স্বজনপ্রীতি। || by @kazi-raihan

in hive-129948 •  7 months ago 

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ - ২৭শে আষাঢ় | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | বর্ষা-কাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



1000078844.png

Canva দিয়ে তৈরি



সকাল বেলার এই পোস্টের টাইটেল দেখেই অবশ্য বুঝে গিয়েছেন আসলে আজকে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি হ্যাঁ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক এই বিষয়টা বেশ সমালোচিত। প্রতিটা ক্ষেত্রেই বর্তমানে এই স্বজন প্রীতি বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে আপনি চাকরি বলেন আর ন্যায়-অন্যায় বলেন সবখানেই স্বজনপ্রীতি বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যাদের আত্মীয়-স্বজন বড় পোস্টে চাকরি করে বা ক্ষমতাশালী তারাই বেশি সুবিধা পাচ্ছে। শুধু চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রে এই স্বজনপ্রীতের বিষয়টি সীমাবদ্ধ এমন নয় আমার চোখে দেখা পরীক্ষার হলেও এই স্বজনপ্রীতের বিষয়টি লক্ষ্য করা গিয়েছে। দেখুন লেখাপড়ার স্বজনপ্রীতের বিষয়টি ফুটে ওঠে তাহলে সেই দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেটা কিন্তু একটা প্রশ্নের বিষয়।

আমার নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আমি যখন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম তখন আমাদের রুমে এক শিক্ষকের মামাতো বোনের সিট পড়েছিল। যেদিন ওই শিক্ষক আমাদের রুমে ডিউটি করেছিল সেদিন তার মামাতো বোনকে অনেক সহযোগিতা করেছিল। বিশেষ করে বহুনির্বাচনী প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে সবগুলো উত্তর বলে দিয়েছিল। তাহলে দেখুন একজন শিক্ষক হয়েও সে পরীক্ষার হল স্বজন প্রীতি দেখিয়েছে তার মামাতো বোনের প্রশ্নের উত্তর করে দিয়েছে। এমনকি বাকি ছাত্র-ছাত্রীদের বলেছিলেন এই বিষয়ে যেন বাইরের কেউ জানতে না পারে যদি বাইরের কেউ জানতে পারে তাহলে তোমাদের পরীক্ষার হলে এমন করা ডিউটি করব পেছন ঘুরে তাকানো তো দূরের কথা খাতা থেকে চোখ সরাতে পারবে না। আমরা তখন অনেক ছোট ছিলাম এজন্য ভয় পেয়ে ওই বিষয়টি আর শেয়ার করা হয়নি। যাই হোক মেয়েটি হয়তো ভালো রেজাল্ট করবে কিন্তু তার পেছনে একটা কারণ রয়ে গেল পরীক্ষার হলে তার সাথে যে স্বজনপ্রীতি কাজ করেছিল সেটার জন্যই মূলত পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে যেটা ভবিষ্যতে মূল্যহীন।



আপনি একটি অফিসে চাকরি করতে যাবেন সেখানে যদি আপনার কোন আত্মীয় থাকে বা কোন মামা খালু থাকে সেক্ষেত্রে আপনার চাকরি পাওয়াটা অগ্রাধিকার হয়ে দাঁড়াবে। অগ্রাধিকার হয়ে দাঁড়াবে কথাটা বললাম কারণ কিছু টাকার বিনিময় হলেও আপনি আপনার সেই আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে অফিসে চাকরি নিতে পারছেন। আপনার থেকে আরেকটা ছেলের যোগ্যতা বেশি কিন্তু তার কোন আত্মীয় নেই যার কারণে সে চাকরি নিতে পারছে না। এরকম অনেক কারণে যোগ্যরা নিজেদের কে হারিয়ে ফেলছে। অনেক ক্ষেত্রে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যখন চাকরি মিলে না তখন হতাশ হয়ে পড়ে। যেখানেই চাকরির জন্য যায় কেউ না কেউ নিজের স্বজনপ্রীতি দেখাতে চলে আসে যার কারণে দরিদ্র আর মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধনী পরিবারের সন্তানেরাই এই সুবিধা ভোগ করে। অর্থাৎ যারা ধনী পরিবারের সন্তান তাদের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে তারা চাকরিতে টিকে যাচ্ছে।



আবার আমরা যদি গ্রামের কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলি সে ক্ষেত্রে এই স্বজনপ্রীতি ফুটে ওঠে। যেমন ধরুন গ্রামের কিছু বিষয় নিয়ে বিচার বসেছে। গ্রামের ছোট ছোট বিষয়গুলো স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার মিলেই তার সিদ্ধান্ত নেয়। সেক্ষেত্রে যারা বিচারকের কাঠগড়ায় থাকে তারা সবসময় নিজেদের আত্মীয়-স্বজনের পক্ষেই কাজ করতে চায়। যখন স্বজন প্রীতির বিষয়টি বিবেচনা করে বড় বিষয়টি নিয়ে ছোট আকারে জরিমানা করে বিপরীত পক্ষকে নিঃস্ব করে দেওয়া হয় তখনও স্বজনপ্রীতি জিতে যায় এক কথায় স্বজনপ্রীতির কাছে ন্যায়বিচার হার মানে। যদি সেখানে নিরপেক্ষ বিচার হয় সে ক্ষেত্রে যারা বিচারকের কাঠগড়ায় থাকে তাদের আত্মীয়-স্বজন হেরে যায় তাদের সম্মানে আঘাত লাগে। প্রতিনিয়ত এরকম অনেক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যেখানে স্বজন প্রীতির কাছে ন্যায়বিচার হার মেনে যায়।



মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে কারণ একজন মানুষকে বিশ্বাস করে যখন ঠোকে যেতে হয় তখন মানুষের প্রতি আর বিশ্বাস থাকে বলেন?? যেমন বর্তমান প্রজন্মের যুবকেরা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগেই ভেঙে পড়ে আর বলতে থাকে আমার চাকরিটা বোধহয় হবে না কারণ আমার সেখানে কোন আত্মীয়-স্বজন নেই শুধু মনের কষ্টটা দূর করার জন্য ভাইবা দিতে যাচ্ছি। একটা যুবক কতটা অসহায় হলে এভাবে তার নিজের কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলে। প্রতিনিয়ত এরকম পরিস্থিতির সাথে শিকার হচ্ছে যার কারণে দিনের পর দিন তাদের কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলছে। প্রতিনিয়ত চোখের সামনে স্বজন প্রীতির বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে যোগ্যতার বিবেচনা খুব কমই করা হচ্ছে বলে মনে হয়।



🔚সমাপ্তি🔚


এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


20231121_224724-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আরে ভাই এটাই তো বর্তমান সমাজের রোগ। স্বজন প্রীতিই তো এ দেশ খেলো। কি গ্রামে কি শহরে। আজকাল তো চাকুরি করতে গেলেও মামা চাচা না থাকলে অফিস কোন জোড় নেই। আমার কাছে আপনার প্রতিটি কথাই বেশ মূল্যবান মনে হয়েছে। বেশ দারুন সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। তবে এই ব্যাধি আর সারবার হয় কিয়ামতের আগ পর্যন্ত। এটি এখন পৃথিবীতে যায়েজ হয়ে গেছে।

আসলে বর্তমানে সমাজের অবস্থা ঠিক এরকমটাই হয়ে গিয়েছে। সব জায়গায় শুধু স্বজন প্রীতিই দেখা যায়। এরকম ঘটনা বেশিরভাগ মানুষের সাথেই ঘটে থাকে। ডাক্তার, শিক্ষক, উকিল, ব্যবসায়ী সবার ক্ষেত্রেই স্বজন প্রীতি রয়েছে। আমরা বর্তমানে যেখানেই যাব সেখানে এই স্বজনপ্রীতি দেখব। চাকরির জন্য ও কেউ যদি কোথাও যায়, সেখানে তার আত্মীয়-স্বজন থাকলে দেখা যায় সহজে চাকরিটা হয়ে যায়। স্বজন প্রীতি নিয়ে আপনি আজকের যে লেখাগুলো লিখেছেন এগুলো একেবারে সত্যি এবং বাস্তবিক।

বর্তমানে স্বজনপ্রীতিটা সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে। সবকিছুতেই স্বজন প্রীতি রয়েছে। পড়াশোনা চাকরি সবকিছুর ক্ষেত্রেই আমরা স্বজন প্রীতি দেখতে পাই। আপনি আজকে যে লেখাগুলো লিখেছেন এগুলো বাস্তবতার সাথে সম্পূর্ণই মিল। আমার কাছে আপনার প্রত্যেকটা লেখা অনেক ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর করে আপনি লিখেছেন আজকের পুরো পোস্টটা। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সুন্দর করে এটি লিখে শেয়ার করার জন্য।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আত্মীয়-স্বজন ছাড়া যে কোন সেক্টরে উন্নতি করা খুবই কঠিন একটা বিষয়। পড়াশোনা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই স্বজনপ্রীতি দেখা যায়। এই কারণে ‌ অনেক মেধাবীরা নিজেদের জীবনে সেভাবে উন্নতি করতে পারছে না। বাস্তব একটি জিনিস আজকে তুলে ধরেছেন। লেখাগুলো পড়ে ভালো লাগলো।