদোন্নতি পাওয়ার জন্য ভীমকে ধরার জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে। রাম ছদ্দ্যবেশে স্বাধীনতা কর্মীদের একটি সভায় যোগ দেন এবং স্কটকে হত্যার প্রস্তাব দেয়। এমন সময় ভীমের সহযোগী লাছু রামকে তাদের দলে যোগ দিতে বলে। কিন্তুু যখন বুঝতে পারে রাম একজন পুলিশ অফিসার তখন সে পালিয়ে যায়। লাচ্ছু ভীমকে এই বিষয়ে বললে ভীম তাকে পালিয়ে থাকতে বলে। একটি ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে রাম এবং ভীম মিলিতি হয়ে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তবে তাদের আসল পরিচয় কেউ জানে না। রাম ভীমকে স্কটের ভাইজি জেনির সাথে মিশতে সাহায্য করে। একদিন জেনির আমন্ত্রণে ভীম গভর্নরের প্রাসাদে যান। সেখানে সে নীরবে মল্লির সাথে দেখা করে তাকে উদ্ধারের আশ্বাস দেন। অপর দিকে রাম অভিযান চালিয়ে লাচ্ছুকে ধরে ফেলে। আর তাদের নেতার সম্পর্কে জানতে গিয়ে ব্যার্থ হয়। তখন লাচ্ছু একটি সাধারণ শঙ্খচূড় সাপ ধরে রামের দিকে ছুড়ে মারে। আর সেই সাপ রামকেও কামড়ে দেয়। তখন লাচ্ছু রামকে বলে যে আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যেই সাপের বিষে সে মারা যাবে। আর এই সাপের বিষয়ে একমাত্র গোন্ডি উপজাতি ছাড়া আর কেউ জানে না। রাম তখন অনেক কষ্ট করে ভীমের কাছে আসে। ভীম রামের ভিতরে সাপের বিষ নষ্ট করার জন্য ঔষুধ দেয়। আর তার পরিচয় এবং মিশন সম্পর্কে বলে। তবে ভীম রামের আসল পরিচয় তখনও জানে না।
ভীম ও তারে লোকেরা অনেক কষ্ট করে কিছু হিংস্র বন্যা প্রাণী সংগ্রহ করে। আর সেই গুলো নিয়ে স্কটের রাজপ্রাসেদ আক্রমন করে। যেন মল্লিকে উদ্ধার করতে পারে। তবে এখানে রাম সততার পরিচয় দিয়ে ভীমের উপর আক্রমন করে এবং ভীমকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করে। কিন্তুু ভীম বিশ্বাস করতে চাই না যে রাম একজন বৃটিশ পুলিশ অফিসার। অবশেষে মল্লিকে স্কট গোলি করবে এমন ভয় দেখিয়ে ভীমকে গ্রেফতার করে। ভীমকে গ্রেফতার করার জন্য রামকে ইংরেজ সরকার স্পেশাল অফিসার হিসাবে পদোন্নতি দেয়। রামের বাবা অজয় দেবগন একজন বৃটিশ পুলিশ ছিল। তবে বৃটিশদের অত্যাচার দেখে একটি অস্ত্র ও কিছু গোলাবারুদ নিয়ে চাকরি ছেড়ে পালিয়ে যায়। সে গ্রামে গিয়ে সেখানের সাধারন মানুষকে বৃটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ট্রেনিং দিতে থাকে। সেখানে রামও ট্রেনিং নিয়েছিল। অবশেষে ইংরেজ সরকার সেই খবর জানতে পেরে অজয় দেবগনের ট্রেনিং সেন্টারে হামলা চালায়। সেখানে রামের বাবা অজয় দেবগন, রামের মা ও ভাই নিহত হয়। তখন রাম অজয় দেবগনকে কথা দিয়েছিল সে যেভাবেই হোক ট্রেনিংকৃত সবার হাতে সে অস্ত্র তুলে দিবে। আর সেই জন্যই রাম চার বছর ধরে বৃটিশদের চাকরি করছে। একটি সুযোগ পেলেই সে ট্রাক বোঝাই অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে গ্রামে চলে যাবে।
রাম তার সততার পরিচয় দিতে গিয়ে তার বন্ধু ভীমের উপর চাবুকের আঘাত করে। তখনও ভীম রামের আসল উদ্যেশ্যে জানে না। ভীম গান গাইতে গাইতে রামের চাবুকের আঘাত সহ্য করে। তারপরেও ইংরেজ সরকারের কাছে মাথা নত করে না। তখন স্কট ভীমকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয়। অপর দিকে একটি অস্ত্রের চালান ডেলিভারি দেওয়ার চান্স পায় রাম। তবে এই সময় ভীমকে এই অবস্থায়ে ফেলে সে যেতে চাই না। স্কটকে সে কৌশলে বলে যে একটি নির্জন জাগায় মল্লির সামনে ভীমের ফাঁসি দিতে। তখন রামের কথায় স্কট রাজি হলে নির্জন জাগায় যাওয়ার পথে রাম কায়দা করে মল্লিকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চাইলে স্কট গোলি করে রামের গাড়ি উল্টে দেয়। তখন ফাঁসির মঞ্চে ভীমও কায়দা করে ছুটে যায়। আর পুশিকে মারতে থাকে। তখন রাম একটি পুলিশকে গুলি করতে গেলে ভীম ভুল বুঝে রামকে মেরে মল্লিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে ভীম পালিয়ে রামের বাগদত্তা সীতার বাড়িতে যায়। সেখানে সীতার মাধ্যমে রামের মূল পরিচয় পায় ভীম। এদিকে ভীমকে পালিয়ে যেতে সাহয্য করায় ইংরেজ সরকার রামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারার আদেশ দেয়। তবে ভীম সীতাকে কথা দেয় সে রামকে সীতার কাছে ফিরে দিবে।
ভীম অলিভিয়া মরিসের মাধ্যমে বৃটিশ জেলখানায় পালিয়ে প্রবেশ করে। সেখানে অনেক কষ্ট করে রামকে খুজে বের করে। রামের পায়ে ব্যাথার কারনে ভীম রামকে কাঁধে করে দুইজন মারামারি করে জেলখানা থেকে পালিয়ে যায়। এক জঙ্গলে গিয়ে দুইজন আশ্রয় নিলে সেখানে ইংরেজ বাহিনী হামলা করে। তখন সেখানে রাম মূর্তির কাধে তীর আর ধনুক নিয়ে রাম ইংরেজদের উপর হামলা করে। অপর দিকে ভীম বর্ষা নিয়ে ইংরেজ পুলিশ মারতে থাকে। এভাবে তারা প্রসাদে গিয়ে একটি মটর সাইকেল বিস্ফোরণ গঠিয়ে সমস্ত গোলাবরুদ সহ প্রাসদ ধ্বংস করে দেয়। আর স্কটের বউও সেখানে মারা যায়। শেষে রাম তীর দিয়ে স্কটকে আহত করে ও ভীম গুলি করে স্কটকে হত্যা করে। কিছু অস্ত্র বাচিঁয়ে রাম গ্রামের ট্রেনিং কৃত মানুষকে দেয়। আর ভীম ও মল্লিকে নিয়ে গোন্ডি জঙ্গলে চয়ে যায়।
মতামত-
এই মুভিটাতে এই শিক্ষাই পাওয়া যায় যে, যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নেতা ইংরেজদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে ছিল। তাদের সাহসিকতার জন্য ইংরেজদের অত্যাচরের অবসান ঘটে। আসলে যেখানে অন্যাই অত্যাচার হয় সেখানে কেউ না কেউ রুখে দাড়াই। ইংরেজ দুইশত বছর ভারতীয় উপমহাদেশ শাষন করেছে। অবশেষে তাদেরও পতন হয়েছে। ক্ষমত কারো জন্য চিরস্থায়ী না। ইতিহাস পরিবর্তনশীর। ক্ষমতা কারো হাতেই চিরস্থায়ী থাকতে চাই না। রদবদল হবেই হবে।
ধন্যবাদ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই মুভিটার লিংক অনেকদিন ধরে খুঁজছিলাম কিন্তু কিছুতে অরিজিনাল মুভিটা পাচ্ছিলাম না। সময় পেলে অবশ্যই এখান থেকে মুভিটা দেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক কাঙ্খিত একটি মুভির রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit