নানা রঙে রঙিন রূপসী গঙ্গা
আজ ঠিক করলাম ফটোগ্রাফী পোস্ট করব আপনাদের সামনে। বিভিন্ন কাজের সূত্রে সবসময়ই যাওয়া হয় এদিক ওদিক। এই বাংলায় যাবার জায়গার অভাব নেই। ঘরের আশেপেশেই বিভিন্ন দ্রষ্টব্য ও মনোরম স্থান। কিন্তু সময় পেলে দুদণ্ড গঙ্গার ধারে গিয়ে বসলেই যেন মন ভালো হয়ে যায়। আর ঘটনাচক্রে আমার ঘর থেকে গঙ্গার ঘাট খুব বেশি হলে দশ মিনিটের দূরত্ব। তার ওপর কর্মসূত্রে রোজই এই গঙ্গার ওপর দিয়ে যাতায়াত। তাই ছবি তোলার সাবজেক্ট পেয়ে যাই সবসময়। আমরা জানি মানব সভ্যতার প্রথম দিকে নদনদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠতো জনপদ। যেমন গঙ্গার তীরে বারাণসী, এলাহাবাদ, কলকাতা শহর৷ সভ্যতার আদি সময় থেকে এমনই হয়ে এসেছে। আমিও ঠিক তেমনই গঙ্গাতীরের বাসিন্দা। তাই রোজকার যাওয়া আসার পথে ক্যামেরায় তুলে রাখার চেষ্টা করি গঙ্গার বিভিন্ন পটপরিবর্তন। সেইসব ছবির কয়েকটিই আজ ব্লগের মাধ্যমে তুলে আনলাম আপনাদের সামনে। আমার এই প্রচেষ্টা আপনাদের ভালো লাগলে আমার কাজটি সার্থক হিসেবে বিবেচনা করব।
এটি গঙ্গা তীরবর্তী কোন্নগর শহরের ফেরিঘাট এর চিত্র। কত মানুষ রোজ পারাপার হয় গঙ্গা। কিন্তু তাদের ঠিকানা কি গঙ্গা মনে রাখে? গঙ্গার ধারে বসে থাকতে থাকতে এমন কত কিছু ভাবি। একদিন ক্লিক করেছিলাম ভালোলাগার দৃশ্যটি।
মেঘের খেলা আকাশ জুড়ে। গঙ্গার জলের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। এই লুকোচুরির খেলা ক্যামেরাবন্দি করতে ভুলিনি ঠিক সময়ে।
সূর্যাস্তের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে গঙ্গার জল। বিকেলে সেই শোভা রঙিন করে তোলে মন। সেই সময় পাখিদের ফিরে যাওয়ার ডাক আকাশকে ভরিয়ে রাখে। আর কর্মব্যস্ত একটি দিন শেষে ফিরে আসার সময় এই দৃশ্য নাড়া দেয় আমার মনপ্রাণ।
মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ আর এক শোভা গঙ্গার বুকে। সেই সময়টা যেন আবছায়া অন্ধকার ঘিরে ধরে আকাশের চারপাশ। দৃশ্যমানতা কমে গেলেও অকূল জলরাশি মনের মধ্যে স্থান করে নেয় সহজেই। ক্যামেরাবন্দি হয়েছে তেমনি ভোরের একটি ক্ষণ।
যেন রং তুলি নিয়ে আঁকা একখন্ড ক্যানভাস। ঠিক তেমনভাবেই ধরা দিয়েছে গঙ্গার সৌন্দর্য। প্রকৃতির সৌজন্যে বিভিন্ন সময়ে গঙ্গার জন্য এক এক শোভা। সেগুলো ক্যামেরাবন্দি করা আমার কাছে নেশার মতো হয়ে উঠেছে।
মেঘেরও খেলা, আকাশও পাড়ে৷ কত মেঘ আসে যায়, গঙ্গাও নিজের মতো করে বদলে নেয় তার রূপ ও রং। অপেক্ষায় বসে থাকে প্রকৃতি। গঙ্গার জলকে সাজিয়ে দেবে বলে। তেমনি একটি ছবি নিয়ে এলাম আজকের ব্লগে।
দিগন্তের টান বরাবরই রঙিন। কোন এক শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে রঙ ছড়িয়ে দেওয়ার নামই জীবন। সূর্যের উপান্ত বিন্দু থেকে ফেলে যাওয়া রং যখন রাঙিয়ে দেয় পশ্চিমের আকাশ তখন সাবালিকা হয় গঙ্গা। সেই মুহূর্ত বন্দী হলো আমার ক্যামেরায়।
চিত্রগ্রহণ | ইনফিনিক্স হট ৩০ |
---|
ক্যামেরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
চিত্রগ্রাহক | কৌশিক চক্রবর্ত্তী |
(৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুলের জন্য এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার সহ সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দাদা গঙ্গা নদীর বিভিন্ন সময়ের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। প্রতিটা ফটোগ্রাফি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। মেঘ ও আকাশের লুকোচুরি ফটোগ্রাফি সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে এক কথায় অসাধারণ হয়েছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট বিস্তারিতভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার তোলা ছবিগুলো আপনার এতো ভালো লাগায় আমি অভিভূত। নিজের খেয়ালে ছবি তুলি৷ তুলতে ভালোবাসি৷ আর সেইসব পাগলামিরই সামিল করছি আপনাদেরও। তবে এমন অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্য পেলে আরো তুলতে ইচ্ছে করে৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অবশ্যই দাদা আপনার সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি দেখার অপেক্ষায় থাকবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গঙ্গার পাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হলাম। আর আপনি এত সুন্দর করে ফটোগ্রাফি গুলো করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য এত সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার তোলা সব কটি ছবি আপনার ভালো লেগেছে শুনে আপ্লুত হলাম। চেষ্টা করি ভালো কিছু কনটেন্ট আপনাদের সামনে তুলে আনতে। আপনাদের ভালো লাগলে মনে বড় আনন্দ হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি আজ অসাধারণ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন, দেখেই যেন মনটা আমার ভালো হয়ে গেল। প্রতিটি ফটোগ্রাফি আপনি অনেক দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সহিত আপনার ক্যামেরাবন্দি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি আমার ভাল লেগেছে, কোনটা থুয়ে কোনটার প্রশংসা করি বুঝে উঠতে পারছি না শুভকামনা রইল আপনার জন্য ধন্যবাদ। এবং কেমন সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফির আশায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। সবকটি ছবি নিয়ে যেভাবে প্রশংসা করলেন তা মন ভালো করে দিল। চেষ্টা করেছি আমার কাছে থাকা ছবিগুলি আপনাদের সামনে তুলে আনতে। তা আপনার ভালো লেগেছে শুনে বড় আনন্দ হল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই গঙ্গার ঘাট আপনাদের জীবনে অনেক টা জায়গা জুড়ে আছে। আপনাদের ওখানেই অনেকেই দেখি সময় পেলে অথবা সময় করে গঙ্গায় যায়। সত্যি দারুণ একটা জায়গা। মন ভালো হয়ে যায়। চমৎকার করেছেন ফটোগ্রাফি গুলো ভাই। খুবই সুন্দর ছিল আপনার করা ফটোগ্রাফি গুলো ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন। কলকাতা ও তার আশপাশের লোকের কাছে গঙ্গার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের ছেলেবেলা থেকেই গঙ্গার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যোগাযোগ। মন খারাপ করলেও সেখানে গিয়ে বসি আবার আনন্দের সময়ও সেখানেই আনন্দ করি। আমার ছবিগুলি আপনার ভালো লাগায় আমি অভিভূত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit