আশাকরি সকলেই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সুস্থ আছেন এবং ভাল আছেন। সেই সাথে আশা করি আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করব। পানি অপচয় রোধ কিংবা পানি অপচয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
কোন কিছু অপচয় করাটাই কাম্য নয়। আমরা ছোটবেলা থেকে একটি বাক্য অন্তত শুনে এসেছি কিংবা শিখে এসেছি সেটি হচ্ছে অপচয়কারী শয়তানের ভাই। অর্থাৎ কোন কিছুই অপচয় করা ঠিক নয়। আমাদের যে কোন কিছুতে প্রাচুর্যতা থাকলেও এমন কিছু মানুষ আছে যাদের সেই বস্তুগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় হিসেবেই তারা পায় না। অনেক মানুষ আছে যাদের কাছে খাবার অপচয় করা তাদের কাছে এক রকম বিলাসিতা। আবার কিছু মানুষ আছে ফেলে দেয়া নষ্ট খাবার কুড়িয়ে খাওয়া তাদের নিয়তির লেখা। ঠিক একই ভাবে সকল বস্তু আমাদের কাছে বেশি থাকলে আমরা অপচয় করি আবার অনেক মানুষ আছে তারা তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারার জন্য সেই বস্তুটিই পায়না।
বর্তমানে বান্দরবান এসে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি উপলব্ধি করতে পারি সেটি হচ্ছে পানির সমস্যা। বান্দরবানের মানুষ বুঝতে পারে পানির সমস্যা কতটুকু। এখানে খাবার পানির যেমন সমস্যা ঠিক তেমনি সমস্যা গোসল করার পানি। আমাদের হোস্টেলে যে পানির সরবরাহ করা হয় সেই পানির উৎস কয়েক কিলোমিটার দূরে বসানো মোটর থেকে। এবং সেখান থেকে পাইপ দিয়ে পাহাড়ের উপর দিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু এখানকার স্থানীয় মানুষদের এত সামর্থ্য নেই। তাই তাদের খাবার পানির উৎস হচ্ছে খালের মধ্যে নিচ থেকে কিছু জায়গায় পানি ওঠা সেই অংশগুলো। অনেক কষ্ট করে তারা সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করে। যে পানি সাধারণ মানুষ কখনোই পান করার চিন্তাও করবে না।
বিশেষ করে গৃষ্ম কালে এই সমস্যা প্রকট। গৃষ্ম কালে স্থানীয়রা যেসকল পানিতে গোসল করে ওই পানিতে আমাদের অঞ্চলের মানুষ গরু ছাগল গোসলও করাবে না। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। এখানে অনেক অঞ্চল রয়েছে তাদের বাধ্য হয়েই এইসকল পানিতে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ থেকে শুরু করে গোসল এবং খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়া পানির তেমন উৎস নেই। ঝর্ণা থেকে যে পানি আসে সেগুলো অনেকটা ময়লাযুক্ত এবং কিছুটা গন্ধযুক্ত। মাঝেমধ্যে কিছু টিউবওয়েল দেখা গেলেও সেগুলো থেকে পানি উঠানো অনেক অনেক বেশি কষ্টকর। অসংখ্য চাপ দিয়ে টিউবওয়েল থেকে পানি তুলতে হয় এবং হাত থেকে ছেড়ে দেয়ার সাথে সাথে পানি চলে যায়।
শহর ছেড়ে যতই পাড়া-মহল্লা কিংবা পাহাড়িদের বাসস্থানের দিকে যাওয়া হয় ততই তাদের পানি সংকট বেড়ে যাওয়ার চিত্র দেখা যায়। সত্যি বলতে এখানে না আসলে বুঝা যাবেনা আমরা কতটা পানি অপচয় করছি এবং তারা কতটা পানির জন্য কষ্ট ভোগ করছে। এমনকি আমরাও কয়েক মাস খাবার পানিতে সমস্যায় ভুগছি। আমাদের হোস্টেলের অভ্যন্তরে কোন টিউবওয়েল না থাকার কারণে একটি বাজারের পাশ থেকে পানি নিয়ে আসতাম এবং সেখান থেকে পানি আনাটাও অনেক অনেক বেশি কষ্টকর ছিল। এখন বর্তমানে ইলেকট্রিক ফিল্টার এর মাধ্যমে এই সমস্যা নিরসন করা হয়েছে।
তাই বর্তমানে আমার কাছে মনে হয় জীবনে অনেক পানি অপচয় করেছি। আর বর্তমানে পানির সমস্যায় ভুগেছি। আমাদের পানির অপচয় রোধ করা উচিত। আমাদের চারপাশে অনেক পানি দেখা গেলেও সকল পানি বিশুদ্ধ নয়। এমনকি আমাদের খাবার জন্য কিংবা ব্যবহারের অনুপযোগী। মাঝেমধ্যে ভাবি আমরা যে বিশুদ্ধ পানি অপচয় করি সেই পানি অনেক মানুষ পায় না। অবশ্য এখানে মানুষদের এই সমস্যা লেগে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে এখানে সরকারি টিউবয়েল যাবার ব্যবস্থা ও সংকীর্ণ। কারণ পাহাড়ি অঞ্চলে অনেক অনেক জায়গা আছে যেগুলো দুর্গম এলাকা এবং খুবই ভয়ঙ্কর। যাই হোক যেহেতু কোন কিছুই অপচয় কাম্য নয়। তাই আমার কাছে মনে হয় আমাদের অতিরিক্ত পানি অপচয় ঠিক নয় এবং পানি অপচয় রোধে নিজ থেকেই ভূমিকা রাখতে হবে।
আমি মোঃ কাউছার হাসান। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাই নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কেননা এদেশের প্রকৃতির মাঝে আমার বেড়ে ওঠা এবং এদেশের বুকে আমার বসবাস। পেশায় একজন শিক্ষক। সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পাই এবং সেইসাথে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাই।
ভাই আপনি দারুন একটা টপিক নিয়ে আসছেন। আমরা পানি অপচয় করছি না তো। ঠিকই বলেছেন কিছু মানুষ আছে যে পরিমাণ খাবার অপচয় করে, আবার এমন কিছু মানুষ আছে তার নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার তালিকায় খাবারগুলো পায়না। অসাধারণ পোষ্ট লিখেছেন তবে বান্দরবানের পানিসংকট সেটা আমি দেখেছি। বান্দরবানকে মরুভূমি এলাকা বললেও ভুল হবে না। কারণ সেখানে খাবার পানির সংকট। আর জাদের পানির ব্যবস্থা আছে সেটা সংরক্ষণ করে তারপর ব্যবহার করতে পারে। আমি বান্দরবান দেখেছি চাপা কলের মাথা খুলে রাখতে। একেবারে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এবং সারাদিনে একবার যে পারিমান পানি নল কুপে জমা হয় সেই গুলো উঠিয়ে তারা তাদের খাওয়া-দাওয়ার থেকে শুরু করে রান্নাবান্না কাজে ব্যবহার করে। আর যারা গরিব তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় খাবার পানির জন্য। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আপনি অনেক ঠিক কথা বলেছেন। এরকম অনেক এলাকা আমাকে জায়গা রয়েছে এখানে পানির খুব কষ্ট। বলতে গেলে তারা ঠিক মতো হিমা খেতে পারছে না প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারছে। এমনকি বাধ্য হয়ে তারা অনেক ময়লা আবর্জনায় থাকা পানি ব্যবহার করছে। কিন্তু আবার অন্য দিকে দেখা যায় যে দিকে পানি বেশি কিংবা হামেশাই পাওয়া যায় ওরা হয়তো বা অপচয় করছে। এই আমাদেরকে ধরুন আমরা কত হবে পানিকেও প্রচার করছি তা বলে বলা সম্ভব না। আসলে যেটা যার থাকে না তারাই তার মর্ম বুঝে । কিন্তু চিন্তা করলে পানির কষ্টের মত কষ্ট আর কি হতে পারে। আপনার পুরো পোস্ট করে ভীষণ খারাপ লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পানি অপচয় সম্পর্কে খুবই সুন্দর একটি শিক্ষামুলক পোস্ট করেছেন ভাইয়া ।আপনার পোস্ট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
ধন্যবাদ সুন্দর কিছু নিয়ে লেখার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দারুন একটি বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। ভাই পড়ে অনেক ভালো লাগলো ।আসলে পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সব ধরনের অপচয় মুলক কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত ।আমাদের খাবারের সাথে সাথে পানি প্রচুর পরিমাণ অপচয় করা হয় যেটা কোনোভাবেই উচিত নয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit