কক্সবাজার ভ্রমণ (পর্ব-০২) ||২০-০৬-২০২৪|| by @kazi-raihan

in hive-129948 •  4 months ago 

আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।



গত সপ্তাহে কক্সবাজার ভ্রমণ নিয়ে প্রথম পর্ব আবশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। যেহেতু প্রথম পর্বের গল্পটা অনেকেই পড়েছেন তাই সবার কাছেই প্রথম পর্বের পরে এখন দ্বিতীয় পর্ব দেখার বা দ্বিতীয় পর্বের গল্পটা পড়ার প্রতি একটা আগ্রহ জন্মেছে তাই আজকে আবার আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রথম পর্বে ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পরে কক্সবাজার পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বিস্তারিত শেয়ার করেছিলাম আর আজকে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে আমাদের হোটেল পৌঁছানো এবং কক্সবাজার সি বিচে ঘোরাঘুরি পর্যন্ত বিস্তারিত শেয়ার করব। কক্সবাজার পৌঁছানোর আগে থেকেই আকাশে প্রচন্ড মেঘ দেখতে পাচ্ছিলাম কারণ সেই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের একটা পূর্বাভাস ছিল প্রচন্ড মেঘের কারণে আবহাওয়াটা আরো বেশি সুন্দর লাগছিল আমরা সেই সুন্দর আবহাওয়াটা পুরোপুরি উপভোগ করার চেষ্টা করছিলাম। আসলে এমন মেঘলা আবহাওয়া সব সময় তো দেখা যায় না তাই ফোন ক্যামেরার মাধ্যমে বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম যার মধ্যে কক্সবাজার রেল স্টেশনে নেমে যে ছবিগুলো তুলেছিলাম সেগুলো সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল।



1000075255.png

Canva দিয়ে তৈরি



কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে নেমে সবাই দ্রুত সেখান থেকে হোটেলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। তবে আমরা চারজন সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু সময় আকাশের মেঘলা আবহাওয়ার সৌন্দর্যটা উপভোগ করার চেষ্টা করছিলাম। অবশ্য আমরা চারজন একসাথে অনেকগুলো ছবিও উঠেছিলাম যদিও প্রাইভেসির কারণে সেই ছবিগুলো শেয়ার করিনি তবে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের পাশ দিয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের যে ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে সেই সৌন্দর্যের পাশাপাশি উপরের কালো মেঘের সৌন্দর্যটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা যখন কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করব তার আগ মুহূর্তে আব্বু ফোন দিয়ে বিস্তারিত সবকিছু জিজ্ঞেস করলো আমি যখন এমন মেঘলা আকাশের বিবরণ দিচ্ছিলাম তখন আব্বু বলছিল যেন সাবধানে থাকি। তবে মজার বিষয় ছিল কক্সবাজার এরকম মেঘলা আকাশ থাকা সত্ত্বেও আমাদের এলাকায় নাকি ভরপুর রোদ আর প্রচন্ড গরম ছিল যদিও কক্সবাজার তখন ঠান্ডা বাতাস বইছিল হয়তোবা আশপাশ কোন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছিল আর সেই মেঘ আকাশে ভাসছিল।

1000075411.jpg

1000075412.jpg

1000075414.jpg

1000075415.jpg

1000075416.jpg

1000075410.jpg

কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন।

what3words address.
https://w3w.co/followings.bathers.twirl

1000075422.jpg

1000075421.jpg

1000075420.jpg

1000075419.jpg

1000075418.jpg

1000075417.jpg

1000075423.jpg

সুগন্ধা সি বিচ কক্সবাজার।

what3words address.
https://w3w.co/spooned.smug.warblers

কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে আমরা সোজা হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম যদিও আগে থেকেই হোটেল সিলেক্ট করে রাখা হয়েছিল এবং রুম বুকিং করা হয়েছিল। তবে আসার সময় কক্সবাজারের ডলফিন মোড় যেখানে দুইটা হাঙ্গর মাছের দৃশ্য রাখা হয়েছে আর নাম দেওয়া হয়েছে ডলফিন মোড় সেটা নিয়ে আমরা বেশ কিছু সময় গবেষণা করলাম আর নিজেরাই বলছিলাম এই মোড়ের নাম পরিবর্তন করা উচিত অথবা এখানে ডলফিন মাছ রাখা উচিত হা হা হা। তারপর আমরা আমাদের হোটেল রুমে চলে গেলাম, উপর তলায় ছিল সুমন ভাই আর হাফিজ ভাই আর নিচের তলায় আমি আর অঙ্কন ছিলাম। প্রথমে রুমে ঢুকেই টপ বারান্দায় গিয়ে দেখতে পেলাম সমুদ্রের সুন্দর ভিউ পাওয়া যাচ্ছে একদম সেরা একটা অনুভূতি। মনে হচ্ছিল এবারের হোটেল ভাড়ার টাকা বারান্দায় বসে সমুদ্র দেখে উসুল করা যাবে। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নিলাম কারণ সকালের নাস্তা করা হয়নি তাই নিচে গিয়ে প্রথমে নাস্তা করতে হবে। সমুদ্রের পাশের একটি হোটেল থেকে আমরা সবাই নাস্তা করলাম আর খুব বেশি দেরি না করে সমুদ্রে নেমে পড়লাম। প্রচণ্ড রোদ ছিল সেই সাথে রোদের খুব তাপ ছিল। সকালবেলা আকাশটা যে পরিসরে মেঘলা ছিল তারপরে এরকম রোদের দেখা পাব সেটা কখনোই আশা করিনি। সময়টা উপভোগ করার চেষ্টা করেছি সমুদ্রের ঢেউয়ের মধ্যে সোজা নেমে পড়লাম।

1000075424.jpg

1000075425.jpg

1000075426.jpg

1000075429.jpg

1000075428.jpg

1000075427.jpg

1000075430.jpg

1000075438.jpg

1000075437.jpg

1000075439.jpg

1000075431.jpg

লাবনী পয়েন্ট।

what3words address.
https://w3w.co/clarifies.attends.blanking

আমরা কিছু সময় সমুদ্রের পাশ দিয়ে হাটাহাটি করার পরে চিন্তা করলাম একটা বেঞ্চ নিয়ে সময় বসতে হবে যেহেতু সমুদ্র পাড়ে প্রচন্ড বাতাস আর ঢেউ ছিল। যদি ছবিগুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আসলে ঢেউগুলো কতটা মারাত্মক ছিল। জোয়ারের পানি এতটা উপরে উঠে এসেছিল যে বেঞ্চগুলো একদম উপরের অংশে নিয়ে যেতে হয়েছিল। আমরা অবশ্য এই সমস্ত দৃশ্য দেখে নিজেদের মধ্যে আলাপ করছিলাম এবার কক্সবাজার এসে ভিন্ন ধরনের একটা সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবো প্রতিবার স্বাভাবিক সৌন্দর্যটাই দেখতে পাই তবে এবারে ঘূর্ণিঝড়ের আগ মুহূর্তে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যটা কিরকম দেখায় সেটা উপভোগ করতে পারব। আমাদের মধ্যে থেকে একজন আবার বলছিল যে সুন্দর ঝলমলে রোদ আবার ঝড়ের চিন্তা করে কি হবে আবহাওয়া পুরোটা সময় একই থাকবে। অনেক সময় সেখানে কাটানোর পরে আমরা হোটেল রুমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম কেননা রাত ভর জার্নি করে এসেছি আবার সকাল ভর এদিক-সেদিক ঘুরে অনেকটাই ক্লান্ত তাই আপাতত এক ঘন্টা রেস্ট নেওয়া দরকার। হোটেলে গিয়ে গোসল করে এক ঘন্টা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।

1000075436.jpg

1000075434.jpg

1000075433.jpg

1000075432.jpg

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

what3words address.
https://w3w.co/swatted.engraving.shall

দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা আবার সমুদ্র পাড়ে রওনা হলাম। প্রচন্ড গরম ছিল তাই সমুদ্রের পানিতে গোসল করার ইচ্ছা জাগচ্ছিল তবে সেখানে আসার পরে রোদের তাপ এতটাই অনুভব করছিলাম যে মনে হচ্ছিল গা পুড়ে যাবে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম এখন আর গোসল করব না তবে আমার সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হলেও এই কুকুরগুলো যেন কোন সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করল না তারা সমুদ্রের পানিতে গোসল শুরু করে দিল। প্রচন্ড ঢেউ থাকার কারণে পানি উপরে চলে আসছিল আর সেই পানিতেই কুকুরগুলো গোসল করছিল। সবচেয়ে মজার যে বিষয়টি ঘটেছিল এই কুকুরগুলোর ছবি তোলার পরে আমরা রুমে গিয়ে দেখেছিলাম কুকুরগুলোকে নিউজে দেখানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগ মুহূর্তে যারা নিউজ দেখেছিলেন তারা অবশ্য এই কুকুরগুলোকে যমুনা টিভির নিউজে খুঁজে পেতে পারেন। যাইহোক আপনারা এখন নিউজে কুকুরগুলোকে খুঁজতে থাকুন তারপরে বাকিটা তৃতীয় পর্বে শেয়ার করব হা হা হা।



বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏


আমার পরিচয়


20231103_120723-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

ভ্রমণ বলতে আমি খুব পছন্দ করি কিন্তু একটাই সমস্যা ভ্রমণ করতে গেলেই বমি বেড়ে যায়। এজন্য সুযোগ পেলে ভালো ভালো জায়গায় ঘুরতে যেতে পারি না। আজকে আপনি আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর একটি ভ্রমন পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার এই পোস্ট দেখে অনেক ভালো লাগলো আমার।

আপু তাহলে নিয়মিত ট্রেন ভ্রমণ করবেন দেখবেন পুরোপুরি ভ্রমণের মজাটা উপভোগ করতে পারবেন।

আমি আপনার কক্সবাজার ভ্রমণের প্রথম পর্ব পড়েছিলাম। আপনারা ঢাকা থেকে ট্রেনে করে কক্সবাজার গিয়েছেন। কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনটা অনেক সুন্দর। সমুদ্র সৈকতে কুকুরের গোসল দেখে খুবই হাঁসি পেয়েছে। আমি টিভিতে এমনিতে নিউজ দেখি না। যদি নিউজ দেখতাম তাহলে হয়তো কুকুর গুলোর নিউজ পড়তাম। যাই হোক কক্সবাজার ভ্রমণ দ্বিতীয় পর্ব পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।

হ্যাঁ আসলেই কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনটা দেখতে খুবই সুন্দর।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণের কিছু সুন্দর মুহূর্ত আপনি শেয়ার করেছেন।এখানে গেলে মানুষের মন এমনিতেই শান্ত হয়ে যাওয়ার কথা।কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন টা বেশ ভালো লাগলো।ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

আপনার সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।