পুজো পরিক্রমা ২০২৪: বড়িশা ক্লাব

in hive-129948 •  last month 

নমস্কার বন্ধুরা,

কলকাতা বর্তমান রূপ পাওয়ার আগে তিনটি গ্রামের সমষ্টি ছিলো। তেমনি কলকাতা শহরের পাশাপাশি থাকার সুবাদে যে সমস্ত বিভিন্ন শহরতলি ধীরে ধীরে কলকাতার সাথে যুক্ত হয়ে বিশাল নগরীতে পরিণত হয়েছে তাদের ইতিহাস ঘাটলেও দেখা যায় তারাও একসময় ছোটো কোনো গ্রাম ছিল। যেমন দক্ষিণ কলকাতার হয়ে নেমে আসলে পাওয়া যায় শহরতলি বেহালা। কয়েক বছর আগেও বেহালা সুন্দরবনের মধ্যেই পড়তো তবে কলকাতা শহর বাড়তে বাড়তে আজ বেহালা সম্পূর্ণ রূপে আধুনিক নগরে পরিণত হয়েছে। তবে বেহালা পেরিয়ে গেলে ফের সুন্দরবন শুরু হয়ে যায়। বেহালার কলকাতায় মিশে যাওয়া এবং সুন্দরবনের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস নিয়ে বড়িশা ক্লাবের এ বছরের ভাবনা।

1000073050.jpg

1000073051.jpg

১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বড়িশা ক্লাবের পুজো কমিটি তাদের ৫৩ তম বর্ষে পদার্পণ করে থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে "বসতি"। মূলত প্রকৃতি বাঁচানোর উদ্দেশ্য নিয়ে বড়িশা ক্লাবের পুজো সমিতির ভাবনা। একদা বেহালা অঞ্চলটি সুন্দরবনের মধ্যে পড়তো তখন অনেক গাছপালা পশুপাখি নিয়ে একটা সম্পূর্ণ আলাদা বাস্তুতন্ত্র ছিল এই অঞ্চলে, তার মাঝেই ছিলো গুটি কয়েক গ্রাম। সময়ের সাথে সাথে সব পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। সুন্দরবনের ছোঁয়া আর কিছুই নেই। তবুও বেহালা থেকে একটু যদি নেমে যাওয়া যায় সেখানে বন জঙ্গল শুরু হয়ে যায়। জন বসতি এবং বনের যে সুন্দর মেলবন্ধন এই বেহালা সেটাকেই থিমের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ক্লাবের ভাবনার মাধ্যমে।

1000073057.jpg

1000073063.jpg

আদিম যুগে মানুষ জন যাযাবর ছিল তখন আমাদের সেই পূর্বপুরুষদের নির্দিষ্ট কোন বাসস্থান ছিল না। বৃষ্টি কিংবা যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিত্য সঙ্গী ছিল। আর বনের পশুদের আক্রমণ অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে আমরা ঘর বাঁধতে শিখলাম, সেটা ছিলো ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এরপরে সম্প্রসারিত হতে থাকলো মানুষের জনবসতি। ধীরে ধীরে অনেক গ্রাম পত্তন হলো যার মধ্য থেকে পরবর্তীতে নগরের পত্তন। যেহেতু কয়েক বছর পূর্বেও নদী ছিল যাতায়াতের প্রধান পথ ছিল তাই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে বহু শহর এবং বহু মফঃস্বল গ্রাম। যেমনটা মা গঙ্গার পথ ধরেই তৈরী হয়েছে বহু শহর।

1000073059.jpg

1000073104.jpg

বেহালাতে যাতায়াত হত মা গঙ্গার পথ ধরেই, এদিকেও জনবসতি গড়ে উঠতে থাকে। আর যেহেতু দেবাদিদেব মহাদেব মা গঙ্গাকে ধরাধামে নিয়ে আসেন তাই মহাদেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বেহালায় বহু শিব মন্দির গড়ে ওঠে। তেমনি শক্তি আরাধনা এখানে অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। কখন মা দূর্গা, কখন কালী রূপে, কখন চন্ডী রূপে, কখন বা বনবিবি রূপে পূজিত হতে থাকেন। জনবসতি এবং বনবসতির যে অদ্ভুত মেলবন্ধন এই অংশে দেখা যায় সেটাকেই এবারে তাদের পুজোয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

1000073061.jpg

1000073052.jpg

পুজো মণ্ডপ হয়েছে, কাঠের কাজের উপরে। বেহালায় যেমন বহু শিব মন্দিরের দেখতে পাওয়া যায়, সেই বিষয়টিকে দেখানো হয়েছে। আর পুরো মন্ডপ জুড়েই বেহালার ইতিহাস। মা দুর্গা এখানে বনদাত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিতা।

1000073060.jpg


"আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির প্রথম MEME Token : $PUSS by RME দাদা

"আমার বাংলা ব্লগের" প্রথম FUN MEME টোকেন $PUSS এখন SUNSWAP -এ লিস্টেড by RME দাদা


X-প্রোমশনের ক্ষেত্রে যে ট্যাগ গুলো ব্যবহার করবেন,
@sunpumpmeme @trondao $PUSS




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বড়িশা ক্লাবের থিমটা যেমন সুন্দর, তেমনি তাদের আয়োজনও দারুণ হয়েছে। পোস্টটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। তাছাড়া ফটোগ্রাফি গুলো বেশ উপভোগ করলাম। সবমিলিয়ে পোস্টটি এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

বেহালার আদি নাম ছিল বেহুলা। মঙ্গলকাব্যে অন্তত তারই আভাস পাওয়া যায়। তারপরবর্তী সময়ে আধুনিক যুগে সেই গ্রাম কলকাতার অন্তর্ভুক্ত হয়। খুব সুন্দরভাবে প্রতিবেদনটি শুরু করলেন। আর বরিশা ক্লাবের পুজো তো প্রত্যেকবার চমকপ্রদ করে। এ বছরও ভীষণ সুন্দর করে তারা মণ্ডপ সজ্জা করেছে।। আপনার ছবিতে এইসব সুন্দর মন্ডপ সজ্জার ছবি সকলের সামনে উঠে এলো।