ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। নিজেদের আরও দায়িত্বশীল নাগরিক করে তোলার দিন।

in hive-129948 •  5 months ago  (edited)

ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱


সকলকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা


pexels-photo-2802403.jpeg
সোর্স

🇮🇳 সকলকে স্বাগত জানাই 🇮🇳

আজ ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। এই দিনের গুরুত্ব অনেক। যে ৭৮ বছর আগে আমরা অর্জন করেছিলাম স্বাধীনতা, এবং এক দীর্ঘ সংগ্রামের পর পতন হয়েছিল সুদীর্ঘ ২০০ বছরের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের, আজ সেই দিনটিকেই উদযাপন করার মুহূর্ত। স্বাধীনতা দিবস আসলে সমাজের এক দর্পণ। দীর্ঘ ৭৮ বছর ধরে এই দেশ আজ ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেইটি দেখবারই দিন। স্বাধীনতার অর্থ বৃহৎ। মানুষের জীবনে স্বাধীনতার অর্থ খুবই ব্যাপৃত। অন্ধকার থেকে আলো ফোটা মানেই স্বাধীনতা নয়। স্বাধীনতা আসলে এক নতুন সমাজের গোড়াপত্তন, যেখানে সামাজিক, ধর্মীয় এবং অর্থনৈতিক হানাহানির বাইরে বেরিয়ে মানুষ এক উন্নত জীবনের ভাগীদার হয়ে উঠবে।

IMG_20240815_092005_727.jpg

ব্রিটিশরা যে গোলামি শিখিয়ে গেছিল, আমাদের পূর্বপুরুষরা তার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিল ঝকঝকে এক নতুন দেশ। শুধু ভাগ হয়ে যাওয়া কিছু অবিচ্ছেদ্য অংশ ছাড়া দেশের বেশিরভাগ অংশই সেদিন পেয়েছিল স্বাধীনতার আস্বাদন। দেশের স্বাধীনতার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ আমাদের কাছে অনেক দামী। অনেক লড়াই অনেক সংগ্রাম পেরিয়ে আজ ভারত এক গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ পূর্ণ রাষ্ট্র। ভারতীয় প্রজাতন্ত্র আজ পৃথিবীর সব থেকে বড় গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র। স্বাধীনতার এত বছর পরে আমরা পৃথিবীর মানচিত্রে কতটা নিজেদের স্থান করতে পেরেছি, তা খতিয়ে দেখাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আজ কেবল নিজস্ব প্রযুক্তিতে আমাদের দেশ ছাপ ফেলেছে চাঁদের মাটিতে। শিক্ষা এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রেও আমাদের স্থান উজ্জ্বল। কিন্তু কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় যেন কুরে কুরে খায় এই স্বাধীনতাকে। যে স্বাধীনতায় কোনো মানুষকে অকালে প্রাণ দিতে হয় সমাজ বিরোধীদের হাতে, সেই ক্ষতচিহ্নটুকু আমরা টেনে ছিঁড়ে ফেলতে সক্ষম বলেই মনে করি। ভারতবর্ষের প্রতিটি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যদি হাতে হাত রেখে মানব শৃঙ্খল তৈরি করে, তাহলে দেশের মাটিতে কোনো সমাজবিরোধীরই ক্ষমতা হয় না এতোটুকু ক্ষতি করবার।

pexels-photo-2817074.jpeg
সোর্স

যাই হোক, আজ স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও অফিস চত্বর নিজেদের মতো করে পালন করেছে দিনটিকে। বীর সৈনিকদের স্মরণ করে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচনা হয়েছে ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবসের। আমার বিদ্যালয়েও আজ সকালে ছিল বিভিন্ন কর্মসূচি। সেই উপলক্ষে ভোরেই পৌঁছে গিয়েছিলাম বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। সেখানে আজকের দিনের শিশু ও কিশোরদের হাসিমুখ দেখে স্বাধীনতার নতুন সংজ্ঞা চিনতে চেষ্টা করলাম। এই ফুটফুটে ছেলেমেয়েগুলোই তো জাতির ভবিষ্যৎ। এদের বেড়ে ওঠার মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতার বার্তা টুকু আমরা পৌঁছে দিতে চাই আপামর পৃথিবীর কাছে। ইতিহাস বলছে বিগত এক হাজার বছর ভারত ভূখণ্ড কোনদিন কোন রাজ্য বা দেশের উপর আক্রমণ করেনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে। শুধুমাত্র আক্রমণ প্রতিহত করার এই দীর্ঘ যাত্রাপথে আমাদের রঙিন ইতিহাসটুকুই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কাজ। আমরা নিজেদের স্বাধীন বলতে ভালবাসি। কিন্তু স্বাধীনতার অর্থটুকু পাশের মানুষটির কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে চাইনা সহজে। আর এই দায়িত্বটুকুই সমাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ভিডিও (ভিডিও সৌজন্যে youtube)

বিদ্যালয় এর অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা কুচকাওয়াজ করে সমবেতভাবে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল জাতীয় পতাকার পাশে। তারপর বিদ্যালয় এর অধ্যক্ষার হাত দিয়ে উত্তোলিত হলো ভারতের জাতীয় পতাকা। এরপর ছিল বিভিন্ন কর্মসূচি। শিশুদের নাচ-গান ও নাটকের মাধ্যমে স্বাধীনতাকে উদযাপন করা এবং একটি কেন্দ্রীয় বার্তা সকলের মাঝখানে পৌঁছে দেওয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল। সমস্ত কর্মসূচির মাধ্যমে সফলভাবে বিদ্যালয়ে পালিত হল ৭৮তম এই স্বাধীনতা দিবস।

IMG_20240815_091937_617.jpg

আমরা স্বাধীনতার অর্থ খুঁজি। আমাদের জীবনে প্রতিদিনই স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু এই স্বাধীনতার অর্থ হল নিজেকে সংযত রেখে অন্যের কিঞ্চিত হলেও উপকারে আসা। স্বাধীনতার অর্থ অন্যকে নির্যাতন বা নিজের প্রভাব বিস্তার নয়। যে পথে এসেছিল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা, সেই পথের ধুলোকে মাথায় নিয়ে আগামীর সুন্দর ভারতবর্ষ গড়ে তোলাই কর্তব্য।

জাতি দল মত নির্বিশেষে সকলকে জানাই ভারতের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা। নিজে ভালো থাকুন, অন্যকেও ভালো রাখুন। আর পারলে স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝিয়ে দিন আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের। বোঝান অন্তত তাদেরকে, যাদের কাছে স্বাধীনতা মানে সকালে উঠে দুটি দেশাত্মবোধক গান আর বিনা পয়সায় বিলোনো গরম গরম জিলাপি।


Onulipi_08_07_01_37_53-removebg-preview.png

চিত্রগ্রহণ
ইনফিনিক্স হট ৩০
ক্যামেরা স্পেশিফিকেশন
৫০ মেগাপিক্সেল
চিত্রগ্রাহক
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
লোকেশন
সোদপুর, দঃ ২৪ পরগনা
ছবি এডিটিং সৌজন্য
ক্যানভা ও অণুলিপি


(৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)



1720541518267-removebg-preview.png

Onulipi_07_27_10_21_22.jpg


new.gif

1720541518267-removebg-preview.png


--লেখক পরিচিতি--

IMG_20240303_181107_644.jpg

কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।

44902cc6212c4d5b.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.