তিন বছর পর || by @kazi-raihan

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -৪ঠা মাঘ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | শীতকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



Green and Red Floral Hello December Flyer Landscape_20240115_212245_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



শীত আসলেই যদি কোন খেলার নাম নেওয়া হয় তাহলে সর্বপ্রথম আমার মনে হয় ব্যাডমিন্টন খেলার কথাটাই আসবে। ছোট থেকে শুরু করে সব বয়সের ছেলেমেয়েরাই রাতের বেলায় লাইট লাগিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলে। মূলত এই টপিক নিয়ে অনেকদিন আগেই পোস্ট শেয়ার করতে চেয়েছিলাম তবে প্রতিনিয়ত পোষ্টের মাঝে এই পোস্ট শেয়ার করতে একটু দেরি হল। ডিসেম্বরের ছুটিতে সেই সাথে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সবাই ছুটিতে গ্রামে এসেছিল তাইতো ভাই-বোনেরা সবাই একসাথে হয়েছিলাম বেশ কয়েকদিন অনেক আনন্দের সাথে কেটেছে। ছোট ভাই ভাগ্নে সবাই মিলে ব্যাডমিন্টন খেলার উদ্যোগ নিয়েছিল তবে তারা নিয়মিত খেলত কিন্তু আমরা কয়েকজন নিয়মিত ছিলাম না কারণ আমি শুধু এলাকায় থাকি তাছাড়া অন্য সবাই বাইরে থাকে। তাদের অপেক্ষায় ছিলাম তারা আসলেই আমরা সবাই একসাথে প্রতিদিন জমিয়ে আড্ডা দিব সেই সাথে রাতের বেলায় ব্যাডমিন্টন খেলায় মেতে উঠবো। সত্যি বলতে প্রায় তিন বছর হল ব্যাডমিন্টন খেলা হয় না তিন বছর পরে এই ২০২৪ সালে এসে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছি। জানুয়ারির প্রথম থেকেই দিন গুনছিলাম আর মামাতো ভাই আশিককে বারবার জিজ্ঞেস করতাম ভাই তুমি কবে আসবা। যদিও আশিক ভাই আমাদের চেয়ে এক বছরের সিনিয়র তবে তারপরেও আমরা তার সাথে অনেক ফ্রেন্ডলি মিশতে পারি।



20231216_203943.jpg

20231216_224220.jpg

20231216_224253.jpg

20231216_224259.jpg

20231216_224312.jpg

20240106_220637.jpg



আশিক ভাই রাজশাহী প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করে আর তার ফাইনাল সেমিস্টার শেষ হয়েছে। বলতে গেলে সে তার কাজগুলো মিটিয়ে নিয়ে এখন রাজশাহী থেকে ঢাকায় সেটল হবে তাই তার আসতে একটু দেরি হবে সেটাই আমাকে বলেছিল। নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকদিন আগেই আশিক ভাই চলে আসলো আমাদের সবাইকে খুশি করার জন্য। হাজার হলেও সে আমাদের সিনিয়র বড় ভাই আবার বন্ধুও বলা চলে। নির্বাচনের তিনদিন আগে থেকে সবাই একদম বাড়িতে উপস্থিত তাই রাতের বেলায় ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হলো। যারা ছোট ছিল তারা সন্ধ্যার পর থেকেই তো টুকটাক খেলা শুরু করে আর সবকিছু আমাদের জন্য আয়োজন করে রেখেছিল যদিও আমি মাঝেমধ্যে একটু তাদের সাথে খেলতাম। মজার বিষয় নানা বাড়ি আর আমাদের বাড়ির দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার তাই যেতে খুব বেশি সময় লাগে না যখন ইচ্ছে করে তখন চলে যাই আর তারা যখন ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করত আমাকে ডাকতো আর আমি সময় পেলেই চলে যেতাম। যাই হোক প্রথম যেদিন আমরা খেলা শুরু করব সেদিনে আলাদা একটা আগ্রহ ছিল। অনেকদিন পরে একটা হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তবে সবচেয়ে যে মজার বিষয় সেটা প্রথম গেমে জিতে গেলাম। পরের ম্যাচে অবশ্য হেরে গিয়েছিলাম। যেহেতু ছোট রাই আয়োজন করেছিল তাই আমরা একটু খেলে তাদেরকে আবার খেলার সুযোগ করে দিলাম। খেলার ফাঁকে ফাঁকেও কমিউনিটিতে টুকটাক সময় দিচ্ছিলাম ডিসকোডে সবার সাথে কথা বলছিলাম আর গেইটের পাশে বসে তাদের খেলা দেখছিলাম আর ছবি তুলছিলাম।



20231216_224334.jpg

20231216_224404.jpg

20231216_231226.jpg

20231216_231321.jpg

20231216_231245.jpg

20231219_214705.jpg



তাদের খেলা শেষে আমরা যে সিনিয়র চারজন ছিলাম তারা তিন ম্যাচের একটা সিরিজ খেলার সিদ্ধান্ত নিলাম তবে সেখানে আমরা যে কয়জন খেলেছিলাম তার মধ্যে আমার ছোট ভাই রিফাত সবচেয়ে একটিভ প্লেয়ার সে নিয়মিত খেলাধুলা করে বলে তার একটিভিটি ভালো। যাই হোক তারা বলে বসলো সিনিয়র আর জুনিয়র খেলবে তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আর আশিক ভাই একদিকে খেলব আর তারা আমাদের বিপরীতে খেলবে। খেলার শুরুতে আমাদের বিপরীত দল অনেকটাই এগিয়ে ছিল। প্রথম ম্যাচ তো আমরা অলৌকিকভাবে জিতে গিয়েছিলাম। তাদের ছিল ১৮ পয়েন্ট আর অন্যদিকে আমাদের ছিল ১৩ পয়েন্ট। আমরা নিশ্চিত হেরে যাবো এটা ধরে নিয়েছিলাম। আর আশিক ভাই তো আমাকে বলেই ফেলল কিরে রায়হান ছোটদের কাছে তাই হেরে যাবো। যাই হোক হঠাৎ করেই আমাদের খেলার ধরন চেঞ্জ হয়ে গেল। আমরা ১৩ পয়েন্ট থেকে সোজা গেম দিয়ে ম্যাচ জিতে গেলাম যেটা সত্যি কল্পনার বাইরে ছিল। আশিক ভাই তখন বলতেছিল অসম্ভবকে সম্ভব করলাম। তবে আমাদের বিপরীত পক্ষে যারা ছিল তারা দুজনে যেহেতু একটিভ প্লেয়ার তাই তারা পরের ম্যাচটা পুরোপুরি সিরিয়াস ভাবে খেলেছিল আর আমাদেরকে বেশ বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিল। তারা দুজনেই আমাদেরকে বলছিল তৃতীয় ম্যাচটাও আমরা জিতে নিব। তবে খেলার আগে একটি শর্ত দিয়ে দেয়া হয়েছিল যারা সিরিজ হেরে যাবে তারা একটি ফেদার কিনে দিবে। তৃতীয় ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই আশিক ভাই বলছিল রায়হান এবার কিন্তু ভালোভাবে খেলতে হবে তারা কিন্তু আমাদেরকে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে কাকতালীয়ভাবে তৃতীয় ম্যাচটাও ঠিক একইভাবে তারা ১৮ পয়েন্টে আটকে গেল আর আমরা ১৫ পয়েন্ট থেকে একবারে গেম শেষ করে বেরিয়ে এলাম। সবশেষে ২-১ ব্যবধানে আমরা জিতে গেলাম। যেহেতু সেখানে আশিক ভাই সবচেয়ে সিনিয়র তাই আশিক ভাই তাদেরকে বলল তোমাদের ফেদার কিনে দিতে হবে না আমি কালকে একটা ফেদার কেনার টাকা দিব।



20231216_231416.jpg

IMG-20240103-WA0001.jpg



একটানা তিনটা ম্যাচ খেলার পরে আমরা সবাই তো অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর ম্যাচগুলোয় যে কনটেস্ট হয়েছিল তাতে ক্লান্ত হওয়া স্বাভাবিক। প্রায় তিন বছর পরে ব্যাডমিন্টন খেললাম সেটাও টানটান উত্তেজনার মাঝে তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আমরা জিতেছি। অনেকদিন পরে খেলেছি এজন্য ডান হাত প্রচন্ড ব্যথা হয়েছিল আমি তো একদিন ডান হাত ঠিকমত নড়াচড়া করতে পারিনি। ৫ দিন নিয়মিত ব্যাডমিন্টন খেলেছি অনেকটাই উন্নতি হয়েছে তবে দুঃখের বিষয় ছুটির শেষে সবাই আবার যার যার গন্তব্যস্থলে চলে গিয়েছে আর আমাদের সেই মজার মুহূর্তগুলো এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। হয়তো আবার সামনের বছর যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে শীতের ছুটিতে আবার যখন সবাই বাড়িতে আসবে তখন এরকম ব্যাডমিন্টন খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজন করবো সবাই মিলে।

আমার মনে হয় বর্তমান সময়টা সব সময় সুন্দর থাকে যখন সেটা পার হয়ে যায় সেটা স্মরণীয় অতীত হিসেবে রয়ে যায়। যদিও এবার বন্ধুদের সাথে তেমন ব্যাডমিন্টন খেলার কোন আয়োজন হয়নি তবে দীর্ঘ তিন বছর পর ভাই ব্রাদার সবাই মিলে একসাথে ব্যাডমিন্টন খেলার মাধ্যমে দারুন কিছু সময় উপভোগ করেছি যেটা বছরের শুরুতেই স্মরণীয় কিছু মুহূর্তকে লিপিবদ্ধ করে রাখার মত ছিল।



⬇️📥⬇️📥
ডিভাইসSamsung galaxy A52
ফটোগ্রাফার@kazi-raihan
লোকেশন
সময়জানুয়ারি,২০২৪



🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


20231103_120530-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যেতে খুবই ভালোবাসি।অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে ভালবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

তিন বছর পরে বড় ভাই ছোট ভাইদের সবার সাথে একসাথে ব্যাডমিন্টন খেললেন। আসলে দূরে কোথাও চলে গেলে পরিবারের সবাইকে যে কেউ মিস করে। ঠিক তেমনি বন্ধু-বান্ধবদেরকে কোথাও দূরে চলে গেলে যে কেউ মিস করে। আপনি নির্বাচন থাকার কারণে বন্ধ পেয়েছেন তার সাথে সব মিলিয়ে সবার সাথে ইনজয়ও করলেন। এটা দেখে ভালো লাগলো খেলাধুল এখন না করলেও প্রথম ম্যাচ আপনারা জিতে গিয়েছেন অলৌকিকভাবে এটা আমি নিজেও ভেবে পাচ্ছিলাম না কিভাবে। যাই হোক আপনাদের খেলাধুলার আড্ডা দেখে আমার কাছেও ভালো লাগলো। সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করলেন দেখে ভালো লাগলো।

হ্যাঁ আপু সবাই মিলে অনেক ইনজয় করেছি।

আসলেই শীতকালে ব্যাডমিন্টন ছোট বড় সবাই খেলে থাকে। একসময় শীতকালে ব্যাডমিন্টন খেলা মিস দিতাম না একদিনও। তবে লাস্ট ২০২১ সালে ব্যাডমিন্টন খেলেছিলাম সাউথ কোরিয়াতে থাকা অবস্থায়। যাইহোক আপনারা ব্যাডমিন্টন খেলে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন। খেলাধুলা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।