কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০২৫
শুরু হয়ে গেছে কলকাতা বইমেলা। দেখতে দেখতে আজ চার দিনে পদার্পণ করলো আন্তর্জাতিক মানের এই পুস্তক মেলা। আর এই বইমেলার সঙ্গে যেন আমাদের অর্থাৎ কলকাতাবাসির এক নিবিড় টান। এই টানকে উপেক্ষা করে এমন সাধ্য কার। ইতিমধ্যেই আমি দুইদিনই উপস্থিত হয়েছি বইমেলা প্রাঙ্গণে। উদ্দেশ্য ছিল আমাদের লিটল ম্যাগাজিন কবিতার আলো বিক্রি করা। তাই আমার বইমেলায় ঘোরা কম হয়। বেশিরভাগ সময়টা চলে যায় নিজের ম্যাগাজিন ও বই বিষয়ক কাজকর্ম করতে। যদিও আমার লেখা গবেষণামূলক বই 'কেল্লা নিজামতের পথে' এখনো আসেনি। তাই অপেক্ষা করছি বইটির জন্য। কিন্তু আমাদের লিটল ম্যাগাজিন টেবিলে একেবারে যেন চাঁদের হাট। বহু মানুষ প্রতিনিয়ত আসছেন সেই টেবিলে এবং সংগ্রহ করছেন বিভিন্ন রকমের বই। তার মধ্যে যেমন আছে লিটল ম্যাগাজিন কবিতার আলো, আবার ঠিক তেমনভাবেই আছে আমাদের সম্পাদক মন্ডলীর বিভিন্ন কবিদের লেখা বিভিন্ন বই। কবিতার আলোর সেই টেবিল থেকে প্রতিদিন কিছু কিছু পরিমাণ করে বিক্রি হচ্ছে বই। যদিও এখন মানুষের মধ্যে বই কেনার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। কারণ মানুষ এখন পিডিএফ বা এই ধরনের টেকনোলজিগুলি মোবাইল ফোনে ব্যবহার করছে। যার ফলে সরাসরি বই কেনার প্রবণতা অনেকখানিই কমে গেছে। কিন্তু তার মধ্যেও ব্যবসা করে খেতে হবে বিভিন্ন প্রকাশনী সংস্থাগুলির। তাই প্রতিবছর বইমেলায় অসংখ্য পরিমাণ বই প্রকাশ হয় নিয়ম করে। কিছু বই প্রকাশ হয় স্টলে আবার কিছু বই রীতিমত অনুষ্ঠান করে মঞ্চ থেকে প্রকাশ করা হয়।
আমার কাছে বইমেলা মানেই পত্রিকা বিক্রি করবার সময়। পত্রিকার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে একটু সচেতনতা গড়ে তুলবার চেষ্টা করি। আর ঠিক সেইসব গঠনমূলক কবিতা দিয়ে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করি কবিতার আলোর ভিতরের পাতাগুলি। সেই পত্রিকা যতজন মানুষকে সম্ভব তুলে দেওয়ার চেষ্টা করি হাতে। আর এভাবেই কেটে যায় আমাদের বইমেলা। বই কেনার থেকেও যেখানে বই বিক্রির তাগিদ অনেক বেশি। মানুষের হাতে নতুন পত্রিকা এবং নিজস্ব বই তুলে দেওয়ার জন্য সে এক অদম্য তাগিদ।
কলকাতা বইমেলা যেন বাঙালির বারো মাসের ১৪ নম্বর পার্বণ। নতুন নতুন বই এবং পত্রিকা প্রকাশ হওয়ার ক্ষেত্র হিসেবে বইমেলার স্থান হলো প্রথম। সারা বাংলা জুড়ে প্রচুর তরুণ এবং নবীন লেখকের বই প্রকাশ হয় এই কলকাতা বইমেলায়। আর সেখান থেকেই সেই সব বই পৌঁছে যায় সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দিকে। এই বছর বইমেলার প্রধান আমন্ত্রিত থিম কান্ট্রি হল জার্মানি। আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা হিসেবে প্রতিবছর এই মেলায় সারা পৃথিবী থেকে পুস্তক বিক্রেতারা ছুটে আসেন। তার মধ্যে ইউরোপ আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশের বিভিন্ন প্রকাশক উল্লেখ্য। আর এইসব মিলিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ যেন একেবারে চাঁদের হাট। পুস্তক বিক্রেতা, প্রকাশক এবং পাঠকদের মিলনক্ষেত্র হল এই প্রাঙ্গণ। সেখানে প্রতিনিয়ত নতুন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠছে অসংখ্য মানুষের। বই এবং পত্রিকার সম্পর্কে বদ্ধ হচ্ছেন অগনিত মানুষ। এবং তার সঙ্গে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার বই। কিন্তু এই বইমেলায় স্টল বা টেবিল হাসিল করাটা খুব একটা সহজ বিষয় নয়। সেখানে থাকে বহু লড়াইয়ের কাহিনী। অনেকটা দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে কলকাতা বইমেলায় বই বিক্রির জন্য ছোট্ট একটু জায়গা পাওয়া যায়। আসলে প্রবল প্রতিযোগিতায় নিজেকে স্থান করানোটাই সব থেকে কঠিন বিষয়। কিন্তু আনন্দের কথা হল এই বছরও আমরা বইমেলায় পত্রিকা বিক্রির জন্য টেবিল পেয়েছি। আর সেই টেবিল থেকে প্রতিনিয়ত বিক্রি করছি কবিতার আলোর মত একটি আদ্যোপান্ত কবিতা পত্রিকা। আর তার সঙ্গে বিভিন্ন রকমের বই। সব মিলিয়ে জমে গেছে কলকাতা বইমেলা ২০২৫। এখন আপনারা সকলে আসুন এবং আমাদের সঙ্গে এই বইমেলায় মিলিত হন বই ও পত্রিকার সম্পর্কে। এটুকু দাবি নিয়েই আজকের লেখা এখানে শেষ করলাম।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1885414676269342774?t=OAC4QtDonC28Z2T3W0hkZw&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Daily tasks-
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit