আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ১লা চৈত্র | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বসন্তকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আজ থেকে বহু বছর আগের কথা। তখন এতটা সভ্যতা মানুষের মাঝে পৌঁছায়নি। একদম দরিদ্র একটি গ্রামের মাঝে রহমত মিয়ার কুঁড়েঘর। যতদূর চোখ যায় শুধু মাঠ আর মাঠ অনেক দূর পথ পেরিয়ে মাঝেমাঝে দুই তিনটা বাড়ি একসাথে লক্ষ্য করা যায় তবে তাও সেখানে খুব একটা মানুষজনের চলাফেরা দেখা যায় না। সারাদিন মাঠে কিছু মানুষ কাজ করলেও সন্ধ্যার পর থেকে আর মানুষের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না পুরোপুরি সমসান নীরবতা। যখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয় তখন রহমত মিয়ার কুঁড়েঘর এর সামনে সামান্য একটু আগুনের আলো চোখে পড়ে তাছাড়া যতদূর চোখ যায় শুধু কালো অন্ধকার ছাড়া অন্য কিছুই চোখে আসে না। সেই সময় বিদ্যুতের নাম গ্রামের মানুষ তখনো শুনতে পায়নি বলা চলে। একটা গ্রাম খুঁজলে বলা চলে একজন শিক্ষিত মানুষ পাওয়া যেত তাও তারা আবার শহরে থাকতো।
গ্রামের পর গ্রাম খুঁজলেও তেমন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা স্কুল-কলেজ পাওয়া যেত না বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুরের কাজ করে বা মাঠে কাজ করে জীবন পরিচালনা করত। সারাদিন কাজ করার পর একজন মানুষকে হাতে টাকা দেওয়ার বিপরীতে তখন কিছু চাউল আর কিছু ডাল তুলে দেওয়া হতো যেগুলো দিয়ে দিনমজুর ব্যক্তির বাড়িতে কোনমতে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতো। রহমত মিয়ার মাঠের মধ্যে যে কুঁড়েঘর ছিল সেই কুঁড়েঘর তুলনামূলক একটু উঁচু জমিতে ছিল তাই বৃষ্টির সময়ে মাঠের চারিপাশে পানি জমে গেলেও তার কুঁড়েঘরের আশপাশে পানি উঠত না। রহমত মিয়ার বাড়ি মাঠের মাঝা মাঝি অবস্থানে হওয়ার কারণে সে অনেক হাঁস-মুরগি পালন করতে পারত।
হাঁস মুরগির পাশাপাশি তার বাড়িতে বড় বড় দুইটা বলদ গরু ছিল যেটা দিয়ে রহমত নিয়া প্রতিনিয়ত মাঠে জমি চাষের কাজ করতো। মূলত সেই সময়ে কৃষিতে কোন প্রযুক্তির অবদান ছিল না জমি চাষ করার জন্য লাঙ্গল বা পানি সেচ দেওয়ার জন্য পানি সেচের কোন ব্যবস্থা ছিল না। যে বছরে বৃষ্টি বেশি হতো সেই বছরে ভালো ফসল ফলতো আর যে বছরে বৃষ্টি কম হতো সে বছরে খুব একটা ফসল ফলতো না। রহমত মিয়া সারাদিন মাঠে গরু দিয়ে জমি চাষ করার ফলে শরীর অনেকটাই ক্লান্ত। সে ক্লান্ত শরীর নিয়ে সন্ধার পরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে কিছুটা ঘুমানোর চেষ্টা করছে। বেশ কিছুদিন বৃষ্টি হয় না আকাশে কিছুটা মেঘে জমেছে আবার ঠান্ডা বাতাস বইছে রহমত মিয়া ভাবলো হয়তোবা বৃষ্টি হবে বা অন্য এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে বলে এখন ঠান্ডা বাতাস অনুভব করতে পারছে। সারাদিন রোদের মধ্যে মাঠে গরু দিয়ে জমি চাষ করার ফলে শরীর অনেক ক্লান্ত হয় দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ল। কুঁড়ে ঘরের মধ্যে রহমত মিয়া আর তার ছোট্ট পরিবারের দুই সদস্য মিলে সবাই একসাথে ঘুমিয়ে আছে। ঠান্ডা বাতাসে গরমের প্রভাবটা অনেকটাই কমে গিয়েছে যার কারণে রহমত নিয়া গভীর ঘুমে হারিয়ে গিয়েছে। মাঝরাতে হঠাৎ বিকট একটা শব্দে রহমত মিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেল।
ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে রহমত মিয়া কুরে ঘর থেকে বেরিয়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করল আসলে সে যে শব্দ শুনেছে সেটা আসলেই সত্যি ছিল নাকি স্বপ্নের মাঝে বিকট শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। প্রথমে রহমত নিয়ে ভেবেছিল হয়তোবা স্বপ্নের মাঝে কিছু একটা বিকট শব্দ শুনেছে কেননা তার পাশে তার স্ত্রী সন্তানেরা স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে ছিল। সে চিন্তা করল যদি আসলেই এরকম বিকট শব্দ হয় তাহলে তার স্ত্রীর ঘুম ভেঙে যাওয়ার কথা। যেহেতু তার স্ত্রী আগে থেকেই একইভাবে ঘুমিয়ে ছিল তাই সে ভাবলো স্বপ্নে এমন বিকট শব্দ শুনেছে তারপরেও ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে বাইরে থেকে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করল।
যখন রহমত নিয়া কুঁড়ে ঘরের বাইরে গেল তখন দেখতে পেল চারিপাশটা কালো মেঘেও অন্ধকার বোঝা যাচ্ছে। ঠান্ডা বাতাসের রহমত নিয়া কিছুটা শীত শীত অনুভব করল। বাইরের পরিবেশটা মেঘলা দেখে দেরি না করে আবার কুঁড়েঘর এর মধ্যে প্রবেশ করে ঘুমানোর চেষ্টা করল। কিছু সময় পরে হঠাৎ উদ্ভট একটা শব্দ শুনতে পারলো। তখন রহমত নিয়ে বুঝতে পারল আসলে সে ঘুমের ঘরে যে শব্দটা শুনেছে সেটা স্বপ্নে শুনে নি বাস্তবেই এমন একটা শব্দ শুনতে পেয়ে তার ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছে। কিছু সময় চুপচাপ থাকার পরে রহমত মিয়ার কানে মুরগির কক কক ডাক কানে আসলো। রহমত নিয়ে ভাবল হয়তো বা শিয়াল তার মুরগির ঘরে হানা দিয়েছে তাই ভেবে তাড়াহুড়ো করে ওঠে তার মুরগির ঘরের দিকে এগিয়ে গেল।
(..........চলবে)
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।


VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit