🙏 স্বাগতম্ 🙏

এসে গেল শীতকাল। আর শীতকাল মানেই যে খাবারের কথা প্রথম মনে পড়ে তা হল পিঠে। আমাদের বাংলায় পিঠে হল একটি ঐতিহ্য। শীতকালে পুলি পিঠের গন্ধ না মেখে কখনোই ঋতুর পরিবর্তন হওয়া সম্ভব হয় না। তাই ঘরে ঘরে পুলি পিঠে তৈরি করা দুই বাংলার এক বৈচিত্র এবং বৈশিষ্ট্যও বটে। শীতকালে পিঠে খাওয়ার জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি বারোমাস। আর সব ঋতু পেরিয়ে একসময় আমরা দাঁড়াই শীতকালের সামনে। শীত এলেই মনে পড়ে পুলি পিঠের কথা। শীত পড়বে আর ঘরে পুলি পিঠে হবে না তা আবার হয় নাকি?

এরমধ্যেই আমার বাংলা ব্লগ আয়োজন করলো সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার। ইচ্ছেমতো পুলি পিঠে বানিয়ে তার রেসিপি শেয়ার করতে হবে। এ যেন মেঘ না চাইতেই জল। নিজে বানানো শুধু নয়, চোখের সামনে দেখতে পাব বিভিন্ন রকম পুলি পিঠের ছবি এবং রেসিপি। হলও তাই। চোখের সামনে আসতে শুরু করলো একে একে দারুণ সব রেসিপি। একেক জন একেক রকম ভাবে বানিয়ে ফেললেন পুলি পিঠে। আমিও বা থেমে থাকি কেন? লেগে পড়লাম কাজে। বানিয়ে ফেললাম লোভনীয় মুগসামলি পিঠে৷ গ্রামবাংলায় এই ধরনের পিঠের প্রচলন অতি পুরনো। তেলেভাজা বলে এর স্বাদে এক অন্যরকম ভিন্নতা আছে।

---

আসুন প্রথমেই দেখে নিই, তৈরি হওয়ার পর আমার মুগসামলি কেমন দেখতে হল।

---

উপকরণ
মুগের ডাল - ১০০ গ্রাম
নারকেল - ১ টা
রাঙালু - ১০০ গ্রাম
খেজুরে গুড় - ৫০
ঘি - অল্প
নুন - অল্প
তেল - পরিমাণমতো
শুকনো লঙ্কা - ২ টো
মৌরি - ১ চামচ
জিরে - হাফ চামচ
ছোট এলাচ - ৩ টে
আদা বাটা - ১ চামচ
কাঁচালঙ্কা বাটা - ১ টি
চিনি - অল্প

💐 প্রথম ধাপ 💐

উনুনে কড়াই চাপিয়ে তাতে এক কাপ মুগডাল দিয়ে অল্প ভেজে নিতে হবে।

💐 দ্বিতীয় ধাপ 💐

প্রেসার কুকারে এক চামচ তেল, এক চামচ আদা বাটা, একটা কাঁচালঙ্কা বাটা অল্প করে দেওয়া হল।

💐 তৃতীয় ধাপ 💐

সেই কুকারেই মুগডাল ভাজাটি দিয়ে তাতে রাঙালু দিয়ে দিতে হবে।

💐 চতুর্থ ধাপ 💐

সেই মিশ্রণে অল্প নুন দিয়ে তাতে চার কাপ জল দিয়ে দিতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ মিশ্রণটি সেদ্ধ করতে হবে। একেবারে মিহি হয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক।

💐 পঞ্চম ধাপ 💐

এরপর কড়াইতে নারকেল কুড়ো দিয়ে তাতে খেঁজুরে গুড়ের পাটালি বা গুড় দিতে হবে। তাতে ছোট এলাচের গুঁড়ো দিতে হবে।

💐 ষষ্ঠ ধাপ 💐

নারকেল গুঁড়োর মিশ্রণটি ভালো করে মিশিয়ে ছাঁই বানিয়ে নিতে হবে।

💐 সপ্তম ধাপ 💐

কড়াই থেকে নামাবার আগে তাতে অল্প গুঁড়োদুধ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এটি ছাঁইটির স্বাদ বৃদ্ধি করবে।

💐 অষ্টম ধাপ 💐

কড়াইতে আলাদা করে দুটি শুকনো লঙ্কা, এক চামচ মৌরি এবং হাফ চামচ জিরে দিয়ে ভালো করে ভেজে সম্পূর্ণ মিশ্রণটি গুঁড়ো করে নিতে হবে।

💐 নবম ধাপ 💐

তৈরি হওয়া নারকেলের ছাঁই এবং মুগ ডাল আলাদা করে নিয়ে আসা হল। গরম ডালের মিশ্রণে এক চামচ চিনি এবং অল্প ঘি দিয়ে মিশিয়ে নেওয়া হলো। তাতে ভাজা মশলাটিও দিয়ে দিতে হবে।

💐 দশম ধাপ 💐

ডালের মিশ্রণে অল্প চালের গুঁড়ো মিশিয়ে মেখে নিয়ে মণ্ড তৈরি করতে হবে।

💐 একাদশ ধাপ 💐

সেই ডালের মণ্ড থেকে ছোট ছোট আকারের লেচি বানিয়ে হাতে ঘুরিয়ে মাখিয়ে গোলাকার করে নিতে হবে।

💐 দ্বাদশ ধাপ 💐

ওই গোলাকার বলগুলি এক একটি বাটি বানিয়ে তার মধ্যে নারকেলের ছাঁই দিয়ে পিঠের আকারে গড়ে নিতে হবে।

💐 ত্রয়োদশ ধাপ 💐

তৈরি হওয়া পিঠে গুলি ঠিক এমন দেখতে হওয়া চাই।

💐 চতুর্দশ ধাপ 💐

কড়াইতে তেল দেওয়া হল। এরপর তেল গরম হলে তাতে পিঠেগুলি ছাড়া হলো। সম্পূর্ণ ভাজাটি মাঝারি আঁচে করা বাধ্যতামূলক।

💐 পঞ্চদশ ধাপ 💐

প্রস্তুত হবার পর পিঠে গুলি কড়াই থেকে তুলে পাশে আলাদা পাত্রে রাখা হলো।

💐 ষোড়শ ধাপ 💐

সম্পূর্ণ হবার পর ঠিক এমন দেখতে হবে। পরিবেশনের জন্য পাত্রটি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।

💐 সম্পূর্ণ হবার পর 💐

আমার বানানো মুগসামলি আপনাদের কেমন লাগলো নিশ্চয় জানাবেন। আমি কিন্তু আপনাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।

---

চিত্রগ্রহণ	ইনফিনিক্স হট ৩০
ক্যামেরা স্পেশিফিকেশন	৫০ মেগাপিক্সেল
স্ট্যাটাস	আনএডিটেড
চিত্রগ্রাহক	কৌশিক চক্রবর্ত্তী
লোকেশন	হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ
কভার ছবি এডিটিং সৌজন্য	অণুলিপি

---

🙏 ধন্যবাদ 🙏

---

(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)

---

---

---

---

--লেখক পরিচিতি--

কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

---

---

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।

---