মোয়ার টানে জয়নগর: দেবী জয়চন্ডীর মন্দির

in hive-129948 •  4 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

প্রত্যেক পুরনো শহর ও নগরের পেছনে কিছু কাহিনী জড়িয়ে থাকে। সে সমস্ত কাহিনীর কিছু সত্য আবার কিছু লোকমুখে প্রচলিত। তবে ইতিহাস বিজরিত শহর গুলো যেগুলো এখনো বেঁচে আছে সেগুলোর সাথে যে শুধুমাত্র কাহিনী জড়িয়ে আছে তাই নয়, তার সাথে জড়িয়ে ঐতিহাসিক কিছু ঘটনা। জয়নগর তেমনি এক বহু পুরনো ঐতিহাসিক জনপদ। শহর জয়নগরের স্থাপনা ঠিক কত বছর আগে হয়েছিল সেটা সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য না দিতে পারলেও যারা জয়নগরের ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করেছেন তারা অনুমান করে, প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ বছর আগে এখানে ধীরে ধীরে জনপথ তৈরি হওয়া শুরু করে। আর সেই জনপদ শুরু হওয়ার কারণ, দেবী জয়চন্ডী।

1000098817.jpg

দেবী জয়চন্ডী মায়ের মন্দির ঘিরেই জয়নগর তৈরী হয়েছে। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ১৬শ শতকে গুণানন্দ নামের এক ব্যক্তি জলপথে ভ্রমণের সময় দৈব আদেশ পান এবং এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। দেবী জয়চন্ডী, মা দুর্গার এক বিশেষ রূপ। যদিও জয়নগরের সাথে অনেক পুরনো ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে কিন্তু শহরটা আজ মৃত প্রায়। সেটার পেছনে আছে এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। জয়নগরের মূল বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে পিছু হটতে বাধ্য করছে কিছু রাজনৈতিক জনগণ। যাক সেসব অন্য একদিনের কথা। হাতে সময় নেই, মন্দিরের দিকে এগোলাম। জয়নগরের ইতিহাস অনেক পুরনো সেটি কারোরই অজানা নয়। রামকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে মোয়ার বাক্সগুলো ব্যাগের ভিতর ঢুকিয়ে আমি গুগল ম্যাপের শরণাপন্ন হলাম। দিকনির্দেশনা ধরে গুটি গুটি মন্দিরের দিকে এগোলাম। পুরনো শহরের অলিগলি ধরে মন্দিরের সামনে পৌছে গেলাম।

1000098815.jpg

1000098810.jpg

পৌঁছে স্কুটার দাঁড় করিয়ে মন্দিরের সামনে পৌছে গেলাম। মন্দিরটি বাংলার একচালা মন্দির স্থাপত্যের অনুকরণে বানানো। সমতল ছাদের স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত, যার উপরে একটি মাত্র শিখর। মন্দিরের ঠিক সামনে রয়েছে বিশাল নাট মন্দির। নাট মন্দিরে বসে থাকা এক বয়স্ক ঠাকুমার কাছে জানতে পারলাম যে সেখানে এখন দুর্গা পুজা হয়। নাট মন্দিরের উপর দিয়ে চলে গেলাম মূল মন্দিরের কাছে। মূল মন্দিরটি প্রতিনিয়ত সংস্কার হলেও পুরনো তিন খিলান বিশিষ্ট স্থাপত্য এখনো বজায় রয়েছে। মন্দিরের চালা যে অনেক পুরনো ধারার সেটা দেখলেই বোঝা যায়।

1000098816.jpg

1000098814.jpg

1000098813.jpg

স্থাপত্য দেখতে দেখতে মন্দির দালানে উঠে গর্ভ গৃহের দিকে এগিয়ে গেলাম। দেবী দুর্গা এখানে আরেক রূপে দেবী জয়চন্ডী রূপে পূজিত। দেবী জয়চন্ডীর প্রতিমাটি কাঠের। মায়ের সামনে করজরে নমস্কার করলাম। তিনিই আমাকে এতদূর টেনে এনেছেন।

1000098812.jpg


"আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির প্রথম MEME Token : $PUSS by RME দাদা

"আমার বাংলা ব্লগের" প্রথম FUN MEME টোকেন $PUSS এখন SUNSWAP -এ লিস্টেড by RME দাদা


X-প্রোমশনের ক্ষেত্রে যে ট্যাগ গুলো ব্যবহার করবেন,
@sunpumpmeme @trondao $PUSS




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

জয়নগর শহর এবং তার ইতিহাস নিয়ে দারুন সুন্দর একটি পোস্ট করলেন। জয়নগরে আমার অনেক আত্মীয়রা থাকে। সেই জন্য মাঝে মাঝেই যাতায়াত আছে। তাই নিমপীঠ রামকৃষ্ণ মিশন থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন দ্রষ্টব্য জায়গাগুলি আমার মোটামুটি ঘোরা। আপনি জয়নগরের ইতিহাস খুব সুন্দর ভাবে লিপিবদ্ধ করে শেয়ার করলেন।

এ বছর এখনও মোয়া খাইনি। গতবছরেও খাইনি৷ আসলে কবে শেষ খেয়েছিলাম মনে নেই। তবে ছোটবেলায় প্রতিবছরই দাদু কিনে আনতেন। কিন্তু জয়নগর কোথায় তা জানতাম না৷ বড় হয়ে যখন জেনেছি তখনও কোনদিন যাওয়া হয়নি৷ তবে জয়চন্ডী মন্দিরের কথা শুনেছি ও পড়েওছি৷ আপনার পোস্টে পড়ে আবারও ভালো লাগছে। সুন্দর কিছু সত্য দিক তুলে ধরেছেন।

মোয়ার টানে জয়নগর গেলেও, সেখানে গিয়ে ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন দাদা। তাছাড়া রামকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে মোয়া কিনেছেন। যাইহোক জয়চন্ডী মন্দিরের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো দাদা। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।