আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।
দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবান নিয়ে আপনাদের সাথে পোস্ট শেয়ার করে আসছি প্রতি সপ্তাহে একটি করে পোস্ট বান্দরবানের উপরে শেয়ার করি। মূলত গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা সবাই মিলে বান্দরবান ঘুরতে গিয়েছিলাম। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন এত দেরিতে কেন বান্দরবান নিয়ে পোস্ট করছি। আসলে পর্যায়ক্রমে অনেকগুলো ট্যুর দেওয়া হয়েছে তাই ধারাবাহিকভাবে সেগুলো শেয়ার করার পরে এখন বান্দরবন নিয়ে পোস্ট শেয়ার করছি তাই অনেক বেশি দেরি হয়ে গেল। মজার বিষয় এ বছরে আবার বান্দরবন যাওয়ার প্ল্যানিং হচ্ছে তাই একটু তাড়াতাড়ি করেই বান্দরবান নিয়ে পোস্টগুলো শেয়ার করছি যেন বান্দরবান ভ্রমণের পর্ব শেষ করে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে আবার রওনা হতে পারি। যেহেতু প্রতি সপ্তাহে একটি করে বান্দরবান ভ্রমণের পর্ব শেয়ার করছি তাই সে ধারাবাহিকতায় আজকে বান্দরবন ভ্রমণের ১১ তম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
গত সপ্তাহের বান্দরবান ভ্রমণের দশম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। সেখানে বান্দরবানের থানচি থানার সাঙ্গু নদীর কিছু চিত্র তুলে ধরেছিলাম। আমাদের টার্গেট ছিল থানচি থানা থেকে আমরা নৌকা নিয়ে সোজা সাঙ্গু নদী হয়ে রেমাক্রি যাবো। দশম পর্বে সাঙ্গু নদী হয়ে রেমাক্রি যাওয়ার সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় যে পাথর অর্থাৎ যেটা আর রাজা পাথর নামে পরিচিত সেটার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল। মূলত ভূমিকম্প বা যেকোনো কারণবশত হোক না কেন পাহাড়ের উপর অংশ থেকে পাথরগুলো নিচে এসে পড়েছে আর সেটা অনেক বড় সাইজের একটা পাথর যেটা রাজা পাথর নামে পরিচিত। স্থানীয় আদিবাসীরা এই পাথরকে দেবতা হিসেবে বিশ্বাস করে এবং রাজা পাথরকে পূজা করে। যাইহোক এগুলো দশম পরবে তো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আমরা যখন রেমাক্রি পৌছালাম তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। সেখানে পৌঁছানোর পর আমাদের সাথে যিনি ছিলেন অর্থাৎ আমাদের গাইড সেখানকার একটি হোটেলে আমাদেরকে নিয়ে গেলেন। মূলত হোটেলটা সাঙ্গু নদীর তীরে অবস্থিত।
রেমাক্রি, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
রেমাক্রি, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
সাঙ্গু নদীর পাড়ে ছোট একটি দোতলা হোটেলে আমরা রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে সেখানে বুকিং করলাম। যেহেতু তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল তাই পুরো বিষয়টা তাদের সাথে আগে থেকেই মিটিয়ে নিয়েছিলাম কারণ রাতের বেলায় খাওয়া দাওয়া নিয়ে সবার মাথায় একটা বাড়তি টেনশন ছিল। নতুন জায়গায় এসেছি এখানে তেমন সভ্যতা নেই তবে জায়গাটা এক কথায় অসাধারণ সুন্দর। খাবারের কোয়ালিটি কেমন সেটা সম্পর্কে কারো কোন আইডিয়া নেই তাই রাতের বেলায় যে হোটেলে উঠেছিলাম তাদের কাছেই খাবারের অর্ডার করলাম। মূলত তারা আমাদের জন্যই রান্না করবে। আমরা যেহেতু সন্ধ্যার সময় হোটেলে উঠেছি তাই খুব বেশি খাবারের আইটেম তৈরি করা একটু কষ্টকর হয়ে যাবে তাই তিনি আমাদেরকে ডিম রান্নার কথা বললেন আমরা তাকে বললাম ডিম রান্নার সঙ্গে যেন একটু ডাউল আর ঝাল বেশি দিয়ে আলু ভর্তা করে দেওয়া হয়। বান্দরবান শহরের খাবারগুলো খুব একটা খেতে পারিনি তাই তাকে এসে বললাম রেসিপিতে যেন একটু মসলা বেশি দিয়ে রান্না করা হয় যেন ভালোমতো খেতে পারি। সব কথাবার্তা শেষ করে আমরা ফায়ার ক্যাম্পিংয়ের জন্য আবার নদীর পারে গেলাম মূলত নদীর পুরোটাই পাথরের ভরপুর তাই আপনি চাইলেই নদীর আশপাশ থেকে কিছু কাঠ যোগাড় করে সেখানে ফায়ার ক্যাম্পিং করতে পারেন।
বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
সেখান থেকে ফায়ার ক্যাম্পিং শেষ করে রাতে ভরপুর খাওয়া দাওয়া হল। খাওয়া-দাওয়ার সময় মজার একটি ঘটনা ঘটেছিল। তারা রাতের বেলা আমাদের জন্য ডিম রান্না করেছিল সেই ডিম রান্না রেসিপি টা দারুন টেস্ট হয়েছিল। সবাই ডিম রান্না আর আলু ভর্তার সাথে এত পরিমাণে খাওয়া-দাওয়া করেছিল যে ভাত প্রায় শেষ করে ফেলেছিল। মজার বিষয় হচ্ছে যিনি আমাদেরকে বারবার ভাত দিয়েছিলেন শেষ পর্যায়ে আমরা যখন পানি চাচ্ছিলাম তখন তিনি আবারও ভাবছিলেন আমরা হয়তো ভাত খাচ্ছি তখন ভাতের গামলা আমাদের দিকে এগিয়ে দিচ্ছিল হা হা হা। আমরা তখন বললাম ভাই ভাত আর নিব না আমাদেরকে পানি দেন। রাতের খাওয়া-দাওয়া বেশ ভালোমতোই হয়েছিল। পরবর্তীতে যখন সকালবেলা আমরা আবার নাফাখুম এর উদ্দেশ্যে রওনা হব তখন রেমাক্রি জলপ্রপাতের সামনে থেকে আমরা নাস্তা করলাম। সেখানে অনেকগুলো হোটেল আছে সেই হোটেল থেকে আমরা পরোটা খেয়ে বেরিয়ে ছিলাম। তবে হ্যাঁ সকালবেলা কুয়াশা ঘেরা পাহাড়ি একটা সৌন্দর্য আমরাও উপভোগ করেছিলাম যেটা সবাইকে আকৃষ্ট করেছিল এমন সৌন্দর্য আগে কখনো দেখা হয়নি যদি উপরের ছবিগুলো দেখেন তাহলে সেই সৌন্দর্যের কিছুটা অংশ দেখতে পারবেন।
নাফাখুমের পথে।
what3words address.
https://w3w.co/swatted.engraving.shall
রেমাক্রি থেকে আমরা সকালের নাস্তা শেষ করে রেমাক্রি জলপ্রপাত পার হয়ে নাফাখমের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আমরা সাঙ্গু নদী ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা যে পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম তার বাম পাশে ছিল বড় বড় পাহাড় আর ডান পাশে ছিল নদী। ধীরে ধীরে সবাই ট্র্যাকিং করে সামনের দিকে যাচ্ছিলাম। আমাদের যে গাইড ছিল তিনি আমাদেরকে জানালেন আমাদেরকে একটানা ২ ঘন্টা ট্র্যাকিং করতে হবে তাহলে আমরা নাফাখুম পৌঁছাতে পারবো। মাঝে মাঝে আমাদের সামনে আসছিল জলপ্রপাত আবার মাঝে মাঝে ছোট ছোট ঝর্ণা পেরিয়ে আমরা ধীরে ধীরে নাফাখুমের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। আজকে এই পর্যন্তই শেয়ার করলাম বাকিটা নাফাখুম জলপ্রপাত নিয়ে পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বান্দরবান ভীষণ সুন্দর একটি জায়গা আর আপনি সেই জায়গার ভ্রমণ বৃত্তান্ত দারুণ সুন্দর করে পোস্ট করছেন ভাই। পড়তে বেশ ভালো লাগছে। ছবিগুলিও ভীষণ সুন্দর করে গ্রহণ করেছেন। এমন সুন্দর পোস্ট শেয়ার করবার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ক্ষুধা লাগলে ভাত ভর্তা আর ডাল এগুলো দিয়েও অনেক খাবার খেয়ে ফেলা যায় হা হা হা। তবে ডিম রান্না আর আপনাদের খাওয়া করার বর্ণনা পড়ে মনে হল ডিমের তরকারি হেভি স্বাদ হয়েছিল। বান্দরবান ভ্রমণের ১১ তম পর্বটি ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে। ফটোগ্রাফি গুলি চমৎকার। পানিতে হাঁস আর মুরগি দুটির ফটোগ্রাফি দেখে রীতিমত মুগ্ধ আমি। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর একটি স্থান ভ্রমণ করেছেন এবং সেই ভ্রমণ করা স্থানের চিত্রগুলো ক্যামেরা বন্দী করে আমাদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। ভালো লাগলো ভ্রমণ করতে যাওয়ার মুহূর্তের থাকা খাওয়া বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে। কোথাও ভ্রমণ করতে গেলে থাকার বিষয় আর খাওয়ার বিষয়টা নিয়ে অনেক টেনশন হয়। যদি এই বিষয়গুলো সুন্দরভাবে সমাধান করা যায় তাহলে বেশ শান্তিতেই ঘোরাঘুরি করা সম্ভব হয়। অনেক ভালো লাগলো আপনাদের বান্দরবান ভ্রমণের পোস্ট দেখে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকে আপনি আবারও বান্দরবন ভ্রমণের আরো একটি পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে আরো বেশ কিছু দেখা ও জানার সুযোগ পেলাম। অনেক সুন্দর স্থান। আমি বান্দরবানের অনেক ভিডিও দেখেছি অনলাইনে। বেশ ভালো লাগে এই সমস্ত জায়গা গুলো দেখতে। তবে এমন সুন্দর জায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে সত্যি থাকার জন্য ভালো জায়গা প্রয়োজন হয়। আর নিরাপদ হোটেল গুলো খুঁজতে হয়। এছাড়াও খাওয়ার বিষয়টা রয়েছে। যাই হোক অনেক কিছু জানলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit