বাঙালির জুতোর প্রিয় সলিউশন - শ্রীলেদার্সের জুতো
আজ একটি ভিন্নধর্মী বিষয় নিয়ে পোস্ট দেবো। আপনারা সকলেই জানেন সামনে আসছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। কলকাতা তথা বাংলার দুর্গাপুজো ইতিমধ্যে স্বীকৃতি পেয়ে গেছে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসাবে। এই উৎসবে যে পরিমাণ মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন সেভাবে পৃথিবীর আর কোন উৎসবে হয় না। এই উৎসব লন্ডনের টেমস উৎসবকেও হার মানায়। তাই পুজো আসছে আসছে এমন গন্ধে যখনই মেতে ওঠে শরতের আকাশ, পেঁজা তুলোর মত মেঘ যখন দখল নেয় আকাশের, তখনই আমরাও বেরিয়ে পড়ি দোকানে দোকানে পুজোর জামা কাপড় জুতা দেখতে। বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো হলো একটা অপেক্ষার নাম। সারা বছর ধরে আমরা অপেক্ষা করে থাকি এই উৎসবের দিনগুলোয় মেতে ওঠার অপেক্ষায়।
আজ এমন একটি প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ করব, যাকে ছাড়া বাঙালির দূর্গাপূজা ভাবাই যায় না। সারা ভারতে তথা বিদেশেও জুতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে এর নাম বিশ্বজোড়া। শ্রীলেদার্স। চটজলদি পছন্দমত জুতোর সলিউশন। কম দামে এতো ভালো জুতো সচরাচর কোন ব্র্যান্ড দিয়ে উঠতে পারে না। শ্রীলেদার্সের নাম এখন আর শুধু কলকাতাতেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের মত আরো বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যেও। অসম্ভব এক জনপ্রিয়তায় এই সংস্থা জুতো পরিয়ে আসছে আপামর ভারতবাসীকে। ১৯৫২ সালে জামশেদপুরে শ্রীযুক্ত সুরেশ চন্দ্র দে শ্রীলেদার্সের ব্যবসা শুরু করেন। সেই থেকেই মানুষের জন্য অল্প খরচে বিভিন্ন রকম জুতা বানাচ্ছে এই সংস্থা। সেই সীমানা এখন রাজ্যের গণ্ডি পার করে পৌঁছে গেছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
![]() | ![]() |
---|
বাংলাদেশী বন্ধুরাও শ্রীলেদার্স থেকে কেনাকাটা করতে খুব ভালোবাসেন। এদেশে এলে বহু বাংলাদেশী সারা পরিবারের জন্য জুতো কিনে নেন শ্রীলেদার্স থেকে। স্বল্প খরচে এমন জুতো খুব স্বল্প সংস্থাই নির্মাণ করে থাকে। সুরেশবাবু চেয়েছিলেন সকলকে স্বল্পমূল্যে ভালো জুতা সরবরাহ করতে। আর তার থেকেই জন্ম হয় আজকের বিখ্যাত ব্র্যান্ড শ্রীলেদার্সের। আজ শ্রীলেদার্স এর বিভিন্ন দিকে শাখা রয়েছে। কলকাতায় লিন্ডসে স্ট্রিট ও ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে শ্রীলেদার্সের সবথেকে পুরনো দুটি শাখা আজও বিদ্যমান। পুজোর আগে এখানে উপচে পড়ে ভিড়। শুধু জুতো নয়, তার সঙ্গে বেল্ট, ব্যাগ বা জুতোর বিভিন্ন উপকরণসামগ্রী সমেত সে এক দুর্দান্ত পসরা। একবার গেলে যেন না কিনে ফেরাই যায় না। তাই শ্রীলেদার্স থেকে হাত ভর্তি করে জুতো ব্যাগ কেনাকাটি করতেই বাঙালি অভ্যস্ত বহুদিন ধরে।
![]() | ![]() |
---|
আমি শেষবার শ্রীলেদার্স গেছিলাম বেশ কয়েক মাস আগে। কিন্তু এর অনেকগুলি ব্রাঞ্চেই আমার নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে। জুতোর অভাব পড়লেই নির্দ্বিধায় ছুটে যাই যে কোন একটি শাখায়। নিজের পছন্দমত জুতো বা ব্যাগ হাতে নিয়ে বিল করিয়ে নিয়ে চলে আসি ঘরে। আর তারপর বিভিন্নভাবে দৈনন্দিন জীবনে অঙ্গ হয়ে ওঠে সেই সব জিনিসপত্র। এখানে আমি যে ছবিগুলি শেয়ার করলাম তা হুগলি জেলার শ্রীরামপুর শহরে অবস্থিত শ্রীলেদার্সের। কলকাতায় খুব একটা নিয়মিত যাতায়াত নেই বলে প্রয়োজন পড়লে শ্রীরামপুর শ্রীলেদার্সেই চলে যাই। এই তো কদিন আগেই সেখান থেকে কিনে আনলাম একটি অফিস যাবার ব্যাগ। কিছুদিন আগে সোদপুরেও একটি শ্রীলেদার্স খুলেছে। প্রথম দিন যা ভিড় দেখেছিলাম তা ভোলবার নয়। দুর্গাপূজায় শ্রীভূমির প্যান্ডেলও হার মেনে যেতে পারে। তাই আর সাহস করে ওই সুবিশাল লাইনে দাঁড়াতে পারিনি। কিন্তু কোন একদিন নিশ্চয়ই যাওয়ার ইচ্ছা আছে। শ্রীলেদার্স হল এক কথায় সবরকম জুতোর প্রাপ্তিস্থান। তাই পুজোর আগে তো বটেই, এছাড়াও যে কোন সময় পৌঁছে যেতে হয় এই শোরুমগুলোতে। আপনারাও প্রয়োজন অনুযায়ী যেতে পারেন নিকটবর্তী কোন শোরুমে এবং পছন্দ করে সংগ্রহ করতে পারেন শ্রীলেদার্সের একটি জুতো। পুজোর আগে একদিন হইচই করে জুতো কিনে খাওয়া দাওয়া করে ঘরে ফেরার অনুভূতিই আলাদা।
শ্রীলেদার্সের জুতা সম্পর্কিত আমার এই পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যদিও কোন দিন কেনা হয় না, কিন্তু শ্রীলেদার্সের জুতার কথা শুনেছি বেশ। আপনার লেখা পড়ে জানলাম এটার জনপ্রিয়তা সম্পর্কে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার কেনা জুতার ডিজাইনটা ভাল লেগেছে। আমিও এরকম ফিতা ছাড়া জুতা পরি।
ভাল থাকুন।
টেক নেক সিন্ড্রোম (Tech Neck Syndrome) একটা নতুন এবং আধুনিক রোগ। এটাকে টেক্সট নেক সিন্ড্রোমও (Text Neck Syndrome) বলা হয়। কেউ কেউ এটাকে নতুন মহামারী বলেও উল্লেখ করছেন। গুগলে Tech Neck Syndrome লিখে সার্চ দিলে অনেক আর্টিকেল পাওয়া যাবে।
যেকোন ধরনের ঘাড় ব্যথা, ঘাড় ধরা বা অস্বস্থি ভাব, উপরের পিঠে ব্যথা, সোল্ডার জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি যদি লম্বা সময় মোবাইল দেখা বা কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে হয় বলে প্রমাণিত হয় তাহলেই এটাকে টেক নেক সিন্ড্রোম হিসাবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। মাথা সোজা রাখার পরিবর্ত যদি ৪৫ ডিগ্রি কোণে সামনে ঝুকিয়ে রেখে লম্বা সময় মোবাইল টিপাটিপি করা বা কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তাহলে এটা হতে পারে।
বর্তমান জেনারেশনের অনেকেই এই সিন্ড্রোমে আক্রান্ত!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শ্রীলেদার্সের জুতো ভীষন টেকসই এবং ভালো। আমি বহুদিন ধরে এই ব্র্যান্ডের জুতো ব্যবহার করি। কখনো পারলে অবশ্যই এখান থেকে জুতো সংগ্রহ করবেন। আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit