একুশের ভাবনা বাইশে মিলাই,১০%প্রিয় লাজুক শেয়ালের জন্য।

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

ভালবাসা নিবেন,

আশা করছি সবাই ভালো আছেন,আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভালো আছি।একুশ মানেই মাথা না নোয়াবার,একুশ মানেই বীরত্বের গাঁথা এক গল্প।একুশ নিয়েই থাকছে আজকের পর্ব।আশা করছি সকলের ভালো লাগবে।

Collage 2022-02-23 08_09_08.jpg


শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি,সেই সকল বীর ভাষা সৈনিকদের যাদের জীবনের বিনিময়ে আজ আমরা পেয়েছি আমাদের মায়ের ভাষা,প্রাণের ভাষা বাংলাভাষা।সাথে আরো সন্মান জানাচ্ছি,সেই সকল মহামানবদের প্রতি যারা মায়ের মুখের স্বর্নবুলিকে বিশ্বের দরবারে জায়গা করে দিয়েছেন।হাজারো আত্মত্যাগ,অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে আজ মুক্তচিন্তার বিকাশ ঘটাতে পারছি।

pexels-suzy-hazelwood-3091193.jpg
সোর্স


মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সূর্য ছিনিয়ে আনা হয়েছিলো ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে।একুশে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে একদিকে যেমন মায়ের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্থায়ীরুপ দিয়েছিলো অন্যদিকে স্বাধীন,সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এটির গুরুত্ব ছিলো অপরসীম।জাতির নিজস্ব ভাষার জন্য জীবন দেওয়া ছিলো বিশ্বইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।এমন বীরত্বে গাঁথা গৌরব নিশ্চিন্তে জাতির শ্রেষ্ঠত্ব একটি উদাহরণ।
ভাষার সুমধুর এমন শব্দভান্ডারে প্রাণভরে যায়।
কবি অতুল প্রসাদের কবিতায়,

মোদের গরব মোদের আশা
আ'মরি বাংলা ভাষা
ওমা তোমার কোলে,তোমার বোলে,
কতই শান্তি,ভালবাসা।


আজ বাংলা আছে,নেই তার প্রতি ভালবাসা,সন্মান কিংবা শ্রদ্ধাবোধ।একুশ আসলেই নতুন নতুন কিছু পান্ডিত্য চোখে পড়ে।নতুন ধারার বুদ্ধজীবির উদয় হয়,হয় অতিরঞ্জিত লোক দেখানো ভালবাসা।আগের দিনে হয় শহীদ মিনার পরিষ্কার আর গভীর রাতে হয় ভূরিভোজন আর সংগঠনের ফুল দেওয়া।প্রভাতফেরীতে দেখা যায় স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফুল দেওয়া,পরে হয় আলোচনা অনুষ্ঠান।
pexels-stijn-dijkstra-2659475.jpg
সোর্স


একুশে ফেব্রুয়ারির আগের রাতে দেখলাম,এক সংগঠন ভূরিভোজের আয়োজন করছেন।কথা হলো এর কারন কি।জবাব এমনটাই ছিলো যে,খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা না করলে রাত বারোটা এক মিনিটে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার লোক থাকবেনা।তাই কৌশল করে খাওয়ার বিনিময়ে লোকজন আটকে রাখছি।বললাম,সকালে দিতেন।জবাবে বললো,ঘুম থেকে উঠতে পারিনা।দেরীতে দিলে শহীদ মিনারের উপড়ের দিকে আমাদের ফুলের ফেস্টুন থাকবেনা।

সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায় আমাদের তরুন প্রজন্ম ভাষা দিবস সম্বন্ধে অনেকটাই অজ্ঞ।অনেকেই জানেনা বাংলাভাষা সংষ্কৃতির উজ্জ্বল এক ইতিহাস সম্পর্কে।এমনকি যাদের আত্মত্যাগে আমাদের এই প্রাণের ভাষার অর্জন তাদের নামগুলোও জানা নেই অনেকের।


একুশের দিনে শহীদ বেদিতে ফুলের ছড়াছড়ি।কি সন্মান দেখাচ্ছি জাতীয় বীরদের,পায়ে জুতো নিয়েই।কেউবা সংলাপে বলছেন,মিনারের সন্মানে এখানে জুতা নিয়ে ওঠা নিষেধ আবার পরেক্ষনেই উনার জুতাবস্থায় মিনারে অবাধ বিচারন।তাতে শিষ্টাচারের ত্রুটিও হয় না তখন ভাষার প্রতি সন্মান নাকি অন্যভাবেও দেওয়া যায়।
pexels-beach-hiking-10910408.jpg
সোর্স


এভাবে উদাহরণ অনেকই আসে,সব তো আর লিখে বলা যায় না।তবে আমার অভিমত,ভাষা গৌরবের সত্তর বছর পর আজ কেন এমন প্রশ্নোত্তর।কেন ভাবতে হয় একুশের চেতনা নিয়ে,কেনই বা এতো অজ্ঞতা আমাদের। নাকি সহজলভ্যতায় জন্মেছিলো কালজয়ী এ ইতিহাস।


একটি রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর আরকেটি রাষ্ট্রের রাহুগ্রাস,অভিন্ন নীতি,দমন-পীড়ন,শোষন-নির্যাতন নানাবিধ বৈষম্য চলতে থাকে ঠিক তা থেকে মুক্তি ও স্বাধিকার আন্দোলনে প্রথম সফলতা ছিলো রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই এই স্লোগান।পথটা মোটেও সহজ ছিলো না।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ দেশের আমজনতা নানাবিধ কর্মসূচি দিয়েও যখন সফলতা আসছে না তখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়।রুটির মাধ্যমেও তথ্যের আদান-প্রদান হয়েছিলো শুধু মুক্তি জয়গানে রাষ্ট্রভাষার বাংলা চাই এটাকে বাস্তবায়ন করাই ছিলো মূল লক্ষ্য।অবশেষে বাবা-মা,ভাই-বোন তথা দুনিয়ায় মায়া ছেড়ে মায়ের ভাষার জন্য রক্তাক্ত জীবন অকাতরে বিলিয়ে দিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা।যা ইতিহাসের এক কালজয়ী সৃষ্টি হিসাবে স্বর্নরুপে ইতিহাস রচিত হয়েছিলো।
pexels-moshiur-rahman-bijoy-5111819.jpg
সোর্স


১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোতে স্বীকৃতি পায় আমাদের বাংলাভাষার আন্তর্জাতিকরুপ।আন্তজার্তিকরুপে এমন গৌরবময় সম্পদের গুরুত্ব নিয়ে জাতির কেন এতো হীনমন্যতা।এটির কারন খুঁজে পাচ্ছিলাম না।নিজের মুখের ভাষাকে ছোটকরে দেখার কি কোন সুযোগ আছে?

রুগ্নমানসিকদের জন্য জেনে রাখা ভালো।বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ নিজেরাও ভালো ইংরেজি বলতে পারে না তবে তাদের নিজের ভাষার প্রতি দক্ষতা ও ব্যবহার শতভাগ।আপনি আমি যদি বাংলাভাষাকে সন্মান না করি,প্রমিত ব্যবহার না করি নিশ্চই ভিন্ন ভাষা-ভাষীরা বাংলাকে সন্মান দিবে না।সুতরাং আমাদের উচিৎ নিজস্ব,স্বাধীনতা,সার্বভোমত্ব
সাহিত্য,জাতি,সংষ্কৃতি,মূল্যবোধ ইত্যাদির সন্মানরক্ষা করা।নিজদের পরিচয়ে বড়ো হওয়া।রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে বাংলাভাষার ব্যবহার নিশ্চিত হোক,হোক প্রমিত বাংলার শুদ্ধচ্চারণ।সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি।


বাংলা ভাষাভাষীদের নিয়ে এমন একটি সুন্দর প্লাটফর্ম তৈরির জন্য ভাষা সংগ্রামের এ মাসে@amarbanglablog এর সন্মানিত প্রতিষ্ঠাতা @rme দাদার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

তারিখঃ২৩ ফেব্রুয়ারি২০২২


Collage 2022-02-06 11_02_31 (2).jpg

এতক্ষণ সাথে ছিলাম আমি @kamrul8217।পেশায় একজন সাংবাদিক,উপস্থাপক ও ক্ষুদ্রলেখক।একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে দিন-রাত প্রচেষ্টা।জ্ঞানের পরিসীমাকে বাড়িয়ে দিতে অবিরাম পথচলা।আমার চলার পথে জ্ঞান আহরণের দারুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে দুইবাংলার অবিচ্ছেদ্য প্লাটফর্ম @amarbanglablog

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার লিখাগুলো ভালো ছিলো।তবে হাসি লাগলো ঘুম থেকে উঠতে পারবেনা তাই রাতে খাবারের আয়োজন।আসলে আমরাও কথা বলার সময় বাংলা ইংলিশ মিলিয়ে কথা বলি।আর বেশি আধুনিক মনে করি ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারলে।আমাদের উচিত সাহিত্য,জাতি,সংষ্কৃতি,মূল্যবোধ ইত্যাদির সন্মানরক্ষা করা।ধন্যবাদ আপনাকে।

আমি ব্যক্তি হিসাবে সবসময় বীরত্বের গাঁথা বাংলার ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা করি।তবে,কতিপয় কিছু ধারনা যারা ঘুম থেকে উঠতেও ভয় পায় তাদের কিছু সচিত্র বর্ণনা করার চেষ্টা করেছিমাত্র।আমাদের গৌরবময় সংস্কৃতি লালন হোক উচ্চতর থেকে প্রান্তিকে এমনটাই কামনা।

  • আপনি খুবই মুল্যবান মন্তব্য করেছেন শ্রদ্ধেয়।

বাইশের সাথে তেইশ মিলালে, আরও কিছু অনুপস্থিত ও উপস্থিত দেখতে, ভাল-মন্দের বিচার খানিকটা বেশি আসবে। হয়ত বিচারক ভুগবে দোটানায়। সুন্দর কথা ছিল।

হ্যাঁ সময়ের সাথে পার্থক্যটা ক্রমই বাড়ছে।তবে,প্রতক্যের জায়গা থেকে সচেতনতা বৃদ্ধি খুব বেশি প্রয়োজন।
আপনি চমৎকার মন্তব্য করেছেন শ্রদ্ধেয়।

আসবেন আবার।

🥰

একদম শেষের ছবিটির সোর্স উল্লেখ করুন।

ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়, আপনি খুব নিখুঁতভাবেই ভুলটা ধরেছেন।বেখেয়ালি মনে এমনটি ঘটেছিলো।আপনার এমন পরামর্শ আমাকে আরো বেশি সংবেদনশীল হতে সহায়তা করবে।
এখন সোর্সটি উল্লেখ করা হয়েছে।