আসসালামুয়ালাইকুম/আদাপ,
আশা করছি,সবাই ভালো আছেন।আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি।ভ্রমন পিপাসু মন সুযোগ পেলেই বেড়িয়ে পড়ে নতুন কোনো দিকে।আমিও তার ব্যতিক্রম নই।ভ্রমণ গল্পে আজকে থাকছে ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট প্রসঙ্গ।
সারারাত বৃষ্টি।সকালে বেশ দেরিতেই ওঠা হলো।ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিলাম।হুট করেই আমার মামাতো ভাই সিদ্ধান্ত নিলো কোথাও ঘুরে আসার।রাস্তার অবস্থা খুব বেশি ভালো ছিলো না।রেডি হচ্ছিলাম।হঠাৎ ফোন,অফিসের কাজে জরুরি মিটিং।সকল ব্রাঞ্চ ম্যানেজারদের নিয়ে।কাজেই তার আর যাওয়া হলো না।
একটু পূর্বে ফিরে যাইঃ
গত সপ্তাহের প্রথম দিকে প্রায় ১৪ দিনের ছুটিতে আমি ঘুরতে আসি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায়।একটি এনজিও'র মাইক্রোক্রেডিট শাখায় রৌমারীতে,শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছেন আমার বন্ধুবর মামাতো ভাই।
- ভৌগলিক অবস্থান সূত্রে কুড়িগ্রাম জেলার নদীবিধৌত চরাঞ্চল হিসেবে পরিচিত রৌমারী উপজেলা।কুড়িগ্রাম জেলার দক্ষিণ দিকে এর অবস্থান।উপজেলার উত্তরে উলিপুর ও আসাম রাজ্য,পূর্বদিকেও ভারতের আসাম রাজ্য অবস্থিত।
অফিসের ব্যস্ততার কারণে মামাতো ভাইয়ের যাওয়া হলো না। আমাকে যাওয়ার জন্য অফিস কলিগের সাথে যেতে হবে। রৌমারী থেকে ভারত সীমান্ত আসামের দিকে,মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা।অফিস থেকে উপজেলার থানা মোড়ে চলে আসলাম,সেখান থেকে অটোতে তুরা রোড অর্থাৎ সীমান্তের দিকে আমাদের যাত্রা ছিল।অটোতে করে মাত্র ৫ মিনিটের মাথায় দেখতে পেলাম ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ভোজনরসিকতার অন্যতম ব্যবস্থা।নাম তার ভোজনবিলাস।অটো থেকে নামলাম চারপাশ দেখলাম মোটামুটি ভালই লাগলো।প্রবেশ পথেই তাদের ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো রয়েছে জাঁকজমকপূর্ণ ভোজনবিলাস খাওয়ার জায়গাটি।কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হলো,তারা জানালেন চলতি মাসের পহেলা তারিখে উদ্বোধন করা হয়।
সৌখিন ভ্রমণবিলাসীদের অন্যতম খাওয়ার জায়গা হচ্ছে ব্যতিক্রমী এই ভোজনবিলাস রেস্টুরেন্ট।রেস্টুরেন্টের ভেতরে যাওয়ার রাস্তাটি করে করা হয়েছে কাঠের তৈরি সুন্দর মন মাতানো সেই সাথে কালো রঙের সৌখিনতায়।ব্যতিক্রমী এমন কারুকার্য নিশ্চয়ই অনেকের মন কেড়ে নেবে।
দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে সাতটি ঘর।ঘরগুলো ৬ থেকে ৮ হাত দূরে দূরে অবস্থিত।খড়ের ছাউনি আর বাশ দিয়ে তৈরি ঘড় গুলো ছিলো দেখতে খুবই নান্দনিক।নজরকাড়া ঘরের মধ্যে অতিথিদের জন্য আটটি করে চেয়ার সাজানো রয়েছে,মাঝখানে খাবার টেবিল।
আমি বসার আগেই আবার উপরের চারপাশ দেখা শুরু করলাম।চমৎকার খোলা আকাশের নিচে ধান ক্ষেতের উপরে বিনোদনধর্মী এমন রেস্টুরেন্ট আমার প্রথম দেখা। রাতে ঝলমলে আলোর জন্য রয়েছেনানা ধরনের সুন্দর লাইটিং এর ব্যবস্থা।
কনক্রিট,কাঠও বাঁশদিয়েই পুরো রেষ্টুরেন্টটি দাঁড় করানো হয়েছে মাটি থেকেই।মাটি থেকে প্রায় ১০ ফুট উঁচুতে ঘড়গুলো অবস্থিত।ঘুরতে ঘুরতে মাঝে মাঝে ভয় লাগছে।কিন্তু না অনেক শক্ত করেই এটি লোহা দিয়ে আটকানো রয়েছে।খুব মজবুত করে এটি তৈরি করা হয়েছে।
ঘুরতে ঘুরতে বেশ কয়েকটি ছবি দেওয়া হল।নিচের দিকে ধান রোপনের দৃশ্য দেখছিলাম।ভাবছিলাম ক্ষেত খামারের উপর এমন নান্দনিক রেস্টুরেন্ট কতটা শৈল্পিক।সত্যি কিছু কিছু সৃজনশীলতা অনেক ভাবিয়ে তোলার মতো।ভাইয়ের অফিস কলিকদের সাথে মোটামুটি হাঁটতে অনেক গল্প হল।হাটার জন্য কাঠের তকতা দিয়ে সুন্দর করে ব্রীজের মতো সাজানো রাস্তা।আমার সাথে তাদেরকেও অনেক ভাল লাগছিল এমন পরিবেশে।
যাই হোক,গল্প শেষ করে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম।খাওয়ার মেনুতে তারা অনেক কিছু সাজিয়েছে।বিশেষ করে ফুচকা,তন্দুর রুটি,হালিম,ভাত ও পাশাপাশি রয়েছে বিরানীর ব্যবস্থা।যেহেতু আমি সকালে নাস্তা করি সীমান্তবর্তী এলাকা দেখার জন্য চলে এসেছি,তাই প্রথমেই চটপটি ও ফুচকা খাওয়া হলো।অফিস কলিগের অনুরোধে,খাওয়ার ছবি নেওয়া হলোনা।
আমি খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে রেস্টু ঠিক নিচের দিকে প্রাকৃতিক বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।ঠিক ধান ক্ষেতের উপর বসে আমরা খাচ্ছিলাম।আমি কখনও কল্পনাও করিনি এবার ভ্রমণে এমন একটা রেস্টুরেন্টে আমার যাওয়া হবে।রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের আপ্যায়ন ছিল খুবই চমৎকার।খাবারের দাম গুলো খুব বেশি ছিল না।সাধ্যের মধ্যে চমৎকার করে খাওয়ার জন্য আর নান্দনিক দৃশ্য দেখার জন্য ভোজনবিলাস তার ব্যতিক্রম উদাহরণ হয়ে থাকবে।
খাওয়া শেষ করলাম কিছুক্ষণ পরেই আমরা বের হলাম আবার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের দিকে সেই জায়গার গল্প তুলে ধরবো নতুন কোন পর্বে।
ঝুলন্ত এমন রেস্টুরেন্টটির শৈল্পিক কারুকার্য ছিলো প্রশংসনীয়।রাস্তার পাশে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভ্রমনজনিত কারনে এমন খাবার রেস্টুরেন্টে ছিলো এটাই প্রথম।হয়তো,অনেক জায়গায় খাওয়া হয়েছে তবে এমন শৈল্পিক পরিবেশ নয়।সব মিলিয়ে ভ্রমনের প্রথমেই,এটা ছিলো দারুন।
এই অঞ্চলে ভ্রমনে আসলে নান্দনিক এমন রেস্টুরেন্টে আসার আমন্ত্রন রইলো।
আবারো কথা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সে পর্যন্ত ভালো থেকো,সুস্থ্য থেকো,নিরাপদে থেকো আমার প্রিয় প্লাটফর্ম@amarbanglablog
বিষয় | ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট |
---|---|
বর্ণনা | @kamrul8217 |
লোকেশন | w3w |
ডিভাইস | Samsung A32 |
তারিখ | ৫ ফেব্রুয়ারি২০২২ |
এতক্ষণ সাথে ছিলাম আমি@kamrul8217
পেশায় একজন সাংবাদিক,উপস্থাপক ও ক্ষুদ্র লেখক।জ্ঞান অন্বেষণে সর্বাত্মক ছুটে চলা।আমার জ্ঞানের পরিসীমাকে বাড়িয়ে দিতে কৃতজ্ঞতা আমার সাথে থাকা দুই বাংলার অবিচ্ছেদ্য প্লাটফর্ম,@amarbanglablog
ভাইয়া রেষ্টুরেন্টটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।গ্রামীণ প্রকৃতির ছোঁয়া রয়েছে।আপনি খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।রেস্টুরেন্ট এর ভৌগলিক অবস্থান ও বেশ ভালোভাবে তুলে ধরেছেন।শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট দারুণ জায়গা ,আমি আগে ও কয়েকজনের ফটোগ্রাফি পোষ্টে দেখেছি।আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফিও সুন্দর হয়েছে, তার সঙ্গে উপস্থাপনাটিও ।বেশ উপভোগ করলাম, ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ রেস্টুরেন্টের পরিবেশ ও আশপাশ সব মিলিয়ে দারুন উপভোগ্য ছিলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট প্রথম দেখলাম জায়গা টা আমার অনেক ভালো লেগেছে কুড়ি গ্রাম কখুনো গেলে এখানে যাব দেখি।সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফি এবং উপস্থাপন করেছেন শুভ কামনা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুম,রেস্টুরেন্টের চারপাশসহ পুরোটাই ছিল এক দারুন মজার।বেশ আনন্দিত হয়েছিলাম,আর আশ্চর্য লাগতেছিলো।খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন শ্রদ্ধেয়। ভালবাসা ও শুভকামনা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঘুরাঘুরি আমার ও বেশ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলেই কোথাও না কোথাও যাই। আপনার ঘুরার প্লেসটা অসাধারণ। চারপাশের পরিবেশ খুব নির্মল লাগছে। বিশেষ করে কাঠ ও বাঁশের তৈরি রেস্টুরেন্ট হওয়ায় অন্য রকম লাগছে। অনেক ধন্যবাদ আপনার পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় ;খুব সুন্দর করে গুছিয়ে মন্তব্য করেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit