আশাকরি সকলেই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সুস্থ আছেন এবং ভাল আছেন। সেই সাথে আশা করি আপনারা যেখানেই থাকুন না কেন পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে উপজাতিদের বাজার নিয়ে কিছু ব্যতিক্রম ধর্মী তুলে ধরব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
বর্তমান সময়ে এক বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ সুবিধার্থে বাংলাদেশের অন্যতম পার্বত্য অঞ্চল বান্দরবানে বসবাস করার সুযোগ পাচ্ছি। সেই সুবাদে বান্দরবানের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছি যা অনেকটাই আনন্দদায়ক। সারাদিন কর্মব্যস্ততা গেলেও বিকেলবেলাটা অনেকটাই কেটে যায় আনন্দের মাধ্যমে। খেলাধুলা কিংবা হাঁটাহাঁটি কিংবা স্থানীয় বাজারগুলোতে পরিদর্শনের মাধ্যমে অনেকটাই আনন্দ পেয়ে থাকি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের সামনেই রয়েছে একটি স্থানীয় বাজার এর নাম রেইছা বাজার। এটি বান্দরবনে প্রবেশের মুহূর্তেই সেনাবাহিনী চেকপোস্টের কাছে অবস্থিত।
এটি একটি স্থানীয় বাজার। এই বাজারে মূলত মুসলমানের সংখ্যাই বেশি তবে উপজাতিরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা আইটেম বিক্রি করে থাকেন। তাদের কাছ থেকে বাঙালিরা পাইকারি দরে কিনে বাজাদে সেগুলো আবার বিক্রি করেন। বেশির ভাগ উপজাতি বাগান থেকে কলা, কাঁঠাল, আনারস, লেবু মসলাজাতীয় আইটেম কিংবা অনেক আইটেমই রয়েছে যেগুলো সত্যি বলতে আমি চিনি না। সেই আইটেমগুলো বাঙালিদের কাছে পাইকারি বিক্রি করে তারা খুব দ্রুত তাদের বাগানে চলে যায়। আবার কিছু উপজাতি আছে বসে খুচরা বিক্রি করে। এখানে মূলত উপজাতিরা কম দামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে চলে যায় কিন্তু পাইকাররা সেগুলো আমাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে। এই বাজারে মাঝেমধ্যে ব্যতিক্রম কিছু দেখা যায় যা দেখতে বেশ ভালো লাগে।
যেমন এখানে প্রতিনিয়ত কাঁকড়া বিক্রি করা হয় যা উপজাতিদের কাছে অনেক পছন্দের একটি খাবার। এখানে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া বিক্রি করতে দেখা যায়। অথচ বাজারটি বড় নয়। কয়েকটি দোকান এর সমন্বয়ে একটি বাজার এবং লোক সংখ্যাও অনেক কম। এখানে দুই রকম কাঁকড়া বিক্রি করা হয়। একটি সামুদ্রিক যার শরীর অনেকটা উপবৃত্তাকার আকৃতির। আরেকটি দেশি কাঁকড়া যা আমরা আমাদের অঞ্চলের সচরাচর দেখে থাকি। তবে সেখানে জায়গা কাকা কিনে নিয়ে যান সবাই বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। এগুলো তাদের অনেক পছন্দের একটি খাবার।
তবে মাঝেমধ্যে এখানে ব্যতিক্রম কিছু দেখতে পাই যা অনেক সময় আশ্চর্য হই বটে। যেমন গত দুদিন আগে অনেক পরিমাণে শামুক এখানে দেখতে পেয়েছিলাম যেগুলো বিক্রি করা হচ্ছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো হাঁস মুরগিকে খাওয়ানোর জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো এখানে হাঁস নেই। তাই কৌতূহলবশত দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম শামুক কিসের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। কারণ বিক্রেতা একজন বাঙালি ছিলেন। তিনি আমাদের বলেন এগুলো উপজাতিরা কিনে নিয়ে যায় খাওয়ার জন্য। তাই এটি আমার কাছে অনেকটাই অদ্ভুত মনে হলো যদিও এটা তাদের জন্য স্বাভাবিক। অবশ্য মাঝেমধ্যে এগুলো স্বাভাবিক মনে হয় কারণ এখানে আসার পরে অনেক আইটেম দেখেছি যেগুলো তারা খায়। যেগুলো আমাদের কাছে পুরোপুরি অদ্ভুত মনে হয়। যেমন আমার একজন ছোট স্টুডেন্ট ছিল যার নাম চনি মং মারমা। বয়স চার বছর কিন্তু এখনই সে পোকামাকড় খায়। অবশ্য এটা তাদের জন্য স্বাভাবিক।
যাইহোক বিকেলবেলা এরকম স্থানীয় বাজারে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দই অন্যরকম। আমাদের বাসার সামনে হওয়াতে প্রতিদিন বিকেলবেলা আমরা সেখানে যাই এবং মাঝে মধ্যে কম দামে কলা এবং কাঁঠাল কিনে নিয়ে আসি। যা আমাদের অঞ্চলের তুলনায় একেবারেই কম।
ছবির ধরন | উপজাতীয়দের স্থানীয় বাজারের ফটোগ্রাফি |
---|---|
ডিভাইসের নাম | স্যামসাং গ্যালাক্সি জে ৭ |
ফোকাস দূরত্ব | ৩.৬ মি.মি. |
W3W ফটো লোকেশন | রেইছা থলিপাড়া, বান্দরবান |
ফটোগ্রাফার | kawsar8035 |
আমি মোঃ কাউছার হাসান। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাই নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কেননা এদেশের প্রকৃতির মাঝে আমার বেড়ে ওঠা এবং এদেশের বুকে আমার বসবাস। পেশায় একজন শিক্ষক। সব সময় নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পাই এবং সেইসাথে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাই।
কে কোথায় কি খায় না খায় বলা যায়না ভাই।পৃথিবী বৈচিত্র্যময়।
নতুন কিছু জানতে পেরেছি আপনার পোস্টের মাধ্যমে।ধন্যবাদ 🌺
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা সত্য যে কে কি খায় সেটা বলা যায় না তবে আমি কারো খাবারকে ছোট করে দেখিনি। বরং একটু ভিন্নতাটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম এবং আজকে পোস্ট অনেক দারুন হয়েছে। প্রতিটা ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর করে করেছেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপনাকে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার পোস্টের মাধ্যমে বান্দরবানের নৃ-গোষ্ঠী, তাদের জীবন ধারা এবং খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানার সুযোগ পেলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুর্দান্ত ছিল আপনার উপজাতিদের বাজারে ভ্রমণের অসাধারণ ফটোগ্রাফি গুলো। অঞ্চলভেদে এবং যাত্রীদের আমাদের খাবারের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। আপনার এই ট্রাভেলিং পোষ্টের মাধ্যমে আমরা উপজাতিদের খাবার সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পেতে পারি। ধন্যবাদ এমন হেল্প ফুল এবং ট্রাভেলিং পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আদিবাসীরা এমন কিছু খাবার খেয়ে থাকে যা আমাদের কাছে বেশ অদ্ভুত লাগে। হয়তো আমরা যা খাই সেটাও তাদের কাছে অদ্ভুত লাগে। যাই হোক ট্রেনিং এর সুবাদে দারুন কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে আপনার জেনে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্ট এর জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এত সুন্দর ভাবে অজানা তথ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি অবশ্য এ বিষয়ে এতটা অবগত ছিলাম না। আজ আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে বিকেলবেলা উপজাতিদের বাজারে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সেই সাথে তাদের কিছু খাবারের ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit