বিষ্ণুপুর শ্যাম রাই মন্দির

in hive-129948 •  4 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

বিষ্ণুপুর শহরে ছিন্নমস্তা মায়ের মন্দিরের আশেপাশে যেমন অনেক গুলো টেরাকোটার মন্দির দেখতে পাওয়া যায় তেমনি রাসমঞ্চকে ঘিরেও রয়েছে বেশ কিছু পুরোনো মন্দির। বিষ্ণুপুরকে কেন মন্দিরের শহর বলা হয় সেটা আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণ এ কিছুটা বুঝতে পেরেছেন। গলিতে গলিতে ঐতিহাসিক মন্দির সমূহ। অল্প কিছুটা দূরে দূরে এত সুন্দর স্থাপত্য কলার মন্দির যেগুলো দেখলে নিজের চোখ, মন প্রাণ সবই জুড়িয়ে যায়। রাসমঞ্চে অল্প খানিকটা সময় কাটিয়ে ফের শুরু করলাম বিষ্ণুপুরের বাকি মন্দির গুলোকে দেখে নেওয়ার যাত্রা।

PXL_20240128_125426225_copy_1209x907.jpg

PXL_20240128_125604510_copy_907x1209.jpg

রাসমঞ্চে ঠিক পাস দিয়েই হাঁটা শুরু করলাম, আমার পরের গন্তব্য শ্রী শ্যাম রাই মন্দির। ১৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে মল্ল রাজা রঘুনাথ সিংহ শ্যাম রাই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। শ্যাম রাই মন্দিরটি হলো 'পঞ্চরত্ন' বা 'পাঁচ চূড়া' বিশিষ্ট মন্দিরের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। যা মাঁকড়া পাথর বা ল্যাটেরাইট পাথরের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে। মন্দিরের মাথার মধ্যেকার রত্ন বা চূড়াটি অষ্টভুজাকার এবং বাকি চারটি রত্ন বর্গাকার। চার পাশে তিনটি খিলান ও একটি বারান্দা দেখতে পাওয়া যায়। মন্দিরের ছাদ 'চালা' ধরনের। বিষ্ণুপুরের আলি গলিতে হাঁটার সময় কিছু স্থানীয়র কাছ থেকে সহজ পথ শুনে খুব তাডাতাড়িই মন্দিরের ঠিক সামনে পৌঁছে গেলাম।

PXL_20240128_125732543_copy_1209x907.jpg

PXL_20240128_125457813_copy_1209x907.jpg

বর্তমানে শ্যাম রাই মন্দিরটিকেও ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ নিজেদের আওতায় নিয়েছে , তাঁরাই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। সেই জন্য স্বল্প মূল্য তারা নিয়ে থাকে, টিকিট মাত্র ৩০ টাকা। যেটা দিয়ে রাসমঞ্চ এবং শ্যাম রাই মন্দির দুটিই দেখা যায়। আমি টিকিট রাসমঞ্চ ঢোকবার সময়েই কেটে নিই।সেই টিকিট দেখিয়ে শ্যাম রাই মন্দিরে ঢুকে পড়লাম। আহা! কি স্থাপত্য কলা। সব দিকের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে ভারতীয় ইতিহাসের ঝলক। পুরো দেওয়াল জটিল পোড়ামাটির শিল্প দ্বারা সজ্জিত। পোড়ামাটির উপরে রামায়ণ এবং মহাভারতের নানা দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের লীলার সাথে ভগবান শ্রী রামের জীবনের নানা পর্ব তুলে ধরা হয়েছে।

PXL_20240128_125638259_copy_1209x907.jpg

PXL_20240128_125441301_copy_907x1209.jpg

শ্রী শ্যাম রাই মন্দিরটির শিল্প কলা এখন অনেকাংশে বোঝা যায়। যদিও অনেক কিছুই ক্ষয়ে গিয়েছে তবুও কোনো নির্দিষ্ট কলার পেছনে কি বর্ণিত সেটা বোঝা যায়।

PXL_20240128_125507954_copy_1209x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

বিষ্ণুপুরের মন্দিরের গল্প তো অনেক শুনেছি, কিন্তু কখনো যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে তুমি রাসমঞ্চ এবং শ্যাম রাই মন্দির এর যে সুন্দর বর্ণনা এখানে তুলে ধরেছো এবং ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছো তাতে অনেকটাই মুগ্ধ হলাম দাদা। ৩০ টাকার বিনিময়ে এত সুন্দর মন্দির দর্শন করা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এত সুন্দর করে মন্দিরের বর্ণনা দিয়ে সেই মন্দিরগুলো আমাদের সামনে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে উপস্থাপন করার জন্য।

বিষ্ণুপুরকে কেন মন্দিরের শহর বলা হয় সেটা আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণ এ কিছুটা বুঝতে পেরেছেন।

হ্যাঁ দাদা এটা খুব ভালোভাবেই বুঝে গিয়েছি। আমার মনে হয় এতো মন্দির অন্য কোথাও নেই। তবে সেখানকার প্রতিটি মন্দির খুবই সুন্দর। যাইহোক শ্যাম রাই মন্দিরের ফটোগ্রাফি গুলো দারুণভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

বিষ্ণুপুরের শ্যামরাই মন্দিরের অপূর্ব ছবি তুলেছেন। রঘুনাথ সিংহের কীর্তি বিষ্ণুপুরে আজও মুখে মুখে ফেরে। বীর সেই রাজার আমলে টেরাকোটার যে কাজ বনবিষ্ণুপুরে হয়েছিল তা আজও অমর অক্ষয় হয়ে সাক্ষী দেয় সেই মল্লভূমের। অসাধারণ কভার করেছেন। বিষ্ণুপুর সম্পর্কিত পোস্টগুলি ভীষণ ভালো হচ্ছে। বাংলার মধ্য যুগে এই টেরাকোটা শিল্প এত উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয় যে তা সারা পৃথিবীর কাছে বাংলার এক অনন্য স্থাপত্যের ধারক ও বাহক হয়ে ওঠে, যা আজও একইভাবে উপস্থাপিত হয়।