বিষ্ণুপুর কালাচাঁদ মন্দির

in hive-129948 •  4 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ রাধা মাধব মন্দিরের যে অংশটা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে সেখানেই আরো একটি মন্দির রয়েছে সেটি হলো কালাচাঁদ মন্দির। রাধামাধব মন্দির চত্বর থেকে বেরিয়ে কালাচাঁদ মন্দিরের দিকে হেটে গেলাম। মূলত পুরাতত্ত্ব বিভাগের এই অফিসের জায়গাটিকে বাগানে পরিণত করা হয়েছে। বাগান জুড়ে বড়ো বড়ো গাছে ঢাকা রয়েছে। আদপে পুরো জায়গাটা জুড়ে বাঁকুড়া জেলার বেশ কিছু গাছগাছালি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। রাধা মাধব মন্দির থেকে কালাচাঁদ মন্দির যাওয়ার জন্য বাগানের মাঝে মাটির রাস্তা আছে যা সৌভাগ্যক্রমে এখন কংক্রিটের ঢেকে দেওয়া হয়নি। যার কারণে বাঁকুড়া লাল মাটির উপর দিয়ে হেঁটেই মন্দিরে পৌঁছতে হয়। গাছ গাছালির ছায়ার মধ্যে দিয়ে পৌঁছে গেলাম কালাচাঁদ মন্দিরের একদম সামনে। বিষ্ণুপুর শৈলীর সবকটি মন্দিরের মধ্যে কালাচাঁদ মন্দির সবচাইতে পুরোনো।

PXL_20240128_115644195_copy_1209x907.jpg

PXL_20240128_115610910_copy_907x1209.jpg

মাকড়া পাথর বা ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত এই একরত্ন শৈলীর মন্দিরটি নিম্ন ভিত্তিবেদীর উপর বানানো হয়েছে। মন্দিরের চারিদিকে ত্রি খিলান প্রবেশ পথ সহ ভেতর দিকের বারান্দা রয়েছে। মন্দিরটির ছাদের মধ্যে একটি মাত্র সপ্তরথ চূড়া বা রত্ন রয়েছে। মন্দিরে গাত্রে খোদিত রয়েছে শ্রী কৃষ্ণলীলা। তার পাশাপাশি নানা দেবতা, সাধক ও নর্তকদের অলংকরণ করা রয়েছে।

PXL_20240128_115706654_copy_1209x907.jpg

PXL_20240128_115659576_copy_907x1209.jpg

কালাচাঁদ মন্দিরটি ১৬৫৬ সালের মল্ল রাজ রঘুনাথ সিংহের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত হয়েছিল। মাকড়া পাথর দিয়ে তৈরি একটি নিম্ন মঞ্চের উপরে পুরো মন্দিরের গড়ে তোলা। মন্দিরটির গঠন মূলত একরত্ন ধাঁচের। পুরো গঠন মরচে রঙের ল্যাটেরাইট বা মাকড়া পাথর দিয়ে তৈরি। মন্দিরটির ভিত্তি বর্গাকার, ছাদটি সাধারণ আটচালা। কাঠামোটির চার পাশে তিনটি খিলান খোলা রয়েছে। কালাচাঁদ মন্দিরটি বিষ্ণুপুরের প্রাচীনতম 'এক-রত্ন' মন্দির। মন্দিরের সর্বত্রই মহাভারতের বিভিন্ন পর্ব বর্ণিত রয়েছে।

মন্দিরটি বিষ্ণুপুরের সবচেয়ে পুরনো এক রত্ন শৈলীর মন্দির হলেও মন্দির গাত্রে যে সমস্ত অলংকরণ করা ছিলো তা এখনো তুলনামুলক ভাবে স্পষ্ট। যেখানে অন্যান্য মন্দিরের অলংকরণ প্রায় অনেকটাই ক্ষয়ে গিয়েছে সেখানে কালাচাঁদ মন্দিরের শ্রী কৃষ্ণ লীলা সাধারণ মানুষের নজর কাড়বেই




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @kingporos,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

এই যে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে বাঁকুড়ার বেশ কিছু পুরনো মন্দির সম্পর্কে জানতে পারছি, দেখতে পারছি -বিষয়টি কিন্তু দারুণ! প্রায় ৪০০ বছর আগের মন্দির অথচ এখনো কাজগুলো বেশ নিখুঁত ভাবে অক্ষত আছে, দেখে বেশ ভালো লাগলো এবং অবাক ও লাগলো। তবে এসব পুরা কীর্তি সামনাসামনি দেখার অনুভূতি ই আলাদা। সেটা আদৌ সম্ভব হবে কি না জানা নেই, তাই আপাতত আপনার চোখে দেখেই শান্তি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

দাদা আপনার আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে বিষ্ণুপুর কালাচাঁদ মন্দির সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। আর এত কিছু জানতে পেরে অনেক ভালো লাগতেছে। অনেক বছর আগের দেখছি এই মন্দিরটা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অনেক বেশি সুন্দর ভাবে এটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। এটি তৈরি করার কাজগুলো এত নিখুঁত ছিল দেখেই তো জাস্ট মুগ্ধ হলাম। নিখুঁত কাজগুলো এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। এক কথায় জাস্ট অসাধারণ লাগলো আপনার আজকের পুরো পোস্টটা আমার কাছে।

বিষ্ণুপুর কালাচাঁদ মন্দিরটা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি দাদা। বিশেষ করে মন্দিরের গায়ের অলংকরণ দেখে তো চোখ ফেরানো যাচ্ছে না। আগের দিনের শিল্পীদের এমন নিখুঁত কাজ সত্যিই বেশ প্রশংসনীয়। ফটোগ্রাফি গুলো দারুণভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

এত বছর পুরনো একটা মন্দির এত নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়েছিল দেখে তো জাস্ট মুগ্ধ হলাম দাদা। মন্দির গাত্রের অলংকরণ গুলো সত্যি এখনো পর্যন্ত অনেক বেশি স্পষ্ট। এটা দেখেই আমি একটু বেশি মুগ্ধ হয়েছি। এই মন্দিরটা সম্পর্কে অনেক ধারণা নিয়ে নিলাম দাদা। আর অনেক কিছুই জানতে পেরেছি এটার সম্পর্কে। আপনি অনেক সুন্দর করে এই মন্দিরের ফটোগ্রাফি গুলো করেছেন। যারা এটা তৈরি করেছে তাদের হাত অনেক বেশি নিখুঁত। মন্দিরের সৌন্দর্যকে ক্যামেরা বন্দি করেছেন, আর আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লেগেছে।

খুব গোছানো লেখা। অনেক তথ্যপূর্ণ। কোন একটা জায়গা শুধু দেখা নয় তাকে জানাও বড় কাজ নইলে দেখা ফুরিয়ে যায়। আপনার পোস্টটি পড়ে সকলেই সমৃদ্ধ হবে৷
ছবিগুলিও বেশ ভালো তুলেছেন৷

কালাচাঁদ মন্দিরটি ১৬৫৬ সালের মল্ল রাজ রঘুনাথ সিংহের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত হয়েছিল

মন্দিরের বয়স তাহলে প্রায় চার শ বছর। ঐসময়ে তৈরি মন্দিরগুলোতে এইরকম সুন্দর স্থাপত‍্য থাকে। যেমন বললেন মন্দিরের গায়ে মহাভারত এর বিভিন্ন কাহিনী বর্ণিত রয়েছে। দেখে কিন্তু বেশ ভালো লাগল দাদা। ঐতিহাসিক একটা স্থাপনা।