নমস্কার বন্ধুরা,
২০১১ সালে বিশ্বকাপের পর ভারত ফের ফাইনালে। টানা ১০ ম্যাচ জিতে অধিনায়ক রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারত বিশ্বকাপ ২০২৩ পর্বে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে জায়গা করে নিলো। আজ প্রথম সেমিফাইনালের স্কোর বোর্ড একচেটিয়া দেখালেও ম্যাচের একটা সময় দুই যুযুধানের মধ্যে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চলেছে। কিউয়ি ব্যাটাররা চেষ্টা চালিয়ে গেলেও দুর্দান্ত ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে তাদেরকে শেষপর্যন্ত পরাস্ত হতেই হলো।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। অধিনায়কের সাথে ওপেন করতে নামে শুভমন গিল। আজকের ভারতের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুটা ভারতের অন্য ম্যাচগুলোর মতোই রোহিত শর্মা বিধ্বংসী ব্যাটে শুরু হয়। মারকুটে মেজাজে রান করতে গিয়ে ভারতের প্রথম উইকেট হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায় ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা নিজেই। তবে শুরুর ঝড়ো ব্যাটিংয়ের দৌলতে ভারত ১০ ওভারে ৮৪ রান করে ফেলে। রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর নামে। গিলের সাথে পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে সহজেই ২০ ওভারে ১৫০ রানের পৌঁছে দেয়। ২২ তম ওভারে শুভমন গিল আহত হয়ে মাঠ থেকে উঠে গেলে ব্যাট করতে নামে বিগত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস আইয়ার।
শ্রেয়াস আইয়ার ক্রিজে নামার পর থেকেই মারকুটে মেজাজে ছিলো। একদিকে বিরাট কোহলি উইকেট টিকিয়ে রেখে অন্যদিকে শ্রেয়াস আইয়ার প্রথম থেকেই কিউয়ি বোলারদের উপর চড়াও হয়। যার দরুন ৩০ ওভারেই ভারত ২১৪ রান করে ফেলে।
দুই ব্যাটার পরবর্তী ১০ ওভারে আরো ৭৩ রান জুড়লে ৪০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর দাড়ায় ১ উইকেটে ২৮৭ রান। ৪২ তম ওভারে বিরাট কোহলি দ্রুত এক রান করে ৫০ সেঞ্চুরি নজির স্থাপন করে যা পূর্বে থাকা ভারত রত্ন শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ টা সেঞ্চুরি রেকর্ড ভেঙে দেয়।
সেঞ্চুরি করার পরেই বিরাট কোহলি মারকুটে খেলা শুরু করে এবং ১১৭ রানের মাথাতে সাউথির বলে উইকেট হারায়। ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নামে কে এল রাহুল এবং ক্রিজে নামা মাত্র কিউয়ি বোলারদের উপর চড়াও হয় এবং দুজনের ব্যাটের উপরে ভারত খুব তাড়াতাড়ি ৩৫০ রানের গুন্ডি পেরিয়ে যায়। তারপর শ্রেয়াস আইয়ার বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূরণ করে। কে এল রাহুলের ২০ বলে ৩৯ রানের সাহায্যে ভারত ৩৯৭ রানে ব্যাটিং ইনিংস শেষ করে।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠ ভর্তি দর্শকের সামনে ৩৯৮ রানে পাহাড় প্রমাণ লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নামে কিউয়ি ব্যাটাররা। যদিও অন্য ম্যাচে ব্যাটারদের চেপে ধরা ভারতীয় বোলাররা প্রথম থেকেই খেই খুঁজে পাচ্ছিলো না। ষষ্ঠ ওভারে কনওয়েকে মহম্মদ সামি প্যাভিলিয়নে পাঠালে কিউয়ি ব্যাটাররা কিছুটা চাপে পড়ে এবং কিছু বিরতিতে রচীন রবীন্দ্রকেও সামির বলে আউট হয়ে যায়।
তারপর নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ড্যারেন মিচেলের সাথে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং হাল ধরে। ১০ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৪৬-২। পরের দশ ওভারে কেন উইলিয়ামসন ড্যারেল মিচেলের জুটি আরো ৮৪ রান জুড়লে কিউয়িরা ম্যাচের হাওয়া নিজেদের দিকে ঘোরাতে শুরু করে। মিচেলের মারকুটে ব্যাটিংয়ের দৌলতে নিউজিল্যান্ড ৩০ ওভার ১৯৯-২ রানে পৌঁছে যায়। ম্যাচের হাওয়া তখন অনেকটাই কিউয়িদের দিকে ঘুরে গিয়েছে। ৩২ তম ওভারে মহম্মদ সামি এক ওভারে কেন উইলিয়ামসন ও টম লেথামের উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ ফের ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। পরপর দুই উইকেট হারানোর ফলে পরের ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ড মাত্র ৬৬ রান স্কোরবোর্ডে জুড়তে সক্ষম হয়, স্কোর ২৬৬-৪। ক্রিজে তখন খুঁটির মতো ড্যারেল মিচেল দাঁড়িয়ে, শেষ দশ ওভারে কিউয়িদের প্রয়োজন ১৩২ রান। ৪২ ওভারে কিউয়িদের জুটি ভেঙ্গে দেয় বুমরার বল। কিছুক্ষণের মধ্যে কুলদীপের দারুন স্পেলের চাপে চেথাম জাদেজার হাতে ক্যাচ তুলে দেয়।
তারপর ভারত সেমিফাইনালের ম্যাচ নিজের কুক্ষিগত করে ফেলে। ৪৬ ওভারে সামির বলে ড্যারেল মিচেল আউট হতেই কিউয়িদের ফাইনালে যাওয়ার শেষ স্বপ্ন টুকুও ভেঙে যায়। নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং তারপর তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ে। ৫০ ওভার শেষ হওয়ার ৭ বল আগেই নিউজিল্যান্ড ৩২৭ রানে গুটিয়ে যায়।
গতকাল ভারত এবং নিউজিল্যান্ডের খেলা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বেশ ভালোভাবে দেখেছিলাম। প্রথমে রোহিত শর্মা দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিল আসলে বেশ ভালো লেগেছিল খেলাটি দেখতে আমার কাছে। বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা হয়ে গেল। মোহাম্মদ সামি সেমিফাইনাল ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছিল। প্রথম পরপর চারটা উইকেট শিকার করেছিল সত্যি বেশ উপভোগ করেছিলাম।। অবশেষে ভারত জয় লাভ করে সেমিফাইনালের দিকে পদার্পণ করল। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
৩০ ওভার পর্যন্ত যথেষ্ট চাপে পড়ে যাওয়া গিয়েছিল। শেষমেষ ম্যাচ বেরিয়ে এলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি কিন্তু জানতাম দাদা ভারত ফাইনাল খেলবে। কারন ভারতের খেলার ধরনই সে কথা আগে জানান দিয়েছে। তবে বিরাট কোহেলির ১১৭ রানের জন্য তাকে শুভ কামনা জানতে হয়। বেশ সুন্দর করে পুরো খেলাটি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রোহিত-গিলে বিধ্বংসী ব্যাটিং, কোহলির সেঞ্চুরি, আইয়ারের সেঞ্চুরি সাথে বুমরাহ-সামি-কুলদীপের বোলিং। চরম উপভোগ করলাম
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দাদা শুরু থেকেই ভারত দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। একসময় ভেবেছিলাম ৪০০+ স্কোর হবে। যাইহোক তবুও শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ রান করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে মিচেল এবং উইলিয়ামসন দারুণ ব্যাট করে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিল কিছুটা। তবে মোহাম্মদ শামির দুর্দান্ত বোলিং এলোমেলো করে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং শিবির। যাইহোক শেষ পর্যন্ত মোটামুটি ভালো ব্যবধানে জয় পেয়েছে ভারত। আশা করি ফাইনাল ম্যাচ জিতে ভারত তৃতীয় বারের মতো ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit