আসসালামু আলাইকুম/আদাব আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধু গন আমি @kibreay001 বাংলাদেশ থেকে বলছি আজ (২৪-১০-২০২৪)
আসসালামু আলাইকুম আমার স্টিম বন্ধু গন আশা করি আপনারা অনেক ভালো আছেন । আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @kibreay001 আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি ক্রিটিভ রাইটিং (গল্প) // পরিশ্রমী জেলের মাছ ধরার গল্প। আজকে সকাল বেলা থেকেই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছি। যেহেতু গতকালকে আমাদের বাড়ির পাশে একটা মানুষ মারা গিয়েছিল এবং কালকে রাতে আমাদের পুকুরে মাছ ধরা হয়েছিল। আসলে যেদিন রাতে পুকুরে মাছ ধরে সত্যিই সেদিন রাতে কোন ঘুম নেই চোখে। রাতে মাছ ধরা শেষ করে বাড়িতে এসেছিলাম ভোর চারটার দিকে। বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ঘুম থেকে উঠে গোসল শেষ করে বাড়ির কাজের জন্য বাইরে গিয়েছিলাম। বাইরে থেকে এসে দুপুরে আবারো পুকুরে মাছ ধরার জন্য গিয়েছিলাম আসলে সেখানে আজকে দুপুরে অনেক মাছ বিক্রয় করা হয়েছে গ্রামের মানুষদের কাছে। মাছগুলো বিক্রি শেষে বাড়িতে এসে গোসল শেষ করে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ভাবলাম আজকে হাতে সময় খুবই কম তাই আপনাদের মাঝে খুব দ্রুত একটা পোস্ট শেয়ার করে ফেলি। তবে চলুন আজকের পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করা যাক..........
আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি আমাদের বাড়ির পাশের এক পরিশ্রমী জেলের গল্প। আসলে মানুষ এতটা কষ্ট করে মাছ ধরে জীবিকা নির্ভর করে নিজাম জেলেকে না দেখলে হয়তো গ্রাম অঞ্চলের মানুষ কখনোই বুঝতে পারবে না। আমাদের বাড়ির পাশে একজন বয়স্ক মানুষ রয়েছে নাম হচ্ছে নিজাম জেলে। তিনি অনেকদিন ধরেই নদীতে মাছ ধরে এবং সেই মাছ বাজারে বিক্রয় করে পরিবারকে চালাতে সক্ষম হয়। তার পরিবারে অনেক বড় বড় দুইটা ছেলে আছে কিন্তু ছেলেদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে বাবাকে আর কেউ দেখে না সত্যি এটা প্রত্যেকটা বাবার জন্য বেশ দুর্ভাগ্য। ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের অনেক যত্ন সহকারে মানুষ করেছে কিন্তু বড় হয়েছে ছেলেরা বাবাদের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে পারে না এটা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক আমি মনে করি। এভাবেই প্রায় ২০ বছর আগে থেকেই তিনি নদীতে মাছ ধরে এবং জীবিকা নির্ভর করছে গ্রামের অনেক মানুষের কাছ থেকেই আমি জানতে পেরেছি তবে আমি বড় হয়েও দেখেছি এখন পর্যন্ত তিনি নদীতে মাছ ধরে সত্যি এটা তার জন্য বেশ ভালো এবং গর্বের বিষয় আমি মনে করি চুরি ডাকাতি করে না খেলে আমার কাছে সে একজন সম্মানীয় ব্যক্তি। সকালবেলায় মাছ ধরতে যেত দুপুরের খাবার বাড়ি থেকে সাথে করে নিয়ে যেত মাছগুলো ধরে সন্ধ্যার আগ দিয়ে যখন বাসায় ফিরত তখন গ্রামের মানুষের কাছে সেই মাছ বিক্রয় করতো অনেক দিন আমি দেখেছি তাকে এবং অনেক মানুষের কাছ থেকে শুনেছি।
নিজাম পরিশ্রমী জেলে কিন্তু তার বয়স আনুমানিক ৬০ বছরের উপরে হবে আমার কাছে মনে হয় এত বছর বয়সেও তিনি যে পরিশ্রম করে যাচ্ছে সত্যি এটা দেখে আমি মাঝে মাঝে একটু অবাক হয়ে যাই। কিন্তু কিছুদিন আগে তিনি মাছ ধরতে যাচ্ছিল আমাদের গ্রামের একটি ছোট্ট ছেলের সাথে আসলে সেই ছেলেটাকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছিল মাছ ধরার জন্য। সেই ছেলেটার বাইকে উঠতেই নিজাম জেলের পা বাইকের চাকার মধ্যে চলে যায় কিন্তু সেই ছেলেটা তখন খুব বেশি খেয়াল না করে বাইক চালানোর জন্য প্রস্তুতি নেয় বাইক চালানোর সাথে সাথেই জেলে নিজামের পা ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সত্যি দেখে আমি বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। আসলে তার ছেলেরা তাকে সেই দিন সেখানে রেখে দিয়েছিল সেখান থেকে ডক্টরের চেম্বার নিয়ে যাওয়ার মত কোন ব্যবস্থা করেছিল না। পরে আমাদের গ্রামের মানুষ সন্ধ্যার দিকে সেখান থেকে তাকে আমাদের এলাকার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে থাকে। তারপরে সেখানে আমাদের গ্রামের বেশ কিছু ভালো মানুষ গিয়েছিল তারপরেই তার সুন্দরভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল তারা। সত্যি এই বিষয়টা আমার বেশ মন কেড়েছে। আসলে আমাদের গ্রামে যেকোন অসহায় দরিদ্র মানুষের কোন কিছু হলে গ্রামের সকল মানুষ একসাথে মিলে চেষ্টা করে সহযোগিতা করার জন্য এটা সত্যি আমার এবং আমাদের গ্রামের জন্য বেশ গর্বের বিষয়।
সেই দিনের মতো নিজাম ছেলেকে হাসপাতালে রেখে আমাদের গ্রামের মানুষ বাড়িতে চলে আসে এবং সেখানে নিজাম জেলে এবং নিজাম জেলের স্ত্রী দুজন হাসপাতালে থাকে। তার দুইটা ছেলে ছিল এবং তার নাতি-বিটার বউ সকলেই বাড়িতে আছে কিন্তু কেউ তাকে দেখার জন্য সেখানে যায় না। সত্যি এই বিষয়গুলো আমার কাছে বেশ খারাপ লাগে। গ্রামের মানুষজন সন্ধ্যা বেলায় বাড়িতে এসে গ্রামের সকল মানুষকে এক জায়গায় ডেকে একটি ছোট্ট বৈঠক করেছিল কিভাবে তাকে সহযোগিতা করে আবারও সুস্থ শরীরে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা যায়। সেই বৈঠকে আমরা তার ছেলেদের ঠেকেছিলাম কিন্তু তার ছেলেরা আমাদের সাথে সেই বৈঠকে আসেনি এবং কোন যোগাযোগ করেনি। সত্যি এই বিষয়টা গ্রামের সকল মানুষের কাছে বেশ খারাপ লেগেছে। পরে আমরা গ্রামের মানুষ সকলে তাকে সহযোগিতা করে চিকিৎসা নেওয়ার মতো ব্যবস্থা দিয়েই সুস্থ শরীরে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছি। আশা করি আজকের মত পোস্ট লিখা এখানে শেষ করছি পরবর্তী পর্ব আপনাদের মাঝে আবারও শেয়ার করব।
আমি মোঃ কিবরিয়া হোসেন। আমি বাংলাদেশ খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানা কামারখালী গ্রামে বসবাস করি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি বর্তমানে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলতে এবং লিখতে অনেক ভালোবাসি। সব থেকে আমি বেশি পছন্দ করি ফটোগ্রাফি ক্যামেরাবন্দি করতে। আমি বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে থাকি। কয়েকটি শখের মধ্যে আমার প্রধান শখ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করা এবং ফটোগ্রাফি ধারণ করা। আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু করেছি ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের ০১ তারিখে । স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো অনেক দূরে এগিয়ে যেতে চাই এটাই আমার লক্ষ্য। সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার নিজের পরিচয় শেয়ার করলাম আপনাদের মাঝে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://x.com/kibreay001/status/1849400965268729888
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া এমন সন্তান পৃথিবীতে থাকার চেয়ে না থাকা অনেক ভালো। যাইহোক ভাইয়া আপনার সকলে নিমাজ জেলেকে সুস্থ করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে বাস্তব একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন আপু এমন সন্তান পৃথিবীতে থাকার চেয়েও না থাকায় বেশি ভালো আমিও মনে করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit