শারদীয়া কনটেস্টে প্রথম হওয়ার অনুভূতি
আমার বাংলা ব্লগে আসার পর বিভিন্ন মুহূর্ত বা সময় আমাকে অনেক খুশির জন্ম দিয়েছে তা মেনে নিতে আমার কোন অসুবিধা নেই। আসলে জীবনধারণের জন্য অর্থের প্রয়োজন অপরিসীম। তাই লেখালেখি করে এতদিন অনেক কিছু প্রাপ্তির খাতায় পেলেও অর্থের দিক দিয়ে খুব একটা লাভবান হতে পারিনি কখনোই। যেটুকু বই বিক্রি হতো আর প্রবন্ধ লিখে আয় উপায় করতাম তা জমিয়ে রাখতাম লেখার খাতে। কিন্তু এর বেশি কিছু নয়। আর বই বিক্রির বাজার সম্বন্ধে আপনাদের ধারণা নিশ্চয়ই আছে। বর্তমান যুগে ডিজিটাল মিডিয়ায় পড়াশোনা হওয়ার পর হাতে হাতে বই বিক্রি যে ভীষণ কমে গেছে তা সব প্রকাশক এবং পুস্তক বিক্রেতারা এক বাক্যে স্বীকার করে।
আজ আমি আমার বাংলা ব্লগে আসবার পর সব থেকে বড় পুরস্কারটা লাভ করলাম। দূর্গা পূজার সময় চারপাশে অনেক ঘুরেছি এবং খেয়েছি। কিন্তু তখন জানতাম না যে কিছুদিন পর আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে এমন একটি সুসংবাদ। মাস খানেকের মধ্যেই ব্লগের পাতায় দাদার পোস্ট চোখে পড়ল। দাদা লিখেছেন দুর্গাপূজা বিষয়ক প্রতিযোগিতা নিয়ে। আসলে দুর্গাপূজা মানেই বাঙালির কাছে এক অন্যরকম আবেগ। সারা বছর আমরা অপেক্ষা করে বসে থাকি এই পাঁচটা দিনের জন্য। এই দিনগুলো কোনভাবেই কলকাতার থেকে দূরে থাকতে ইচ্ছে করে না। আসলে কলকাতায় দুর্গাপূজার মাহাত্ম্য একেবারেই আলাদা বলে আমার মনে হয়। এখানকার পুজোর হুল্লোড় সারা পৃথিবীতে আর কোথাওকার সঙ্গে তুলনা করা যায় না। আর আমার বাংলা ব্লগে যখন দেখলাম দূর্গাপূজার ছবির প্রতিযোগিতা ঘোষিত হয়েছে, তখন থেকেই গোছাতে শুরু করলাম সমস্ত ছবিগুলো। সপ্তমী অষ্টমী নবমী এবং দশমীর দিনগুলোয় ঘুরে বেড়ানো এবং বিভিন্ন প্রতিমা ও মন্ডপের ছবি পরপর করে সাজিয়ে নিলাম ব্লগের জন্য। তারপরের দিন থেকেই শুরু করলাম পোস্ট লেখা। প্রত্যেকটি দিন দেখা ঠাকুরগুলি আলাদা আলাদা করে সেগমেন্ট অনুযায়ী পরপর পোস্ট করতে শুরু করলাম ধারাবাহিক ভাবে। এভাবেই পরপর চারটি পোস্ট করলাম ব্লগের পাতায়। তখন জানতাম না আমার জন্য এত বড় পুরস্কার অপেক্ষা করে আছে। আমি সমস্ত পোস্টগুলি যথাসাধ্য সুন্দরভাবে সাজিয়ে লেখবার চেষ্টা করলাম এবং সঙ্গে জুড়ে দিলাম আমার ক্যামেরায় বন্দি হওয়া সমস্ত ছবি। এরপর অপেক্ষার পালা।
পরবর্তী সপ্তাহের হ্যাংআউটে দাদা প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা করলেন না। পরিবর্তে আরও একটি সপ্তাহ সময় চেয়ে নিলেন। আসলে সকলে এত পরিপাটি করে পোষ্টের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে যে তার মধ্যে তোমায় না হলে খুঁটিয়ে বিচার করা খুবই কঠিন একটি কাজ। তারপরের সপ্তাহে ফল ঘোষণা হওয়ার মুহূর্তটি এগিয়ে এলো। আমি অপেক্ষা করছিলাম এই প্রতিযোগিতায় ফলের জন্য। তারপর এলো সেই মুহূর্ত। যখন একে একে নাম ঘোষণা করতে থাকলেন শুভ ভাই। তৃতীয় স্থান থেকে শুরু হলো একে একে নাম ঘোষণা। যথাক্রমে বিশেষ পুরস্কার, তৃতীয় এবং দ্বিতীয় স্থান ঘোষণা করবার পর প্রথম নাম ঘোষণা হওয়ার সময় এগিয়ে এলো। বাড়তে শুরু করল উত্তেজনার পারদ। বুঝতে পারছিলাম না শেষ পর্যন্ত জয় করতে পারব নাকি এই প্রতিযোগিতার মঞ্চ। কিন্তু যখন প্রথম স্থানের নাম ঘোষণা হলো তখন যুগ্মভাবে প্রথম স্থান অধিকার করতে পারে নিজের মধ্যে এক অদ্ভুত আনন্দের অনুভূতি জেগে উঠলো। কারণ এই প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার ছিল এক হাজার স্টিম। আর এই প্লাটফর্মে ১০০০ স্টিম মানে একটি বিশাল পুরস্কার। কারণ সাধারণত অনেক পরিশ্রম করে কিছু পরিমাণ অর্থ এখানে উপার্জন করতে পারি একটু একটু করে। সে দিক থেকে একসঙ্গে এক হাজার স্টিম পাওয়ার অর্থ এখানে একধাপে অনেকটা এগিয়ে যাওয়া। আর সেদিন পুরস্কার বিতরণীর মঞ্চে আমিও ঠিক সেভাবেই আমার বাংলা ব্লগে স্টিমিটের প্লাটফর্মে অনেকটা এগিয়ে গেলাম।
প্রথম আমার বাংলা ব্লগে আমি কখনো সেরা পুরস্কার পেতে পারলাম। নিজে দায়িত্ব নিয়ে দুর্গাপূজার পোস্টগুলো করেছিলাম ব্লগের পাতায়। আর তারই স্বীকৃতি হিসেবে আমার হাতে তুলে দেওয়া হলো এই বিশাল পুরস্কার। পুরস্কার সব সময় পথ চলতে শেখায়। আমার চিরকালই মনে হয় স্বীকৃতি হলো মানুষের কাছে একটি মাইলস্টোন। সেক্ষেত্রে এক একটি স্বীকৃতি অনেক বড় অনুঘটকের কাজ করে সাফল্যের পথে। আর এই অনুপ্রেরণা ছাড়া কোথাও কাজ করা সম্ভব হয় না। বিজয় আসলে অনেক দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রেও আমার মনে হয় এই পুরস্কার আমার দায়িত্ব অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়ে গেল। ভবিষ্যতে সেই দায়িত্ব কে মাথায় নিয়েই কাজ করতে হবে এ কথা মনে কর আলো বারবার।
আমার পুরস্কার প্রাপ্তিতে আমি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানালাম। সহ বিজয়ীদের শুভেচ্ছা জানাই। ভবিষ্যতে চলার পথ সকলের জন্য সুগম হোক।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1860714426828996752?t=ZIaKFJM3qvNEsZQXbEKriQ&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকের টাস্ক -
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি ঐদিন সেই হ্যাংআউট শুনেছিলাম ভাইয়া। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল আপনার নতুন ইউজার হয়ে এত সুন্দর ভাবে পুরস্কার দিতে নিয়েছেন দেখে। আসলে নিজেদের দক্ষতা এবং কাজের ধরন ভালো পর্যায়ে তুলে ধরে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর মন্তব্য করে অনুপ্রানিত করলেন বলে। পাশে থাকবেন এভাবেই৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তোমায় অনেক অভিনন্দন জানাই। আগেও জানিয়েছি আজও জানাচ্ছি। তোমারি জয়ে আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি৷ এরম অনেক অনেক প্রাপ্তিতে তোমার ঝুলি ভরে যাক। উল্লাস বন্ধু৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব ভালো লাগলো তুই এমন ভাবে সুন্দর মন্তব্য করে সমর্থন জানালি বলে। আমার ভালোবাসা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানায় দাদা। পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে।সেদিন হ্যাংআউটে আপনি বিজয়ী হয়েছেন শুনে অনেক খুশি হয়েছিলাম।আজ আপনি খুব সুন্দর ভাবে বিজয়ী হওয়ার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করে নিয়েছেন। আপনার অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আপনার জীবনে আরো অনেক বড় বড় প্রাপ্তি আসুক এই কামনাই করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ভালোলাগা বোন। খুব সুন্দর মন্তব্য করে পাশে দাঁড়ালেন। অণুপ্রাণিত হলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সম্ভবত গত রবিবারে আপনি অতিথি হয়ে এসেছিলেন। ওখানে আপনার একটা কথা আমার বেশ ভালো লেগেছিল পুরষ্কার টা কোন ম্যাটার না প্রথম স্থান অর্জন করাটা আসল ব্যাপার। কথাটা আসলেই ঠিক। শারদীয় কনটেস্টে প্রথম পুরষ্কারের বড় অ্যামাউন্ট আপনার প্রাপ্য ছিল। অভিনন্দন আপনাকে।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর কমেন্ট করে পাশে থাকলেন বলে। হ্যাঁ সেই রবিবার আমি ছিলাম অতিথি হিসেবে। আমার কথা আপনার ভালো লাগায় আমি আনন্দিত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি একজন নতুন সদস্য হিসেবে শারদীয়া কনটেস্টে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন, দেখেই বেশ ভালো লাগছে আমার কাছে। আপনি এবছরের শারদীয় দুর্গোৎসবের খুবই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। আশা করছি আপনি ভবিষ্যতে আরো ভালো করার চেষ্টা করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের মাধ্যমে এমন সুন্দর ভাবে পাশে থাকলেন বলে। আপনার জন্যও ভবিষ্যতের শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit