ভারতের সর্ববৃহৎ রেল স্টেশন হাওড়া স্টেশন
আজ আপনাদের সাথে পৃথিবীর ব্যস্ততম একটি স্টেশনের ছবি এবং বৃত্তান্ত শেয়ার করব। হাওড়া স্টেশন। শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীতে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ হাওড়া স্টেশনের নাম জানে না এমন বোধহয় কেউ নেই। ভারতে আসা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন প্রথম রেলপথ চালু করে তখনই বাংলার উল্লেখযোগ্য এই জায়গায় রেলপথ স্থাপন ও স্টেশনের গুরুত্ব বুঝতে পারে সাহেবরা। ইংরেজ সাহেবরা ভারতকে লুটেপুটে খেয়েছে এ কথা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি ভারতবর্ষের মাটিকে তারা কিছু দিয়ে গেছে একথাও কখনো অস্বীকার করার জায়গা নেই। ভারতীয় রেল তারই একটি নিদর্শন। আগে অবিভক্ত বাংলায় শিয়ালদা স্টেশন থেকে নিয়মিত বর্তমান বাংলাদেশে অবস্থিত স্থানগুলিতেও সরাসরি রেল যোগাযোগ ছিল। যেমন কলকাতা থেকে যশোর, খুলনার মত জায়গাগুলি যুক্ত ছিল রেলপথে। স্বাধীনতার পরে ভারতীয় রেল কয়েকটি জোনে বিভক্ত হয়ে যায়। তার মধ্যে হাওড়া স্টেশন পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলের সর্ব প্রধান রেল স্টেশন হিসেবে মর্যাদা পায়। হাওড়া থেকে সারা ভারতবর্ষে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ট্রেন যায় না। তাই পূর্ব এবং উত্তর পূর্ব ভারতে প্রবেশদ্বার হিসেবে হাওড়া স্টেশনের গুরুত্ব অপরিসীম।
হাওড়া স্টেশন থেকে হুগলি অবধি প্রথম ট্রেন চলে ১৮৫৪ সালের ১৫ই আগস্ট। তাই ১৫ই আগস্ট শুধু ভারতের স্বাধীনতা দিবস নয়। এই কারণেও এই দিনটি আমাদের কাছে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। এই ট্রেন যাত্রায় মাত্র কয়েকটি স্টেশন ছিল। চলতো কয়লা চালিত ইঞ্জিনের ট্রেন। এরপর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হয় স্টেশনের সংখ্যা। আর পাল্লা দিয়ে গুরুত্ব বাড়তে থাকে হাওড়া স্টেশনের। বর্তমানে এই স্টেশনে মোট ২৩ টি প্লাটফর্ম থেকে প্রায় ৬০০টি যাত্রীবাহী ট্রেন নিয়মিত যাতায়াত করে বিভিন্ন জায়গায়। এই বিপুল সংখ্যক ট্রেন পরিষেবা প্রতিদিন লক্ষ্যাধিক মানুষকে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছে যেতে সাহায্য করে। ঐতিহাসিক স্টেশনটি আজও সেই পুরনো স্থাপত্যকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে হুগলি নদীর ধারে।
হাওড়া স্টেশন আমাদের গর্ব। কলকাতা শহরের গর্ব। বাংলার গর্ব৷ একসময় শুধু হাওড়া স্টেশনকে কলকাতার সাথে যুক্ত করবার জন্য সাহেবরা বানিয়েছিল সুবিখ্যাত হাওড়া ব্রিজ। হাওড়া ও কলকাতা যমজ শহর। এই দুই শহরের প্রধান একটি সংযোগ হল হাওড়া ব্রিজ। আর হাওড়া ব্রিজ নির্মাণের পিছনে থাকা প্রধান একটি কারণ হল হাওড়া স্টেশন। কারো সাথে দেখা করবার সময় আমরা সবসময় বলে থাকি "হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ির নিচে"৷ কারো সাথে দেখা করবার এই বিখ্যাত জায়গা আজও লোকের মুখে মুখে প্রচলিত। হাওড়া স্টেশন আজ বাঙালির আবেগের সাথে যুক্ত৷
আজ ব্লগের পাতায় রইল এই বিখ্যাত ও সুবিশাল হাওড়া স্টেশনের কিছু ছবি। ছবিগুলি একদিন নিজের নিজের মোবাইল ফোনে তুলেছিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে।
(৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit